হায়দ্রাবাদ কালীবাড়ি

হায়দ্রাবাদ মহানগরীর প্রধান রেল স্টেশন, সেকেন্দ্রাবাদ রেল স্টেশন হইতে ৭ কিলোমিটার দূরে আম্মুগ

হায়দ্রাবাদ মহানগরীর প্রধান রেল স্টেশন, সেকেন্দ্রাবাদ রেল স্টেশন হইতে ৭ কিলোমিটার দূরে আম্মুগুড়ায় অবস্থিত হায়দ্রাবাদ কালীবাড়ি হলো হায়দ্রাবাদের বৃহত্তম ও প্রসিদ্ধ একটি কালীমন্দির।[১][২] এই তীর্থের পীঠদেবী কালী ও এই মন্দিরটির প্রাঙ্গনে শিবঠাকুর এবং ভগবান গণেশেরও মন্দির আছে। হায়দ্রাবাদ কালীবাড়ি বিশেষভাবে হায়দ্রাবাদ মহানগরীতে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাঙালিদের মাঝে কালীপুজোদুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত করার জন্য বেশ জনপ্রিয়।[৩]

হায়দ্রাবাদ কালীবাড়ি
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলামেডচাল-মালকাজগিরি
ঈশ্বরকালী
উৎসবসমূহকালীপূজা, দুর্গাপূজা
অবস্থান
অবস্থানবিবেকানন্দপুরম, আম্মুগুড়া
রাজ্যতেলঙ্গানা
দেশভারত
স্থানাঙ্ক১৭°১৭′২৯″ উত্তর ৭৮°১৮′৫৫″ পূর্ব / ১৭.২৯১৪৯৩৭১৪° উত্তর ৭৮.৩১৫১৪৬৭৩৪° পূর্ব / 17.291493714; 78.315146734
স্থাপত্য
ধরনবাংলার স্থাপত্য
প্রতিষ্ঠার তারিখ২৪শে আগস্ট, ১৯৭৪ (বঙ্গাব্দ: ৯ ভাদ্র, ১৩৮১)

ইতিহাস সম্পাদনা

১৯৭৪ সালে মালকাজগিরি অঞ্চলের প্রাক্তন এমএলসি শ্রী এস মধুসূদন রেড্ডি, যিনি স্বয়ং একজন কালী ভক্ত ছিলেন, প্রায় ২০০০ বর্গ গজের একটি জমি হায়দ্রাবাদ কালীবাড়ি ট্রাস্টের নিকট কালীবাড়ি নির্মাণের জন্য দান করেন। পরবর্তীকালে একাধিক ভক্ত, বিশেষত লালা চৌধুরী মামান রাম আগরওয়াল, যিনি একজন জনহিতিক ছিলেন, বিবেকানন্দপুরম এলাকায় কালীবাড়ি নির্মাণের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে অনুদান সংগ্রহ তথা অর্থদান করতে এগিয়ে এসেছিলেন। হায়দ্রাবাদ কালীবাড়ির যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৪ সালে এবং মন্দিরটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন রামকৃষ্ণ মিশন হায়দ্রাবাদের তৎকালীন সভাপতি স্বামী রঙ্গনাথনন্দজী মহারাজ।

২৮শে আগস্ট, ১৯৭৮ এ, পশ্চিমবঙ্গের চিতপুর থেকে দক্ষিণেশ্বর কালী ঠাকুরের আদলে কালো পাথরের একক টুকরো দিয়ে তৈরি একটি মূর্তি কেনা হয়। ঠাকুরের মূর্তিটি রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী রঙ্গনাথনন্দজী মহারাজ দ্বারা স্থাপন করা হয় এবং এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অন্ধ্র প্রদেশ সরকারের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিভাগের তৎকালীন মন্ত্রী রাজা সাগী সূর্যনারায়ণ রাজু উপস্থিত থাকেন। দেবীর মূর্তি স্থাপনা এবং প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন কলকাতার বিখ্যাত "চুনাগালি কালী মন্দির" এর খ্যাত তান্ত্রিক পুরোহিত শ্রী গোষ্ঠ বেহারি ভট্টাচার্য, বিদ্যারত্ন। হায়দ্রাবাদ কালীবাড়ির সর্বপ্রথম পুরোহিত এ.কে. গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে শাস্ত্রের আদেশ অনুসারে বৈদিক ও তান্ত্রিক উপায়ে পূজা করতে সহায়তা করেছিলেন।

স্বামী রাঙ্গনাথনন্দজী মহারাজের নিকট তাঁর পথনির্দেশনের জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে কালীবাড়িটির নাম "হায়দ্রাবাদ কালিবাড়ি" রাখা উচিত।

কালীবাড়ি সম্পর্কে সম্পাদনা

আজ, হায়দরাবাদ কালীবাড়ি বঙ্গীয় সংস্কৃতির প্রায় সকল প্রধান উৎসব ও পার্বণ অনুষ্ঠিত করে যেমন কালীপুজো, দুর্গাপুজো, সরস্বতী পূজা, অন্নপূর্ণা পূজা ইত্যাদি ও সমস্ত অমাবস্যা পূজা যেখানে মন্দিরে মা কালী পূজিত হন। এজাতীয় সমস্ত অনুষ্ঠানে প্রচুর সংখ্যক ভক্তরা সমবেত হন। কালীবাড়িতে শিশুদের জন্য একটি নিখরচায় স্কুল রয়েছে যেখানে বাংলা শেখানো হয়। এছাড়াও প্রতি রবিবার নাচ এবং গান শেখানো হয়। হায়দ্রাবাদের ভগিনী নগরী সেকেন্দ্রাবাদের আর.কে পুরাম, লাল বাজার, বোলারাম, ডিফেন্স কলোনি এবং সৈনিকপুরীর মতো আশেপাশের বিভিন্ন পাড়াগুলিতে বাস করা প্রায় ৩,০০০-এরও বেশি বাঙালি পরিবার প্রায়শই এই মন্দিরের দর্শন করে থাকেন।[৪] প্রতি বছর কালীপুজোর সময়ে মন্দিরে ১৫০০ জনের কাছাকাছি ভক্ত ও পু্ণ্যার্থীর সমাগম ঘটে।[৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Hyderabad Kalibari (image)"The Times of India। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১। ১৯ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৩ 
  2. "It's 'City of Joy' for this Durga puja"The Times of India। ১৬ অক্টোবর ২০১২। ১৫ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৩ 
  3. "Kumar Sanu to sing at Kali Puja festivities"The Hindu। ২৭ অক্টোবর ২০০৮। ৩০ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৩ 
  4. India, The Hans (৯ জুলাই ২০১৯)। "A must-visit temple for Kali in twin cities"www.thehansindia.com (ইংরেজি ভাষায়)। 
  5. Nov 11, TNN /। "Residents set for virtual Kali Puja | Hyderabad News - Times of India"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা