মিশুক মুনীর

একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তি

মিশুক মুনীর, পুরোনাম আশফাক মুনীর চৌধুরী, (২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৫৯ - ১৩ আগস্ট ২০১১) ছিলেন একজন বাংলাদেশী সাংবাদিক।[১] তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর মেজ ছেলে।[২] তার জন্ম নোয়াখালী জেলায়, তিনি একাধারে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সাংবাদিক, চিত্রগ্রাহক এবং চলচ্চিত্র ভিডিওগ্রাহক। মিশুক মুনীরকে "বাংলাদেশের টেলিভিশন সাংবাদিকতার পথিকৃৎ" বলা হয়।

মিশুক মুনীর
মিশুক মুনীর
জন্ম
আশফাক মুনীর চৌধুরী

সেপ্টেম্বর ২৪, ১৯৫৯
মৃত্যু১৩ আগস্ট ২০১১(2011-08-13) (বয়স ৫১)
পেশাসাংবাদিক, চিত্রগ্রাহক
কর্মজীবন১৯৯৮ - ২০১১
পরিচিতির কারণটেলিভিশন সাংবাদিকতার পথিকৃত
দাম্পত্য সঙ্গীমঞ্জলী মুনীর

শিক্ষা জীবন সম্পাদনা

মিশুক মুনীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর (১৯৭৯-১৯৮৩) পাস করেন।[১][৩]

কর্ম জীবন সম্পাদনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিক বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি প্রথম ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে "ভিডিও জার্নালিজম কোর্স"-এর সূচনা করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে পুরোদস্তুর সাংবাদিকতায় যুক্ত হন। মিশুক মুনীর ১৯৯৯ সালে একুশে টেলিভিশনের প্রথম যাত্রায় হেড অফ নিউজ অপারেশনের দ্বায়িত্ব নিয়ে দেশে আন্তর্জাতিক ধারার টেলিভিশন সাংবাদিকতার জন্ম দেন। নিজ হাতে গড়ে তোলেন একুশে টেলিভিশনের সংবাদ টিম। তিনি ২০০১ সাল পর্যন্ত একুশে টিভির বার্তাপ্রধান (পরিচালনা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৪] ২০০২ সালে দেশের গন্ডি ছাপিয়ে সরাসরি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখেন মিশুক মুনীর। আফগানিস্থানে চিত্রায়িত প্রামান্য চিত্র রির্টান টু কান্দাহারের প্রধান চিত্রগ্রাহক ছিলেন তিনি। কাজ করেছেন বিশ্বনির্মাতাদের সঙ্গে।

২০০৭ সালে কানাডীয় সাংবাদিক পল জেয়োর সাথে প্রতিষ্ঠা করেন আন্তর্জাতিক সংবাদ টেলিভিশন রিয়েল নিউজ নেটওয়ার্ক। সেখানে তিনি সম্প্রচার প্রধান ও পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘ দিন। টরন্টোর ব্রেকথ্রো ফিল্মস, জে ফিল্মস ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে ফ্রিল্যান্স ক্যামেরাপারসন ও প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন। সর্বশেষ ২০১০ সালে তিনি এটিএন নিউজে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগ দেন। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়া সত্ত্বেও তিনি লিবিয়ার সংকটের সময় সে দেশে কর্মরত বাংলাদেশীদের সংবাদ সংগ্রহ করতে নিজেই ছুটে যান। মিশুক মুনীর একাডেমি অব কানাডিয়ান সিনেমা অ্যান্ড টেলিভিশনের এবং কানাডিয়ান ইনডিপেনডেন্ট ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এবং কানাডিয়ান সোসাইটি অব সিনেমাটোগ্রাফির সহযোগী সদস্য ছিলেন।

খ্যাতি সম্পাদনা

সম্প্রচার সাংবাদিকতার রূপকার মিশুক মুনীর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিবিসির ভিডিওগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। তিনি সর্বশেষ ২০১০ সালে এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগ দেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ টেলিভিশন রিয়েল নিউজ নেটওয়ার্কে (হেড অব ব্রডকাস্ট অপারেশন্স) সম্প্রচার প্রধান, পরিচালক হিসেবে দীর্ঘ আট বছর কাজ করেন তিনি।

বাংলাদেশের খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ পরিচালিত ছবি রানওয়ের প্রধান চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন মিশুক। এছাড়া তিনি রিটার্ন টু কান্দাহার, ওয়ার্ডস অব ফ্রিডম প্রামাণ্যচিত্রগুলোতেও কাজ করেছেন।[৫]

মৃত্যু সম্পাদনা

 
মাইক্রোবাস ধ্বংসাবশেষ, মিশুক মুনীর ও তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

তিনি ২০১১ সালের ১৩ই আগস্ট মানিকগঞ্জে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রখ্যাত পরিচালক তারেক মাসুদের সাথে নিহত হন।[৬][৭]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "মুনীর, আশফাক"বাংলাপিডিয়া। ৪ ডিসে ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসে ২০১৮ 
  2. prothomalo.com (১৩ আগস্ট ২০১৭)। "তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসে ২০১৮ 
  3. TV, Ekushey (২৯ নভে ২০১৮)। "মিশুক মুনীরের জন্মদিন আজ"Ekushey TV। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসে ২০১৮ 
  4. "মিশুক মুনীর-তারেক মাসুদ দুর্ঘটনায় নিহত"bangla.bdnews24.com। ১৩ আগস্ট ২০১১। ২৬ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসে ২০১৮ 
  5. "প্রোফাইলঃ আশফাক মুনীর মিশুক"। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদসহ নিহত ৫"। ২০১৪-০৯-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১১ 
  7. "তারেক-মিশুক নিহতের মামলায় বাসচালকের যাবজ্জীবন"BBC News বাংলা। ২২ ফেব্রু ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসে ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা