স্টিভ এল. রিভস (ইংরেজিতে: Steve Reeves; জন্ম: জানুয়ারি ২১, ১৯২৬, মৃত্যু: মে ১, ২০০০) একজন মার্কিন বডিবিল্ডার এবং অভিনেতা। তার অভিনয় জীবনের সর্বোত্তম সময়ে তিনি ইউরোপের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক প্রাপ্ত অভিনেতা ছিলেন।[২]

স্টিভ রিভস
১৯৯০ সালে স্টিভ রিভস
জন্ম(১৯২৬-০১-২১)২১ জানুয়ারি ১৯২৬[১]
মৃত্যু১ মে ২০০০(2000-05-01) (বয়স ৭৪)
পেশাবডিবিল্ডার, অভিনেতা, জনহিতৈষী, খেলোয়াড়
দাম্পত্য সঙ্গীস্যান্ড্রা স্মিথ
(১৯৫৫– ১৯৫৬; তালাকপ্রাপ্ত)
অ্যালিন সার্টজারভিক্স[১] (১৯৬৩– ১৯৮৯; স্ত্রীর মৃত্যু)
ডেবোরাহ এল এঙ্গেলহর্ন(১৯৯৪- ২০০০; স্টিভ রিভসের মৃত্যু)

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

স্টিভ রিভসের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যের গ্লাসগো শহরে। বাবা মারা যাওয়ার পরে ১০ বছর বয়সে তিনি তার মায়ের সাথে ক্যালিফোর্নিয়াতে স্থানান্তরিত হন। স্কুলে পড়ার সময় বডিবিল্ডিং-এর প্রতি স্টিভ রিভসের আগ্রহ জন্মে। এসময় তিনি ওকল্যান্ডের একটি জিমন্যাসিয়ামে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা শুরু করেন। হাই স্কুল উত্তীর্ণ হবার পরে রিভস সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে ফিলিপাইনে দায়িত্ব পালন করেন।

অভিনয় জীবন সম্পাদনা

সেনাবাহিনীর চাকরি শেষের পরে এবং ১৯৪৭ সালে মিস্টার আমেরিকা খেতাব অর্জনের পরে রিভস অভিনয় জীবন শুরু করার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেন। তিনি প্রখ্যাত মার্কিন অভিনেত্রী স্টেলা অ্যাডলারের নিকট হতে অভিনয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা শুরু করেন। স্যামসন অ্যান্ড ডেলাইলাহ নামের একটি চলচ্চিত্রের জন্য বিখাত মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা ব. ডেমিল রিভকে নির্বাচন করেন। এই চলচ্চিত্রের কাজ করতে গিয়ে রিভস দীর্ঘ অনুশীলন করেন। এজন্য তাকে ১৫ পাউন্ড ওজন কমাতে হয়। তবে ওজন কমাবার পরে তিনি বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি।

১৯৪৯ সালে তিনি কিংবার অব দ্য জাঙ্গেল নামের একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এখানে তিনি টারজানের অনুরূপ একটি চরিত্রে কাজ করেন। ১৯৫০ সালে রিভস মিস্টার ইউনিভার্স চ্যাম্পিয়ন হন। ১৯৫৪ সালে রিভস অ্যাথেনা নামের একটি গীতিধর্মী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। একই বছর জেইল বেট নামের একটি চলচ্চিত্রেও তিনি অভিনয় করেন। কেবল এই দুইটি চলচ্চিত্রেই রিভসের নিজস্ব গলার স্বর ব্যবহৃত হয়। পরবর্তিতে তার অন্যান্য অভিনয় করা চলচ্চিত্রে অন্যের স্বর বা কৃত্রিম শাব্দিক ইফেক্ট ব্যবহৃত হয়েছে।

১৯৫৬ সালে রিভস এবিসি’র একটি সিটকমে অভিনয় করেন। ১৯৫৭ সালে রিভস ইতালি যান এবং পিয়েট্রো ফ্রান্সিসি’র হারকিউলিস নামের চলচ্চিত্রের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রটি মহাকাব্যের কাহিনীকে উপজীব্য করে নির্মিত। চলচ্চিত্রটি ব্যাপক ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করে। ১৯৫৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি ৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি মুনাফা অর্জন করে। ফলে এটির দ্বিতীয় সংস্করণ হিসেবে আরেকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়, যার নাম হারকিউলিস আনচেইন্ড। এটি বিশ্বের ২৫টি দেশে শীর্ষ জনপ্রিয় চলচ্চিত্র হিসেবে সাফল্য লাভ করে।

১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সালে রিভস বেশ কয়েকটি স্বল্প বাজেটের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তবে তিনি হারকিউলিস চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সবচেয়ে বেশি সুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৬২ সালে রিভস ডক্টর নো চলচ্চিত্রে জেমস বন্ড চরিত্রে কাজ করার জন্য প্রস্তাব পান, তবে কম পারিশ্রমিকের কারণে তিনি প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেন। দ্য লাস্ট ডেইজ ইন পম্পেই নামের চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে রিভস তাঁর কাঁধে ব্যাথা পান, ফলে কাঁধ স্থানচ্যূত হয়। এর কিছুদিন পরেই আরেকটি দৃশ্যের চিত্রায়ণ করতে গিয়ে তিনি তাঁর কাঁধে আবার আঘাত পান। কাঁধে বেশিমাত্রায় আঘাতের ফলে তাকে চলচ্চিত্র থেকে স্থায়ী অবসর নিতে হয়।

১৯৬৮ সালে রিভস তাঁর শেষ চলচ্চিত্রের কাজ করেন, চলচ্চিত্রটির নাম আই লিভ ফর ইয়োর ডেথ। টেলিভিশনে তাঁর সর্বশেষ উপস্থিতি ঘটে ২০০০ সালে। এঅ্যাই বায়োগ্রাফি: আর্নোল্ড শোয়ার্জনেগার — ফ্লেক্স অ্যাপিল নামের একটি টিভি অনুষ্ঠানে তিনি নিজ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Lyman, Rick (২০০০-০৫-০৫)। "Steve Reeves, 74, Whose 'Hercules' Began a Genre"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৫ 
  2. Lane, John Francis (২০০০-০৬-০৫)। "Steve Reeves: Putting muscle and myth in the movies"। Guardian News and Media Limited। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৫ 
  • Reeves, Steve; LeClaire, Chris (1999). WORLDS TO CONQUER - An Authorized Biography Of Steve Reeves.[১] Monomoy Press. p. 256.[২]

আরও পড়ুন সম্পাদনা

  • Chapman, David. "On The Cover: Steve Reeves", হার্ডগেইনার (ম্যাগাজিন), নভেম্বর, ১৯৯২.
  • LeClaire, Christopher. "WORLDS TO CONQUER - An Authorized Biography Of Steve Reeves",[১] December, 1999.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  1. http://www.stevereevesbiography.com
  2. আইএসবিএন ০-৯৬৭৬৭৫৪-১-৩