স্বর্ণ চতুর্ভুজ (জিকিউ) হল ভারতের জাতীয় মহাসড়কের একটি নেটওয়ার্ক যা এই দেশের বেশিরভাগ শিল্প, কৃষি ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে সংযুক্ত করেছে। এটি ভারতের চারটি প্রধান মহানগর, দিল্লি (উত্তর), কলকাতা (পূর্ব), মুম্বই (পশ্চিম) এবং চেন্নাই (দক্ষিণ)কে ছুঁয়ে গিয়ে একটি চতুর্ভুজ গঠন করেছে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত অন্যান্য শহরের মধ্যে রয়েছে আহমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু, বালেশ্বর, ভুবনেশ্বর, কটক, দুর্গাপুর, জয়পুর, কানপুর, পুনে, সুরাট, বিজয়ওয়াড়া, আজমির, ভাইজাগ, বুদ্ধ গয়া, বারাণসী, আগ্রা, মথুরা, ধানবাদ, গান্ধীনগর, উদয়পুর) এবং বড়োদরা। এই বিশাল মহাসড়কের মূল লক্ষ্য হল ভারতের চারটি মহানগরের মধ্যে দূরত্ব এবং যাতায়াতের সময় হ্রাস করা।

স্বর্ণ চতুর্ভুজ
স্বর্ণ চতুর্ভুজসহ ভারতের মহাসড়ক মানচিত্র, গাঢ় নীল বর্ণে দেখানো
পথের তথ্য
এনএইচএআই কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণকৃত
দৈর্ঘ্য৫,৮৪৬ কিমি (৩,৬৩৩ মা)
দিল্লিকলকাতা
দৈর্ঘ্য১,৪৫৩ কিমি (৯০৩ মা)
প্রধান সংযোগস্থল এনএইচ ৪৪ & এনএইচ ১৯
দিল্লিমুম্বই
দৈর্ঘ্য১,৪১৯ কিমি (৮৮২ মা)
প্রধান সংযোগস্থল এনএইচ ৪৮
মুম্বইচেন্নাই
দৈর্ঘ্য১,২৯০ কিমি (৮০০ মা)
প্রধান সংযোগস্থল এনএইচ ৪৮
চেন্নাইকলকাতা
দৈর্ঘ্য১,৬৮৪ কিমি (১,০৪৬ মা)
প্রধান সংযোগস্থল এনএইচ ১৬
মহাসড়ক ব্যবস্থা
বিজয়ওয়াড়া - গুন্টুর এনএইচ -১৬র এক্সপ্রেসওয়ে বিভাগ
চেন্নাই থেকে মুম্বাই পর্বে স্বর্ণ চতুর্ভুজ মহাসড়কের একটি অংশ
এনএইচ ৪৬: ভারতের ৪-লেনের স্বর্ণ চতুর্ভুজ মহাসড়কের বেঙ্গালুরু-চেন্নাই বিভাগ
কলকাতা - চেন্নাই বিভাগে স্বর্ণ চতুর্ভুজ মহাসড়কের আর একটি বিভাগ এনএইচ ১৬
কলকাতা-দুর্গাপুর বিভাগ ভারতের জি কিউ মহাসড়ক
এনএইচ ৪: তামিলনাড়ুর কৃষ্ণগিরির নিকটে ভারতের জি কিউ মহাসড়কেরচেন্নাই-বেঙ্গালুরু বিভাগ

৫,৮৪৬ কিলোমিটার (৩,৬৩৩ মা) দৈর্ঘ্য নিয়ে, এটি ভারতের বৃহত্তম মহাসড়ক প্রকল্প এবং বিশ্বের পঞ্চম।[১] এটি জাতীয় সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প (এনএইচডিপি) এর প্রথম পর্ব, এবং চার ও ছয়-লেনের এক্সপ্রেস মহাসড়ক নিয়ে গঠিত। এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে  ৬০০ বিলিয়ন (US$ ৭.৩৩ বিলিয়ন)[২] ১৯৯৯ সালে প্রকল্পটির পরিকল্পনা করা হয়েছিল, ২০০১ সালে এর কাজ শুরু হয়েছিল এবং এটি ২০১২ সালে শেষ হয়েছিল।[৩]

স্বর্ণ চতুর্ভুজ প্রকল্পটি সড়ক, পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রকের অধীনে ভারতের জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ (এনএইচএআই) দ্বারা পরিচালিত হয়। রাস্তার অধিকাংশ ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রিত প্রবেশের জন্য নয়, কিন্তু এখানে কিছু সুরক্ষা ব্যবস্থা, যেমন পার্শ্বস্থ রেলিং, বাম্পার এবং উচ্চ-দৃশ্যমানতাযুক্ত চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে। মুম্বাই-পুনে এক্সপ্রেসওয়ে, ভারতে প্রথম উচ্চ গতির যানবাহন চলাচলের জন্য নির্মিত টোল রাস্তা, এই জিকিউ প্রকল্পের একটি অংশ। কিন্তু এনএইচএআই এটিতে অর্থসাহায্য করেনি, এবং মূল মহাসড়ক থেকে আলাদা। এই প্রকল্পের জন্য অর্থ পেট্রোল এবং ডিজেলের কর থেকে প্রাপ্ত হয়েছে, যার পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন টাকা। এছাড়াও বাহ্যিক সহায়তার মাধ্যমে ২০০ বিলিয়ন টাকা, বাজারে ঋণ থেকে ১০০ বিলিয়ন টাকা এবং বেসরকারী খাতের অংশগ্রহণ থেকে ৪০ বিলিয়ন টাকা পাওয়া গিয়েছিল। প্রকল্পটি এনএইচএআই এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের মধ্যে একটি সরকারী-বেসরকারী অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে।[৪]

ইতিহাস এবং খরচ সম্পাদনা

স্বর্ণ চতুর্ভুজ প্রকল্পের (জিকিউ প্রকল্প) প্রধান লক্ষ্য ছিল দেশের মুখ্য শহর এবং বন্দরগুলির মধ্যে দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থা স্থাপন করা, ছোট শহরগুলি থেকে সহজে বাজার অঞ্চলে পৌঁছোনোর ব্যবস্থা করা, পরিবহনে কৃষিজাত খাবারের পচন কমানো।[৫]

১৯৯৯ সালের ৬ই জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী এই প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।[৬] এটি ২০০৬ সালের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তবে জমি অধিগ্রহণের সীমাবদ্ধতা এবং ঠিকাদারদের সাথে বিরোধের কারণে বিলম্ব হয়েছিল এবং পুনরায় আলোচনা করতে হয়েছিল।[৭][৮]

ভারত সরকারের প্রাথমিক অনুমান ছিল যে স্বর্ণ চতুর্ভুজ প্রকল্পের জন্য ব্যয় হবে  ৬০০ বিলিয়ন (US$ ৭.৩৩ বিলিয়ন), ১৯৯৯ সালের দাম অনুযায়ী। তবে মহাসড়কটি এর থেকে কমেই নির্মিত হয়েছিল। আগস্ট ২০১১ পর্যন্ত, ভারত সরকারের ব্যয় প্রাথমিক অনুমানের প্রায় অর্ধেক ছিল, প্রায়  ৩০৮.৫৮ বিলিয়ন (US$ ৩.৭৭ বিলিয়ন). আগস্ট ২০১১ পর্যন্ত আটটি চালু চুক্তির খরচ ছিল  ১৬.৩৪ বিলিয়ন (US$ ১৯৯.৭৩ মিলিয়ন)[৯]

সংযুক্ত শহর সম্পাদনা

দিল্লি-কলকাতা কলকাতা-চেন্নাই চেন্নাই-মুম্বাই মুম্বাই-দিল্লি

প্রতিটি রাজ্যে দৈর্ঘ্য সম্পাদনা

সম্পূর্ণ গোল্ডেন চতুর্ভুজটি ১২ টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্য দিয়ে যায়:

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. [১]
  2. "Archived copy"। ১৪ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-২৩  Road network-Source-The National Highways Authority of India (NHAI)
  3. Golden Quadrilateral Highway Network. Road Traffic Technology (2011-06-15). Retrieved on 2013-12-06.
  4. "Golden Quadrilateral Highway Network"। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  5. https://www.slideshare.net/rahutiger/golden-presentation। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১৯  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  6. "Building India's National Pride: The Golden Quadrilateral" 
  7. "Golden Quadrilateral still has miles to go"। Financial Express। 
  8. R. N. Bhaskar। "Crossing the chasm"। Forbes India। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  9. "Contractors take the sheen off Golden Quadrilateral"। The Financial Express। ৩ আগস্ট ২০১১। ৩১ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা