মহাশ্ম

(মেগালিথ থেকে পুনর্নির্দেশিত)

মহাশ্ম বলতে কোনও প্রাগৈতিহাসিক প্রস্তরনির্মিত স্মৃতিসৌধ (বুরূজ, সমাধি, ইত্যাদি) নির্মাণে ব্যবহৃত একটিমাত্র বিশাল পাথরের খণ্ড কিংবা এরূপ অনেকগুলি বিশালাকৃতি পাথরের খণ্ডের প্রতিটিকে নির্দেশ করা হয়। একে ইংরেজিতে মেগালিথ বলে। এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিশেষণ স্থানীয় শব্দটি হল "মহাশ্মীয়" (ইংরেজিতে মেগালিথিক), যা দিয়ে ঐরূপ বিশালাকার প্রাচীন পাথরের তৈরী প্রাগৈতিহাসিক স্থাপনাকে চরিত্রায়িত করা হয়।

মহাশ্মীয় সমাধি "হারহুগ", জার্মানির সিল্টে
দ্য ব্যারেন, আয়ারল্যান্ডে ক্লুনিন ওয়েজ মহাশ্মীয় সমাধি
যুক্তরাজ্যে অবস্থিত স্টোনহেন্জ যা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি পরিচিত মহাশ্ম বলয়

"মহাশ্মীয়" ও "একাশ্মীয়" দুইটি ভিন্ন বিশেষণ। "একাশ্মীয়" (মনোলিথিক) বিশেষণটি দিয়ে একটিমাত্র প্রস্তরখণ্ড দিয়ে নির্মিত বস্তু বা স্থাপনা করা হয়। সব মহাশ্মীয় স্থাপনা একটি মাত্র প্রস্তরখণ্ড দিয়ে গঠিত নয়, বরং কিছু কিছু মহাশ্মীয় স্থাপনা একাধিক অতিবৃহৎ প্রস্তরখণ্ড অর্থাৎ একাধিক মহাশ্ম দিয়ে গঠিত হতে পারে। অর্থাৎ মহাশ্মীয় মাত্রেই একাশ্মীয় নয়। অন্যদিকে সব একাশ্মীয় স্থাপনাই অতিবৃহৎ আকারের নয়, অর্থাৎ একাশ্মীয় মাত্রেই মহাশ্মীয় নয়।

ব্যুৎপত্তি সম্পাদনা

ইংরেজি সম্পাদনা

মহাশ্মকে ইংরেজি ভাষায় মেগালিথ বলে। মেগালিথ শব্দটি গ্রিক "μέγας" শব্দ থেকে; মেগা মানে হল অতিবৃহৎ বা মহা-, লিথ মানে প্রস্তর, শিলা, অশ্ম বা পাথর। ফলে মেগালিথের অর্থ দাঁড়ায় "অতিবৃহৎ পাথরের খণ্ড"। মেগালিথের অর্থ অবশ্য এমনটাও দাঁড়ায় যে বিশেষ উদ্দেশ্যে পাথর কুঁদে নির্দিষ্ট আকৃতি দেওয়া।[১][২][৩] পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন সময়কালে মনুষ্যনির্মিত স্থাপনাকেও মহাশ্মীয় স্থাপনা বলে অভিহিত করা হয়। বিভিন্ন ধরনের বিশাল বিশাল মহাশ্ম দেখা যায় যার অধিকাংশই ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত হয়নি।[৪] এইসব পাথরের নির্মাণ শুরু হয়েছিল নব্যপ্রস্তরযুগ- নিওলিথিক পিরিওডে (মনোলিথিক পিরিওডের প্রারম্ভাগে) এবং চলছিল তাম্র যুগ এবং ব্রোন্জ যুগ পর্যন্ত।[৫]

পূর্ব তুর্কীর প্রারম্ভিক যুগের প্রস্তরনির্মিত স্থাপনা-সমবায় সম্পাদনা

 
ঘোবেকি টেপে

সংখ্যার দিক দিয়ে পূর্ব তুরস্কে বিশাল কিছু অনুষ্ঠানের বেদী আবিস্কৃত হয়েছে যেগুলা খ্রিস্টপূর্ব ৯০০ শতাব্দীরও পুরনো। এগুলো প্রারম্ভিক কৃষিকাজ ও পশুপালনের সাথে জড়িত ছিল। বড় গোলাকার এবং খোদাইকরা স্থাপত্য হল এর একটি সাধারণ উদাহরণ যেমন: নেভালী কোরি এবং ঘোবেকি টেপে। যদিও এই মহাশ্মীয় স্থাপনাগুলি এখনও পর্যন্ত জানা সবচেয়ে প্রাচীন, এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার না এগুলো থেকেই ইউরোপীয় মহাশ্মীয় স্থাপনা এসেছে কিনা। ঘোবেকি টেপেতে প্রায় ২০ টার মত থেকে চারটায় খননকার্য চালানো হয়েছে। কোন কোনটা ৩০ মিটার পর্যন্ত গেছে। মানবাকৃতির পাশাপাশি, এই পাথরগুলো কুঁদে বিভিন্ন আকৃতি দেওয়া হয়েছে যার মধ্যে আছে শুকর, শিয়াল, সিংহ, পাখি, সাপ আর কাকড়াবিছা।[৬]

মধ্যপ্রাচ্যের মহাশ্মীয় স্থাপনা সম্পাদনা

 
ইসরাইলের এ্যাটলিফ ইয়ামে মহাশ্মীয় স্থাপনা স্থাপনা

ডলমেন এবং দাড়ানো পাথর পাওয়া গেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায়, সিরিয়ার দক্ষিণে তুর্কী-আলেপ্পো বর্ডার থেকে শুরু হয়ে যা চলে গেছে দক্ষিণে ইয়েমেনের দিকে। সেগুলা লেবানন, সিরিয়া, জর্ডান, ইসরাইল এবং সৌদি আরবেও পাওয়া যায়। সবচেয়ে বড়টা পাওয়া যাবে সিরিয়ার দক্ষিণে এবং জর্ডান রিফট উপত্যাকার উপর দিয়ে, যেখানে এগুলো ঝুকির মুখে আছে। এগুলোর সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ক্যালকোলিথিকের শেষ দিক থেকে বা ব্রোন্জ যুগের প্রথমদিকের। ইরানের খরগ দ্বীপে, ইরাকের বারদ বালকাতে এবং সম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সিলেটের জৈন্তাপুরেও মহাশ্ম পাওয়া গেছে।

 
জর্ডানের আম্মামের ধ্বংসপ্রাপ্ত পাথর

ইসরাইলের আটলিট ইয়ামে একটি উপবৃত্তাকার মহাশ্মীয় স্থাপনা পাওয়া গিয়েছিল, যেইটা এখন সাগরের পানির নিচে। এটা ছিল একটা খ্রিস্টপূর্ব সাত হাজার বছরের পুরনো মহাশ্মীয় স্থাপনার উদাহরণ। [৭]

জর্ডানের রিফ্ট উপত্যাকার উভয় পাশেই বিশেষ করে পূর্বদিকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল হল ডলমেনস প্রধান এলাকা। সর্বপ্রথম সেগুলো দেখা যায় হোল্ডেন হাইটস এ, হাউরান এ এবং জর্ডানে, যেগুলা সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্যের সবচে বড় ডলমেন। সৌদি আরবের হেজাজে খুব সামান্য কিছু ডলমেন পাওয়া গেছে। এগুলোই মনে হচ্ছে ইয়েমেনে ঘুরেফিরে এসেছে সোমালিয়ান আর ইথিওপিয়ানের ঐতিহ্যগত ধারাবাহিকতার ফলাফল হিসেবেই।

মেসোপটেমিয়ান সময়কাল থেকে চলা আসা এককভাবে দাড়ানো পাথরগুলো দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে এক ঐতিহ্য চলে আসছে। অবশ্য পুরোপুরি "মহাশ্মীয়" বলা যায় না পাথরগুলোকে। ৫ মিটার বা তারো বেশি আকারে পাথরগুলোকে পাওয়া যায় প্রাচ্যে (যেমন জর্ডানেরটা)। এরকম কিছু ঘটনার বর্ণনা ওল্ড টেস্টামেন্টে পাওয়া যায়, যেমন- ইব্রাহিমপ্রপৌত্র ইয়াকুবের কাহিনী, যিনি একটি দাড়া করানো পাথরে তেল ঢেলেছিলেন, ফেরেশতারা স্বর্গের সিড়ি বেয়ে উঠছে এরকম কিছু একটা স্বপ্নে দেখার পর (জেনেসিস ২৮:১০-২২)। বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইয়াকুব পাথর দাড়া করাত, যেমনটা মুসা করেছিল- ২২ টি গোত্রের প্রতীক হিসেবে ২২টি পাথর বসানো হয়েছিল। পাথর দাড়া করানোর এই রীতি চলছিল নেবাটিয়ান সময় পর্যন্ত, উদাহরণস্বরূপ বলা যায়: কাবাকে ঘিরে এবং আশে-পাশের স্তম্ভগুলোকে নিয়ে ইসলামী যে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানগুলো। একইরকম অবস্থা মধ্যপ্রাচ্যেও দেখা যায় যেমন- কাফহোল, পাথর কেটে বানানো সমাধি, প্রস্তর বলয় ইত্যাদি।

ইউরোপীয় মহাশ্মীয় স্থাপনা সম্পাদনা

ইউরোপের সবচেয়ে বেশি দেখা মহাশ্মীয় স্থাপনা হল পোর্টাল সমাধি - দাড়া করানো পাথরের উপর একটি (বা একাধিক) পাথর দিয়ে ছাদ বানানো। অনেকগুলাতেই শবদেহের চিন্হমাত্রও নাই এটাই বিতর্কের সৃষ্টি করে সে আসলেই এগুলা সমাধি হিসেবে ব্যবহার করা হত কিনা। মাল্টার মহাশ্মীয় স্থাপনাগুলোকে ( বিশেষ করে স্কোর্বা মন্দিরকে) ইউরোপের সবচেয়ে পুরানো মহাশ্মীয় স্থাপনা বলে ধরা হয়। কেউ কেউ ডরমেন বললেও প্রত্নতত্ত্ববিদদের দেওয়া আসল নাম হল পোর্টাল সমাধি। তারপরও বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন: গ্যালিসিয়া এবং পর্তুগালে আন্তা, সার্ডিনিয়াতে স্ট্যাজোন, নেদারল্যান্ডে হিউনবেড, জার্মানিতে হিউনেনগ্রাব, ডেনমার্কে ডিসে/ডাইসে, ওয়েলসে ক্রোমলেচ ইত্যাদি। ধরে নেওয়া হয়, সমাধিগুলো প্রথমে মাটির ঢিবি দিয়ে ঢাকা ছিল।

সহজে দেখা মেলে এমন সমাধির মধ্যে দ্বিতীয় হল প্যাসেজ সমাধি। এগুলো সাধারণত বর্গাকার, বৃত্তাকার, ক্রুশাকার কক্ষে স্ল্যাব বা করবেল ছাদ দিয়ে দেয়া হয়, লম্বা-সোজা প্যাসেজওয়ে দিয়ে ঢোকা যায়, পুরো স্থাপনাটাই একটা মাটির ঢিবি দিয়ে ঢাকা থাকে। কখনও কখনও বাইরে থেকে পাথর দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। আয়ারল্যান্ডের ব্রু না বনি এবং ক্যারোমোর, ওর্কনির মায়েস হো এবং ফ্রান্সের গ্রাভরিনিস হল এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।

 
আয়ারল্যান্ডের পোর্টাল সমাধি

গ্যালারি সমাধি নামক একপ্রকার সমাধি আসে তৃতীয় নম্বরে। এগুলো হচ্ছে দীর্ঘ ঢিপির নিচে তীর্যকভাবে বসানো চেম্বার। আইরিস কোর্ট টম্ব, ব্রিটিশ লং ব্যারো, জার্মান স্টেইনকিস্টেন এই গ্রুপের মধ্য পরে।

আরেকপ্রকার এককভাবে দাঁড়ানো মহাশ্মগুলোর মধ্যে ফ্রান্সের মেনহির অন্যতম। ইউরোপে এটা বহুল পরিচিত, অন্তত ৫০,০০০ টা বিভিন্ন যায়গায় পাওয়া গেছে। কোনটাকে মহাজাগতিক কর্মকাণ্ডের চিহ্ন হিসেবেও মনে করা হয়। কোন কোন এলাকায় পাথরের তৈরী দীর্ঘ-জটিল এলাইনমেন্ট পওয়া যায়, সবচেয়ে বড়টার নাম কার্নাক, ফ্রান্সের ব্রিটানিতে অবস্থিত।

ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ডের কিছু কিছু অঞ্চলে অপেক্ষাকৃত সহজলভ্য মেহালিথিক স্থাপনা হল পাথরের বৃত্ত; স্টোনহেন্জ, এ্যভব্যুরি, রিং অফ ব্রডগার এবং বেলটানি এর উদাহরণের মধ্য পড়ে। এগুলোও মহাজাগতিক এলাইমেন্টের চিহ্ন বহন করে, সৌর এবং চন্দ্র উভয়ই। যেমন স্টোনহেন্জ তার সোলস্টিক এলাইনমেন্টের জন্যে বিখ্যাত। ইউরোপের অন্যত্রও পাথরের বৃত্তের অনেক উদাহরণ আছে। আয়ারল্যান্ডের লিমেরিকের কাছাকাছি লাফ গুরের বৃত্তকেও বিকার সময়কালের বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, প্রায় স্টোনহেন্জের সমসাময়িক বলেই মনে করা হয়। পাথরের চক্রগুলোকে ধারণা করা হয় সমাধি, নব্য প্রস্তরযুগীয় শ্রেডিং এবং ব্রোন্জ যুগের পরের সময়কার।

সমাধি সম্পাদনা

 
নেদারল্যান্ডের ইংরেজি টি-আকৃতির সমাধি

মহাশ্মীয় সমাধিগুলো হল মাটির উপরে সমাধি দেওয়ার জায়গা, বড় পাথর দাঁড়া করিয়ে উপরে মাটি বা ছোট পাথর দিয়ে ঢেকে দিয়ে তৈরি করা স্থাপনা। এগুলো এক ধরনের কক্ষীয় সমাধি যা নব্যপ্রস্তর যুগের কৃষক গোষ্ঠীর দ্বারা আটলান্টিক ইউরোপে, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল এবং তার আশেপাশে নির্মিত হয়েছিল। এগুলো পাথরের গাঠনিক ব্যবহার দেখে সমসাময়িক লং ব্যারো থেকে সহজেই আলাদা করা যায়।

অনেক রকমের মহাশ্মীয় সমাধি আছে। উন্মুক্ত একক চেম্বারের ডলমেন এবং পোর্টাল ডলমেন পাওয়া যায় ব্রিটানি, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যন্ড, সুইডেন, আয়ারল্যান্ড, ওয়েলসে এবং এছাড়াও বড় পাথর পাওয়া যায় তিন, চার বা আরও বেশি দাঁড়ানো পাথর দিয়ে সাপোর্ট দেওয়া অবস্থায়। এগুলো টুমুলাস (মাটির টুকরো) বা কায়ার্ন (এক ধরনের পাথরের স্তম্ভ) দিয়ে মোড়ানো থাকে।

 
মহাশ্মীয় সমাধির নির্মাণকাজ

ইতালিতে, বিশেষ করে সার্ডিনিয়াতে ডলমেন পাওয়া যায়। একশোরও বেশি ডলমেন পাওয়া গেছে নিওলিথিক সময়কালের (খ্রিস্টপূর্ব ২৭০০-৩৫০০), সবচেয়ে বেশি বিখ্যাতটা মোরের নিকটবর্তী ডলমেন ডি সা কোভেক্কাডা নামে পরিচিত। ব্রোন্জ যুগে, নুরাগিক সভ্যতা ৮০০টি বিশাল জায়ান্টস গ্রেভ বানিয়েছিল; জায়ান্টস গ্রেভ হল এক বিশেষ ধরনের গ্যালারী সমাধি যা সার্ভিনিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন আকৃতিতে দেখা যায়। সার্ডিনিয়ার সবচেয়ে পুরাতন বৃত্তাকার সমাধি তথাকথিত আর্যাচেনা রীতির যা কর্সিকা, দক্ষিণ ফ্রান্স এবং পূর্ব স্পেনেও পাওয়া যায় ।

ডলমেন এ্যাপুলিয়া আর সিসিলিতেও আছে। এই আধুনিক অঞ্চলে এই ছোট স্থাপনা গুলোর অবস্থান - মুরা প্রেগনে (পালেরমো), স্কিয়াক্কা (এগ্রিগেন্টো), মন্টে বুবোনিয়া (কালতানিসেত্তা), বুটেরা (কালতানিসেত্তা), সাভা লাজ্জারো (সিরাকুসা), সাভা ডেই সারভি (রুগাসা), এ্যাভোলা (সিরকাসা)। ব্রোন্জ যুগেরও প্রাথমিক সময়কালের (২২০০-১৮০০ খ্রিস্টপূর্ব), প্রাগৈতিহাসিক সিসিলিয়ান ভবনগুলো গোলাকার মাটির ঢিবি দিয়ে ধারা থাকত। সাভা ডেই সারভির ডলমেনে প্রত্নতাত্ত্বিকগণ অজস্র মানুষের হাড়ের টুকরা আর ব্রোঞ্জ যুগের ক্যাস্টেলুসিয়ান সিরামিকের ভাঙা অংশ পেয়েছে যা হস্তনির্মিত বস্তুগুলো মাটিচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্য নিশ্চিত করে। ব্রোন্জ যুগ এবং তাম্রযুগের (এ্যাপেনাইন এবং ক্যাস্টেলুচ্চিও সংস্কৃতির) ডলমেন এবং স্টেলাই মূর্তি অবশ্য এ্যাওস্তা উপত্যাকা, লাটিয়াম, টুসকানি, লম্বার্ডি এবং ট্রেন্টিনো অঞ্চলে অত্যন্ত সহজলভ্য।[৮]

 
সিসিলিতে খুজে পাওয়া ঈগল নামের মহাশ্ম

অন্যান্য উদাহরণও আছে যেগুলা সমাধি দেওয়ার উদ্দেশ্য নির্মিত হয়নি। দক্ষিণ-পশ্চিম স্কটল্যান্ড আর উত্তর আয়ারল্যান্ডের কোর্ট কেয়ার্নস, দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের সেভার্ণ কটসওল্ড সমাধি এবং ফ্রান্সের লোয়ার অঞ্চলের গির্জার মতন গ্যালারী সমাধি অনেক অন্তর্গত ফিচারকে সেতুবন্ধন করে, যদিও এদের মধ্যাকার সম্পর্ক পুরোপুরি বোধগম্য হয়নি। এগুলার প্রায়ই এন্টিচেম্বার বা ফোরকোর্ট থাকে যা কিনা মনে করা হয় তৈরীকারীর উদ্দেশ্য ছিল দেহের সাথে আত্মার মেলবন্ধনের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করার জন্যে।

 
ব্রিটানির মহাশ্মীয় সমাধি - সেইন্ট মিখায়েল টুমুলুস

আয়ারল্যান্ডের বয়েন উপত্যাকার অর্কনি এবং উত্তর ওয়েলসের আড়াআড়ি আকৃতির চেম্বার আর প্যাসেজ বিশিষ্ট প্যাসেজ সমাধিগুলো আরও বেশি জটিল এবং চমকপ্রদ। উদাহরণস্বরূপ মাইশোয়ি এর পাথরের ব্লকের গঠনপ্রনালী ঐ সময়ের উত্তরপশ্চিম ইউরোপে আর দেখা যায় না।

মহাশ্মীয় সমাধিগুলো তখনকার সমাজে দীর্ঘসময় মৃতদেহের সংরক্ষণের জন্যে ব্যবহৃত হত এবং কোন কোন সময় সেগুলা পরিবর্ধন বা পরিবর্তন করে বড় করাও হত। যে পরিমাণ পরিশ্রম আর পরিকল্পনা লাগত সেই বড় বড় পাথরগুলোকে দাড়া করাতে, সেটা দেখে ধারণা করা যায় যে সেই সময়কার সমাজ মৃতদেহের সৎকারের ব্যপারে খুবই সচেতন ছিল। মহাশ্মগুলির উপরে খোদাই করা চিত্রকর্মগুলোও এই ব্যপারে সমর্থন দেয়। প্রত্নতাত্তিকদের আবিস্কৃত মাটির চুলা এবং প্রানীর হাড়গোড় পাওয়া থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে মৃতদেহ সৎকারের পর কুলখানির মত খাওয়া দাওয়াও হত এবং আত্মার শান্তির জন্য বলিদানও হত।

মহাশ্মীয় সমাধির উদাহরণের মধ্যে আরও আছে অর্কলের মিডহোতে স্টলড কেয়ার্ন এবং এ্যাংলেসির ব্রিন সেলি ড্যু এর প্যাসেজ সমাধিসমূহ। আরও আকর্ষনীয় ৬০ টির মতন মহাশ্মীয় সমাধির স্থান আছে বর্ণহোমের ড্যানিস দ্বীপপুন্জের লুইসেনলান্ড এবং গ্রিটে। নামে সমাধি হলেও, ইউক্রেনের পাথরের সমাধি আসলে কোন সমাধি নয় বরং একটা অভয়ারণ্য।

অন্যান্য স্থাপনা সম্পাদনা

সমগ্র ইউরোপের অন্যান্য মহাশ্মীয় স্থাপনার সাথে বিভিন্ন শিল্পকর্মের ও বিভিন্ন ডিজাইনের মৃৎশিল্প - হেন্জেস নামে পরিচিত হাবিজাবি এবং ঘন ঘন কৃত্তিম ঢিপি যেমন ইংল্যান্ডের সিলবারি হিল এবং সার্ডিনিয়ার মন্টেতে প্রাচীন পিরামিড পাওয়া গেছে। সার্ডিনিয়াতে প্রচুর স্পাইরাল পাওয়া গেছে যেগুলোর মধ্যে মামোইয়াডার পার্ডা পিন্টা সবচেয়ে বেশি পরিচিত।

মহাশ্মীয় স্থাপনা নির্মাণকারীদের জন্যে স্পাইরালগুলো খুব দরকারি ছিল বলে মনে করা হত। মহাশ্মীয় স্থাপনা নির্মাণকারীদের জন্যে স্পাইরালগুলো খুব দরকারি ছিল বলে মনে করা হত। ইউরোপের সর্বত্র এগুলোকে পাথর কুদে বিভিন্ন আকৃতি দেয়া যেমন লজেন্স, চোখ, বিভিন্ন লাইনে আঁকাবাঁকা অবস্থায় পাওয়া গেছে। আধুনিক মতবাদ অনুসারে যদিও একে স্ক্রীপ্ট বলা চলে না তবুও আকৃতিগুলো যেন তার নির্মাতার কথাই বলছে। এগুলো ইউরোপের সর্বত্রই বিদ্যমান ছিল।

ইউরোপে মহাশ্মীয় স্থাপত্যের প্রসার সম্পাদনা

 
সার্ডিনিয়াতে ন্যুরেজ

ইউরোপে খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০০ থেকে ১৫০০ বছর পূর্বে নিওলিথিক বা প্রস্তরযুগের শেষ ভাগে এবং ক্যালকোলিথিক বা তাম্র যুগে সাধারণত পাথর লম্বা ভাবে দাড়া করানো হত। মাল্টার মহাশ্মীয় স্থাপনাগুলোকেই ইউরোপের সবচেয়ে পুরাতন মহাশ্মীয় স্থাপনা বলে মনে করা হয়। ইংল্যান্ডের মধ্যে স্টোনহেন্জটাই হতে পারে সবচে প্রাচীন। সার্ডিনিয়াতেও ৮০০০এরও বেশি মহাশ্মীয় স্থাপনা - ডলমেন, মেনহির আর বৃত্তাকার সমাধি আছে, নুরাগী নামের এক নুরাজিক সভ্যতার তৈরী যেগুলো পাথর দিয়ে টাওয়ারের মতন করে তৈরী কিন্তু অনেক জটিল। প্রায়শই এগুলো বিশাল সমাধি বা অন্যান্য মহাশ্মীয় স্থাপনার কাছাকাছি হয়ে থাকে।

 
কার্নাকের কাছাকাছি টুমুলুস

কার্নাক পাথরের কথা বলতে গেলে সবার আগে আসে ফ্রান্সের কৌম ডে ক্যেলু এর কথা। পিয়েরে জিন - ব্যাপ্টিস্ট লিগ্রা ড'অসি মেনহির এবং ডলমেন নাম প্রবর্তন করে, দুটোই ব্রিটন ভাষার প্রত্নতাত্তিক শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে । তিনি ভুলক্রমে মহাশ্মীয় স্থাপনাকে গ্যালিক সমাধি বলে অভিহিত করেন। ব্রিটেনে মহাশ্মীয় স্থাপনা নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা শুরু করেন প্রত্নতাত্তিক আবরি এবং স্টুকিলি। ১৮০৫ সালে, জ্যাক ক্যামব্রি মনুমেন্ট সেলটিক নামে একটি বই বের করেন যেখানে তিনি একটি সেল্টিক পাথর ভিত্তিক গোপন সংঘের কথা তুলে আনেন। ড্রুইড এবং মহাশ্মের সাথে ভিত্তিহীন সম্পর্কের গুজবে জনগণের মন কুড়ে কুড়ে খায়। বেলজিয়ামের ছোট শহর ওয়েরিসে একটি মহাশ্মীয় পুরাতাত্ত্বিক স্থান আছে। নেদারল্যান্ডের উত্তরপূর্ব দিকে বিশেষ করে ড্রেনথে প্রদেশে বেশ কিছু মহাশ্মীয় স্থাপনা আছে। আয়ারল্যান্ডে একটি খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ থেকে ৩০০০ বছরের পুরানো নিওলিথিক প্যাসেজ সমাধিক্ষেত্র আছে ব্রু না বনি নামে। এখানে প্রত্নতাত্তিক খননকাজে দুই শতাধিক সাজানো পাথর বেরিয়ে এসেছে যা ইউরোপের সমস্ত মহাশ্মীয় শিল্পের এক তৃতীয়াংশ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

মহাশ্মীয় স্থাপনা নির্মাণের সময়কাল সম্পাদনা

মধ্য প্রস্তরযুগ সম্পাদনা

  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৯০০০: এশিয়া মাইনরের গঠন, গোবেকলি টেপে: সবচে পুরাতন আবিস্কৃত ধর্মীয় স্থাপত্য
  • একটি ১২ মিটার লম্বা মনোলিথ যার সম্ভাব্য ওজন ১৫,০০০ কেজির কাছাকাছি, পাওয়া গেছে সিসিলিতে ৪০ মিটার পানির গভীরে যার ব্যবহার এখনো অজানা
    [৯]
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৯০৯৭ ± ৪৪৫ বছর: পর্তুগালের পশ্চিম আলগার্ভে পাওয়া "অত্যন্ত প্রাথমিক যুগের আলগ্রেভিয় মহাশ্মীয় স্থাপনা, ইউরোপের সবচেয়ে পুরানো" - কুইন্তা ডা ক্যুইমাডা মেনহির (২০০১ সালে পাওয়া)

নব্য প্রস্তুরযুগ সম্পাদনা

  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৭০০০: প্রটো ক্যানানিতি নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০০: পর্তুগালের এভোরা নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০: আটলান্টিক নিওলিথিক পিরিওডের শুরু
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৪৮৫০: মাল্টার স্কোর্বা মন্দিরের নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৪৮০০: ব্রিটানি এবং পৈট্যু এর নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০০: দক্ষিণ মিশরের নাবতা প্ল্যায়া
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০০: কার্ণেকের ব্রিটানি, পর্তুগালের লিসবন, ফ্রান্স, কর্সিকা, স্পেন, ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৩৭০০: আয়ারল্যান্ডের নকিভিয়াগ এর নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৩৬০০: মাল্টার মন্দির এবং ইংল্যান্ডের নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০: স্পেনের নির্মাণ, আয়ারল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম, ফ্রান্সের দক্ষিণ, মাল্টা এবং তৎসংলগ্ন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, উত্তর-পূর্ব বেলজিয়াম এবং মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানি
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪০০: সার্ডিনিয়ার বৃত্তাকার সমাধি, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, জার্মানি, সুইডেন, ডেনমার্ক
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩০০: ফ্রান্সের কার্নাক পাথরের নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০০: মাল্টার নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৩১০০: রাশিয়ার উত্তর ককেশাসে ডলমেন নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০: সার্ডিনিয়া, ফ্রান্স এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, স্পেন, সিসিলি, বেলজিয়াম, অর্কনি এবং ব্রিটেনের প্রথম হেন্জ নির্মাণ

তাম্র-প্রস্তরযুগ সম্পাদনা

  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০: ব্রিটানি, ইটালির অটরান্টো, সার্ডিনিয়া, নর্থইস্ট স্কটল্যান্ড, জার্মানির বেল বেকার, ব্রিটেনে স্টোনহেন্জ বৃত্তাকার পাথর ইত্যাদির নির্মাণ। বেল বেকারের মাধ্যমেই নিওলিথিক পিরিওডের বিদায়, তাম্রযুগের সূচনা
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ২৪০০: ব্রিটেনে বেল বেকার সংসৃতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠা, সমসাময়িক সময়ে শতাধিক পাথরের বৃত্ত নির্মাণ।

ব্রোঞ্জ যুগ: সম্পাদনা

  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০: ব্রিটানির নির্মাণ, ইটালির বারি, সিসিলির সাভা ডেই সারভি এবং স্কটল্যান্ডের ক্যালানিশ নির্মাণ। উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে ব্রোন্জ যুগের আগমন, ক্যালকোলিথিক পিরিওডের বিদায়।
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ১৮০০: ইতালির গিওভিনাজ্জো নির্মাণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০: পর্তুগালের নির্মাণকার্য
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০০: ডেনমার্কের "মেয়ের সমাধি", বর্তমানে এরূপ নিদর্শনের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ
  • সম্ভাব্য খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০: ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে সর্বশেষ মহাশ্মীয় নিদর্শন নির্মাণ, সামুদ্রিক জলদস্যুর আক্রমনের কারণে নির্মাণকাজ স্থগিত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আফ্রিকান মহাশ্মীয় স্থাপনা সম্পাদনা

 
নাবতা প্লায়া মহাশ্ম

পশ্চিম মিশরীয় মরুভূমির দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় নুবিয়ান মরুভূমির যে নাবতা প্লায়া সেটা একসময় এক বিশাল হৃদ ছিল বলে মনে করা হয়, যেটা বর্তমান কায়রো থেকে ৫০০ মাইল দক্ষিণে। খ্রিস্টপূর্ব ৫ম সহস্রাব্দে নাবতা প্লায়ার লোকেরা নিখুতভাবে গ্রীস্মিয় সৌর বিন্দু অবস্থানের পদ্ধতি এবং যন্ত্রপাতি তৈরী করেছিল। ধারণা করা হয় এই লেকের পাশটাতে কেবল মৌসুমী সময়েই জনসমাগম হত, সম্ভবত গরমকালে গবাদিপশুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্যে। দক্ষিণ পশ্চিমীয় মরুভূমিতে অবশ্য আরো বেশ কিছু পাথরের বৃত্ত দেখা যায়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ বছরের পুরনো নামোরাটুংগা নামক মেহালিথিক ব্যবহৃত হত কাশিথিক ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী দ্বারা, তারার সাথে মিল রেখে ৩৫৪ দিনের এক চন্দ্রবর্ষ ঠিক রাখার জন্যে। এটি আবিস্কৃত হয় মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে বি. এন. লিন্চ এবং এল. এইচ. রবিন্স দ্বারা।[১০]

আরও আছে টিয়া নামের সেন্ট্রাল ইথিওপিয়ার বেশ কিছু সংখ্যক মহাশ্ম। এসকল প্রাচীন মহাশ্মীয় স্থাপনার মধ্যে কিছু আছে খোদাইকার্য করা, এলাকাটি ওয়ার্ড হেরিটেজ সাইট এর অন্তর্গত। পূর্ব হারাঘে এলাকার মার্ভেলের উপত্যাকাতেও মহাশ্মীয় স্থাপনা পাওয়া যায়।

এশীয় মহাশ্মীয় স্থাপনা সম্পাদনা

 
কোরিয়ায় নর্দান শৈলীর মহাশ্মীয় সমাধি

উত্তরপূর্ব এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়াতে মেগাকিথিক সমাধি পাওয়া যায়। মূলত কোরিয়ান উপদ্বীপে এগুলো দেখা যায়। আরও পাওয়া যায় - চীনের লিয়াওনিং, শ্যন্ডং আর ঝেজিয়াং এ, তাইওয়ানের ইস্টকোস্টে, জাপানের কিয়োশু এবং শিকোকুতে, ভিয়েতনামের ডং পেই প্রদেশে এবং ভারত ও পাকিস্তানর কিছু কিছু অংশে। ইন্দোনেশিয়ার সাম্বা এবং নিয়াসে এখনও মহাশ্মীয় সংস্কৃতি দেখা যায়। মহাশ্মীয় সমাধির সবচেয়ে বড় সমাবেশ দেখা যায় কোরিয়ায়। প্রত্নতত্তবিদরা বলেন কোরিয়ান উপদ্বীপে ১৫০০০ থেকে ১০০০০০ মহাশ্ম আছে। প্রচলিত ধারণায় সংখ্যাটা ৩০০০০ এর কাচাকাছি ঘোরাঘুরি করে যা সারা বিশ্বের মোট ডলমেনের ৪০%।

উত্তরীয় শৈলী সম্পাদনা

চীনে, বিশেষত লিয়াও নদীবক্ষে উত্তরপূর্ব এশীয় মহাশ্মের প্রথম প্রচলন। লম্বা করে দাড়া করানো মহাশ্ম দিয়ে সমাধির প্রললন খুব দ্রুতই চীনের লিয়াও নদীবক্ষ অঞ্চল থেকে কোরীয়ান উপদ্বীপে পৌছে গেছিল, যদিও ভৌগলিকভাবে এবং সময়ক্রমেও এরা ছিল স্বতন্ত্র এবং আলাদা। প্রাচীনতম মহাশ্মীয় সমাধিকে বলা হয় নর্দান এবং টেবিল-শৈলীর সমাধি কারণ সেগুলা ভূমির উপরেই ভারী পাথরের স্ল্যাব দ্বারা চেম্বারের মতন করে বানানো। একটি অতিকায় বড় আকৃতির পাথরকে স্ল্যাব চেম্বারের উপর দিয়ে দেয়া হয় যেটা একটি টেবিল টপ আকৃতি গঠন করে। এসব মহাশ্মীয় মুমুন পাত্রশিল্প সময়কার এবং (দু একটা বাদে) হান নদীর দক্ষিণে ছড়িয়ে আছে। উত্তর চীনের কয়েকটা উত্তরীয় শৈলীতে মহাশ্মীয় সমাধিতে বেশকিছু জিনিসপত্রও পাওয়া গেছে যেমন ব্রোন্জের ছুরি, বোঝাই যাচ্ছে এগুলো দলনেতা বা গোত্রপ্রধানদের সমাধি ছিল। এখন অবশ্য সমাধি চোরদের কল্যাণে সমাধির মধ্যে আর কিছু অবশিষ্ট নাই।

দক্ষিণীয় শৈলী সম্পাদনা

দক্ষিণীয় কোরিয়ান উপদ্বীপে দক্ষিণীয় শৈলীর মহাশ্মীয় সমাধি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এদের সময়কাল ধারণা করা হয় মুমুন সময়কালের প্রথমভাগ থেকে মাঝামাঝি সময়ে। উত্তরীয় মহাশ্মের তুলনায় দক্ষিণীয় মহাশ্মের আকার ছোট। দক্ষিণীয় মহাশ্মগুলি সমাধিকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হত। অতিকায় বিশাল বড় পাথর দিয়ে ঢেকে দেওয়া সমাধির ভার বহন করত ছোট ছোট পাথর। কোরিয়ান উপদ্বীপের বেশিরভাগ মহাশ্মীয় সমাধিই দক্ষিণীয় শৈলীর।

 
কোরিয়ায় প্রাপ্ত ক্যাপস্টোনে ছোরা আর দুজন মানুষের খোদাই করা প্রতিকৃতি

উত্তরীয় মহাশ্মগুলির পাশাপাশি দক্ষিণীয় মহাশ্মীয় স্থাপনাগুলিতে হাতেগোনা বেশ কিছু হাতের কাজও আছে। মহাশ্মীয় সমাধিতে লাল রঙের প্রলেপ দেওয়া মৃৎশিল্প, ব্রোন্জের ছোরা, পাথরের ফলার ছুরি এবং পাথরের অলংকার পাওয়া গেছে। দক্ষিণীয় মহাশ্মীয় স্থাপনাতে প্রায়ই দেখা যায় যে একসাথে অনেকগুলো মহাশ্ম ঝর্ণার দিকে মুখ করে আছে। মহাশ্মীয় সমাধিস্থলে দেখা যায় সমাধিগুলো বড় বড় নুড়ি পাথরের দ্বারা সারিবদ্ধভাবে সংযুক্ত। লাল রঙের ভাঙা মাটির পাত্র আর পোড়া কাঠকয়লা দেখে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা মনে করেন যে এই বেদীগুলো ধর্মীয় কার্যকলাপ আর অনুষ্ঠানের জন্যেই তৈরী করা হয়েছিল। দক্ষিণীয় মহাশ্মীয় স্থাপনাগুলিতে ভারী পাথরে অনেক সময়ই কাপ মার্ক পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বেশকিছু পাথরে মানুষ এবং ছোরার ছবি খোদাই করে আঁকা আছে।

ক্যাপস্টোন শৈলী সম্পাদনা

এই ধরনের মহাশ্মগুলোকে অন্যগুলোর থেকে সহজেই আলাদা করা যায় ৪ মিটার গভীর ব্যুরিয়াল শ্যাফট দেখে যা বড় বড় খোয়ার সাথে সংযুক্ত। কোনরকম ভারবাহী পাথর ছাড়াই মূল পাথরটা ব্যুরিয়াল শ্যাফটের উপরে বসানো থাকে। ক্যাপস্টোন শৈলীর মহাশ্মগুলো কোরিয়ান উপদ্বীপের অঞ্চলে মূলত স্তম্ভ ধরনের হয়ে থাকে এবং এগুলো কোরিয়ার দক্ষিণ উপকূলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ধারণা করা হয় যে এগুলো মধ্য মুমুন পিরিয়ডের শেষ ভাগে এবং লেট মুমুন পিরিয়ডের প্রথমদিকে নির্মিত। উদাহরণস্বরূপ: ডেওকচেওন নি'র চ্যাংওনে একটা ক্যাপস্টোন সমাধি পাওয়া গেছে যেটা চারকোনা অনেক বড় এবং মাটির প্লাটফর্মে তৈরী। প্রত্নতাত্তিকরা পুরোটা খুড়ে বের করতে পারেনি কিন্তু নিচের প্ল্যাটফর্মটা অন্তত ৫৬ * ১৮ মিটার হবে আকারে।

ইন্দোনেশিয়ায় প্রচলিত মহাশ্মীয় সংস্কৃতি সম্পাদনা

 
ইন্দোনেশিয়ায় নিয়াস দ্বীপের মানুষের সাথে মহাশ্ম
 
তোরাজা মনোলিথ, সম্ভাব্য ১৯৩৫ সাল

ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুন্জ হল অতীত এবং বর্তমানের অস্ট্রিনেশীয় মহাশ্মীয় সংস্কৃতির মূল ধারক। দক্ষিণ সুমাত্রার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নায়াসে, উত্তর সুমাত্রার বাতাক জনগোষ্ঠীর ভিতর, পূর্ব নুসা টেংগারার সুমবা দ্বীপে, দক্ষিণ সুলাওয়েসির বাসিন্দাদের ভিতর এখনও মহাশ্মীয় সংস্কৃতি চালু আছে। এই মহাশ্মীয় সংস্কৃতিতে এখনও বিচ্ছিন্ন করে বাধামুক্তভাবে সংরক্ষণ করে রাখা আছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

বেশ কিছু পুরাতাত্ত্বিক মহাশ্মীয় স্থান এবং স্থাপনা ইন্দোনেশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে পাওয়া গেছে। জাভা, সুমাত্রা, সুলায়েশি এবং সুন্দ্রা দ্বীপে বিভিন্ন মহাশ্মীয় স্থাপনা যেমন মেনহির, ডলমেন, স্টোন টেবিল, প্রাচীন পাথরের মূর্তি এবং পুনডেন বেরুনডাক নামক স্টেপ পিরামিড ধরনের স্থাপনা আবিস্কৃত হয়েছে।

পাগুয়াংগাম সিসোলোক, পশ্চিম জাভা আর গুনুং পাদাং অঞ্চলে পুনদেন স্টেপ পিরামিড এবং মেনহির দেখা যায়। দক্ষিণপূর্ব এশিয়াতে সবচেয়ে বড় মহাশ্মীয় স্থান হল গুনুং পাদাং। পশ্চিম জাভার সিপারি মহাশ্মীয় স্থানে অবশ্য মনোলিথ, পাথরের টেরেস, এবং সার্কোপাগি পাওয়া যায়। জাভা এলাকায় পরবর্তীতে যে হিন্দু-বৌদ্ধ মন্দিরের প্রচলন হয়েছিল সেটার পূর্বসূরী নিহিত আছে পুনডিন স্টেপ পিরামিডের ভিতরে। উদাহরণ দিলে বলা যায়: ৮ম শতাব্দীর বড়বুদুর আর ১৫ শতাব্দীর কান্ডি সুখ স্টেপ পিরমিড শৈলীরকে অনুকরণ করে।[১১]

সেন্ট্রাল সুলায়েসীর লোরে লিন্দু ন্যাশনাল পার্কে প্রাচীন মহাশ্মগুলির কিছু ধ্বংসাবশেষ অবশিষ্ট আছে বিশেষকরে বাদা, বেসোয়া আর নাপু উপত্যাকা এলাকায়।[১২]

ভারতের মহারাষ্ট্রের মিডিয়া গং সম্পাদনা

মিডিয়া গং এলাকায় এখনও বেশ কিছু মহাশ্ম নির্মাণের সংস্কৃতি চালু আছে বলে এক গবেষণায় জানা গেছে। ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের গাদচিরোলী জেলার ভামরাগাদ তালুকা এলাকায় মিডিয়া গংরা বসবাস করে থাকে।

মেলানেশীয় মহাশ্ম সম্পাদনা

মেলানেশিয়ার বিভিন্ন যায়গায় বিশেষ করে মিলনে উপসাগর প্রদেশ, ফিজি আর ভানুআটুতে মহাশ্মীয় স্থাপনা পাওয়া যায়। কয়েকটি খননকার্য চালানো হয়েছে এবং স্ট্রাকচারগুলোর সমন্ধে অল্পকিছুই জানা গেছে। মেলানেশিয়ার এক প্রাচীন রীতি হল মহাশ্ম যার নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে ২০০০ বছরের প্রাচীন কিরিউইনার মহাশ্মীয় সমাধি ওটুয়াম এর সময়কাল নির্ধারন করে। কিন্তু খুব কমসংখ্যক মহাশ্মেরই সময়কাল নির্ধারণ করা গেছে। মূলত বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের জন্যেই মহাশ্মগুলো ব্যবহার করা হত যেমন: সমাধি, বলিদান আর উর্বরতা বৃদ্ধির পূজা। কিছু মহাশ্মের সামনে নাচার যায়গাও আছে। মেলানেশিয়ার কিছু কিছু অঞ্চলে এখনও ধর্মীয়ভাবে পবিত্র মহাশ্মীয় স্থানে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এখনও প্রচলিত আছে। মৃত মানুষের আত্মা জীবিত থাকে এবং ফেরত আসে এরকম কিছু বিশ্বাসকে সম্মান জানিয়ে মহাশ্মীয় স্থানগুলিতে খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মাইক্রোনেশীয় মহাশ্ম সম্পাদনা

ইস্টার্ণ ক্যারোলিন দ্বীপপুন্জের ফোনপেই এবং কোসরাই দ্বীপে মাইক্রোনেশিয়ার সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মহাশ্ম পাওয়া গেছে। বিশেষ করে এই দুই দ্বীপে প্রিজম্যাটিক ব্যাসল্ট দ্বারা উলম্ব স্থাপনা তৈরী করা হয়েছে ফোনপেই এর সালাপুক এবং কোরসেই এর মেনকাতে। সমুদ্র থেকে অনেক দূরে এই স্থাপনাদ্বয় বিচ্ছিন্ন। এরপর মহাশ্মীয় স্থাপনা নির্মাণ করা হয় উপকূলীয় দ্বীপগুলোতে, একঝাক রাজকীয় এবং ধর্মীয় স্থাপনা হিসেবে। এই ধরনের স্থাপনার সময়কাল নির্ধারণ দুরূহ কিন্তু সম্ভবত এই দ্বীপগুলোতে জনসমাগম আরম্ভ হয় ৮০০ খ্রিষ্টাব্দে এবং আরও পরে ১০০০ থেকে ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দে আরও বেশ কিছু ধর্মীয় মহাশ্মীয় স্থাপনা তৈরী করা হয়। নান মাদোল প্রায় নিশ্চিতভাবেই এক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় রাজশাসনের প্রতিনিধিত্ব করে যার ঐতিহাসিক নাম সাউদেলিয়ার্স। সাউদেনিয়ার্ণ কিংবদন্তি অনুসারে সম্ভবত দক্ষিণ বা পশ্চিমে আর কোন জনবসতি স্থাপিত হয়নি। নান মাদোল এক সময় তার প্রাধান্য হারাতে থাকে এবং একসময় তা পরিত্যক্ত হয় সউদেল্যুর সাম্রাজ্য পতনের পরে। মৌখিক ইতিহাস অনুসারে কোর্সাই যোদ্ধদের আক্রমনই ছিল এই সাম্রাজ্য পতনের মূল কারণ। কথিত ইতিহাস আর গবেষণা করে বের করা সময়কাল অনুযায়ী, ১৪০০ সালে নান মাদোলের পতনের পরবর্তী ৩০০ বছরে কোসরাই দ্বীপে লেলু নামক মহাশ্মীয় স্থানই উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠেছিল। ইউরোপীয়দের আগমনকালেও এটা পরিত্যক্তই ছিল। মাইক্রোনেশিয়ান এসব মহাশ্মীয় স্থানের সাথে গঠনগত দিক দিয়ে অন্যান্য মহাশ্মীয় স্থানের খুব অল্পই মিল ছিল। অনেক দূর থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোতে প্রিজম্যাটিক ব্যাসল্ট কলাম নিয়ে আসা হয়েছিল এবং ধাপে ধাপে পাথর বসিয়ে এবং প্রবালের টুকরা দিয়ে মাঝখানটা ভরাট করে এগুলো বানানো হয়েছিল। এই স্ট্রাকচারগুলো দিয়ে ১০ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন অত্যন্ত মজবুত দেয়াল বানানো যেত। লেলু আর নান মাদোলের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় অবস্থিত স্টেপ পিরামিড কিছুটা মেলানেশীয় আকৃতির প্রভাব প্রদর্শন করলেও অন্যান্যগুলো যেমন: রাজকীয় বাসভবন, ধর্মীয় স্থাপনাগুলো, কমন স্পেস এমনকি খালের সংযোগের জন্যে প্রসারিত রূপ- এগুলোর কোন অনুরূপ প্রশান্ত মহাদেশীয় অঞ্চলে ছিল না।

আধুনিক মতবাদ সম্পাদনা

 
ভারতের কৃষাণগিরিতে মহাশ্মীয় স্থাপনা

মহাশ্মের অনেক রকম ব্যবহার আছে যেমন বাজারের সীমানা দেওয়া, কেবলমাত্র অতীতের কোন ঘটনার সম্মানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং ধর্মীয়-সামাজিক কাজে ব্যবহার ইত্যাদি। সাধারণ কারণ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শন, অর্ধচন্দ্রাকার এবং কোনাকুনি আকৃতি দেখে যা ধারণা করা হয়, মিশরের ফারাওদেরও এরকম চিহ্ন ছিল। ভারত, মালয়েশিয়া, পলিনেশিয়া, উত্তর আফ্রিকা, উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকার আদিবাসী জনগোষ্ঠী এই পাথরগুলোকে আত্মা এবং দেবতার প্রতীক হিসেবে পূজা করত। বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভাগেও গবেষকরা মনে করতেন সকল মহাশ্মই একক মহাশ্মীয় সংস্কৃতির অংশ কিন্তু আধুনিক সময়কাল নির্ধারণের পদ্ধতি আবিষ্কারের পর এই ধারণা পরিবর্তিত হয়েছে। ইউরোপে কোনে মহাশ্মীয় সংস্কৃতি ছিল না যদিও অঞ্চলভিত্তিকভাবে কিছু কিছু জায়গায় ছিল এমনকি ব্রিটিশ আইলেরই একটা ছোট্ট অংশেও ছিল। প্রত্নতত্তবিদ ইউয়ান ম্যাকি লিখেছেন: "নিওলিথিক পিরিওডে ধর্মীয় সংস্কৃতি ছিল সেটা বিভিন্ন পাথরের বৃত্ত এবং মৃৎশিল্প দেখে নিশ্চিতভাবেই বলা চলে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ নিউলিথিক আর্কিওলজির সবকিছু একসাথে এক করতে পারেনি।" [১৩][তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

মহাশ্মীয় স্থাপনার প্রকারভেদ সম্পাদনা

দুইটি প্রধান ভাগে মহাশ্মীয় স্থাপনাকে ভাগ করা যায়: বহু-অশ্মীয় (পলিলিথিক) ও একাশ্মীয় (মনোলিথিক)। বিভিন্ন মহাশ্মীয় স্থাপনার মধ্যে আছে:

বহু-অশ্মীয় প্রকার
  • ডলমেন: এককভাবে দাড়ানো চেম্বার, দাড়া করানো পাথরের উপর ছাদের মতন করে একটা বড় পাথর দেয়া হয়েছে। ডলমেন সমাধি হিসেবে ব্যবহৃত হত এবং উপর দিয়ে একটি মাটির ঢিপি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হত।
  • টাউলা: দাড়া করানো পাথরের উপরে আরেকটা পাথর বসিয়ে টি শেইপ দেওয়া হয়েছে।
  • সিস্টভাইনস
  • চেম্বারবিহীন লম্বা ব্যারো
  • গার্ডিয়ান পাথর
  • প্যাসেজ সমাধি
  • তুমুলি বা ব্যারো
  • পুনডেন বা পুনডেন বেরুন্দাক: মাটি-পাথর দিয়ে বানানো স্টেপ পিরামিড, টুমুরির মতনই কিন্তু পাথরের দেয়াল দিয়ে বাধানো।
  • কেয়ার্নস বা গলগল
  • ক্রোমলেখ
  • কুরগান
  • নুরাঘি
  • বিশাল সমাধি
  • টালায়ত
  • সেসি বা স্ট্যাজোন
  • রাউন্ড টাওয়ার
  • মারাই (পলিনেশিয়া)
  • আহুস সাথে মোয়াই এবং পুকালো (ইস্টার দ্বীপপুঞ্জ)
একাশ্মীয় প্রকার
  • মেনহির: ঊর্ধ্বমুখী একক পাথর
  • বেটিলো
  • এলাইনমেন্টস (বা স্টোন রো)
  • সাইকোলিথ (পাথরের বৃত্ত)
  • স্টানটার
  • ট্রিলিথন: দুইটা পাশাপাশি বসানো পাথরের উপর একটা লিনটেল নামক পাথর বসানো (উদাহরণ: স্টোনহেনজ)
  • অর্থোস্ট্যাট
  • স্টোন শিপ
  • মোস্ট মোয়াই এর মতন মূর্তি
  • গেটওয়ে

চিত্রসংগ্রহ সম্পাদনা

টীকা সম্পাদনা

  1. Glossary ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে. McGraw-Hill Higher Education.
  2. Glossary ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে. labyrinth.net.au.
  3. Glossary ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৫ তারিখে. wordnet.princeton.edu.
  4. Rochester's history ~ an illustrated timeline. glossary of cemetery terms ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে
  5. Johnson, W. (1908) p.67
  6. The Guardian report 23 April 2008
  7. New Scientists
  8. Salvatore Piccolo, op. cit., pp. 14-17.
  9. Lodolo, Emanuele; Ben-Avraham, Ben (সেপ্টেম্বর ২০১৫)। "A submerged monolith in the Sicilian Channel (central Mediterranean Sea): Evidence for Mesolithic human activity"Journal of Archaeological Science: Reports3: 398–407। ডিওআই:10.1016/j.jasrep.2015.07.003। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  10. Krup, Edwin C. (2003).
  11. Encyclopædia Britannica.
  12. [১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে|Lore Lindu National Park, Central Sulawesi.
  13. Mackoe, Euan W, "The structure and skills of British Neolithic Society: a brief response to Clive Ruggles & Gordon Barclay.

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

নিবন্ধ সম্পাদনা

  • A Fleming, "Megaliths and post-modernism. The case of Wales". Antiquity, 2005.
  • A Fleming, "Phenomenology and the Megaliths of Wales: a Dreaming Too Far?". Oxford Journal of Archaeology, 1999
  • A Sherratt, "The Genesis of Megaliths". World Archaeology. 1990. (JSTOR)
  • A Thom, "Megaliths and Mathematics". Antiquity, 1966.
  • Turnbull, D। "Performance and Narrative, Bodies and Movement in the Construction of Places and Objects, Spaces and Knowledges: The Case of the Maltese Megaliths"। Theory, Culture & Society19 (5–6): 125–143। ডিওআই:10.1177/026327602761899183 
  • G Kubler, "Period, Style and Meaning in Ancient American Art". New Literary History, Vol. 1, No. 2, A Symposium on Periods (Winter, 1970), pp. 127–144. ডিওআই:10.2307/468624
  • HJ Fleure, HJE Peake, "Megaliths and Beakers". The Journal of the Royal Anthropological Institute of Great Britain and Ireland, Vol. 60, Jan. - Jun., 1930 (Jan. - Jun., 1930), pp. 47–71. ডিওআই:10.2307/2843859
  • J McKim Malville, F Wendorf, AA Mazar, R Schild, "Megaliths and Neolithic astronomy in southern Egypt". Nature, 1998.
  • KL Feder, "Irrationality and Popular Archaeology". American Antiquity, Vol. 49, No. 3 (July 1984), pp. 525–541. ডিওআই:10.2307/280358
  • Hiscock, P (১৯৯৬)। "The New Age of alternative archaeology of Australia"Archaeology in Oceania31 (3): 152–164। ডিওআই:10.1002/j.1834-4453.1996.tb00358.x। ১০ জুন ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  • MW Ovenden, DA Rodger, "Megaliths and Medicine Wheels". Bulletin of the American Astronomical Society, 1978

বই সম্পাদনা

  • Asthana, S. (1976). History and archaeology of India's contacts with other countries, from earliest times to 300 B.C.. Delhi: B.R. Pub. Corp.
  • Deo, S. B. (1973). Problem of South Indian megaliths. Dharwar: Kannada Research Institute, Karnatak University.
  • Goblet d'Alviella, E., & Wicksteed, P. H. (1892). Lectures on the origin and growth of the conception of God as illustrated by anthropology and history. London: Williams and Norgate.
  • Goudsward, D., & Stone, R. E. (2003). America's Stonehenge: the . Boston: Branden Books.
  • Illustrated Encyclopedia of Humankind (The): Worlds Apart (1994) Weldon Owen Pty Limited
  • Keane, A. H. (1896). Ethnology. Cambridge: University Press.
  • Johnson, W. (1908). Folk-memory. Oxford: Clarendon press.
  • Lancaster Brown, P. (1976). Megaliths, myths, and men: an introduction to astro-archaeology. New York: Taplinger Pub. Co.
  • Moffett, M., Fazio, M. W., & Wodehouse, L. (2004). A world history of architecture. Boston: McGraw-Hill.
  • Nelson, Sarah M. (1993) The Archaeology of Korea. Cambridge University Press, Cambridge.
  • O'Kelly, M. J., et al. (1989). Early Ireland: An Introduction to Irish Prehistory. Cambridge University Press. আইএসবিএন ০-৫২১-৩৩৬৮৭-২
  • Parker, Joanne (editor) (2009). Written On Stone: The Cultural Reception of British Prehistoric Monuments (Cambridge Scholars Publishing; 2009). আইএসবিএন ১-৪৪৩৮-১৩৩৮-৯
  • Patton, Mark (1993). Statements in Stone: monuments and society in Neolithic Brittany. Routledge. 209 pages. আইএসবিএন ০-৪১৫-০৬৭২৯-৪
  • Piccolo, Salvatore (2013). Ancient Stones: The Prehistoric Dolmens of Sicily. Thornham/Norfolk: Brazen Head Publishing. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৯৫৬৫১০৬-২-৪
  • Pohribný, Jan (photo) & Richards, J (introduction) (2007). Magic Stones; the secret world of ancient megaliths. London: Merrell. আইএসবিএন ৯৭৮-১-৮৫৮৯৪-৪১৩-৫
  • Pozzi, Alberto (2013). Megalithism - Sacred and Pagan Architecture in Prehistory. Universal Publisher. আইএসবিএন ৯৭৮-১-৬১২৩-৩২৫৫-০
  • Scheltema, H.G. (2008). Megalithic Jordan; an introduction and field guide. Amman, Jordan: The American Center of Oriental Research. আইএসবিএন ৯৭৮-৯৯৫৭-৮৫৪৩-৩-১
  • Stukeley, W., Burl, A., & Mortimer, N. (2005). Stukeley's 'Stonehenge': an unpublished manuscript, 1721-1724. New Haven [Conn.]: Yale University Press.
  • Subbayya, K. K. (1978). Archaeology of Coorg with special reference to megaliths. Mysore: Geetha Book House.
  • Tyler, J. M. (1921). The new stone age in northern Europe. New York: C. Scribner's Sons.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা