ম্যাট পুর

নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার

ম্যাট বেরেসফোর্ড পুর (ইংরেজি: Matt Poore; জন্ম: ১ জুন, ১৯৩০ - মৃত্যু: ১১ জুন, ২০২০) ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৬ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ম্যাট পুর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামম্যাট বেরেসফোর্ড পুর
জন্ম(১৯৩০-০৬-০১)১ জুন ১৯৩০
ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ড
মৃত্যু১১ জুন ২০২০(2020-06-11) (বয়স ৯০)
নর্থ শোর, অকল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৬৩)
১৩ মার্চ ১৯৫৩ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৬ জানুয়ারি ১৯৫৬ বনাম ভারত
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৪ ৬১
রানের সংখ্যা ৩৫৫ ২৩৩৬
ব্যাটিং গড় ১৫.৪৩ ২৩.১২
১০০/৫০ ০/০ ২/১১
সর্বোচ্চ রান ৪৫ ১৪২
বল করেছে ৭৮৮ ৫১৩৪
উইকেট ৬৮
বোলিং গড় ৪০.৭৭ ২৬.৬৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/২৮ ৫/২৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ১৪/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৩ নভেম্বর ২০১৯

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারি দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ম্যাট পুর

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৫০-৫১ মৌসুম থেকে ১৯৬১-৬২ মৌসুম পর্যন্ত ম্যাট পুরের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। তন্মধ্যে, ১৯৫০-৫১ মৌসুম থেকে ১৯৫৭-৫৮ মৌসুম পর্যন্ত ক্যান্টারবারির পক্ষে খেলেছিলেন। এরপর ১৯৬১-৬২ মৌসুমে খেলার জগতে ফিরে তিনটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের বিপক্ষে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৪২ রান করেন। খেলায় পরবর্তী সর্বোচ্চ রান ছিল ৫৫ রান।[১] তবে, তার এ সংগ্রহটি ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমের প্লাঙ্কেট শীল্ডে সর্বোচ্চ রান ছিল।[২]

১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে অকল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৭.২-২২-৭২-৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ার পর ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে ১০৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন।[৩] ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটিজের বিপক্ষে চূড়ান্ত খেলায় ব্যক্তিগত সেরা বোলিং ৫/২৭ করেছিলেন তিনি।[৪]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চৌদ্দটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ম্যাট পুর। ১৩ মার্চ, ১৯৫৩ তারিখে অকল্যান্ডে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৬ জুন, ১৯৫৬ তারিখে চেন্নাইয়ে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

ডানহাতি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান ও মানানসই অফ স্পিনার ম্যাট পুরের মার্চ, ১৯৫৩ সালে অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পাঁচ টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১৭০ রান তুলতে পেরেছিলেন। ঐ সফরে ২২.৯১ গড়ে ৫৫০ রান তুলেছিলেন। নিজস্ব প্রথম টেস্টেই ব্যক্তিগত সেরা ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রেখেছিলেন তিনি। ৪৫ ও অপরাজিত ৮ রানের পাশাপাশি ২/২৮ ও ২/৪৩ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করিয়েছিলেন।[৫] কিন্তু, অংশগ্রহণকৃত ১৪ টেস্টে অংশ নিয়ে কোনটিতেই অর্ধ-শতরানের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি তিনি। এরফলে, দীর্ঘদিনের টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে কোন অর্ধ-শতরান কিংবা তিন উইকেট লাভ না করার রেকর্ড গড়েন। অথচ, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দুইটি শতরানের ইনিংস খেলেছেন।[৬]

১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে আরেকবার বিদেশ গমন করেছিলেন। ভারত ও পাকিস্তানে তিনি তুলনামূলকভাবে কম সফলতার পরিচয় দেন। আট টেস্টের সাতটিতে অংশ নিয়ে ১১.৯০ গড়ে মাত্র ১৩২ রান তুলতে সক্ষম হন। এছাড়াও, ৬৪.২৫ গড়ে ৪ উইকেট পেয়েছেন।[৭] পাকিস্তান ও ভারত গমনকালে বেশ কয়েকজন নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটারের ন্যায় তিনিও অসুস্থতার কবলে পড়েন। একটি খেলায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগেন। মাঠে দাঁড়ানো অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়েন। ব্যাঙ্গালোরে মাঠে কুকুর প্রবেশ করলে তিনি তাড়াতে চেষ্টা করেন ও কুকুর তাকে কামড়ায়। ফলে, পরবর্তী দুই সপ্তাহ তলপেটে এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন দিতে হয়।[৮]

সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের পক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ১৪২ রান তুলেন। ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে ১২.৮৫ গড়ে রান তোলার পর অবসর নিতে বাধ্য হন। তাসত্ত্বেও ঐ মৌসুমে ১৭.৫০ গড়ে ১৬ উইকেট নিয়ে ব্যক্তিগত সেরা মৌসুম অতিবাহিত করেন।

মূল্যায়ন সম্পাদনা

খাঁটিমানের ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও কার্যকরী অফ স্পিনার হিসেবে সুনাম ছিল তার। ১৯৫০-এর দশকের শুরু থেকে মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড দলের অন্যতম খেলোয়াড় হিসেবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হলেও বোলিংয়ে দক্ষতা দেখিয়েছেন। কিন্তু, তিনি কোন অর্ধ-শতরানের কোটা স্পর্শ করতে ব্যর্থ হন।

১৯৫০-৫১ মৌসুমে নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় ক্যান্টারবারির পক্ষে ৭০ রানের ইনিংস খেলার পর ডিক ব্রিটেনডেন মন্তব্যে করেন যে, ‘তার দর্শনীয় ড্রাইভ ও স্বাভাবিক পায়ের কারুকাজ নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতের নিউজিল্যান্ডীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে স্মরণীয় করে রাখবে। তবে, দূর্ভাগ্যবশতঃ নিয়মিতভাবে ব্যর্থতার স্বাক্ষর রেখেছেন। অথচ, এক পর্যায়ে দেশের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে তাকে ভাবা হতো। কিন্তু স্বল্প রানের ইনিংস খেলে নিজেকে ক্রমাগত দূরে সরিয়ে নিয়েছেন।’[৯]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন ম্যাট পুর। রে নাম্নী এক রমণীর সাথে ৬৩ বছর সংসার ধর্ম পালন করেন। ১১ জুন, ২০২০ তারিখে ৯০ বছর বয়সে অকল্যান্ডের নর্থ শোরে তার দেহাবসান ঘটে।[১০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Canterbury v Central Districts 1954-55
  2. "Batting and Fielding in Plunket Shield 1954/55"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  3. Auckland v Canterbury 1956-57
  4. Indian Universities v New Zealanders 1955-56
  5. New Zealand v South Africa, Auckland 1952-53
  6. Basevi, Travis; George Binoy (১৪ অক্টোবর ২০০৯)। "Fifty-three ODIs without a fifty or a three-for"। CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-১৪ 
  7. Wisden 1957, pp. 814-15.
  8. Richard Boock, The Last Everyday Hero, Longacre, Auckland, 2012, pp. 132-33.
  9. R.T. Brittenden, Great Days in New Zealand Cricket, A.H. & A.W. Reed, Wellington, 1958, p. 139.
  10. "Obituary: Former New Zealand test cricketer Matt Poore dies at age 90"Stuff (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ জুন ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০২০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা