মিশরের প্রথম অন্তর্বর্তী যুগ

মিশরের কেন্দ্রীয় সরকারের পতনের পর প্রশাসনের পক্ষে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রাদেশিক গভর্নরেরা দুর্যোগের সময় ফারাওয়ের সাহায্য পেতে ব্যর্থ হয়। একই সাথে খাদ্যাভাব এবং রাজনৈতিক সংঘাত দুর্ভিক্ষ এবং ছোটখাট গৃহযুদ্ধের দিকে দেশকে ঠেলে দেয়। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার পরেও স্থানীয় নেতারা ফারাওয়ের থেকে অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করার কারণে প্রদেশগুলোতে এক সমৃদ্ধ সংস্কৃতির সূচনা করে। নিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে ফিরে পাবার পর প্রদেশগুলি অর্থনৈতিকভাবেও ধনী হয় যার প্রমাণ সমাজের সব শ্রেণীর মাঝে বড় এবং উন্নত সমাধিস্থানের মাঝে।

রামেসিস এর আবু সিমবেল মন্দির এর দৃশ্য

এই সময়ে সৃজনশীলতার ব্যাপক প্রসার ঘটে। ইতিপূর্বে যেসকল সাংস্কৃতিক মোটিফ রাজকীয়তায় সীমাবদ্ধ ছিল প্রদেশের কারিগররা এ সময় তাকে গ্রহণ করেন এবং নিজেদের মত পরিবর্তন সাধন করেন। লিপিকারগণ নতুন ধরনের সাহিত্যশৈলীর বিকাশ ঘটান যার মধ্যে এই যুগের আশাবাদ এবং মৌলিকতা ফুটে উঠে।

ফারাওয়ের আনুগত্য থেকে মুক্ত হয়ে স্থানীয় শাসকেরা রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং ভূমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পরস্পরের সাথে দ্বন্দে লিপ্ত হয়। খ্রীষ্টপূর্ব ২১৬০ অব্দের মধ্যেই হেরক্লেওপোলিসের শাসকের উত্তরে নিম্ন মিশর এবং তাদের প্রতিপক্ষ থেবেসের ইন্তেফ পরিবার দক্ষিণে উচ্চ মিশর নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে। ক্রমান্বয়ে ইন্তেফ পরিবার শক্তিশালী হতে থাকে উত্তরে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। এতে দুই পক্ষের মাঝে সংঘাত অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠে। ২০৫৫ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে মেন্তুহোতেপ ২ এর নেতৃত্বে ইন্তেফ বাহিনী হেরক্লেওপোলিসের বাহিনীকে পরাজিত করে। এভাবে মেন্তুহোতেপ মিশরের দুই ভূমিকে একত্রিত করেন এবং এক অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক রেনেঁসার সূচনা করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা