হাবিল

কুরআন ও বাইবেলে উল্লিখিত চরিত্র

হেবল[১] (হিব্রু ভাষায়: הֶבֶלHéḇel, in pausa הָבֶל‬, Hā́ḇel; প্রাচীন গ্রিকἍβελ, Hábel; আরবি: هابيل, প্রতিবর্ণীকৃত: Hābīl) হলেন ইব্রাহিমীয় ধর্মসমূহে বাইবেলের আদিপুস্তকে উল্লিখিত একজন ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন কাবিলের ছোট ভাই এবং প্রথম দম্পতি আদমহাওয়ার কনিষ্ঠ পুত্র।[২] তিনি ছিলেন একজন মেষপালক যিনি তার পালের প্রথমজাত কয়েকটি পশু ও এদের মেদ উপহাররূপে সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। সদাপ্রভু হেবলের উপহার গ্রহণ করেন, কিন্তু তার ভাইয়ের উপহার অগ্রাহ্য করেন। হিংসার দরুন কয়িন হেবলকে হত্যা করে।

হাবিল
הֶבֶל
هابيل
আঁকা হাবিলের প্রতিকৃতি
পিতা-মাতাআদম ও হবা
আত্মীয়আদিপুস্তক মতে:
কয়িন (ভাই)
শেথ (ভাই)
পরবর্তীকালীন ঐতিহ্যমতে:
অক্‌লিমা (বোন)
অবান (বোন)
অসুরা (বোন)

আদিপুস্তক অনুসারে, এটাই ছিল মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকাণ্ড।

পরিচয় সম্পাদনা

হাবিল ছিলেন আদমের দ্বিতীয় ছেলে। তার সাথে জন্ম নেয় এক কন্যা। তার নাম গাযা। আদমের প্রথম ছেলের নাম কাবিল ও কন্যার নাম একলিমা।[৩]

বিবাহ নিয়ে কাবিলের সাথে দ্বন্দ্ব ও হাবিলের মৃত্যু সম্পাদনা

 
কাসাসুল আম্বিয়া গ্রন্থের একটি চিত্রতে দেখা যাচ্ছে, হাবিল তার ভাইকে কবর দিচ্ছেন

আদমকে প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী এক গর্ভের ছেলে সাথে আরেক গর্ভের মেয়ের বিবাহ হত। এ অনুযায়ী হাবিলের সাথে বিবাহ একলিমার এবং কাবিলের সাথে বিবাহ গাযার হওয়ার কথা। একলিমা ছিলেন সুন্দরী আর গাযা ছিলেন কালো। তাই কাবিল জেদ ধরে বসে একলিমাকে বিবাহ করার। কিন্তু আদম কাবিলের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বিফহান অনুযায়ী বিবাহ দেন। ফলে কাবিল রেগে যায় এবং হাবিলকে হত্যা করে।[৪]

প্রথম কুরবানি সম্পাদনা

আদম কাবিলের দাবি সঠিক কি না, তা প্রমাণ করার জন্য কুরবানির ব্যবস্থা করেন। কুরআনে শুধু হাবিল ও কাবিলের কুরবানি দেওয়া এবং একজনের কবুল হওয়ার কথা রয়েছে।[৫] হাবিল দিল একটি মেষ কুরবানি এবং কাবিল দিল এক আঁটি ফসল। তারা উভয়ে কুরবানি কবুল করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে। তখন অদৃশ্য থেকে আগুন এসে হাবিলের কুরবানি গ্রাস করল, কিন্তু কাবিলের কুরবানি মাটিতে পড়ে রইল।[৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. এই ব্যক্তিনামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে বাইবেলীয় বানানরীতি অনুসরণ করা হয়েছে।
  2. The Holy Bible (English Standard Version সংস্করণ)। Crossway Bibles। ২০১৬। পৃষ্ঠা Genesis 1:26–27; Genesis 2:20–24। 
  3. আল-বিদায় ওয়ান-নিহায়া, ইবন কাছির, খ. ১, পৃ. ৯৩।
  4. আল-বিদায় ওয়ান-নিহায়া, ইবন কাছির, খ. ১, পৃ. ৯৩।
  5. সুরা মায়েদা, আয়াত : ২৭।
  6. তাফসির তাবারী, ইবন জারির, খ. ৬, পৃ. ১৯১।