ভৌগোলিক গঠন

পৃথিবীর প্রাকৃতিকভাবে গঠিত গঠনাকৃতি

ভৌগোলিক গঠন হলো পৃথিবীর প্রাকৃতিকভাবে গঠিত গঠনাকৃতি। প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠনগুলো ভূমিরূপ এবং বাস্তুতন্ত্র নিয়ে গঠিত। উদাহরণস্বরূপ, ভূখণ্ডের ধরন (পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান) হলো প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠন। বিপরীতে, মানব বসতি বা অন্যান্য প্রকৌশলগত রূপগুলি কৃত্রিম ভৌগোলিক গঠনের ধরন হিসাবে বিবেচিত হয়।

প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠন সম্পাদনা

বাস্তুতন্ত্র সম্পাদনা

আবাসকে বর্ণনা করার জন্য দুটি পৃথক শব্দ রয়েছে: বাস্তুসংস্থান এবং বায়োম। একটি বাস্তুতন্ত্র হল জীবের একটি সম্প্রদায়[১] বিপরীতে, বায়োমগুলি বিশ্বের বৃহত্‌ অঞ্চল দখল করে থাকে এবং প্রায়শঃই পর্বতশ্রেণীসহ বিভিন্ন ধরনের ভৌগোলিক গঠনকে ধারণ করে।[২]

একটি বাস্তুসংস্থানের মধ্যে জৈব বৈচিত্র্য হলো আন্তঃআলিয়া, স্থলজগত, সামুদ্রিক এবং অন্যান্য জলজ বাস্তুতন্ত্রসহ সমস্ত উত্‌স থেকে জীবিত প্রাণীর মধ্যকার পরিবর্তনশীলতা।[৩] জীবিত জৈব পদার্থগুলো তারা যে পরিবেশে থাকে সেখানকার প্রতিটি উপাদানের সাথে ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কিত থাকে এবং বাস্তুতন্ত্র এমন পরিস্থিতিকে বিবৃত করে যেখানে জীব এবং তাদের পরিবেশের মধ্যকার আন্তঃসম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে।

বায়োম দ্বারা বাস্তুতন্ত্রের একই প্রজাতির গাছপালা, প্রাণী এবং মাটিতে বিস্তৃত জৈব উপাদানসমূহের বৃহত্‌ অঞ্চলগুলিকে নির্দেশ কা হয়ে থাকে।[৪] বায়োমকে গাছের কাঠামো (যেমনঃ বৃক্ষ, ঝোপঝাড় এবং ঘাস), পাতার ধরন (যেমনঃ ব্রডলিফ এবং সুইডাফ), গাছের ব্যবধান (বন, কাঠের ভূমি, সাভানা) এবং জলবায়ু প্রভৃতির উপর ভিত্তি করে সংজ্ঞায়িত করা হয়। বাস্তুঅঞ্চলের মতো করে জিনগত, করশাস্ত্রীয় বা ঐতিহাসিক মিল দ্বারা বায়োমগুলি সংজ্ঞায়িত হয় না। বায়োমগুলি প্রায়শঃই পরিবেশগত উত্তরসূরি এবং বিবিধ উদ্ভিদের পারস্পরিক সম্মিলনে দিক থেকে চিহ্নিত হয়।

ভূমিরূপ সম্পাদনা

একটি ভূমিরূপ একটি ভূতাত্ত্বিক একক নিয়ে গঠিত এবং ভূভাগের অংশ হিসাবে ভূ-পৃষ্ঠের পৃষ্ঠতল এবং অবস্থান দ্বারা মূলতঃ সংজ্ঞায়িত হয় এবং এরা সাধারণত ভূবিদ্যার একটি উপাদান। ভূমিরূপকে উচ্চতা, ঢাল, স্থিতি, স্তরায়ণ, শিলার প্রকরণ এবং মাটির ধরনের মতো বৈশিষ্ট্যগুলি দ্বারা শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বার্ম, স্তুপ, পাহাড়, খাড়া ভূমি, উপত্যকা, নদী এবং আরও অনেক উপাদান। মহাসাগর এবং মহাদেশগুলি সর্বোচ্চ ধাপের ভূমিরূপ। জলভাগ হলো জলের কোনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণের জমে থাকা, যা সাধারণত পৃথিবীকে আবৃত করে রাখে। "জলভাগ" শব্দটি দ্বারা প্রায়শঃই মহাসাগর, সমুদ্র এবং হ্রদকে বুঝানো হয়; তবে এর মধ্যে জলের ছোট ছোট অংশগুলো, যেমনঃ পুকুর, ছড়া বা জলাভূমিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। নদী, স্রোতস্বীনি, খাল এবং অন্যান্য ভৌগোলিক গঠন যেখানে জল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হয় তাদেরকে সর্বদা জলভাগ হিসাবে বিবেচনা করা হয় না, তবে এদেরকে জল দ্বারা গঠিত ভৌগোলিক গড়ন হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

কৃত্রিম ভৌগোলিক গঠন সম্পাদনা

বসতি সম্পাদনা

একটি বসতি হল একটি স্থায়ী বা অস্থায়ী সম্প্রদায় যেখানে লোকজন বাস করে। বসতির ক্ষেত্রের মধ্যে স্বল্প সংখ্যক দল একত্রিত হয়ে বসবাস করা থেকে শুরু করে চতুর্পার্শ্বে নগর-অঞ্চলগুলোর সাথে সংযুক্ত বৃহত্‌ মহানগরও অন্তর্ভুক্ত। অন্যান্য ভূদৃশ্য গঠন, যেমনঃ রাস্তাঘাট, বেষ্টনী, মাঠ, সীমানা তীর এবং গর্ত, পুকুর, উদ্যান এবং কাঠ, কল, প্রাসাদ, পরিখা এবং উপাসনালয়কে বসতির অংশ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।[৫]

প্রকৌশল স্থাপনা সম্পাদনা

প্রকৌশলগত ভৌগোলিক গঠনের মধ্যে মহাসড়ক, সেতু, বিমানবন্দর, রেলপথ, ভবনসমূহ, বাঁধসমূহ এবং জলাধারসমূহ অন্তর্ভুক্ত এবং নৃমন্ডলের অংশ কারণ এগুলি মানব-নির্মিত ভৌগোলিক গড়ন।

মানচিত্রাঙ্কনিক গঠন সম্পাদনা

মানচিত্রাঙ্কনিক গঠন এমন একটি বিমূর্ত ভৌগোলিক গঠন, যা মানচিত্রে প্রদর্শিত হয়, কিন্তু গ্রহে এরা অবস্থিত হলেও তা বাস্তবে দৃষ্ট হয় না। উদাহরণস্বরূপ, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, নিরক্ষীয় অঞ্চল এবং প্রধান অক্ষ পৃথিবীর মানচিত্রে প্রদর্শিত হয় কিন্তু এটি বাস্তবে বিদ্যমান নয়। এটি একটি তাত্ত্বিক রেখা যা তথ্যসূত্র, দিক নির্নয় এবং পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Odum, Eugene P.; Odum, Howard T. (১৯৭১)। Fundamentals of Ecology (3rd সংস্করণ)। Saunders 
  2. Botkin, Daniel B.; Keller, Edward A. (১৯৯৫)। Environmental Science: Earth as a Living Planet। John Wiley & Sons, Inc. Canada। 
  3. "Convention Text — Article 2. Use of Terms"www.CBD.int। Convention on Biological Diversity। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  4. Basak, Anindita (২০০৯)। Environmental StudiesDorling Kindersley। পৃষ্ঠা 288। আইএসবিএন 978-81-317-2118-6। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  5. "MSRG Policy Statement"Medieval-Settlement.com। Medieval Settlement Research Group। ২০১৪-০৫-১১। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা