শূরসেন রাজ্য

মহাভারতে বর্ণিত প্রাচীন দেশ

শূরসেন (সংস্কৃত: शूरसेन) বা সৌরসেন একটি প্রাচীন ভারতীয় রাজ্য যা উত্তর প্রদেশের বর্তমান ব্রজ অঞ্চলের সাথে সম্পর্কিত ও মথুরা এর রাজধানী শহর হিসাবে। বৌদ্ধ পাঠ্য আঙ্গুত্তর নিকায় অনুসারে সুরসেন ছিল খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে অন্যতম সোলাসা (ষোল) মহাজনপদ (শক্তিশালী অঞ্চল)।[১] এছাড়াও এটি হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণে উল্লিখিত হয়েছে। প্রাচীন গ্রীক লেখকরা (যেমন-মেগাস্থিনিস) সৌরসেনয় এবং এর শহরগুলো মেথোরা[১] এবং ক্লেইসোব্রা উল্লেখ করেছেন।[২]

শূরসেন রাজ্য

c. 700 BCE–c. 300 BCE
বৈদিক যুগের পরে সুরসেন ও অন্যান্য মহাজনপদ
বৈদিক যুগের পরে সুরসেন ও অন্যান্য মহাজনপদ
রাজধানীমথুরা
প্রচলিত ভাষাসংস্কৃত, প্রাকৃত
ধর্ম
হিন্দুধর্ম
বৌদ্ধধর্ম
জৈন ধর্ম
সরকাররাজতন্ত্র
মহারাজ 
ঐতিহাসিক যুগব্রোঞ্জ যুগ, লৌহ যুগ
• প্রতিষ্ঠা
c. 700 BCE
• বিলুপ্ত
c. 300 BCE
বর্তমানে যার অংশভারত

ব্যুৎপত্তি সম্পাদনা

এর নামের ব্যুৎপত্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন রীতি রয়েছে। একটি ঐতিহ্য অনুসারে এটি নামকরা যাদব রাজা শূরসেনের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল। অন্যরা এটিকে শূরসেনের বর্ধন হিসাবে দেখেন।[৩] এটি শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র ভূমি যেখানে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন, বড় হয়েছিলেন এবং শাসন করেছিলেন।[৪]

ইতিহাস সম্পাদনা

 
মথুরা থেকে একটি রৌপ্য মুদ্রা, খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দী। সাতটি পাঞ্চ-চিহ্ন। ওজন: ৭.১৪ গ্রাম

মহাভারত ও পুরাণগুলো মথুরা অঞ্চলের শাসকদের যাদু বা যাদব হিসাবে উল্লেখ করাা হয়েছে যারা বহু সংখ্যায় বিভক্ত, যার মধ্যে বৃষ্ণিস রয়েছে।[১][৫] বৌদ্ধ গ্রন্থগুলোতে মথুরা অঞ্চলে বৌদ্ধধর্ম প্রচারকারী গৌতম বুদ্ধের অন্যতম প্রধান শিষ্য মহা কাঁচনের সময়ে সুরসেনদের রাজা অবন্তিপত্তার কথা বলা হয়েছে।

এর রাজধানী মথুরা যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। বর্তমানে হিন্দুদের জন্য একটি পবিত্র স্থান। প্রাচীন গ্রীক লেখকরা এই অঞ্চলে ক্লেইসোবোরা নামে আরও একটি শহরের কথা উল্লেখ করেছেন।[১]

মথুরায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননগুলোতে একটি গ্রামের ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি হয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরীতে পরিণত হয়েছে প্রতীয়মান হয়। প্রথম পর্বে পেইন্টেড গ্রে ওয়ার কালচার (১১০০-৫০০ খ্রীস্টপূর্ব) এর অন্তর্গত ছিল, তার পরে উত্তর কালো পালিশ সংস্কৃতি (৭০০-২০০ খ্রীস্টপূর্ব) চলছিল। গঙ্গা সমভূমির উত্তর বাণিজ্য পথ মালওয়া (মধ্য ভারত) এবং পশ্চিম উপকূলে যাওয়ার পথগুলোর সাথে মিলিত হওয়ার কারণে মথুরা বাণিজ্য কেন্দ্র হিসাবে এর গুরুত্ব অর্জন করেছিল।[৬]

আরও দেখুন সম্পাদনা

  • সৌনীগণ

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Raychaudhuri 1972
  2. Majumdar, Ramesh Chandra (১৯৯৫)। Ancient India। Motilal Banarsidass Publishers Private Limited। পৃষ্ঠা 173। আইএসবিএন 978-81-208-0436-4 
  3. New Indian Antiquary (১৯৪৩)। New Indian Antiquary, Volumes 5-6। Karnatak Publishing House., Original from the University of California। পৃষ্ঠা 127। 
  4. Royal Asiatic Society of Great Britain and Ireland (১৮৯৯)। Journal of the Royal Asiatic Society of Great Britain and Ireland। Cambridge University Press for the Royal Asiatic Society, Original from the University of Michigan। পৃষ্ঠা 322। 
  5. Singh 2008
  6. Upinder Singh (২০০৮)। A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century। Pearson Education India। পৃষ্ঠা 281, 336। আইএসবিএন 978-81-317-1120-0 

উৎস সম্পাদনা

  1. Raychaudhuri, H.C. (1972), Political History of Ancient India: From the Accession of Parikshit to the Extinction of the Gupta Dynasty, Calcutta: University of Calcutta.
  2. Singh, Upinder (2008), A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century, Delhi: Pearson Education, ISBN 978-81-317-1677-9.