সিকান্দার লোদি

দিল্লি সালতানাতের ৩০তম সুলতান এবং লোদী রাজবংশের ২য়

সিকান্দার লোদি (মৃত্যু ২১ নভেম্বর ১৫১৭) (জন্মনাম নাজিম খান) ছিলেন দিল্লির লোদি বংশীয় সুলতান। তার পিতা বাহলুল খান লোদির মৃত্যুর পর তিনি সুলতান হন। লোদি রাজবংশের সবচেয়ে সফল শাসক হওয়ার পাশাপাশি তিনি ফারসি ভাষার একজন কবিও ছিলেন। তিনি ৯০০০ পংতির দিওয়ান রচনা করেছিলেন।

সিকান্দার লোদি
দিল্লি সালতানাতের সুলতান
রাজত্ব১৪৮৯–১৫১৭
রাজ্যাভিষেক১৭ জুলাই ১৪৮৯
পূর্বসূরিবাহলুল খান লোদি
উত্তরসূরিইবরাহিম লোদি
মৃত্যু২১ নভেম্বর ১৫১৭
সমাধি
বংশধরইবরাহিম লোদি
রাজবংশলোদি রাজবংশ
পিতাবাহলুল খান লোদি
ধর্মইসলাম

জীবন সম্পাদনা

 
কুতুব মিনারের শীর্ষ দুই তলা সিকান্দার লোদি মার্বেল দিয়ে পুনর্নির্মাণ করেন।
 
সিকান্দার লোদির মুদ্রা।

সিকান্দার লোদি ছিলেন সুলতান বাহলুল খান লোদির পুত্র। তার মা ছিলেন সিরহিন্দের একজন হিন্দু স্বর্ণকারের কন্যা। পিতার দিক থেকে তিনি পশতুন বংশোদ্ভূত।

পিতার মৃত্যুর পর সিকান্দার লোদি সুলতান হন। ক্ষমতায় আরোহণের সময় তাকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় কারণ তার প্রতি পিতা বাহলুল লোদির মনোনয়ন সত্ত্বেও তার বড় ভাই জাওনপুরের আঞ্চলিক শাসক বারবাক শাহ ক্ষমতা দাবি করেন। তবে ব্যাপক রক্তপাত ছাড়াই সিকান্দার লোদি ক্ষমতা গ্রহণে সফল হন এবং তার ভাইকে জাওনপুরে শাসন চালানোর অনুমতি দেন। চাচা আলম খানের বিরোধও তিনি মিটিয়ে ফেলেন।

সিকান্দার লোদি সফল শাসক ছিলেন। তার সময় বাণিজ্যের উন্নতি হয়। তিনি লোদিদের শাসিত অঞ্চল গোয়ালিওরবিহার পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের সাথে সিকান্দার লোদি সন্ধি করেছিলেন। ১৫০৩ সালে আগ্রা শহর নির্মাণের জন্য তিনি অনুমোদন দেন।

গুলরুখি ছদ্মনামে সিকান্দার লোদি ফারসি কবিতা চর্চা করতেন। তিনি হিসাবরক্ষণে আলাদা পদ্ধতির সূচনা করেন। বিচার ও কৃষিকাজে তিনি বিশেষ যত্ন নেন এবং আবাদি জমি পরিমাপের ক্ষেত্রে গাজিয়ে সিকান্দারি নামক পদ্ধতির প্রবর্তন করেন। হিসাবরক্ষণের ক্ষেত্রে তিনি ফারসি ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।

গোয়ালিওর দুর্গ জয়ের জন্য সিকান্দার লোদি প্রচেষ্টা চালান এবং তাতে পাঁচবার আক্রমণ করেন। তবে প্রতিবার তিনি ব্যর্থ হন। আগ্রাকে তিনি দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলেন। দিল্লি থেকে গোয়ালিওর পৌছাতে দীর্ঘ সময় লাগা এর কারণ হিসেবে কাজ করেছে। সিকান্দার লোদির সময় আগ্রা ভারতের শিরাজ বলে ক্ষেত ছিল।[১] চূড়ান্ত পর্যায়ে গোয়ালিওরের কাছে নারোয়ার নামক ক্ষুদ্র অঞ্চল তিনি আক্রমণ করেন এবং নারোয়ার দুর্গ ১১ মাস ধরে অবরোধ করে রাখা হয়। এরপর খাদ্য শেষ হয়ে গেলে দুর্গ সিকান্দার লোদির কাছে আত্মসমর্পণ করে। এরপর তিনি আবার গোয়ালিওর আক্রমণ করেন। তবে এবারও তিনি ব্যর্থ হন।

১৫১৭ সালে সিকান্দার লোদি মৃত্যুবরণ করেন। দিল্লির লোদি উদ্যানে তাকে দাফন করা হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

পূর্বসূরী
বাহলুল খান লোদি
দিল্লির সুলতান
১৪৮৯–১৫১৭
উত্তরসূরী
ইবরাহিম লোদি

'