রাইনহার্ড গেনৎসেল

জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী (২০২০)

রাইনহার্ড গেনৎসেল ForMemRS[১] (জন্ম:২৪ মার্চ ১৯৫২) হলেন জার্মানির বাড হোমবুর্গে জন্ম নেওয়া জ্যোতির্বিজ্ঞানী। তিনি ২০২০ সালে রজার পেনরোজআন্ড্রেয়া গেজসহ যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[২] নোবেল কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের ভবিষ্যদ্বাণী বলিষ্ঠকরণে কৃষ্ণগহ্বর আবিষ্কারের জন্য রজার পেনরোজকে নোবেল প্রাইজের অর্ধেক মূল্য দেওয়া হবে। অন্যদিকে, বিশাল মহাকাশে ছায়াপথের কেন্দ্রে সুপারম্যাসিভ কমপ্যাক্ট অবজেক্টের আবিষ্কারের জন্য অপর দুই বিজ্ঞানীকে যৌথভাবে পুরস্কারের অর্ধেক দেওয়া হবে।[৩][৪]

রাইনহার্ড গেনৎসেল
জন্ম (1952-03-24) ২৪ মার্চ ১৯৫২ (বয়স ৭২)
জাতীয়তাজার্মান
মাতৃশিক্ষায়তনফ্রাইবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়, (বিএসসি)
বন্ বিশ্ববিদ্যালয়, (এমএসসি), পিএইচডি
পরিচিতির কারণঅবলোহিত ও উপমিলিমিটার জ্যোতির্বিজ্ঞান
পুরস্কারঅটো হ্যান পদক (১৯৮০)
বলজেন পুরস্কার (২০০৩)
শ প্রাইজ (২০০৮)
ক্রাফোর্ড পুরস্কার (২০১২)
টাইকো ব্রাহে পুরস্কার (২০১২)
রয়েল সোসাইটির ফেলো[১]
হার্ভে পুরস্কার (২০১৪)
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (২০২০)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রজ্যোতির্বিজ্ঞানী
প্রতিষ্ঠানসমূহম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট ফর এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল ফিজিক্স
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলি

জীবন ও কর্মজীবন সম্পাদনা

গেনৎসেল ফ্রাইবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থে বিএসসি এবং ১৯৭৮ সালে বন্ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমএসসি ও পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি কঠিন অবস্থা পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যাপক লুডভিগ গেনৎসেল (১৯২২-২০০৩) এর পুত্র।[৫] একই বছরে রেডিও অ্যাস্ট্রোনমি ফর ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট থেকে রেডিওস্ট্রোনমিতে তার পিএইচডি থিসিস করেছিলেন।[৫] পরবর্তীতে তিনি কেমব্রিজ, ম্যাসাচুসেটসহার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স এ কাজ করেছিলেন। এরপরে তিনি ১৯৮০ থেকে ১৯৮২ পর্যন্ত মিলার ফেলো এবং ১৯৮০ সাল থেকে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলেতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে সহযোগী ও পূর্ণ অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি ম্যাক্স-প্লাঙ্ক-জেসেলশ্যাফট এর বৈজ্ঞানিক সদস্য হন এবং গার্চিংয়ে অবস্থিত ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর এক্সট্রাটেরিস্ট্রিয়াল ফিজিক্স এর পরিচালক হন। এছাড়াও, তিনি ১৯৮৮ সাল থেকে লুডভিগ-ম্যাক্সিমিলিয়ানস-ইউনিভার্সিটি মেনচেন এর প্রভাষক হিসেবে ছিলেন, পরবর্তীতে সেখানে সম্মানিত অধ্যাপকের দায়িত্ব পান।[৫] ১৯৯৯ সাল থেকে সম্পূর্ণ অধ্যাপক হিসাবে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলি তে তিনি একটি যৌথ অ্যাপয়েন্টমেন্টও রেখেছেন।[৫] তিনি জ্যোতির্বিদ্যায় শ পুরস্কার এর জন্য সিলেকশন কমিটিতেও দায়িত্বরত ছিলেন।[৬]

কাজ সম্পাদনা

রাইনহার্ড অবলোহিত জ্যোতির্বিজ্ঞান ও উপমিলিমিটার জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি ও তার দল জ্যোতির্বিদ্যার জন্য স্থল- এবং মহাকাশ-ভিত্তিক যন্ত্রগুলির উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছেন। তিনি এবং তার দল এসব যন্ত্রপাতি আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রস্থলে, Sagittarius A* এর আশেপাশে তারাগুলির গতিবিধি অনুসন্ধান করতে ব্যবহার করেছিলেন এবং দেখেছেন যে তারা একটি খুব বিশাল বস্তুকে প্রদক্ষিণ করছে, যেটি এখন কৃষ্ণ গহ্বর নামে পরিচিত।[৭] গেনৎসেল ছায়াপথের গঠন এবং বিবর্তনের গবেষণাতেও সক্রিয় অধ্যয়ন করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

২০১৮ সালের জুলাইয়ে, রাইনহার্ড গেনৎসেল ​ জানিয়েছে যে এস ২ (তারা) এসজিআর এ * কে ৭৬৫০ কিমি/সেকেন্ডে প্রদক্ষিণ করছে, যা আলোর গতির ২.৫৫%, যেটির ব্যাসার্ধ ছিলো ১২০ অ্যাস্ট্রোনমিক্যালে ইউনিট। এটি তাদের তত্ত্বটির অতিরিক্ত নিশ্চিতকরণ তথ্য দ্বারা লোহিত সরণে সাধারণ আপেক্ষিকতা এ আপেক্ষিকতাভিত্তিক বেগের পূর্বাভাসের পরীক্ষা করার অনুমতি দেয়।[৮][৯]

পুরস্কারসমূহ সম্পাদনা

  • মিলার রিসার্চ ফেলোশিপ, ১৯৮০-১৯৮২[১০]
  • অটো হ্যান পদক, ম্যাক্স প্ল্যাংক জেসেলশেফট ১৯৮০[১০]
  • প্রেসিডেন্টশিয়াল ইয়ং ইনভেস্টিগেটর অ্যাওয়ার্ড, জাতীয় বিজ্ঞান ফাউন্ডেশন, ১৯৮০[১০]
  • নিউটন লেসি পিয়ার্স পুরস্কার, আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি, ১৯৮৬[১০]
  • গটফ্রিড উইলহেলম লাইবনিজ পুরস্কার,,১৯৯০[১০]
  • ডি ভ্যাকুলারস পদক, টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়, ২০০০[১০]
  • প্রিক্স জুলস জ্যানসেন, সোসাইটি অ্যাস্ট্রোনমিকিক ডি ফ্রান্স (ফরাসি অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি), ২০০০[১০]
  • স্টার্ন গার্লেক পদক, ২০০৩[১০]
  • বলজেন পুরস্কার, ২০০৩ [১০]
  • আলবার্ট আইনস্টাইন পুরস্কার, ২০০৭[১১]
  • শ পুরস্কার, ২০০৮[১২]
  • "গ্যালিলিও ২০০০" পুরস্কার ২০০৯[১০]
  • কার্ল স্কোয়ার্জশিল্ড পদক, ২০১১[১৩]
  • ক্রাফোর্ড পুরস্কার, রয়েল সুইডিশ একাডেমি, ২০১২[১৪]
  • টাইকো ব্রাহে পুরস্কার, ইউরোপীয় অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি, ২০১২[১৫]
  • হার্ভে পুরস্কার, ২০১৪[১৬]
  • হার্সকেল পদক, রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি, ২০১৪[১৭]
  • পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার, ২০২০[৩]
 
২০১৮ সালের জুলাইয়ে জার্মানির গার্চিংয়ে অবস্থিত ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রো-ফিজিক্সে "আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার প্রথম সফল পরীক্ষার কাছে সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণ গহ্বর" শীর্ষক প্রেস রিলিজ উপলক্ষে তোলা ছবি।

সায়েন্টিফিক সোসাইটিসমূহের সদস্যতা লাভ সম্পাদনা

  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মান অ্যাস্ট্রোনমিকাল অ্যান্ড ফিজিকাল সোসাইটির সদস্য[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
  • আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটি লর ফেলো, ১৯৮৫[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
  • একাডেমি ডেস সায়েন্সেস এর বিদেশি সদস্য ( ইনস্টিটিউট দে ফ্রান্স), ১৯৯৮[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির বিদেশি সদস্য, ২০০০[১৮]
  • ডয়চে একাডেমি ডার ন্যাচার্ফর্সচার লিওপল্ডিনা এর সদস্য, ২০০২ [১৯]
  • বাইয়ারিশে একাডেমি ডার উইজেনস্যাফটেন সিনিয়র সদস্য, ২০০৩[১৯]
  • রয়েল স্প্যানিশ অ্যাকাডেমি,অব সায়েন্সেস এর বিদেশি সদস্য, ২০১১
  • লন্ডন রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য, ২০১২ [১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. http://royalsociety.org/people/reinhard-genzel/ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে Professor Reinhard Genzel ForMemRS
  2. "আইনস্টাইনের তত্ত্বকে এগিয়ে নিয়েই পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল রজার পেনরোজের, সঙ্গে আরও দুই"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ৬ অক্টোবর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২০ 
  3. "Press release: The Nobel Prize in Physics 2020"। Nobel Foundation। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২০ 
  4. Overbye, Dennis; Taylor, Derrick Bryson (৬ অক্টোবর ২০২০)। "Nobel Prize in Physics Awarded to 3 Scientists for Work on Black Holes - The prize was awarded half to Roger Penrose for showing how black holes could form and half to Reinhard Genzel and Andrea Ghez for discovering a supermassive object at the Milky Way's center."The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২০ 
  5. Curriculum-vitae ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ অক্টোবর ২০০৯ তারিখে, website of the Max-Planck-Institut für extraterrestrische Physik
  6. "Selection Committees 2020 - 2021"www.shawprize.org (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২০ 
  7. Eckart, A.; Genzel, R. (১৯৯৬)। "Observations of stellar proper motions near the Galactic Centre"। Nature383 (6599): 415। এসটুসিআইডি 4285760ডিওআই:10.1038/383415a0বিবকোড:1996Natur.383..415E 
  8. Detection of the gravitational redshift in the orbit of the star S2 near the Galactic centre massive black hole, Genzel et al, Astronomy & Astrophysics, DOI doi:10.1051/0004-6361/201833718, 26 July 2018
  9. Star spotted speeding near black hole at centre of Milky Way -- Chile’s Very Large Telescope tracks S2 star as it reaches mind-boggling speeds by supermassive black hole, The Guardian, 26 July 2017
  10. "Profesor Reinhard Genzel"Spanish Royal Academy of Sciences। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২০ 
  11. The Awarding of the Einstein Medal: Albert Einstein Medal Laureates at Albert Einstein Medal website
  12. "The Shaw Prize"The Shaw Prize। ২৮ এপ্রিল ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২০ 
  13. "Reinhard Genzel receives Karl Schwarzschild Medal 2011"। ১৩ জুলাই ২০১১। ১ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৬ 
  14. "Crafoord Prize for Reinhard Genzel"Max-Planck-Gesellschaft। ২২ জুলাই ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২০ 
  15. "Tycho Brahe-Preis für Reinhard Genzel"Max-Planck-Institut für extraterrestrische Physik (জার্মান ভাষায়)। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  16. Harvey Prize 2014 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ জুলাই ২০১৫ তারিখে
  17. "Awards, Medals and Prizes - Herschel Medal"Royal Astronomical Society। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  18. "Reinhard Genzel"National Academy of Sciences। ১৮ জুন ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২০ 
  19. "Leopoldina-Präsident Gerald Haug gratuliert Leopoldina-Mitglied Reinhard Genzel zum Nobelpreis für Physik"idw (জার্মান ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা