সৈয়দপুর উপজেলা

নীলফামারী জেলার একটি উপজেলা

সৈয়দপুর বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা

সৈয়দপুর
উপজেলা
মানচিত্রে সৈয়দপুর উপজেলা
মানচিত্রে সৈয়দপুর উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৫°৪৬′৪০″ উত্তর ৮৮°৫৩′৪২″ পূর্ব / ২৫.৭৭৭৭৮° উত্তর ৮৮.৮৯৫০০° পূর্ব / 25.77778; 88.89500 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরংপুর বিভাগ
জেলানীলফামারী জেলা
আয়তন
 • মোট১২১.৬৮ বর্গকিমি (৪৬.৯৮ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট২,৬৪,৪৬১
 • জনঘনত্ব২,২০০/বর্গকিমি (৫,৬০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৪৮.৫১%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫৫ ৭৩ ৮৫
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

অবস্থান ও আয়তন সম্পাদনা

আয়তন ১২১.৬৮ বর্গ কিলোমিটার। ভৌগোলিক অবস্থান অক্ষাংশ ২৫°৪৪ উত্তর এবং ২৬°১৯ উত্তর; দ্রাঘিমাংশ ৮৮°৪৪ পূর্ব এবং ৮৯°১২ পূর্ব। উত্তরে নীলফামারী সদর উপজেলাকিশোরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলাদিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলা, পূর্বে রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলাচিরিরবন্দর উপজেলা

প্রশাসনিক এলাকা সম্পাদনা

সৈয়দপুর উপজেলা ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।

পৌরসভা:

ইউনিয়ন সমূহ:

ইতিহাস সম্পাদনা

সৈয়দপুর থানা একটি অনেক পুরাতন থানা। ১৯১৫ সালে সৈয়দপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। অধিকাংশদের মতে ভারত বর্ষের কুচ বিহার থেকে আগত মুসলিম সাইয়্যেদ পরিবার প্রথমে এ অঞ্চলে বসবাস শুরু করেন। উক্ত সাইয়্যেদ পরিবারের নামানুসারে প্রথমত সাইয়্যেদপুর পরে সৈয়দপুর নামকরণ করা হয়। বিগত ০৭/১১/৮২ তারিখে মান উন্নীত থানা হিসেবে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। এ উপজেলার আয়তন ১২১.৬৮ বর্গ কিঃ মিঃ। ২০০১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী মোট লোক সংখ্যা - ২,৬৪,৪৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ-১,৩৩,৭৩৭ জন এবং মহিলা- ১,৩০,৭২৪ জন। শিক্ষার হার ৫৪.৬%। তদানিমতন পূর্ব পাকিস্তান আমলে সৈয়দপুর সিটি টাউন ছিল। কালের চক্রে তাহা বিলুপ্ত হইয়াছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে সিটি টাউনের চেয়েও কাজে কর্মে জেলা শহরের রুপ নিয়াছে। সৈয়দপুরে বিভাগ পূর্ব ভারত বর্ষের বিহার, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, আসাম, পশ্চিম বাংলা, রাজস্থান, কাশ্মিরের লোকজন স্থায়ীভাবে এখানে এসে বসবাস করছে। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ভাষাভাষি মানুষের একত্রে বসবাস।

অন্যান্য উপজেলা থেকে সৈয়দপুর একটি ব্যতিক্রমধর্মী উপজেলা । এ উপজেলার অধিকাংশ লোকজন শহর এলাকায় বসবাস করে।

এ শহরে একটি সেনানিবাস এবং বাংলাদেশের একমাত্র ই.এম.ই সেন্টার ও স্কুল আছে। এখানে একটি বিমান বন্দরও আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি বিভাগ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি উপ-বিভাগ রয়েছে। একটি ছোট আকারে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও রয়েছে। এখানে একটি বিসিক শিল্প এস্টেট রয়েছে। যেখানে পুরো এলাকা জুড়েই শিল্প কারখানা স্থাপিত হয়েছে এবং বর্তমানে চালু রয়েছে। এ এস্টেট সম্প্রসারণের জন্য ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জোর দাবী রয়েছে।

রেলওয়েকে কেন্দ্র করে এ শহর গড়ে উঠলেও সময়ের বিবর্তনে এ শহর উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। পরিবহনের ক্ষেত্রে সৈয়দপুর বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুরসহ ৮টি জেলার করিডোর বা নার্ভ সেন্টার হিসেবে পরিচিত।[২]

জনসংখ্যার উপাত্ত সম্পাদনা

উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,৬৪,৪৬১ জন, তন্মধ্যে পুরুষ ১,৩৩,৭৩৭ জন, নারী ১,৩০,৭২৪ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২,১৭৪ জন।[৩]

শিক্ষা সম্পাদনা

শিক্ষা ক্ষেত্রে এই উপজেলা অতি উন্নত। এজন্য পুরো রংপুর বিভাগে সৈয়দপুর শিক্ষানগরী হিসেবে বেশ পরিচিত। পার্শ্ববর্তী সকল উপজেলা এমনকি জেলা সদর থেকেও এটি উন্নত।এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো বরাবরই দিনাজপুর বোর্ডে শীর্ষ স্থান দখল করে।এখানের উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো হলো,বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,সৈয়দপুর সরকারি কলেজ,সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ , ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দপুর , লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ,সৈয়দপুর আল-ফারুক একাডেমি,সৈয়দপুর,সানফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজ ,সৈয়দপুর, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাই স্কুল, সৈয়দপুর, লক্ষনপুর স্কুল এন্ড কলেজ,সৈয়দপুর, সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সৈয়দপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজ।

অর্থনীতি সম্পাদনা

অধিবাসীদের অধিকাংশই ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন ব্যবসা ও শিল্প কারখানায় শ্রমিক ও কারিগর। গ্রামাঞ্চলের জনসাধারণের প্রধান পেশা কৃষি। উৎপন্ন ফসলের মধ্যে আমন ও বোরো ধান ছাড়াও গম, আলু ও অন্যান্য সবজিই প্রধান।


 
সৈয়দপুর উপজেলায় পুলিশ ক্লাবের নিকট একটি সড়কের দৃশ্য

রেলওয়ে কারখানা সম্পাদনা

মূলত রেলওয়ে কারখানাকে কেন্দ্র করে সৈয়দপুর শহরের গোড়া পত্তন হয়। এ রেলওয়ে কারখানাটি ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অধিবাসীদের অধিকাংশই ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন ব্যবসা ও শিল্প কারখানায় দক্ষ শ্রমিক ও কারিগর। এদের উৎপাদিত সামগ্রী দেশ ও বিদেশে সমাদৃত হয়েছে। রেলওয়ে সূত্রমতে ১৮৭০ সালে তৎকালীন আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের বৃহত্তম এ কারখানাটি গড়ে ওঠে। এর পাশেই একই সময় প্রায় ১৮ একর জমির উপর গড়ে তোলা হয় গুরুত্বপূর্ণ সেতু কারখানাটি (ব্রিজ ওয়ার্কশপ)। এর উদ্দেশ্য হলো সারাদেশের রেলপথে যেসব ব্রিজ, কালভার্ট রয়েছে তার উপকরণ, নির্মাণ ও স্থাপন এবং সরবরাহকরণ। এই সেতু কারখানাটির মাধ্যমে পশ্চিমাঞ্চল প্রায় দুই হাজার সেতু কালভার্ট মেরামত হচ্ছে। এর অন্যতম হলো পাবনার পাকশীতে অবস্থিত রেলওয়ে স্থাপনা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালমনিরহাটের তিস্তা রেল সেতু। বর্তমানে ওই কারখানাটিতে কাজ হয় রেল সেতুর গার্ডার নির্মাণ, রেলওয়ে স্থাপনার জন্য পানির ট্যাংক নির্মাণ, রেললাইনের জন্য পয়েন্ট অ্যান্ড ক্রেসিং ও ট্যাঙ্ক রেল সেটআপ এবং হার্ডিঞ্জ সেতুর জন্য এক্সপাঞ্জ সুইচ নির্মাণ। এছাড়াও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ওই সেতু কারখানায় রেলের সেতু ও কালভার্ট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ অব্যাহত রয়েছে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে সৈয়দপুর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. http://syedpur.nilphamari.gov.bd/node/124412[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] সৈয়দপুর উপজেলা তথ্য বাতায়ন
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ১৩ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১২ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা