হিলারি ম্যান্টেল

ব্রিটিশ লেখিকা

হিলারি মারি ম্যান্টেল, সিবিই (ইংরেজি: Hilary Mantel; /mænˈtɛl/ man-TEL;[১] জন্ম: ৬ জুলাই, ১৯৫২), ইংরেজ মহিলা ঔপন্যাসিক, ছোট গল্প লেখিকা, প্রাবন্ধিক এবং সাহিত্য সমালোচক হিসেবে পরিচিত। তার সাহিত্য-কর্মগুলো ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক উপন্যাস পর্যন্ত বিস্তৃত। [২] তিনি ২০০৯ সালে তার বই উল্ফ হলের জন্য ম্যান বুকার পুরস্কার লাভ করেন।

হিলারি ম্যান্টেল
জন্মহিলারি মারি থম্পসন
(1952-07-06) ৬ জুলাই ১৯৫২ (বয়স ৭১)
গ্লোসপ, ডার্বিশায়ার, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য
পেশাঔপন্যাসিক, ছোট গল্প লেখিকা, প্রাবন্ধিক এবং সাহিত্য সমালোচক
জাতীয়তাব্রিটিশ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানশেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারম্যান বুকার পুরস্কার
২০০৯ ও ২০১২
ওয়াল্টার স্কট পুরস্কার
২০১০

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

হিলারি ম্যারি টমসন ডার্বিশায়ারের গ্লোসপে এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনিই তার মাতা-পিতার বড় সন্তান। তিনি হ্যাডফিল্ডের মিল গ্রামে বেড়ে উঠেন এবং সেন্ট চার্লস লোকাল রোমান ক্যাথলিক প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষাগ্রহণ করেন। তার মাতা-পিতা, মার্গারেট এবং হেনরি টম্পসন ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তারা উভয়েই আইরিশ বংশোদ্ভূত।[৩] তার মাতা-পিতা পৃথক হয়ে যায় এবং তিনি ১১ বছর বয়স থেকে তার বাবাকে আর দেখেননি। তার বাবাকে ছাড়া হিলারি ম্যান্টেলের মা জ্যাক ম্যান্টেল (১৯৩২-১৯৫৫)[৪] নামক এক ব্যক্তির সাথে চেসসায়ারের রোমিলেতে আসেন এবং জ্যাক ম্যান্টেল হন তার অনাধিকারিক সৎ বাবা।[৫] হিলারি ম্যান্টেল আইনগতভাবে তার সৎ বাবার বংশ নাম গ্রহণ করেন। তিনি তার পরিবারের পূর্ব ইতিহাসের কথা তুলে ধরেন স্মৃতি কথামূলক ফিকশন গিভিং আপ দ্য ঘোস্ট (২০০৩) এ। ১২ বছর বয়সে তিনি ধর্মের প্রতি আস্থা হারান।

চেশায়ারের রোমিলেতে হ্যারিটাউন কনভেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ১৯৭০ সালে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সে আইন বিষয়ে পড়া শুরু করেন। পরবর্তীকালে শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হন এবং সেখান থেকে ১৯৭৩ সালে মানবিক আইনের বিজ্ঞান ও দর্শন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় তিনি একজন সমাজতান্ত্রিক ছিলেন।[৩]

প্রারম্ভিক কর্ম জীবন সম্পাদনা

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষ করার পরে ম্যান্টেল গেরিয়্যাটিক হাসপাতালে সমাজ কর্ম বিভাগে কাজ করেন। এরপর তিনি একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে বিক্রয় সহকারী হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি গেরাল্ড ম্যাকইউয়ান নামে একজন ভূতত্ত্ববিদকে বিয়ে করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ফরাসী বিপ্লব নিয়ে একটি উপন্যাস লেখা শুরু করেন, যা পরবর্তীতে এ প্লেস অফ গ্রেটার সেফটি নামে প্রকাশিত হয়। ১৯৭৭ সালে ম্যান্টেল তার স্বামীর সাথে বতসোয়ানা চলে যান। পরবর্তীতে তারা সৌদি আরবের জেদ্দায় চার বছর কাটান। এই সময়ে সে লন্ডন রিভিউ অফ বুকস থেকে সামওয়ান টু ডিস্টার্ব নামে একটি জীবনী প্রকাশ করেন। তিনি পরবর্তীতে বলেন যে, জেদ্দা ত্যাগ করার অনুভূতি হচ্ছে: জীবনের সবচেয়ে সুখি দিন।[৬]

স্বাস্থ্য সম্পাদনা

বিশ বছর বয়সে ম্যান্টেল দুর্বলতা ও ব্যথাজনিত রোগে ভুগেছেন। প্রাথমিক অবস্থায় তার গুরুতর মানসিক রোগ নির্ণয় করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সে অনুযায়ী অ্যান্টি- সাইকোটিক ড্রাগ দেয়া হয়। এই ড্রাগগুলো তার রোগের উপসর্গগুলো আরও সৃষ্টি করে যার ফলশ্রুতিতে তাকে কয়েক বছর ডাক্তারের সাহায্যের বাইরে রাখা হয়। অবশেষে বতসোয়ানায় নিদারুণ হতাশার মধ্যে তাকে একটি মেডিকেল বই দেয়া হয় যার মাধ্যমে তিনি বুঝতে পারে যে, সম্ভবত তিনি এন্ডোমেট্রিওসিসে এ ভুগেছেন, যা লন্ডনের ডাক্তার দ্বারা নিশ্চিত করা হয়। এই অবস্থা এবং প্রয়োজনীয় অপারেশনের কারণে তিনি সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হারান এবং তার জীবন ব্যাহত করে। স্টেরয়েড দ্বারা চিকিৎসার ফলে তার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায় এবং তার চেহারা পরিবর্তন হয়। সে Endometriosis SHE Trust এর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।

সাহিত্য কর্ম সম্পাদনা

১৯৮৫ সালে তার প্রথম উপন্যাস এভরি ডে ইস মাদার'স ডে প্রকাশিত হয় এবং এর পরবর্তী বছর এটির সিকুয়েল ভেক্যান্ট পসেশন প্রকাশিত হয়। ইংল্যান্ডে ফিরে আসার পর তিনি দ্যা স্পেক্টেটর ম্যাগাজিনের চলচ্চিত্র বিভাগে লেখালেখি করেন। এই সময় সে ব্রিটেনযুক্তরাষ্ট্রের কিছু পত্র ও ম্যাগাজিনে লেখালেখি করেন।

গ্রন্থ ও রচনার তালিকা সম্পাদনা

বইসমূহ সম্পাদনা

নিবন্ধ সম্পাদনা

সম্মাননা সম্পাদনা

২০০৯ সালে ওল্ফ হল উপন্যাসের জন্য ম্যান বুকার পুরস্কার লাভ করেন। থমাস ক্রমওয়েলের জীবনীর উপর লেখা ২য় পর্বের তার সাম্প্রতিক ব্রিং আপ দ্য বডিজ উপন্যাসটি তাকে আবারো ২০১২ সালের ম্যান বুকার পুরস্কার লাভে সহায়তা করে। তিনি হচ্ছেন প্রথম নারী যিনি এ পুরস্কার দ্বিতীয়বারের মতো অর্জন করলেন। তার পূর্বে জে. এম. কোতজি, পিটার কারে এবং জে. জি. ফারওয়েল দুইবার ম্যান বুকার পুরস্কার লাভ করেছিলেন। তন্মধ্যে জে. জি. ফারওয়েল মরণোত্তর লস্ট ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছিলেন।[৭][৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Sangster, Catherine (১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "How to Say: JM Coetzee and other Booker authors"। BBC News। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০০৯ 
  2. "Literature: Writers: Hilary Mantel"The British Council। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১২ 
  3. Larissa MacFarquhar (১৫ অক্টোবর ২০১২)। "How Hilary Mantel Revitalized Historical Fiction"The New Yorker। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১২ 
  4. Hilary Mantel। "Hilary Mantel remembers her stepfather's books | Books"। The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১২ 
  5. Murphy, Anna (১ মার্চ ২০১০)। "Hilary Mantel Interview"The Daily Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১১ 
  6. "Once upon a life", The Observer Magazine, 21 February 2010
  7. Nick Clark (১১ সেপ্টেম্বর ২০১২)। "Booker Prize 2012: Hilary Mantel could become first British writer to win the literary prize twice after Bring up the Bodies makes shortlist - News - Books"। The Independent। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১২ 
  8. Pressley, James and Anderson, Hephzibah (৬ অক্টোবর ২০০৯)। "Hilary Mantel's 'Wolf Hall' Wins U.K. Man Booker, 50,000 Pounds"Bloomberg। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১২ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

পুরস্কার
পূর্বসূরী
জুলিয়ান বার্নস
ম্যান বুকার পুরস্কার‎ বিজয়ী
২০১২
উত্তরসূরী
এলিয়ানর ক্যাটন