বিশ্লেষণী গণিতে সাংখ্যিক সমাকলন বা সাংখ্যিক যোগজীকরণ হলো নির্দিষ্ট যোগজের সাংখ্যিক মান হিসাবের জন্য অ্যালগরিদম জগতের অন্তর্ভুক্ত এক বৃহৎ পরিবার। বিস্তৃত পরিসরে এই পরিভাষাটি কখনো কখনো ব্যবকলনীয় সমীকরণের সাংখ্যিক সমাধানকে বোঝাতেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই নিবন্ধের মূল উদ্দেশ্য হলো নির্দিষ্ট যোগজের গণনা।

দ্বারা সংজ্ঞায়িত বক্ররেখার নিচে থাকা ক্ষেত্রটির মান -এর সাংখ্যিক আসন্ন মান নির্ণয়ের নিমিত্তে সাংখ্যিক সমাকলন প্রয়োগ করা হয়।

সাংখ্যিক ক্ষেত্রকলন (numerical quadrature বা সংক্ষেপে quadrature) পরিভাষাটি সাংখ্যিক সমাকলন-এর জন্য প্রায় কাছাকাছি একটি প্রতিশব্দ; বিশেষকরে একমাত্রিক যোগজের ক্ষেত্রে সাংখ্যিক সমাকলন শব্দগুচ্ছের পরিবর্তে কোয়ডরেচার শব্দটি ব্যবহার করা হয়। কিছু লেখক একের অধিক মাত্রার সাংখ্যিক সমাকলনকে কিউবেচার[১] হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন, অন্যান্যরা উচ্চমাত্রার সমাকলনকে কোয়ডরেচার হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।

সাংখ্যিক সমাকলনের মৌলিক সমস্যা হলো নির্দিষ্ট নির্ভুলতার একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে নির্দিষ্ট যোগজ এর একটি আসন্ন সমাধান নিরূপন। যদি f(x) ফাংশনটি "ক্ষুদ্র মাত্রায় সমাকলন করা হয়েছে" এরূপ একটি সরল ফাংশন হয় এবং যদি সমাকলনের ডোমেইন সীমাবদ্ধ হয়, তাহলে কাঙ্খিত নির্ভুলতার মধ্যে যোগজটি কী হবে তা অনুমানের ক্ষেত্রে অনেক পদ্ধতি রয়েছে।

ইতিহাস সম্পাদনা

সর্বপ্রথম ১৯১৫ সালে ডেভিড গিবের[২] লেখা "অ্যা কোর্স ইন ইন্টারপোলেশন অ্যান্ড নিউমেরিক ইন্টিগ্রেশন" বইয়ে সাংখ্যিক সমাকলনের ধারণাটি নজরে আসে।

কোয়ডরেচার (ক্ষেত্রকলন) শব্দটি গণিতে ব্যবহৃত একটি ঐতিহাসিক পরিভাষা যার অর্থ ক্ষেত্রের পরিমাপ নির্ণয়। যে সমস্যাগুলো গাণিতিক বিশ্লেষণের মূল উৎপত্তি, ক্ষেত্রকলনের সমস্যাগুলো সেগুলোরই একটি হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। প্রাচীন গ্রিক গণিতবিদরা কোন ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল গণনাকে যে একই পরিমান ক্ষেত্রবিশিষ্ট একটি বর্গের জ্যামিতিক গঠনের প্রক্রিয়া হিসেবে উপলব্ধি করেছিল তা পিথাগোরাসের মতবাদ অনুসারে বোঝা যায়। এই কারণে এ প্রক্রিয়াটির নাম হয়েছিল কোয়ডরেচার (যার অর্থ কোন কাঠামোর তুল্যমান বর্গক্ষেত্র স্থিরীকরণ অথবা, কোন কাঠামোকে তুল্যমান বর্গক্ষেত্রে রূপান্তর। এটি সেই প্রক্রিয়া যা একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের কিংবা সেই কাঠামোটির সমান ক্ষেত্রফলযুক্ত একটি বর্গ গঠনের প্রক্রিয়াকে বোঝায়)। উদাহরণস্বরূপ: বৃত্তের কোয়ডরেচার, হিপোক্রেটিসের লিউন, পরাবৃত্তের কোয়ডরেচার। ক্ষেত্রের এই গঠন অবশ্যই রুলার ও কম্পাস পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পাদন করতে হবে; এটি আদর্শীকৃত রুলার ও কম্পাসের সাহায্যে সাধারণ জ্যামিতিক কাঠামোসমূহ অঙ্কনের একটি প্রক্রিয়াবিশেষ।

প্রাচীন ব্যাবিলনবাসীরা অয়নবৃত্ত বরাবর বৃহস্পতি গ্রহের গতির সমাকলনে ট্রাপিজয়ডাল পদ্ধতি ব্যবহার করত। ব্যাবিলনের জ্যোতির্বিদরা সময়-বেগ লেখচিত্রের মাধ্যমে বৃহস্পতির অবস্থান নির্ণয় করতেন।

 
গুণোত্তর গড় নির্ণয়ের প্রাচীন পদ্ধতি। a ও b বাহু দুটি H বিন্দুতে মিলিত হয়েছে। H বিন্দুতে অঙ্কিত লম্বটি (a + b)-কে ব্যাস ধরে অঙ্কিত বৃত্তকে B বিন্দুতে ছেদ করেছে। এমতাবস্থায়, BH হলো a ও b-এর গুণোত্তর গড়।

ab বাহুবিশিষ্ট কোনো আয়তক্ষেত্রের একটি কোয়ডরেচার গঠনের করতে হলে   বাহু বিশিষ্ট একটি বর্গ তৈরি করতে হবে, যেখানে এই   হচ্ছে ab-এর গুণোত্তর গড়। আমরা উপর্যুক্ত উদ্দেশ্যে এই সত্য ঘটনাটিকে প্রয়োগ করতে পারি: ab এর সমষ্টির সমান ব্যাস বিশিষ্ট বৃত্ত আঁকা হলে বাহুদ্বয়ের সাধারণ বিন্দু থেকে অঙ্কিত লম্বটি বৃত্তকে যে বিন্দুতে স্পর্শ করে সেই বিন্দু থেকে বাহুদ্বয়ের সাধারণ বিন্দুর দূরত্ব (তথা উচ্চতা BH) ab বাহুদ্বয়ের জ্যামিতিক গড়ের সমান হবে। অনুরূপ জ্যামিতিক কাঠামোর বিনির্মানের মাধ্যমে সামান্তরিক ও ত্রিভুজ ক্ষেত্রের কোয়ডরেচারও সমাধান করা যায়।

 
পরাবৃত্তের একটি কর্তিত অংশের ক্ষেত্রফল।

বক্ররেখা-বেষ্টিত চিত্রের ক্ষেত্রে কোয়ডরেচারের সমস্যাগুলো অনেক বেশি দুরূহ। রুলার ও কম্পাস প্রয়োগ করে বৃত্তের কোয়ডরেচার অঙ্কন ও সমাধান যে অসম্ভব তা ১৯শ শতাব্দীতেই প্রমাণিত হয়েছে। তবুও এই পদ্ধতিতে কিছু চিত্রের কোয়ডরেচার প্রতিপাদন সম্ভব; যেমন: হিপোক্রেটিসের লিউনআর্কিমিডিসের সম্পাদিত গোলকের পৃষ্ঠতলের কোয়ডরেচার ও পরাবৃত্তের কর্তিত অংশের কোয়ডরেচার প্রাচীন গাণিতিক বিশ্লেষণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্জন।

  • একটি গোলকের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল গোলকটির একটি মহাবৃত্তের ক্ষেত্রফলের চারগুণের (quadruple) সমান।[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] (কীভাবে?)
  • সরল রেখার দ্বারা কর্তিত কোনো পরাবৃত্তের একটি ক্ষুদ্র অংশের ক্ষেত্রফল ঐ অংশের অন্তর্লিখিত ত্রিভুজের ক্ষেত্রফলের ৪/৩ গুণ।

কোয়ডরেচারের ফলাফলগুলোর প্রমাণের জন্য আর্কিমিডিস ইউডক্সাসের Method of exhaustion প্রয়োগ করেছেন।

মধ্যযুগীয় ইউরোপে কোয়ডরেচার বলতে যে কোন পদ্ধতিতে ক্ষেত্রফল নির্ণয়কে বোঝাত। তখন প্রায়ই সচরাচর মেথড অব ইনডিভিজিবলস ব্যবহার করা হতো, যা ছিল অপেক্ষাকৃত কম কঠিন, সেই সাথে অনেক সহজ ও শক্তিশালী। এর সাহায্যে গ্যালিলিও গ্যালিলিগিলস ডি রোবার্ভাল চক্রজের (cycloid) চাপ বের করেন, গ্রেগোয়ার ডি সেন্ট ভিনসেন্ট অধিবৃত্তের অন্তর্গত ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের অনুসন্ধান চালান (ওপাস জিওমেট্রিকাম, ১৬৪৭) এবং গ্রেগোরি দ্য সেন্ট ভিনসেন্টের ছাত্র ও ভাষ্যকার আলফনস অ্যান্টনিও ডি সারাসা এই আলোচ্য বিষয়ের সাথে লগারিদমের সম্পর্ক লিপিবদ্ধ করেন।

জন ওয়ালিস এই পদ্ধতির বীজগাণিতিক রূপ দেন: তিনি তার এরিথমেটিকা ইনফিনিটোরাম (১৬৫৬) সিরিজে এটা লিপিবদ্ধ করেন, যেটাকে এখন আমরা নির্দিষ্ট যোগজ বলি। উপরন্তু তিনি এগুলোর মানও বের করেন। আইজাক ব্যারোজেমস গ্রেগরি একধাপ এগিয়ে বীজগাণিতিক বক্ররেখা ও কুণ্ডলীর (spiral বা সর্পিলাকার) কোয়ডরেচারের উন্মেষ ঘটান। সমতলীয় বক্ররেখার সমাক্ষীয় ঘূর্ণনে ঘনবস্তুর কাঠামো পাওয়া যায় (সলিড অব রিভোলিউশন)। ক্রিস্টিয়ান হাইগেনস সফলতার সাথে এমন ঘনবস্তুর জন্যও কোয়ডরেচার প্রতিপাদন করেন।

সেন্ট ভিনসেন্ট ও ডি সারাসার প্রতিপাদিত অধিবৃত্তের কোয়ডরেচার নতুন এক ফাংশন প্রাকৃতিক লগারিদমের জন্ম দেয়, যা ক্রিটিকালি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

সমাকলনীয় ক্যালকুলাসের উদ্ভাবনের ফলে ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের জন্য একটি সার্বজনীন পদ্ধতির আবির্ভাব ঘটে। এর ফলশ্রুতিতে কোয়ডরেচার পরিভাষাটি গতানুগতিক হয়ে যায় এবং এর পরিবর্তে সাম্প্রতিকতম "computation of a univariate definite integral" (অবিচ্ছিন্ন নির্দিষ্ট যোগজের গণনা) শব্দগুচ্ছটি প্রতিস্থাপনীয় ও অধিকতর প্রচলিত হয়ে পড়ে।

সংখ্যাভিত্তিক সংকলনের প্রয়োজনীয়তা সম্পাদনা

প্রতিঅন্তরজ নির্ণয়ের মাধ্যমে বিশ্লেষণী সমাকলনের বিপরীতে নিম্নোক্ত কয়েকটি কারণে সংখ্যাভিত্তিক সমাকলন নির্ণয় করা হয়:

  1. যে ফাংশনটির সমাকলন করা হয় তাকে ইন্টিগ্রান্ড বলে। ইন্টিগ্রান্ড f(x) এর মান কেবলমাত্র নির্দিষ্ট বিন্দুতে যেমন: স্যাম্পলিংয়েরর মাধ্যমে প্রাপ্ত বিন্দুতে জানা যায়। এ কারণে এম্বেডেড সিস্টেমে ও অন্যান্য কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে সাংখ্যিক সমাকলনের প্রয়োজন হতে পারে।
  2. কোন ইন্টিগ্রান্ডের জন্য একটি সূত্র জানা গেলেও মৌলিক ফাংশন হবে এরূপ প্রতিঅন্তরজ খুঁজে পাওয়া দুঃসাধ্য কিংবা অসম্ভব হতে পারে। যেমন: f(x) = exp(−x2) হচ্ছে অনুরূপ একটি ইন্টিগ্রান্ডের উদাহরণ, যার প্রতিঅন্তরজটিকে (যেটি একটি ভুল ফাংশন, এটি আবার ধ্রুবকের গুণক) মৌলিক ফাংশনের আকারে লেখা সম্ভব নয়।
  3. কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি প্রতীকী প্রতিঅন্তরজ পাওয়া গেলেও প্রতিঅন্তরজ নির্ণয়ের চেয়ে সাংখ্যিক আসন্নমান বের করা অধিকতর সহজ। যদি প্রতিঅন্তরজকে অসীম ধারায় অথবা উৎপাদকের আকারে দেওয়া হয়, অথবা প্রতিঅন্তরজটির মান নির্ণয়ের জন্য এমন একটি বিশেষ ফাংশনের প্রয়োজন পড়ে যা পাওয়া সম্ভব নয় তাহলে সাংখ্যিক সমাকলনের ইস্যুটি জরুরী হয়ে পড়ে।

একমাত্রিক ইন্টিগ্রাল বা যোগজ নির্ণয়ের পদ্ধতি সম্পাদনা

সাধারণভাবে সাংখ্যিক সমাকলন পদ্ধতিকে কোনো ইন্টিগ্রাল বা যোগজের অনুমানের নিমিত্তে বা আসন্ন মান নির্ণয়ের নিমিত্তে ইন্টিগ্রান্ডের (যে ফাংশনটির সমাকলন করা হয়) মাননির্সধারণমূহের একত্রিতকরণ হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে। একটি সসীম সেটের যেসব বিন্দুতে ইন্টিগ্রান্ডের মান পাওয়া যায় বা যেসব বিন্দুতে ইন্টিগ্রান্ডের মাননির্ধারিত হয় তাদেরকে যোগজীকরণ বিন্দু বা সমাকলন বিন্দু বলা হয়। সমাকলন বিন্দুগুলোর সসীম সেটে সমাকলন বিন্দুগুলোর জন্য ইন্টিগ্রান্ডের প্রাপ্ত মানগুলোর ওয়েটেড যোগফল (weighted sum) হতে ইন্টিগ্রাল বা যোগজের আসন্ন মান নির্ণয় করা হয়। প্রয়োগকৃত পদ্ধতি ও আসন্ন মানের বিশুদ্ধতার উপর সমাকলন বিন্দুসমূহ ও ওয়েটস (weights) নির্ভর করে।

ইন্টিগ্রান্ড-মাননির্ধারণসমূহের সংখ্যার একটি ফাংশন হিসেবে আসন্ন ত্রুটির আচরণের অধ্যয়ন-অনুসন্ধান করা যেকোনো সাংখ্যিক সমাকলন পদ্ধতির বিশ্লেষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যে পদ্ধতিতে মান নির্ধারণের ক্ষেত্রে অল্প সংখ্যক মাননির্ধারণের জন্য ক্ষুদ্র ভুল উৎপন্ন হয় তাকে সাধারণত শ্রেয়তর হিসেবেই গণ্য করা হয়। ইন্টিগ্রান্ডের মাননির্ধারণের সংখ্যা কমানো হলে সমাকলন সংশ্লিষ্ট গাণিতিক প্রক্রিয়ার সংখ্যাও হ্রাস পায়, ফলে মোট রাউন্ড-অফ ভুল কমে যায়। এছাড়াও, প্রতিটি মাননির্ধারণ সময় নেয় এবং ইন্টিগ্রান্ড ইচ্ছামত জটিল হতে পারে।

যদি ইন্টিগ্রান্ডটি যুক্তিষঙ্গতভাবে ভালো আচরণ করে (এই ধরনের ইন্টিগ্রান্ডের মধ্যে রয়েছে অংশক্রমে অবিচ্ছিন্ন ফাংশনসীমাবদ্ধ পরিবর্তনশীলতার ফাংশন), তাহলে খুবই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রবৃদ্ধির দ্বারা ইন্টিগ্রান্ডের মাননির্ধারণের মাধ্যমে একটি ব্রুট ফোর্স ধরনের সাংখ্যিক সমাকলন করা সম্ভব হবে।

ইন্টারপোলেটিং ফাংশনভিত্তিক কোয়ডরেচার সূত্রাবলী সম্পাদনা

সহজে সমাকলন করা যায় এমন ইন্টারপোলেটিং ফাংশনসমূহের গঠনের মাধ্যমে অসংখ্য কোয়ডরেচার সূত্র প্রতিপাদন করা যায়। সাধারণভাবে এই ইন্টারপোলেটিং ফাংশনগুলো বহুপদী হয়ে থাকে। খুবই উচ্চ মাত্রার বহুপদীগুলো বৃহৎ পাল্লায় স্পন্দিত হওয়ার প্রবণতা প্রদর্শন করে, তাই বাস্তবিক ক্ষেত্রে কেবল নিম্ন মাত্রার বহুপদী বিশেষকরে রৈখিক ও দুই মাত্রার (quadratic) বহুপদী ব্যবহার করা হয়।

 
আয়তক্ষেত্র সূত্রের চিত্রায়ন।

এই ধরনের একটি সরলতম পদ্ধতিতে ইন্টারপোলেটিং ফাংশনটিকে একটি ধ্রুব ফাংশন (যা শুন্য মাত্রার একটি বহুপদী) হতে দেওয়া হয়, যে ধ্রুব ফাংশনটি আবার   বিন্দুগামী হয়। কোয়ডরেচার নিয়মসমূহের মধ্যে এই ধরনের একটি সরলতম পদ্ধতিকে মধ্যবিন্দু সূত্র বা আয়তক্ষেত্র সূত্র বলা হয়। গাণিতিকভাবে:

 
 
ট্রাপিজয়ডাল সূত্রের চিত্রায়ন।

ইন্টারপোলেটিং ফাংশনটি    বিন্দুগামী একটি সরলরেখা (তথা একটি অ্যাফাইন ফাংশন, যা একমাত্রার বহুপদী বা রৈখিক বহুপদী) হলে একে ট্রাপিজয়ডাল সূত্র বলে। গাণিতিকভাবে:

 
 
সিম্পসনের সূত্রের চিত্রায়ন।

এই সূত্রগুলোর প্রতিটির ক্ষেত্রে, আমরা   ব্যবধিকে   সংখ্যক উপব্যবধিতে ভেঙে, প্রত্যেকটি উপব্যবধির জন্য আসন্ন মান গণনা করে প্রাপ্ত সব মান যোগ করে আরও নিঁখুত আসন্ন মান পেতে পারি। এটাকে যৌগিক সূত্র বা সম্প্রসারিত সূত্র বা আবর্তী সূত্র বলে। উদাহরণস্বরূপ, যৌগিক ট্রাপিজয়ডাল সূত্রকে নিম্নরূপে লেখা যায়:

 

যেখানে উপব্যবধির আকার হলো:

  যখন,   

এখানে   সম-দৈর্ঘ্যের উপব্যবধি ব্যবহার করা হয়েছে, কিন্তু তৎপরিবর্তে   দৈর্ঘ্যের উপব্যবধিও ব্যবহার করা যাবে।

  ব্যবধিতে সমদূরত্বের বিন্দুসমূহে মান-নির্ধারিত বহুপদীগুলোর সাথে ইন্টারপোলেশন হতে নিউটন-কোটস সূত্রগুলো পাওয়া যায়, যার উদাহরণের মধ্যে পড়ে আয়তক্ষেত্র সূত্র ও ট্রাপিজয়ডাল সূত্র। সিম্পসনের সূত্র যা আদতে দুই ক্রমের (মাত্রার) বহুপদী ভিত্তিক একটি সমীকরণ, সেটিও একটি নিউটন-কোটস সূত্র।

সমদূরত্বের বিন্দুযুক্ত কোয়ডরেচার সূত্রগুলোতে নেস্টিংয়ের উপযোগী খুবই সুবিধাজনক গুণাবলি বিদ্যমান। প্রতিটি উপবিভাজিত ব্যবধির সংশ্লিষ্ট সূত্র সকল সাম্প্রতিক বিন্দু ধারণ করে, ফলে ঐ ইন্টিগ্রান্ড মানসমূহকে পুনর্ব্যবহার করা যায়।

যদি ব্যবধিকে ইন্টারপোলেশন বিন্দুসমূহের মধ্যে পরিবর্তন করা হয় তবে অন্য এক ধরনের কোয়ডরেচার সূত্র পাওয়া যাবে, যেমন: গাউসিয়ান কোয়ডরেচার সূত্রসমূহ। সাধারণত গাউসিয়ান কোয়ডরেচার সূত্র নিউটন-কোটস সূত্র অপেক্ষা অধিকতর নিঁখুত। কোন ফাংশনের সকল প্রকার অন্তরজ তার ডোমেইনের সর্বত্র পাওয়া গেলে একে স্মুথ ফাংশন বলা হয়। যদি ইন্টিগ্রান্ড একটি স্মুথ ফাংশন হয় অর্থাৎ একে পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবকলন করা যায় তবে গাউসিয়ান কোয়ডরেচারের ক্ষেত্রে নিউটন-কোটস সূত্রের সমসংখ্যক ফাংশন মান-নির্ধারণ করতে হবে। পরিবর্তনশীল ব্যবধির অন্যান্য কোয়ডরেচার নিয়মসমূহের মধ্যে ক্লিন'শ কার্টিস কোয়ডরেচারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ক্লিন'শ কার্টিস কোয়ডরেচারকে ফেজের কোয়ডরেচারও বলা হয় এবং এটি নেস্টিং প্রদর্শন করে।

গাউসিয়ান কোয়ডরেচার সূত্রগুলো নেস্ট ক্রিয়া দেয় না তবে এর সাথে সম্পর্কযুক্ত গস-ক্রনরড কোয়ডরেচার সূত্রগুলো নেস্ট ক্রিয়া দেয়।

মধ্যবিন্দু সূত্রের সাধারণীকৃত রূপ সম্পাদনা

নিচে মধ্যবিন্দু সূত্রের একটি সাধারণীকৃত ফর্মুলা দেওয়া হল:

 

অথবা,

 

যেখানে   হচ্ছে  তম ডেরিভেটিভ বা অন্তরজ। উদাহরণস্বরূপ: মধ্যবিন্দু সূত্রের সাধারণীকৃত ফর্মুলাটিতে    প্রতিস্থাপন করলে আমরা ইনভার্স ট্যানজেন্ট এর নিম্নরূপ একটি সমীকরণ পাব।

 

যেখানে,   হচ্ছে কাল্পনিক একক এবং  

যেহেতু প্রতিটি অযুগ্ম  -এ ইন্টিগ্রান্ডের লব   হয়, তাই মধ্যবিন্দু সূত্রের সাধারণীকৃত ফর্মুলাটিকে নিম্নরূপে পুনর্গঠন করা যায়:

 

ম্যাথমেটিকা কোডের নিম্নলিখিত নমুনা, ইনভার্স ট্যানজেন্ট এবং    বিন্দুতে এর সংক্ষেপিত (truncated) আসন্নমানের যে পার্থক্যসূচক প্লট তৈরি করে তা হলো:

f[theta_, x_] := theta/(1 + theta^2*x^2);

aTan[theta_, M_, nMax_] := 
    2*Sum[(Function[x, Evaluate[D[f[theta, x], {x, 2*n}]]][(m - 1/2)/
        M])/((2*n + 1)!*(2*M)^(2*n + 1)), {m, 1, M}, {n, 0, nMax}];

Plot[{ArcTan[theta] - aTan[theta, 5, 10]}, {theta, -Pi, Pi}, 
 PlotRange -> All]

  ব্যবধির বাইরে সংজ্ঞায়িত   ফাংশনটির ইন্টিগ্রাল হবে:

 

সুতরাং,   ধরে মধ্যবিন্দু সমাকলনের সাধারণীকৃত ফর্মুলাটিকে উপর্যুক্ত ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা সম্ভব।

অভিযোজিত অ্যালগরিদম সম্পাদনা

ডোমেইনের সকল বিন্দুতে f(x) ফাংশনের অনেক ডেরিভেটিভ না থাকলে অথবা ডেরিভেটিভগুলো বৃহৎ হয়ে গেলে গাউসিয়ান কোয়ডরেচার প্রায়শই অপর্যাপ্ত হয়ে ওঠে। এই ক্ষেত্রে, নিম্নরূপ একটি অ্যালগরিদম ভাল ফল প্রদান করে:

def calculate_definite_integral_of_f(f, initial_step_size):
    '''
    This algorithm calculates the definite integral of a function
    from 0 to 1, adaptively, by choosing smaller steps near
    problematic points.
    '''
    x = 0.0
    h = initial_step_size
    accumulator = 0.0
    while x < 1.0:
        if x + h > 1.0:
            h = 1.0 - x # At end of unit interval, adjust last step to end at 1.
        if error_too_big_in_quadrature_of_f_over_range(f, [x,x+h]):
            h = make_h_smaller(h)
        else:
            accumulator += quadrature_of_f_over_range(f, [x,x+h])
            x += h
            if error_too_small_in_quadrature_of_over_range(f, [x,x+h]):
                h = make_h_larger(h) # Avoid wasting time on tiny steps.
    return accumulator

কিছু অ্যালগরিদমের বিস্তারিত বিবরণের জন্য সতর্ক চিন্তার দরকার পড়ে। অনেক ক্ষেত্রেই, একটি ব্যবধির বাইরে f(x) ফাংশনের জন্য কোয়ডরেচারের ভুল অনুমান করা কঠিন নয় বরং সুস্পষ্ট। একটি জনপ্রিয় সমাধান হল: কোয়ডরেচারের দুটি পৃথক সূত্র প্রয়োগ করে তাদের পার্থক্যকে কোয়ডরেচারের ভুলের আনুমানিক পরিমাণ হিসেবে ব্যবহার করা। অন্য সমস্যাটি হল কোনটি “অতি বৃহৎ” বা “অতি ক্ষুদ্র” তা নির্ণয় করা। “অতি বৃহৎ” এর জন্য একটি “স্থানীয় নির্ণায়ক” হবে এমন, কোয়ডরেচার ভুলটি t.h অপেক্ষা বৃহৎ হওয়া উচিত নয়। এখানে t একটি বাস্তব সংখ্যা এবং একে আমরা সার্বজনীন ভুল হিসেবে ধরতে আগ্রহী। পুনরায়, যদি h ইতিমধ্যেই ক্ষুদ্র হয়ে থাকে ও কোয়ডরেচার ভুলটি স্পষ্টতই বৃহৎ হয়, তবে h কোয়ডরেচার ভুলকে ক্ষুদ্র করতে কার্যকর নাও হতে পারে। একটি “সার্বজনীন নির্ণায়ক” হবে এমন, সকল ব্যবধির ভুলগুলোর যোগফল t অপেক্ষা ক্ষুদ্র হওয়া উচিত নয়। যেহেতু আসন্নমান গণনা করার পর ভুলের গণনা করা হয়, তাই এই ধরনের ভুল বিশ্লেষণকে সাধারণত পোস্টেরিওরি বলা হয়।

অ্যালেক্সান্ড্রা ইলমার ফরসিথ এবং অন্যান্য কয়েকজন অভিযোজিত কোয়ডরেচারের জন্য হিউরিস্টিকস নিয়ে আলোচনা করেছেন।

এক্সট্রাপোলেশন পদ্ধতি সম্পাদনা

নিউটন-কোটস জাতীয় কোয়ডরেচার সূত্রের নির্ভুলতা সাধারণত মানবিন্দুসমূহের (evaluation point) একটি ফাংশন। সচরাচর, মানবিন্দুর সংখ্যা বাড়ানো হলে, অথবা সমতুল্যভাবে প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপের প্রস্থ হ্রাস করা হলে ফলাফল আরও নিঁখুত হবে। এই প্রশ্নের উদয় হওয়া স্বাভাবিক যে, যদি আমরা ধাপমূহের প্রস্থ শুন্যের কাছাকাছি বিবেচনা করি তাহলে কী ফলাফল পাব। ধারাবাহিক ত্বরণ পদ্ধতি (যেমন: রিচার্ডসন এক্সট্রাপোলেশন) ব্যবহার করে দুই বা ততোধিক অশুন্য ধাপের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলের এক্সট্রাপোলেটিং করে আমরা এই প্রশ্নের উত্তর পেতে পারি। এক্সট্রাপোলেশন ফাংশন বহুপদী অথবা মূলদীয় ফাংশন হতে পারে। স্টোয়ার ও বুলিরশ্ এক্সট্রাপোলেশন পদ্ধতির আরও বিস্তৃত বর্ণনা দিয়েছেন। QUADPACK লাইব্রেরিতে এ পদ্ধতির বাস্তবায়ন ঘটেছে। QUADPACK হচ্ছে একমাত্রিক ফাংশনসমূহের সংখ্যাভিত্তিক সংকলনের জন্য FORTRAN 77 লাইব্রেরি।

সংরক্ষণশীল ভুল প্রাক্কলন সম্পাদনা

ধরা যাক,   সীমার বাইরে   ফাংশনের একটি সীমাবদ্ধ-প্রথম-অন্তরজ বিদ্যমান। অন্য কথায়:  

এখন,   ফাংশনটির গড় মান উপপাদ্য হবে:

  ...... ....... ...... ....... (i)

যেখানে,   এবং

  এর ভিত্তিতে  

(i) নং সমীকরণ এর উভয় পক্ষকে   এর সাপেক্ষে   হতে   এ সমাকলন করে ও পরম মান নিয়ে পাই —

 

উপরন্তু ইন্টিগ্রান্ড এ অ্যাবসলিউট মান বসিয়ে এবং একটি ঊর্ধ্বসীমায় পদটিকে   এ প্রতিস্থাপন করে আমরা ডানপক্ষের ইন্টিগ্রালের আসন্নীকরণ করে পাই —

 

....... ...... ...... ...... (ii)

এখানে আসন্নীকরণের জন্য supremum ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর থেকে যদি কোয়ডরেচার সূত্র   দ্বারা   ইন্টিগ্রালকে আসন্নীকরণ করা হয় তবে ভুলের পরিমাণ (ii) নং সমীকরণের ডানপক্ষ অপেক্ষা বৃহৎ হবে না। এই নির্দিষ্ট আসন্নমানের ভুল পদটির (error term) জন্য,   ঊর্ধ্বসীমায় ইন্টিগ্রালটিকে রেইম্যান যোগফলের জন্য একটি ভুল বিশ্লেষণে (error analysis) রূপান্তর করা যায়। (উল্লেখ্য যে,   উদাহরণের জন্য আমরা যে ভুল নির্ণয় করেছি, এটা তারই অবিকল রূপ)। অধিক পরিমাণে ডেরিভেটিভ ব্যবহার করে এবং কোয়ডরেচারের সামান্য পরিবর্তনের (tweaking) মাধ্যমে, আমরা f ফাংশনের জন্য টেইলর ধারা (অবশেষসহ অংশক্রমে যোগ) প্রয়োগ করে একই ধরনের ভুল বিশ্লেষণ (error analysis) করতে পারি। যদি f-এর ডেরিভেটিভগুলো সহজলভ্য হয়, তবে এই ভুল-বিশ্লেষণ থেকে ভুলের একটি যথাযথ ঊর্ধ্বসীমা পাওয়া যাবে।

কম্পিউটার প্রুফসসুনিশ্চিতকৃত হিসাব উৎপাদনে ব্যবধি গণিতের সাথে এই সমাকলন পদ্ধতিটির সমন্বয় করা যেতে পারে।

অসীম ব্যবধির বাইরের যোগজ বা ইন্টিগ্রাল সম্পাদনা

কোন সেটের প্রান্তদ্বয়ের কোনটিই বাস্তব সংখ্যা না হলে একে আনবাউন্ডেড (unbounded) ব্যবধি বলে। আনবাউন্ডেড ব্যবধির বাইরে আসন্নীকরণ সংকলনের জন্য বেশ কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে। এ ধরনের আসন্নীকরণের কৌশলগুলো বিশেষত কোয়ডরেচার সূত্রগুলো থেকে উদ্ভূত। যেমন: সমস্ত বাস্তব সংখ্যার ইন্টিগ্রাল বা যোগজের জন্য গস-হারমাইট কোয়ডরেচার, ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যার ইন্টিগ্রালের জন্য গস-লগিয়ার কোয়ডরেচার। মন্টি কার্লো পদ্ধতি পদ্ধতিও ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও সসীম ব্যবধির চলক পরিবর্তনেও আসন্নীকরণ করা যায়। যেমন: সম্ভবপর রূপান্তরের মাধ্যমে হোল লাইনের জন্য:

 

এবং সম্ভবপর রূপান্তরের মাধ্যমে অর্ধ-অসীম ব্যবধির জন্য:

 

বহুমাত্রিক ইন্টিগ্রাল বা যোগজ সম্পাদনা

উপরে এ পর্যন্ত শুধু একমাত্রিক ইন্টিগ্রাল বা যোগজের হিসাবের জন্য কোয়ডরেচার বা ক্ষেত্রকলন সূত্র নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বহুমাত্রিক যোগজের হিসাবের ক্ষেত্রে একটি প্রক্রিয়া হলো: বহুমাত্রিক ইন্টিগ্রালটিকে ফুবিনির উপপাদ্য (টেন্সর গুণনের নিয়ম) প্রয়োগ করে পুনরাবৃত্ত একমাত্রিক ইন্টিগ্রালে প্রকাশ করা। এই প্রক্রিয়ায় ইন্টিগ্রালের মাত্রার সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ফাংশনের মানকেও সূচকীয় হারে বৃদ্ধি পেতে হয়। এ পর্যন্ত তিনটি পদ্ধতি তথাকথিত এই মাত্রার অভিশাপের (curse of dimensionality) বাঁধা অতিক্রম করেছে বলে জানা গেছে।

এ এইচ স্ট্রাউড তার অ্যাপ্রক্সিমেট ক্যালকুলেশন অব মাল্টিপল ইন্টিগ্রালস মনোগ্রাফে বিভিন্ন ধরনের ওয়েটিং ফাংশনসমূহের (weighting function) জন্য বহুমাত্রিক কিউবেচার সমাকলনের সূত্র তৈরির নিমিত্তে বহু সংখ্যক বাড়তি কৌশলের বর্ণনা দিয়েছেন।[৩] কার্সটিন হেসিসহ অন্যান্য পণ্ডিতগণ গোলকের সমাকলন নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন।[৪]

মন্টি কার্লো সম্পাদনা

বহুমাত্রিক ইন্টিগ্রালে মন্টি কার্লো পদ্ধতিকোয়েসি-মন্টি কার্লো পদ্ধতি প্রয়োগ করা সহজ। সম সংখ্যক ফাংশন-মানের ক্ষেত্রে, একমাত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পুনরাবৃত্ত-সমাকলনের তুলনায় এই পদ্ধতিতে বৃহত্তর নির্ভুলতা পাওয়া যেতে পারে।

কার্যকর মন্টি-কার্লো পদ্ধতিসমূহের একটি বৃহৎ অংশ হচ্ছে তথাকথিত মার্কভ চেইন মন্টি-কার্লো অ্যালগরিদম, যে অ্যালগরিদমে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মেট্রোপলিস-হ্যাস্টিংস অ্যালগরিদম এবং গিবস স্যাম্পলিং

স্পার্স গ্রিড বা পাতলা ঝাঁঝরি সম্পাদনা

মূলত রাশিয়ান গণিতবিদ সার্জি এ. স্মলাইক (Sergey A. Smolyak) উচ্চমাত্রার কোয়ডরেচারের জন্য এই সাংখ্যিক কৌশলগুলোর উন্নয়ন ঘটান। পদ্ধতিটি সর্বদাই একমাত্রিক কোয়ডরেচার সূত্র ভিত্তিক, কিন্তু এটা ইউনিভ্যারিয়েটিভ ফলাফলগুলোর অধিকতর জটিল এক সমন্বয় ঘটায়। গণিতে এক চলকবিশিষ্ট রাশি, সমীকরণ, ফাংশন ও বহুপদীকে ইউনিভ্যারিয়েটিভ (univariate) বলে। যাই হোক, কোয়ডরেচার বিন্দুর ওয়েটস (weights) ধনাত্মক হওয়ার শর্তে টেন্সর-উৎপাদ-সূত্র সকল কিউবেচার বিন্দুর ধনাত্মক হওয়ার নিশ্চয়তা দিলেও স্মলাইকের সূত্র ওয়েটসের ধনাত্মক হওয়ার কোন নিশ্চয়তা দেয় না।

বেইজিয়ান কোয়ডরেচার সম্পাদনা

বেইজিয়ান কোয়ডরেচার (Bayesian Quadrature) হল ইন্টিগ্রাল গণনার সাংখ্যিক সমস্যার সমাধানের পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি; এ পদ্ধতিটি সম্ভাব্যতাভিত্তিক নিউমেরিকস-এর অন্তর্ভুক্ত। গাউসিয়ান প্রক্রিয়ার উত্তরকালীন পরিবর্তন হিসেবে প্রাপ্ত ইন্টিগ্রালের অনিশ্চয়তার সমাধানের পূর্ণ কৌশল এ পদ্ধতি থেকে পাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও এটা জানা যে, এ পদ্ধতি থেকে খুব দ্রুত মানের অভিসৃতি হার (convergence rate) পাওয়া যায় যা কোয়ডরেচার বিন্দুর সংখ্যা n-এর সূচকীয় হার অপেক্ষা বড় হতে পারে।[৫]

ব্যবকলনীয় সমীকরণের সাথে সম্পর্ক সম্পাদনা

আমরা ইন্টিগ্রাল বা যোগজ   এর মান নির্ণয়ের সমস্যাটিকে ক্যালকুলাসের মৌলিক উপপাদ্য প্রয়োগ করে কোনো সাধারণ ব্যবকলনীয় সমীকরণের একটি ইনিশিয়াল ভ্যালু প্রোবলেমে সংকুচিত করতে পারি। আর্গুমেন্ট  -এর সাপেক্ষে উপরের ইন্টিগ্রালটির তথা   ফাংশনটির উভয় পক্ষকে ব্যবকলন করা হলে এটি নিম্নোক্ত সমীকরণগুলো মেলে চলে:

 

সমস্যাটিকে নতুনভাবে বিবৃত করতে সাধারণ ব্যবকলন সমীকরণের জন্য বিকশিত পদ্ধতিসমূহকে (যেমন: রাঞ্জি-কুট্টা পদ্ধতি) প্রয়োগ করা যায় এবং এইভাবে এগুলো দিয়ে ইন্টিগ্রালের মানও বের করা যায়। উপরের ব্যবকলনীয় সমীকরণে আদর্শ চতুর্থ-ক্রমের রাঞ্জি-কুট্টা পদ্ধতি প্রয়োগ করলে সিম্পসনের সূত্র পাওয়া যাবে।

F ' (x) = ƒ(x) ব্যবকলনীয় সমীকরণের একটি বিশেষ রূপ রয়েছে; এর ডান পক্ষে শুধু স্বাধীন চলক (x) রয়েছে, তবে অধীন চলক (F) নহে। এটি তত্ত্বটিকে ও অ্যালগরিদমের যথেষ্ট পরিমাণে সরলীকরণ করে। যোগজের মান নির্ণয়ের সমস্যাটিকে এভাবে এর নিজস্ব উপায়ে সর্বোত্তমভাবে অধ্যয়ন-আলোচনা করা হয়।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. কোয়ডরেচার ও কিউবেচার
  2. "Earliest Known Uses of Some of the Words of Mathematics (Q)"jeff560.tripod.com। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১৮ 
  3. Stroud, A. H. (১৯৭১)। Approximate Calculation of Multiple Integrals। Cliffs, NJ: Prentice-Hall Inc.। 
  4. Kerstin Hesse, Ian H. Sloan, and Robert S. Womersley: Numerical Integration on the Sphere. In W. Freeden et al. (eds.), Handbook of Geomathematics, Springer: Berlin 2015, ডিওআই:10.1007/978-3-642-54551-1_40
  5. Briol, François-Xavier; Oates, Chris J.; Girolami, Mark; Osborne, Michael A. (২০১৫-০৬-০৮)। "Frank-Wolfe Bayesian Quadrature: Probabilistic Integration with Theoretical Guarantees"। arXiv:1506.02681  [stat.ML]। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা