মধ্যরেখাতল হল ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত যে কোনও স্থানের সাপেক্ষে তার সুবিন্দু, কুবিন্দুনাক্ষত্র মেরুদ্বয়কে ছেদ করে বিস্তৃত মহাবৃত্ত। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই তলে দিগন্তের উত্তর ও দক্ষিণ বিন্দু দুটিও অবস্থান করে। এই তল মহাজাগতিক বিষুবরেখা তথা মহাজাগতিক দিগন্তের উল্লম্বভাবে অবস্থান করে। যে কোনও স্থানের সাপেক্ষে তার মধ্যরেখাতল ঐ স্থানের দ্রাঘিমার সাথে এবং খ-গোলকে ওই দ্রাঘিমার অভিক্ষেপের সাথে সমাপতিত হয় বলে অসীম সংখ্যক মধ্যরেখাতল কল্পনা করা যেতে পারে।

খ-গোলক কর্তৃক মধ্যরেখাতলের অবস্থান নির্ধারণ। হলুদ চাকতিটি মধ্যরেখাতল নির্দেশ করছে, যার উপরার্ধ খ-গোলক দ্বারা চিহ্নিত। নাক্ষত্র উত্তর মেরুতে ধ্রুবতারার অবস্থান।

উত্তরদক্ষিণ মেরুদ্বয়ে মধ্যরেখাতল অনির্দিষ্ট, কারণ এই দুই স্থানে সুবিন্দু ও কুবিন্দু নাক্ষত্র মেরুদ্বয়ের সাথে সমাপতিত হয়। ফলস্বরূপ নাক্ষত্র মেরুদ্বয়কে ছেদকারী যে কোনও মহাবৃত্তই সুবিন্দু ও কুবিন্দুকেও ছেদ করে এবং মধ্যরেখাতলের কোনও স্থির মান পাওয়া যায় না।

বিভিন্নভাবে মধ্যরেখাতলকে সমান দুই ভাগে ভাগ করা যায়। মেরু অক্ষ বরাবর বিস্তৃত সরলরেখা দ্বারা একে "স্থানীয় মধ্যরেখাতল" ও "প্রতিমধ্যরেখাতলে" ভাগ করা হয়। স্থানীয় মধ্যরেখাতলে সুবিন্দু অবস্থান করে এবং প্রতিমধ্যরেখাতলে কুবিন্দু। অনুভূমিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় দিগন্তের উত্তর ও দক্ষিণ বিন্দু বরাবর মধ্যরেখাতলকে ভাগ করা হয়। এক্ষেত্রে "ঊর্ধ্ব মধ্যরেখাতল" সুবিন্দুকে ও "নিম্ন মধ্যরেখাতল" কুবিন্দুকে ছেদ করে।

যে কোনও জ্যোতিষ্ক পৃথিবীর ঘূর্ণনের সাথে সাথে স্থানীয় মধ্যরেখাতলের সাপেক্ষে সচল হিসেবে প্রতিভাত হয়। এর কারণ মধ্যরেখাতল সর্বদা ঐ স্থানের নিজস্ব দিগন্তের সাপেক্ষে নির্ধারিত। মধ্যরেখাতল পেরোনোর সময় জ্যোতিষ্ক আকাশে তার সর্বোচ্চ অবস্থানে যায়। কোনও জ্যোতিষ্কের বিষুবাংশ ও স্থানীয় নাক্ষত্র সময় বিচার করে ঐ স্থানের সাপেক্ষে জ্যোতিষ্কটির সর্বোচ্চ অবস্থানে আরোহণের সময় নির্ণয় করা সম্ভব (দেখুন: ঘণ্টা কোণ)।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  • (ইংরেজি)Millar, William (2006). The Amateur Astronomer's Introduction to the Celestial Sphere. Cambridge University Press.