মণিহার সিনেমা হল (বা সংক্ষেপে মনিহার) যশোর জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের বৃহত্তম সিনেমা হল।[২] ১৯৮৩ সালের ৮ ডিসেম্বর এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩] আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর জন্য প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই সিনেমা হলটি খ্যাতি অর্জন করে।[৪] জাপান, কোরিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ইংল্যান্ড প্রভৃতি দেশ থেকে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা মণিহারে আসতেন চলচ্চিত্র দেখার জন্য।[৫] বাংলাদেশি চলচ্চিত্র শিল্পে মণিহার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।[৬]

মণিহার
মণিহারের সম্মুখদৃশ্য
মানচিত্র
পূর্ণ নামমণিহার সিনেমা হল
ঠিকানাআর. এন. রোড, যশোর বাস টার্মিনাল
অবস্থানযশোর, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৩°০৯′৪০″ উত্তর ৮৮°১৩′২৩″ পূর্ব / ২৩.১৬১২০৫° উত্তর ৮৮.২২২৯৬৫° পূর্ব / 23.161205; 88.222965
মালিকজিয়াউল ইসলাম মিঠু[১]
ধারণক্ষমতা১,৪০০
নির্মাণ
উদ্বোধন৮ ডিসেম্বর ১৯৮৩; ৪০ বছর আগে (1983-12-08)
স্থপতিকাজী মোহাম্মদ হানিফ

ইতিহাস সম্পাদনা

 
মণিহারের অভ্যন্তরের দৃশ্য

মণিহার সিনেমা হল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৩ সালের ৮ ডিসেম্বর। এর নকশা করেন কাজী মোহাম্মদ হানিফ। এই সিনেমা হলটি একসময় ঢালিউডের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হতো।[৭] তৎকালে বাংলাদেশের অধিকাংশ চলচ্চিত্রের উদ্বোধনী প্রদর্শনী হতো মণিহারে।[৮] উদ্বোধনের পর মণিহারে প্রথম প্রদর্শিত হয় দেওয়ান নজরুল পরিচালিত, সোহেল রানাসুচরিতা অভিনীত চলচ্চিত্র জনি[৫]

বর্তমান অবস্থা সম্পাদনা

২০১২ সালের ২২ জুলাই প্রথমবারের মতো মণিহার সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যায়। এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলা ও চাঁদাবাজির জন্যই সিনেমা হলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।[৯] পরবর্তীতে ২০ দিন পর প্রশাসনিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় এবং কর্মচারীদের দুর্দশার কথা বিবেচনায় সিনেমা হলটি পুনরায় চালু করা হয়।[৬] যদিও হলটির অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সম্প্রতি হলটির অর্থনৈতিক অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। পূর্বে হলটিতে ১০০ জন কর্মচারী কাজ করলেও বর্তমানে ৪০ জন কর্মচারী কাজ করেন। পাশাপাশি মণিহারকে ঘিরে গড়ে ওঠা আরো অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও ঝুঁকিতে রয়েছে।[৫]

বিশেষত্ব সম্পাদনা

 
মণিহারের ভেতরে প্যাঁচানো সিঁড়ি

৪ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত সিনেমা হলটির আসন সংখ্যা ১,৪০০। শিল্পী এসএম সুলতানের তত্ত্বাবধানে হলটির নির্মাণ পরবর্তী সাজসজ্জার কাজ সম্পন্ন হয়।[৫] হলটিতে ঢালিউডের চলচ্চিত্রের পাশাপাশি হলিউড ও বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় পরিচালিত চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। সিনেমা হল ভবনের চতুর্থ তলায় অবস্থিত হলটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এছাড়া সিনেমা হল ভবনে একটি কমিউনিটি সেন্টার, একটি আবাসিক হোটেল ও প্রায় ৪০টি দোকান রয়েছে। বর্তমানে মণিহারে ৪০ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন।[৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বনাজী, শকুন্তলা (১ অক্টোবর ২০১১)। South Asian Media Cultures: Audiences, Representations, Contexts (Anthem South Asian Studies)। অ্যানথেম প্রেস। পৃষ্ঠা ৮২। আইএসবিএন 978-0857284099 
  2. "Babita at Monihar movie theatre after two decades" (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা। ২০১২-০৮-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-০৬ 
  3. "সিনেমা হলের খ্যাতি হারাচ্ছে যশোর"। ঢাকা। ২০১২-০৯-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-০৬ 
  4. বনাজী, শকুন্তলা (১ অক্টোবর ২০১১)। South Asian Media Cultures: Audiences, Representations, Contexts (Anthem South Asian Studies)। অ্যানথেম প্রেস। পৃষ্ঠা ৮১। আইএসবিএন 978-0857284099 
  5. কাদের, আবদুল (২০১৪-১১-০৭)। "মনিহারের হারানো দিন"। ঢাকা। ২০১৮-০৫-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-০৬ 
  6. "Monihar cinema reopens during Eid"। ঢাকা। ২০১২-০৮-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-০৬ 
  7. "আজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের বৃহত্তম সিনেমা হল 'মনিহার'"। ঢাকা। ২০১২-০৭-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-০৬ 
  8. "যশোরের মধ্যমণি 'মণিহার'"। ঢাকা। ২০১৬-০৭-১৭। ৭ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-০৬ 
  9. ইসলাম, সায়েদুল (২০১২-০৭-২১)। "বন্ধ হয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল মণিহার"। ঢাকা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-০৬