সেভ্র চুক্তি

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে উসমানীয় সাম্রাজ্য ও মিত্রশক্তিদের মধ্যে শান্তি চুক্তি
(সেভ্রে চুক্তি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

সেভ্র চুক্তি (১০ আগস্ট ১৯২০) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর উসমানীয় সাম্রাজ্যপ্রথম বিশ্বযুদ্ধের মিত্রশক্তির মধ্যে শান্তি চুক্তি হিসেবে স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এটি কখনো বাস্তবায়িত হয়নি।[১][২] এর আগেই জার্মান সাম্রাজ্যের সাথে ভের্সাইয়ের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যাতে উসমানীয় বলয়ে জার্মান অর্থনৈতিক অধিকার ও উদ্যোগ খর্ব হয়। অন্যদিকে ফ্রান্স, ব্রিটেন ও ইটালি একই তারিখে “ত্রিপক্ষীয় চুক্তি” নামক একটি গোপন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।[৩] এই চুক্তি ব্রিটেনের তেল ও অর্থনৈতিক ছাড় নিশ্চিত করে এবং উসমানীয় সাম্রাজ্যে প্রাক্তন জার্মান উদ্যোগগুলোকে ত্রিপক্ষীয় কর্পোরেশনে পরিণত করে। ভের্সাইয়ের চুক্তিতে জার্মান সাম্রাজ্যের উপর আরোপিত শর্তের চাইতে সেভ্র চুক্তির শর্তগুলো অধিক কঠোর ছিল।[৪][৫] উন্মুক্ত আলোচনা প্যারিস শান্তি সম্মেলন থেকে শুরু করে পনের মাসের চেয়েও বেশি সময় ধরে চলে। লন্ডন সম্মেলনেও আলোচনা চলতে থাকে এবং ১৯২০ সালের এপ্রিলে সান রেমো সম্মেলনে প্রধান ব্যক্তিদের বৈঠকে তা নির্দিষ্ট আকার ধারণ করে। তবে ফ্রান্স, ইটালি ও গ্রেট ব্রিটেন ইতোমধ্যেই ১৯১৫ সাল থেকে উসমানীয় সাম্রাজ্যের বিভাজনের পরিকল্পনা করছিল। শক্তিগুলো তুর্কি জাতীয় আন্দোলনের ফলাফলের ব্যাপারে একমত হতে পারছিল না বলে দেরি হয়। তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলে সেভ্র চুক্তি পরিত্যক্ত হয় এবং স্বাক্ষর করা পক্ষগুলো ১৯২৩ সালে লুজানের চুক্তি দ্বারা তা প্রতিস্থাপন করে।

সেভ্র চুক্তি
The Treaty of Peace Between the Allied and Associated Powers and the Ottoman Empire
{{{image_alt}}}
পরিত্যক্ত সেভ্র চুক্তি অনুযায়ী উসমানীয় সাম্রাজ্যের বিভক্তি পরিকল্পনা
স্বাক্ষর১০ আগস্ট ১৯২০
স্থানসেভ্র, ফ্রান্স
শর্তউসমানীয় সাম্রাজ্য এবং প্রধান তিন মিত্রশক্তি কর্তৃক অনুমোদন।
স্বাক্ষরকারীঅক্ষ শক্তি
 উসমানীয় সাম্রাজ্য

মিত্র শক্তি
ফ্রান্স ফ্রান্স
 ইতালি
 জাপান
 যুক্তরাজ্য


আমানতকারীফরাসি সরকার
ভাষাসমূহফরাসি (প্রাথমিক), ইংরেজি, ইতালীয়
উইকিসংকলনে Treaty of Sèvres
উসমানীয় সাম্রাজ্যের পক্ষে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিবর্গ. বাম থেকে ডানে: রিজা তেভফিক; উজিরে আজম দামাত ফেরিদ পাশা; রাষ্ট্রদূত হাদি পাশা; এবং উসমানীয় শিক্ষামন্ত্রী রশিদ হালিস

ফ্রান্সের সেভ্র শহরের বিখ্যাত চীনামাটির দ্রব্যের কারখানার প্রদর্শন কক্ষে প্রতিনিধিরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।[৬][৭]

উসমানীয় সাম্রাজ্যের পক্ষে চারজন এতে স্বাক্ষর করেন, রিজা তেভফিক, উজিরে আজম দামাত ফেরিদ পাশা, রাষ্ট্রদূত হাদি পাশা, এবং সুলতান ষষ্ঠ মুহাম্মদের অনুমোদনপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী রশিদ হালিস

গুরুত্বপূর্ণ অক্ষশক্তির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এর বাইরে ছিল। ১৯১৮ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সাথে ব্রিস্ট লিটোভস্কে চুক্তির কারণে রাশিয়াও এর বাইরে ছিল। এর চুক্তির ফলে উজিরে আজম তালাত পাশার জেদের কারণে উসমানীয় সাম্রাজ্য ১৮৭৭-১৮৭৮ এর রুশ তুর্কি যুদ্ধের সময় হারানো ভূখণ্ড ফিরে পায়। স্যার জর্জ ডিক্সন গ্রাহাম ব্রিটেনের পক্ষে, আলেক্সান্ডার মিলেরেন্ড ফ্রান্সের পক্ষে ও কাউন্ট লেলিও বনিন লনগারে ইটালির পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

অক্ষশক্তির মধ্যে গ্রীস অঙ্কিত সীমানা মেনে নেয়নি।[৮] প্রথম আর্মেনিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতদের প্রেসিডেন্ট আভেটিস আহারোনিয়ান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. http://books.google.com.tr/books?id=cQadAAAAQBAJ&pg=PA45&dq=Treaty+S%C3%A8vres+was+never+ratified&hl=tr&sa=X&ei=zE2nU5GuAu2I7AbWqoGwBw&ved=0CF4Q6AEwCQ#v=onepage&q=Treaty%20S%C3%A8vres%20was%20never%20ratified&f=false
  2. http://books.google.com.tr/books?id=lEFSI-qJHSEC&pg=PA91&dq=Treaty+S%C3%A8vres+was+never+ratified&hl=tr&sa=X&ei=zE2nU5GuAu2I7AbWqoGwBw&ved=0CBsQ6AEwAA
  3. The Times (London), 27. Idem., Jan. 30, 1928, Editorial.
  4. Isaiah Friedman: British Miscalculations: The Rise of Muslim Nationalism, 1918–1925, Transaction Publishers, 2012, আইএসবিএন ১৪১২৮৪৭৪৯৪, page 217.
  5. Michael Mandelbaum: The Fate of Nations: The Search for National Security in the Nineteenth and Twentieth Centuries, Cambridge University Press, 1988, আইএসবিএন ৯৭৮০৫২১৩৫৭৯০৬, page 61 (footnote 55).
  6. Helmreich, Paul C. (১৯৭৪)। From Paris to Sèvres: The Partition of the Ottoman Empire at the Peace Conference of 1919–1920। Columbus, Ohio: Ohio State University Press। পৃষ্ঠা 320আইএসবিএন 9780814201701ওসিএলসি 694027 
  7. "The Treaty of Sèvres, 1920"। Harold B. Library, Brigham Young University 
  8. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৯ জুন ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 

আরও পড়ুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা