হালাল

ইসলামিক আইনানুযায়ী ব্যবহারযোগ্য বা ভক্ষণযোগ্য বস্তু বা খাবার

হালাল (আরবি: حلال, 'অনুমোদনযোগ্য') মানে হল যে কোনো বস্তুর বা কর্ম যেটা ইসলামী আইন অনুযায়ী ব্যবহার বা নিয়োজিত করা যাবে। হালাল শব্দটি খাদ্য-পানীয়-র সাথে দৈনন্দিন জীবনের সব বিষয়টাও বোঝায় ও মনোনীত করে।[১] এটি ৫টি আহকাম-র মধ্যে ১টি — ফরজ (আবশ্যিক), মুস্তাহাব (প্রস্তাবিত), হালাল (অনুমোদনযোগ্য), মাকরুহ (অপছন্দ), হারাম (নিষিদ্ধ) — ইসলামে মানুষের কর্ম নৈতিকতা নির্ধারণ করে।[২] ইসলাম ধর্মে মুবাহ-ও "অনুমোদনযোগ্য" বা "অনুমোদিত" অর্থ বোঝায়। সাম্প্রতিক সময়ে, জনসাধারণকে একত্রিত করার চেষ্টা করা ইসলামী আন্দোলন এবং জনপ্রিয় দর্শকের পক্ষে লেখক হালাল ও হারামের সহজ পার্থক্যের উপর জোর দিয়েছেন।[৩]

হালাল আরবি শব্দ।এর অর্থ হচ্ছে পবিত্র।যার অর্থ হচ্ছে: বৈধ, উপকারী ও কল্যান ইত্যাদি।
চীনে রেস্টুরেন্টের বিজ্ঞাপনে হালাল মার্কা প্রচার

ব্যুৎপত্তি সম্পাদনা

“হালাল” একটি আরবি শব্দ যার অর্থ বৈধ, উপকারী ও কল্যাণ ইত্যাদি। মানুষের জন্য যা কিছু উপকারী ও কল্যাণকর ওই সকল কাজ ও বস্তুকে আল্লাহতায়ালা মানুষের জন্য হালাল বা বৈধ করে দিয়েছেন। এর বিপরীত হলো হারাম। কোন উপার্জন, কোন খাদ্য এবং কোন কর্ম মুসলমানদের জন্য হালার তা কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত রয়েছে। অর্থাৎ পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর ওপর ভিত্তি করে যে সব বিষয়কে ইসলামে বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে ইসলামি পরিভাষায় সেগুলো হালাল।[৪][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

হালাল উপার্জন সম্পাদনা

ইবনু মাস্'উদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, হে লোক সকল! যে ব্যাপারে আমি তোমাদেরকে আদেশ করেছি তাছাড়া এমন কোন জিনিসই নেই যা তোমাদেরকে জান্নাতের নিকটবর্তী করবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। আর যা থেকে আমি তোমাদেরকে নিষেধ করেছি তাছাড়া এমন কোন জিনিসই নেই যা তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। রূহুল আমীন আরেক বর্ণনায় আছে রূহুল কুদুস (জিবরীল আলাইহিস সালাম) আমার অন্তরে এ কথাটি ঢেলে দিয়েছেন যে, কোন দেহ তার (নির্ধারিত) রিযক পরিপূর্ণভাবে ভোগ না করা পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করবে না। সাবধান! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং ধনসম্পদ উপার্জনে উত্তম নীতি অবলম্বন কর। কাঙিক্ষত রিযক পৌছার বিলম্বতা যেন তোমাদেরকে আল্লাহর অবাধ্যতার খোঁজার পথে তা অন্বেষণে উদ্বুদ্ধ না করে। কেননা আল্লাহর কাছে যা নির্ধারিত রিযক আছে তা আল্লাহর আনুগত্য ছাড়া অর্জন করা যায় না। (আল্লামা বাগাবী’র “শারহুস্ সুন্নাহ্” এবং বায়হাক্বী’র শুআবূল ঈমান বর্ণনা করেছেন। তবে (وَإنَّ رُوحَ اوقُدُسِ) “আর নিশ্চয় রূহুল কুদুস (জিবরীল আলায়হিস সালাম)” এ বাক্যটি বায়হাক্বী বর্ণনা করেননি)

— গ্রন্থঃ মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)

অধ্যায়ঃ পর্ব-২৬ঃ মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০০, সহীহ: শুআবূল ঈমান ১০৩৭৬, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ১৭০০, সিলসিলাতুস সহীহাহ ২৮৬৬, মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ্ ৩৪৩৩২, আল মুসতাদরাক লিল হাকিম ২১৩৬, শারহুস্ সুন্নাহ ৪১১১, ৪১১২। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে লোকসকল! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং উত্তম পন্থায় জীবিকা অন্বেষণ করো। কেননা কোন ব্যক্তিই তার জন্য নির্দ্ধারিত রিযিক পূর্ণরূপে না পাওয়া পর্যন্ত মরবে না, যদিও তার রিযিক প্রাপ্তিতে কিছু বিলম্ব হয়। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং উত্তম পন্থায় জীবিকা অন্বেষণ করো, যা হালাল তাই গ্রহণ করো এবং যা হারাম তা বর্জন করো। হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। আত-তালীকুর রাগীব ৩/৭, সহিহাহ ২৬০৭, মিশকাত ৩৫০০। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ ইবনুল মুসাফফা আল-হিমসী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনু হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ ও তাদলীস করেন।

— গ্রন্থঃ সুনানে ইবনে মাজাহ

অধ্যায়ঃ ১২/ ব্যবসা-বাণিজ্য (كتاب التجارات)

হাদিস নম্বরঃ ২১৪৪ (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬১৩, ২৬/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা) হাদিসের মানঃ সহিহ

হালাল খাদ্য ও পানীয় সম্পাদনা

 
মাংসে হালাল মার্কা করা

খাদ্যগুলো যেটি হালাল হতে পারে না (কুরআন অনুযায়ী):

কোনো হালাল উপলব্ধ না হলে অনুমতি সম্পাদনা

যখন হারাম খাবার খাওয়া ছাড়া বেঁচে থাকার সম্ভবনা নেই, তখন জীবিত থাকার জন্যে হালাল নয় এমন খাদ্য গ্রহণ করার অনুমতি আছে।[৫] [৮]

হালাল কার্যাবলী সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. কোরআন ৭:১৫৭
  2. Nanji, Azim A. (২০০৯)। "Halal"। The Oxford Encyclopedia of the Islamic World (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-530513-5ডিওআই:10.1093/acref/9780195305135.001.0001/acref-9780195305135-e-0292 
  3. "Lawful and Unlawful" (ইংরেজি ভাষায়)। ডিওআই:10.1163/1875-3922_q3_eqcom_00107 
  4. [১]
  5. কুরআন ২:১৭৩
  6. কুরআন ৫:৩
  7. কুরআন ৬:১২১
  8. সহীহ বুখারী ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে, সহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ ০২, পর্বঃ ঈমান, হাদিস নাম্বারঃ ৫০

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা