লিমনিক উদগিরণ হচ্ছে একটি বিরল প্রাকৃতিক দুর্যোগ যাতে দ্রবীভূত কার্বন ডাই অক্সাইড (CO
) আকস্মিকভাবে গভীর হ্রদের পানি থেকে উদ্গিরিত হয় ও একটি গ্যাসীয় মেঘ উৎপন্ন করে যা বন্যপ্রাণী, গৃহস্থালি পশু এবং মানুষের শ্বাসরোধের কারণ হতে পারে। যেহেতু উদ্গিরিত CO
পানিকে স্থানান্তর করে তাই এই ধরনের একটি উদগিরণ হ্রদে সুনামির কারণ হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে ভুমিকম্প, আগ্নেওগিরির কার্যকলাপ অথবা বিস্ফোরণ লিমনিক উদগিরণ ঘটনার শুরুর কারণ হতে পারে। যেসব হ্রদে এরকম কার্যকলাপ দেখা যায় তারা লিমনিকভাবে সক্রিও হ্রদ অথবা বিস্ফোরণ হ্রদ নামেও পরিচিত। লিমনিকভাবে সক্রিও হ্রদের কিছু বৈশিষ্ট্য:

  • CO
    -সম্পৃক্ত প্রবেশমান পানি
  • একটি হ্রদের ঠাণ্ডা তল সরাসরি নির্দেশ করে আগ্নেয়গিরির সাথে হ্রদের পানির কোন সম্পৃক্ততা নেই
  • বিভিন্ন CO
    সম্পৃক্ততার সাথে একটি উঁচু এবং নিম্ন তাপমাত্রার স্তর
  • আগ্নেওগিরির কার্যকলাপের নিকটবর্তী এলাকায় অবস্থান

১৯৮০ সালের মোনাউন হ্রদ এবং নাউস হ্রদের বিশাল ধ্বংস অনুসন্ধান করে বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি নির্ধারণ করেছেন যে যদিও লিমনিক উদগিরণ পরোক্ষ ভাবে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের সাথে সম্পর্কিত তবে সেগুলো ভিন্ন ধরনের দুর্যোগ।[১]

ঐতিহাসিক ঘটনা সম্পাদনা

 
নাওস হ্রদের লিমনিক উদগিরণের কারণে গবাদি পশুর মরন।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনাটি শুধুমাত্র দুই বার দেখা গেছে। প্রথমটি ছিল ১৯৮৪ সালে ক্যামেরুনের মোনাউন হ্রদে যা শ্বাসরোধের অবস্থা তৈরি করে এবং নিকটে বাসকারী ৩৮ জন মানুষের মৃত্যু ঘটায়। [২] দ্বিতীয় প্রাণনাশক উদগিরণ ঘটে ১৯৮৬ সালে পার্শ্ববর্তী নাওস হ্রদে, এ সময়ে ৮০ মিলিয়ন ঘনমিটার CO2 নিঃসৃত হয় এবং প্রায় ১৭০০ মানুষ ও ৩৫০০ গৃহপালিত প্রাণী শ্বাসরোধের ফলে মারা যায়।[৩]

এমন ঘটনা প্রকৃতির অন্য কোথাও ঘটেছিল কিনা তা নির্ধারণ করা যায়নি। একটি তৃতীয় হ্রদ, কিভু হ্রদ গণপ্রজাতান্ত্রিক কঙ্গো এবং রাওন্ডা এর মধ্যবর্তী সীমানায়ে অবস্থিত যা বিশাল পরিমাণ দ্রবীভূত CO2 ধারণ করে। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ রবার্ট হেকি দ্বারা নমুনা তলানি সংগৃহীত হয়েছে যা নির্দেশ করে যে প্রতি হাজার বছরে হ্রদের জীবিত প্রাণী বিলুপ্তির ঘটনা ঘটে এবং নিকটবর্তী গাছপালাকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। আশেপাশের CO2 এর ঘনমাত্রার উপর নির্ভর করে লিমনিক উদগিরণকে একটি মাত্রায় পরিমাপ করা যায়।

জার্মানির মেসেলের মেসেল কুপ জীবাশ্ম নিকটবর্তী ইয়োসিনে একটি লিমনিক উদগিরণের প্রমাণ দেখায়। আক্রান্তদের মধ্যে যেগুলো ভালোভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে তাদের মাঝে আছে পতঙ্গ, ব্যাঙ, কচ্ছপ, কুমির, পাখি,পিপীলিকাভোজী প্রাণী, পতঙ্গভুক প্রাণী, গোড়ার দিকে প্রাইমেট এবং পালিওথিয়ার।

কারণ সম্পাদনা

একটি লিমনিক উদগিরণ ঘটার জন্য হ্রদটিকে গ্যাস দিয়ে প্রায় সম্পৃক্ত হতে হবে। জানা দুইটি ঘটনাতে মুখ্য উপাদান ছিল CO2; যাইহোক, কিভু হ্রদে বিজ্ঞানীরা[কে?] মিথেন গ্যাসের ঘনত্ব নিয়ে চিন্তিত। এই CO2 আসতে পারে হ্রদের নিচের আগ্নেয়গিরির কারণে অথবা জৈব বস্তু পচনের ফলে। একটি হ্রদ সম্পৃক্ত হবার পূর্বে তা একটি রুদ্ধ কার্বনেটেড পানীয়র অনুরূপ আচরণ করে (কোমল পানীয়): যেখানে CO2 পানিতে দ্রবীভূত থাকে। উভয় হ্রদ এবং কোমল পানীয়তে, CO2 উচ্চ চাপে (হেনরির নীতি) দ্রুত দ্রবীভূত হয়। এই কারণে সোডার ক্যানে শুধুমাত্র খোলার সাথে সাথে বুদবুদ উৎপন্ন হয়ে চাপ মুক্ত হয় এবং CO2 দ্রবন থেকে বের হয়ে আসে। হ্রদের ক্ষেত্রে এর তল অনেক উচ্চ চাপে থাকে; গভীরতা যত বাড়তে থাকে চাপ তত বাড়তে থাকে। এর অর্থ হচ্ছে বিশাল পরিমাণে CO2 বড়, গভীর হ্রদে দ্রবীভূত থাকতে পারে। আবার CO2 ঠাণ্ডা পানিতে অতি দ্রুত দ্রবীভূত হয় যেমন একটি হ্রদের তলানিতে হয়ে থাকে। পানির সামান্য তাপমাত্রা বৃদ্ধি বিশাল পরিমাণে CO2 নির্গমনের কারণ হতে পারে।

একবার যখন হ্রদ CO2 দিয়ে সম্পৃক্ত হয়ে যায়ে তা অস্থিতিশীল হয়ে পরে। একটি ট্রিগারই উদগিরণ শুরু করার জন্য যথেষ্ট হয়ে যায়। ১৯৮৬ সালের নাওস হ্রদের উদগিরণের ক্ষেত্রে ভূমি স্তরের সরে যাওয়াকে ট্রিগার হিসেবে সন্দেহ করা হয় তবে একটি সত্যিকারের আগ্নেয়গিরির উদগিরণ, একটি ভুমিকম্প, অথবা এমনকি বায়ু প্রবাহ এবং ঝর বৃষ্টি অন্যান্য সম্ভাব্য ট্রিগার হিসেবে কাজ করতে পারে। লিমনিক উদগিরণের অন্য একটি সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট গভীরতায় সম্পৃক্ততার ক্রমবর্ধমান উন্নতি যা স্বতঃস্ফূর্ত গ্যাসের উন্নতিকে শুরু করে।[৪] যেকোনো ক্ষেত্রে ট্রিগারটি কিছু পরিমাণ সম্পৃক্ত পানিকে হ্রদের উপরে তুলে ফেলে যেখানে CO2 কে দ্রবনে রাখতে চাপ অপর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। বুদবুদ গঠন করা শুরু হয় এবং হ্রদের পানি আরও উপরে উঠতে থাকে (প্লবতা), যেখানে বেশীরভাগ CO2 দ্রবন থেকে বের হয়ে আসে। এই প্রক্রিয়াটি একটি গ্যাসের স্তম্ভ তৈরি করে। এই অবস্থাতে স্তম্ভের তলানি শোষণের মাধ্যমে গ্যাস উপরে তুলে ফেলে এবং এটি থেকেও নির্গমন প্রক্রিয়াতে CO2 মুক্ত হয়ে যায়। এই উদ্গিরণ CO2 বাতাসে ছেরে দেয় এবং সুনামি সৃষ্টির জন্য পানির স্থানান্তর ঘটায়।

এই ধরনের উদ্গিরণ অপ্রতুল হওয়ার বেশ কিছু কারণ আছে। প্রথমত একটি CO2 এর উৎস থাকতে হবে তাই আগ্নেয়গিরি সম্বন্ধীও এলাকায়ে ঝুকির পরিমাণ বেশি। দ্বিতীয়ত বেশীর ভাগ হ্রদই হলোমিকটিক, যার অর্থ তাদের স্তর গুলো নিয়মিত মিশ্রিত হয়। একমাত্র মেরোমিকটিক হ্রদে স্তর মিশ্রিত হয় না এবং যা CO2 কে দ্রবীভূত রাখে। অনুমান করা হয় যে প্রতি ১০০০ হলোমিকটিক হ্রদের মধ্যে ১ টি মেরোমিকটিক । সবশেষে বিশাল পরিমাণ CO2 দ্রবীভূত রাখার জন্য একটি হ্রদকে বেশ গভীর হতে হবে।

পরিণতি সম্পাদনা

যখন একটি উদগিরণ ঘটে তখন হ্রদের উপর বিশাল পরিমাণ CO2 এর মেঘ সৃষ্টি হয় এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় তা ছড়িয়ে পরে। যেহেতু CO2 এর ঘনত্ব বাতাসের তুলনায়ে বেশি তাই এটি ভুমির সাথে লেগে থেকে প্রশ্বাসের জন্য বাতাসকে উপরে তুলে দেয়ার প্রবণতা দেখায় এবং একবার যখন CO2 মেঘ তাদের কাছে পৌছায় যেহেতু সেখানে খুব কম পরিমাণে অক্সিজেন থাকে এর ফলফলে যেসব প্রাণী অক্সিজেন গ্রহণ করে তদের শ্বাসরোধ হয়। CO2 মানুষের দেহের তরলকে খুবই অম্লীয় করে তুলতে পারে যা CO2 বিষক্রিয়া ঘটানোর কারণ। যেহেতু আক্রান্তরা বাতাসের জন্য হাসপাস করে তার মুলত CO2 গ্যাস গ্রহণ করে নিজেদের আরও বেশি আহত করে।

নাওস হ্রদে গ্যাসের মেঘটি হ্রদ থেকে সরে গিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামে গিয়ে অবস্থান করে এবং প্রায় সবাইকে হত্যা করে। এই উদগিরণে মানুষ যারা হ্রদ থেকে ২৫ কিমি (১৬ মা) এর মধ্যে ছিল তারা মারা যায়। কিছু দেহে চামড়ার রঙের পরিবর্তন বিজ্ঞানীদের চিন্তা করতে নির্দেশ করে যে হয়তোবা গ্যাসের মেঘের সাথে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড এসিড দ্রবীভূত ছিল তবে এই ধারণা বিতর্কিত।[৫] অনেক আক্রান্ত কারির চামড়ায় ফোসকা খুজে পাওয়া যায়। বিশ্বাস করা হয় এটি ঘটেছে চাপের ফলে সৃষ্ট ক্ষতের কারণে যা সম্ভবত তৈরি হয়েছে যারা কার্বন ডাই অক্সাইড দ্বারা শ্বাসরোধ হয়েছে তাদের দেহে অল্প পরিমাণে অক্সিজেন উপস্থিত থাকার কারণে।[৬] হাজার হাজার গৃহপালিত প্রাণী ও বন্য পশুরাও শ্বাসরোধে আক্রান্ত হয় তবে দাপ্তরিক কোন গণনা করা হয় নি। অপরপক্ষে হ্রদের একেবারে নিকটবর্তী ছাড়া অন্যান্য গাছপালা বেশীরভাগই আক্রান্তহীন অবস্থায় ছিল। সেখানে ভয়ানক উদ্গিরনের কারণে ৫- মিটার সুনামিতে (১৬.৪ ফুট.) গাছপালা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

হ্রদ থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড এর তাপমাত্রা ছিল খুবই কম এবং বিশ্বাস করা হয় তা ফ্রস্ট বাইট এর কারণ যা মানাওন হ্রদের বেচে থাকা মানুষের দেহের চামড়ার ফোস্কার অনুরূপ। বেচে যাওয়া মানুসেরা আরও জানান যে অজ্ঞান হওয়ার পূর্বে তারা পচা ডিমের গন্ধ এবং গরম অনুভব করেন; এটি ব্যাখ্যা করা যায় এভাবে যে, বেশি ঘনমাত্রার কার্বন ডাই অক্সাইড দৃষ্টি ভ্রান্তির একটি উপাদান হিসেবে কাজ করে। জেট পাইলটের উপর করা গবেষণাতে, বেচে যাওয়া মানুষের অনুরূপ তথ্য যানা যায়, যেমন .পচা ডিমের গন্ধ, বারুদ এবং গরম অনুভূতি।

একটি সম্ভাব্য সমাধান: হ্রদের গ্যাস মুক্তকরন সম্পাদনা

বেশ কয়েক বছর থেকে হ্রদের গ্যাস দূরীকরণের একটি সমাধানের জন্য এবং ওপর আরেকটি ধ্বংসযজ্ঞ পরিহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফ্রেঞ্চ বিজ্ঞানী মিচেল হাল্বাচেস এর নেতৃত্তে একটি দল ১৯৯০ সালে নল ব্যবহার করে নিওন্ত্রিত ভাবে মোনাউন হ্রদ এবং নাওস হ্রদের পানি থেকে গ্যাস দূরীকরণের পরিক্ষা চালিয়ে আসছেন।[৭] একটি নলকে খারা ভাবে পানির মধ্যে রাখা হয় অন্য পাসকে রাখা হয় পানির উপরিভাগে। CO2 সম্পৃক্ত পানি নলের নিচে প্রবেশ করে উপরে উঠতে থাকে। উপরিভাগের নিম্ন চাপ দ্রবন থেকে গ্যাস কে বের হতে সাহায্য করে। প্রবাহ শুরু করার জন্য প্রথমদিকে খুবই অল্প পরিমাণ পানি যান্ত্রিকভাবে তুলে আনতে হয়। সম্পৃক্ত পানি যতই উপরে উঠতে থাকে, দ্রবন থেকে CO2 ততই বের হতে থাকে এবং বুদবুদ গঠন করে। বুদবুদের সাভাবিক প্লবতা নলের ভেতর দিয়ে পানিকে উচ্চ গতিতে বের বের করে যা উপরিভাগে ফোয়ারার সৃষ্টি করে। পানি থেকে গ্যাসের দূরীকরণ পাম্পের মত কাজ করে যা বেশি পরিমাণ পানিকে নলের মধ্যে নিয়ে আসে এবং নিজে থেকেই একটি প্রবাহের সৃষ্টি করে। এটি প্রাকৃতিক উদ্গিরনের অনুরূপ প্রক্রিয়া তবে এই ক্ষেত্রে এটি নলের আকৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

প্রতিটি নলের নির্দিষ্ট পাম্পিং সক্ষমতা আছে এবং মোনাউন হ্রদ এবং নাওস হ্রদ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস দূরীকরণ করতে এবং এদেরকে নিরাপদ করতে বেশ পরিমাণে নলের প্রয়োজন হবে। গভীর হ্রদের পানি CO2 এর কারণে কিছুটা অম্লীয়ভবে দ্রবীভূত যা নল এবং তড়িৎ যন্ত্রের ক্ষয়সাধন করে যার ফলে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন পরে। এই বিষয়েও ভয় পাওয়া হয় যে নল থেকে বের হওয়া CO2 হ্রদের উপরিভাগে প্রশ্বাসের অযোগ্য একটি গ্যাসীয় স্তরের সৃষ্টি করে এবং এভাবে বন্য জীবজন্তুর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

২০০১ সালের জানুয়ারিতে ফ্রেঞ্চ- ক্যামেরুন দলের দ্বারা নাওস হ্রদে একটি নলের স্থাপন করানো হয় এবং ২০১১ সালে জাতিসংঘের উন্নয়ন কার্যক্রমের অর্থায়নে আরও দুইটি নল স্থাপন করা হয়। [৮][৯] মোনাউন হ্রদে ২০০৩ সালে একটি নল স্থাপন করা হয় এবং ২০০৬ সালে আরও দুইটি যোগ করা হয়। [৮][৯] এই তিনটি পাইপকে যথেষ্ট মনে করা হয়েছিল CO2 মাত্রা বৃদ্ধি প্রতিহত করা জন্য যা হ্রদের তলানিতে জমা হওয়া সমপরিমান গ্যাস দূরীভূত করে। ২০০৩ এর জানুয়ারিতে মোনাউন হ্রদে সম্পূর্ণ ভাবে গ্যাস দূরীকরণের জন্য ১৮ মাস মেয়াদি একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়,[১০] এবং তারপর থেকে একে নিরাপদ মনে করা হয়।[৮]

কিভু হ্রদ্রের ক্ষতির সম্ভাবনা সম্পাদনা

 
উপগ্রহ থেকে কিভু হ্রদের তোলা চিত্র।

কিভু হ্রদ নাওস হ্রদ থেকে শুধুমাত্র ২০০০ গুন বড় নয় বরং ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় অবস্থিত এবং প্রায় ২ মিলিয়ন মানুষ এর তীরে বাস করে। এটি উঁচু মাত্রার CO2 সম্পৃক্ততায় পৌছায়নি। তারপরও যদি এর পানি বেশি পরিমাণে সম্পৃক্ত হয়ে যায় এটি মানুষ এবং পশুপাখির জন্য আরও বড় ঝুকির কারণ হবে। কিভু হ্রদের ভৌত অবস্থার দুটি পরিবর্তন যা লিমনিক উদগিরণ এর সম্ভাবনাকে জাগ্রত করেছে তা হচ্ছে উঁচু মাত্রার মিথেন ভাঙ্গন এবং উপরিভাগের তাপমাত্রা বৃদ্ধি।[১১] ঐতিহাসিক এবং বর্তমান তাপমাত্রার পুঙ্খানুপুঙ্খ গবেষণা দেখায় যে কিভু হ্রদের তাপমাত্রা প্রতি যুগে প্রায় ০.১২ °C বৃদ্ধি পাচ্ছে।[১১] এটি একটি সম্ভাবনাময় ট্রিগারের কাছাকাছি আছে তা হচ্ছে মাউন্ট নাইরাগংগ নামক একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরি যা ২০০২ এর জানুয়ারিতে উদ্গিরিত হয় একটি সচল ভুমিকম্পের এলাকা এবং অন্যান্য জীবন্ত আগ্নেয়গিরির নিকটবর্তী।

এই হ্রদটিতে মানাউন হ্রদ এবং নাওস হ্রদের অনুরূপ করে গ্যাস দূরীকরণ করা যাবে তবে এই হ্রদের আকৃতি এবং গ্যাসের আয়তনের কারণে এই প্রকারের একটি প্রক্রিয়া ব্যায়বহুল হবে, যা মিলিয়ন ডলার ছারাবে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]২০১০ সালে হ্রদে আবদ্ধ গ্যাসকে রাওয়ান্ডাতে বিদ্যুৎ উতপাদনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয় যা CO2 দূরীকরণের কাজ করে।[১২] প্রভাবক স্ক্রাবিং নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তীরের শক্তিকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য দাহ্য গ্যাস বাহির করনের প্রক্রিয়াতে কিছু CO2 দূরীভূত হয়। এটি পরিষ্কার নয় যে কিভু হ্রদের বিপদকে দূর করার জন্য এভাবে যথেষ্ট পরিমাণ গ্যাস দূরীভূত হবে কিনা।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Volcanic Lakes and Gas Releases USGS/Cascades Volcano Observatory, Vancouver, Washington.
  2. Sigurdsson, H.; Devine, J.D.; Tchua, F.M.; Presser, F.M.; Pringle, M.K.W.; Evans, W.C. (১৯৮৭)। "Origin of the lethal gas burst from Lake Monoun, Cameroun"। Journal of Volcanology and Geothermal Research31: 1–16। ডিওআই:10.1016/0377-0273(87)90002-3বিবকোড:1987JVGR...31....1S 
  3. Kling, George W.; Clark, Michael A.; Wagner, Glen N.; Compton, Harry R.; Humphrey, Alan M.; Devine, Joseph D.; Evans, William C.; Lockwood, John P.; ও অন্যান্য (১৯৮৭)। "The 1986 Lake Nyos Gas Disaster in Cameroon, West Africa"। Science236 (4798): 169–75। ডিওআই:10.1126/science.236.4798.169পিএমআইডি 17789781বিবকোড:1987Sci...236..169K 
  4. Tassi, Franco (২০১৪)। "An overview of the structure, hazards, and methods of investigation of Nyos-type lakes from the geochemical perspective"। Journal of Limnology73 (1) – EBSCO host-এর মাধ্যমে। 
  5. Freeth, SJ (১৯৮৯)। "Lake Nyos disaster"BMJ299 (6697): 513। ডিওআই:10.1136/bmj.299.6697.513-aপিএমআইডি 2507040পিএমসি 1837334  
  6. BBC Horizon programme "Killer Lakes"
  7. *BBC Cameroons "killer lake" degassed
  8. Jones, Nicola (২০১০)। "Battle to degas deadly lakes continues"। Nature466 (7310): 1033। ডিওআই:10.1038/4661033aপিএমআইডি 20739980 
  9. Nasr, Susan (২৪ মার্চ ২০০৯)। "How did Lake Nyos suddenly kill 1,700 people?"HowStuffWorks.com। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৩ 
  10. Nicola Jones (১ ফেব্রুয়ারি ২০০৩)। "Lake to lose its silent killer"newscientist। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২০ 
  11. Katsev, Sergei (২০১৪)। "Recent Warming of Lake Kivu"PLOS ONE। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৯-১৩ 
  12. Rice, Xan (১৬ আগস্ট ২০১০)। "Rwanda harnesses volcanic gases from depths of Lake Kivu"The Guardian। London। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা