সিরিল ওয়াশব্রুক

ইংরেজ ক্রিকেটার

সিরিল ওয়াশব্রুক (ইংরেজি: Cyril Washbrook; জন্ম: ৬ ডিসেম্বর, ১৯১৪ - মৃত্যু: ২৭ এপ্রিল, ১৯৯৯) ক্লিথেরোর বারো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩৭ থেকে ১৯৫৬ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

সিরিল ওয়াশব্রুক
১৯৫১ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে সিরিল ওয়াশব্রুক
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামসিরিল ওয়াশব্রুক
জন্ম(১৯১৪-১২-০৬)৬ ডিসেম্বর ১৯১৪
বারো, ক্লিথেরো, ল্যাঙ্কাশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৭ এপ্রিল ১৯৯৯(1999-04-27) (বয়স ৮৪)
সেল, গ্রেটার ম্যানচেস্টার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৯৯)
১৪ আগস্ট ১৯৩৭ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৮ আগস্ট ১৯৫৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৩৩–১৯৫৯ল্যাঙ্কাশায়ার
১৯৪৬/৪৭–১৯৬৪এমসিসি
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৭ ৫৯২
রানের সংখ্যা ২,৫৬৯ ৩৪,১০১
ব্যাটিং গড় ৪২.৮১ ৪২.৬৭
১০০/৫০ ৬/১২ ৭৬/১৭৬
সর্বোচ্চ রান ১৯৫ ২৫১*
বল করেছে ৩৬ ৪৭৪
উইকেট
বোলিং গড় ৩৩.০০ ৪৪.১৪
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/২৫ ২/৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১২/– ২১২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৮ এপ্রিল ২০১৭

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। ১৯৪৭ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন।

কাউন্টি ক্রিকেট সম্পাদনা

ব্রিজনর্থ গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেন। ১৮ বছর বয়সে ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবে অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর পর ১৯৩৫ সালে দলের পূর্ণাঙ্গ সদস্য হন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনের ৫৯২টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করেছেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে খেলোয়াড়ী জীবন বিভক্ত হয়ে পড়ে। যুদ্ধ শুরু হলে তার খেলোয়াড়ী জীবনের বিঘ্ন ঘটে। রয়্যাল এয়ার ফোর্সে শারীরিক শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন।

১৯৪৮ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে আর্থিক সুবিধার আওতায় £১৪০০০ পাউন্ড-স্টার্লিং আয় করেন। ১৯৫৪ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রথম পেশাদার অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত হন ওয়াশব্রুক। এ দায়িত্বে তিনি ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত ছিলেন। ঐ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো আর্থিক সুবিধার আওতায় £১,৫২০ পাউন্ড-স্টার্লিং লাভ করেন।

টেস্ট ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৩৭ সালে ওভালে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি তার প্রথম টেস্ট খেলার জন্য মনোনীত হন। কিন্তু ঐ টেস্টে মাত্র ৯ ও অপরাজিত ৮* রান তোলার খেসারৎ হিসেবে পরবর্তী বছরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার জন্য মনোনীত হননি। ঐ বছরে তিনি ১৭২৪ রান তুলেন ও ব্যাটিং গড়ে জাতীয় পর্যায়ে পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।

১৯৪৬-৪৭ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া সফরে অবশেষে মনোনীত হন। হাটন ও ওয়াশব্রুক পরপর তিনটি শতরানের জুটি গড়েন। তার ক্রিকেট ক্যাপ পড়ার জন্টি ধরন অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ৫ টেস্টের ঐ সিরিজে ৫৪২ রান করেন তিনি। তন্মধ্যে জোহেন্সবার্গে সিরিজের ২য় টেস্টে নিজস্ব সর্বোচ্চ ১৯৫ রান তুলেন। লেন হাটনের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ৩৫৯ রান তুলেন যা ঐ সময়ের রেকর্ড ছিল।[১] অদ্যাবধি এ জুটির সংগৃহীত রান ইংল্যান্ডের পক্ষে টিকে রয়েছে।[২] ১৯৪৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়াশব্রুকের আঘাতপ্রাপ্তির কারণে প্রথম টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে জ্যাক রবার্টসনের

খেলার ধরন সম্পাদনা

দীর্ঘদিন যাবৎ খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। লেগসাইডে তার বেশ দখল ছিল। হুকস ও পুলের মারে ১৯৪০-এর দশকের শেষদিকে নিজেকে তুলে ধরেন। কভার অঞ্চলে তার ফিল্ডিংয়ে দক্ষতা ছিল। ওল্ড ট্রাফোর্ডে তার ফিল্ডিং ছিল বেশ প্রশংসনীয়।

লেন হাটনের সাথে জুটি গড়ে সুনাম কুড়ান। এ জুটি ৫১বার ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন যার ৩৭টিই ছিল টেস্টে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রায় পরবর্তী ছয় বছর ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি লিওনার্ড হাটন ও সিরিল ওয়াশব্রুকের উপর নির্ভরশীল ছিল।[৩]

অবসর সম্পাদনা

৪৪ বছর বয়সে তার খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপণ ঘটে। ১৯৫৬ সালে টেস্ট দল নির্বাচক মনোনীত হন। লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দল পরাজিত হলে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে তার দল। ৪১ বছর বয়সী ওয়াশব্রুক তার সতীর্থ নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যদেরকে কক্ষ ত্যাগ করতে বলেন। হেডিংলিতে তৃতীয় টেস্টে খেলার ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি। ১৭/৩ থাকাবস্থায় তিনি পিটার মে’র সাথে জুটি গড়ে ১৮৭ রানের জুটি গড়েন। ওয়াশব্রুক করেন ৯৮ রান। ইংল্যান্ড খেলায় জয় পেলে দলে তিনি অবস্থান করেন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে চতুর্থ টেস্টে করেন মাত্র ৬ রান। ঐ টেস্টে জিম লেকার রেকর্ডভাঙ্গা ১৯ উইকেট দখল করেন ও দলকে ২-১ নিয়ে যান। চূড়ান্ত ও পঞ্চম টেস্ট ওভালে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ওয়াশব্রুক শূন্য রান তুললেও খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হন ও অ্যাশেজ সিরিজে জয় পায়।

১৯৪৭ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন তিনি।[৪] ১৯৮৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ল্যাঙ্কাশায়ারের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২৭ এপ্রিল, ১৯৯৯ তারিখে গ্রেটার ম্যানচেস্টারের সেল এলাকায় ৮৪ বছর বয়সে সিরিল ওয়াশব্রুকের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Test matches - Highest partnership for the first wicket
  2. Test matches - Highest partnerships by wicket for England
  3. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 141আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  4. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 182–183। আইএসবিএন 1-869833-21-X 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা