রেডিওহেড একটি ব্রিটিশ অল্টারনেটিভ রক ব্যান্ড। এর উৎপত্তি ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারের অ্যাবিংডনে। ব্যান্ডের সদস্যরা হলেন থম ইয়র্ক (কণ্ঠ, গিটার, পিয়ানো), জনি গ্রিনউড (গিটার, কিবোর্ড, অন্যান্য যন্ত্রসমূহ), এড ও’ব্রায়েন (গিটার, নেপথ্য কণ্ঠ), কলিন গ্রিনউড (বেজ, সিনথেসাইজার) ও ফিল সেলওয়ে (ড্রামস, পারকাশন)।

রেডিওহেড
রেডিওহেড: ইয়র্ক, জনি গ্রিনউড, কলিন গ্রিনউড, ও’ব্রায়েন, সেলওয়ে
রেডিওহেড: ইয়র্ক, জনি গ্রিনউড, কলিন গ্রিনউড, ও’ব্রায়েন, সেলওয়ে
প্রাথমিক তথ্য
উদ্ভবঅ্যাবিংডন, অক্সফোর্ডশায়ার, ইংল্যান্ড
ধরনঅল্টারনেটিভ রক, এক্সপেরিমেন্টাল রক, ইলেকট্রনিক
কার্যকাল১৯৮৫–বর্তমান
লেবেলXL, Ticker Tape Ltd., Hostess, TBD, Parlophone, Capitol
সদস্যথম ইয়র্ক
জনি গ্রিনউড
কলিন গ্রিনউড
এড ও’ব্রায়েন
ফিল সেলওয়ে
ওয়েবসাইটradiohead.com

রেডিওহেডের প্রথম গান ‘ক্রিপ’ একটি একক হিসেবে ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। এটি প্রাথমিকভাবে জনপ্রিয়তা পায়নি। কিন্তু তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘পাবলো হানি’ (১৯৯৩) প্রকাশের কয়েক মাস পরই এই গানটি বিশ্বব্যাপী খ্যাতি লাভ করে। দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘দ্য বেন্ডস’ (১৯৯৫) প্রকাশ পাবার পর যুক্তরাজ্যে তাদের খ্যাতি বৃদ্ধি পায়। তৃতীয় অ্যালবাম ‘ওকে কম্পিউটার’ (১৯৯৭) প্রকাশের পর তারা আন্তর্জাতিক খ্যাতিলাভ করে। ‘ওকে কম্পিউটার’কে ৯০দশকের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অ্যালবাম বিবেচনা করা হয়।[১]

'কিড এ' (২০০০) ও 'অ্যামনেজিয়াক' (২০০১) অ্যালবামদুটোতে রেডিওহেড পরীক্ষামূলকভাবে ইলেকট্রনিক সঙ্গীত ও জ্যাজের সন্নিবেশ ঘটায়। [২] অপরদিকে 'হেইল টু দ্য থিফ' (২০০৩) অ্যালবামটি গিটারপ্রধান রক ও যুদ্ধবিষয়ক গীতিকাব্যের সন্নিবেশ। রেডিওহেডের প্রথম ছয়টি অ্যালবাম ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ২৫ মিলিয়ন কপির বেশি বিক্রি হয়েছে। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে রোলিং স্টোন ম্যাগাজিনের সর্বকালের সেরা ১০০ শিল্পীদের তালিকায় ব্যান্ডটি ৭৩তম স্থান পেয়েছিল।[৩] ব্যান্ডটির প্রথম দিকের অ্যালবামগুলো ব্রিটিশ রক ও পপ সঙ্গীতের উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল।[৪] তাদের পরের অ্যালবামগুলো বিভিন্ন ঘরানার নানা শিল্পীদের প্রভাবিত করেছে।

ইতিহাস সম্পাদনা

সংকলন এবং প্রথম বছর (১৯৮৫-৯১) সম্পাদনা

 
আবিংডন স্কুল, যেখানে ব্যান্ড গঠন হয়েছিল।

রেডিওহেডের সদস্যরা সেই সময় অ্যাবিংডন স্কুলের ছাত্র ছিলেন।[৫] থম ইয়র্কি ও কলিন গ্রিনউড একসঙ্গেই পড়তেন। ইডি ও’ব্রায়ান ও ফিল সেলওয়ে ছিলেন তাঁদের এক শ্রেণী ওপরে। জনি গ্রিনউড তাঁর বড় ভাইয়ের থেকে দুই শ্রেণী নিচে পড়তেন। তাঁরা ‘অন এ ফ্রাইডে’ নামে দল গড়লেন, স্কুলে শুক্রবারেই অনুশীলন করতেন বলে অন এ ফ্রাইডে নাম রাখেন।[৬] তারা প্রথমবারের মতো মঞ্চে গান পরিবেশন করেন ১৯৮৬ সালে। স্থান ছিল অক্সফোর্ডের জেরিকো টার্ভেন[৭] জনি গ্রিনউড শুরুতে হারমোনিকা বাজাতে আসেন। এরপর তিনি কি-বোর্ড বাজানো শুরু করেন। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই তিনি দলের লিড গিটারিস্টের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।[৬]

১৯৮৭ সালে ইয়র্কি, ও’ব্রায়ান, সেলওয়ে এবং কলিন গ্রিনউড অ্যাবিংডন ছেড়ে যেতে বাধ্য হলেন উচ্চশিক্ষা লাভ করার তাগিদে যদিও তারা মাঝেমধ্যে সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্য ছুটির দিনগুলোতে একসঙ্গে অনুশীলন করতে থাকেন।[৮] ১৯৯১ সালে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ গ্রহণ করে সেই চার সদস্য ফিরে এলেন, তখনো জনি গ্রিনউড পড়ালেখা শেষ করেননি। এরপর অন এ ফ্রাইডে আবার তাদের কার্যক্রম শুরু করল এবং ডেমো রেকর্ড করাসহ নানা কনসার্টে অংশ নিতে থাকল। অন এ ফ্রাইডে অনেকগুলো কনসার্টে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে বেশ পরিচিত হতে থাকল।[৯]

পরিচিতি লাভের কারণে রেকর্ড লেবেল ও প্রযোজকেরা তাদের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করা শুরু করল। অক্সফোর্ডস কোর্টইয়ার্ড স্টুডিওর অংশীদার ক্রিস হাফোর্ড তাদের একটি কনসার্ট দেখে মুগ্ধ হন। এরপর তিনি এবং তার ব্যবসায়িক অংশীদার মিলে অন এ ফ্রাইডের ডেমো বের করেন। সেই সঙ্গে তারা দলটির ব্যবস্থাপনা করা শুরু করেন।[৮] এখন পর্যন্ত তারা দলটির ব্যবস্থাপনা করে আসছেন। সেই সময় তারা এমি ও এ অ্যান্ড আর এর প্রতিনিধি কিথ ওজেনক্রফটের সঙ্গে কথা বলেন। পরবর্তী সময়ে ছয়টি অ্যালবাম প্রকাশের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন ১৯৯১ সালে।[৮] এরপর এমি রেকর্ডসের অনুরোধে তারা তাদের দলের নাম পাল্টে রেডিওহেড রাখেন। রেডিওহেড নামটি ছিল টকিং হেডস নামক একটা নিউওয়েভ দলের ট্রু স্টোরিজ অ্যালবামের গানের শিরোনাম। [৮]

পাবলো হানি, বেনডস এবং প্রথম সাফল্য (১৯৯২-৯৫) সম্পাদনা

১৯৯২ সালে তাদের প্রথম সিঙ্গেল ‘ক্রিপ’ বের হয়। কিন্তু তখন গানটি কোনো সাফল্য দেখতে পায়নি।[৬]

১৯৯৩ সালে তাদের প্রথম অ্যালবাম পাবলো হানি বের হয়। সেই অ্যালবামে আবার ‘ক্রিপ’ গানটি অসম্ভব জনপ্রিয়তা পেয়ে যায়।

অ্যালবামসমূহ সম্পাদনা

  • পাবলো হানি (১৯৯৩)
  • দ্য বেন্ডস (১৯৯৫)
  • ওকে কম্পিউটার (১৯৯৭)
  • কিড এ (২০০০)
  • অ্যামনেজিয়াক (২০০১)
  • হেইল টু দ্য থিফ (২০০৩)
  • ইন রেইনবোজ (২০০৭)
  • দ্য কিং অফ লিম্বস (২০১১) এ মুন শেইপড পুল (২০১৬)

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Erlewine, Stephen Thomas. "OK Computer" Allmusic. Retrieved 31 January 2012
  2. 100 Best Albums Of The 2000s. No.1. Radiohead, 'Kid A' Rolling Stone. 31 January 2012
  3. "The Immortals — The Greatest Artists of All Time: 73) Radiohead", Rolling Stone, ২২ এপ্রিল ২০০৫, সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০০৮ 
  4. "The 50 albums that changed music", The Observer, ১৬ জুলাই ২০০৬, সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০০৯ 
  5. McLean, Craig (১৪ জুলাই ২০০৩)। "Don't worry, be happy"The Sydney Morning Herald। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০০৭ 
  6. Randall, Mac (১ এপ্রিল ১৯৯৮)। "The Golden Age of Radiohead"। Guitar World 
  7. Clarke, Martin (৫ মে ২০০৬)। Radiohead: Hysterical and Useless। Plexus। আইএসবিএন 0-85965-383-8 
  8. Ross, Alex (২০ আগস্ট ২০০১)। "The Searchers"The New Yorker। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১১ 
  9. Kent, Nick (১ জুন ২০০১)। "Happy now?"। Mojo