ভূগতিবিদ্যা হল ভূপ্রকৃতিবিদ্যার একটি উপক্ষেত্র, যা পৃথিবীর গতিবিদ্যা নিয়ে আলোকপাত করে। খনিজ সংশ্লেষণ কীভাবে ভূত্বকীয় পাত ও ভূতাত্ত্বিক উপাদান, যেমন সমুদ্রতল প্রসরণ, পর্বত গঠন, আগ্নেয়গিরি, ভূমিকম্প, চ্যুতি, এবং অন্যান্য বিষয়াদিতে পরিবর্তিত হয় তা জানার জন্য ভূগতিবিদ্যা পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও গণিত ব্যবহার করে। এটি চৌম্বক ক্ষেত্র, মহাকর্ষ, সিজমিক তরঙ্গ এবং শিলার খনিবিজ্ঞান ও তাদের আইসোটোপ মিশ্রণ পরিমাপ করে অভ্যন্তরীণ কার্যাবলি প্রমাণ করার চেষ্টা করে। ভূগতিবিদ্যার পদ্ধতিসমূহ অন্য গ্রহ অন্বেষণেও ব্যবহৃত হয়।[১]

সংক্ষিপ্ত বিবরণ সম্পাদনা

ভূগতিবিদ্যা মূলত পৃথিবীব্যাপী চলমান বস্তুর প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট। শিলার গলন বা আকৃতি পরিবর্তন এবং চাপ ক্ষেত্রের ফলে এর প্রবাহের কারণে পৃথিবীর অভ্যন্তরে অপসরণ হয়ে থাকে।[২] চাপের বিস্তৃতি এবং বস্তুর ভৌত বৈশিষ্ট্য, বিশেষ করে চাপের শিথিলতার সময় পরিমাপের উপর ভিত্তি করে এই আকৃতি পরিবর্তন হতে পারে চ্যুত, স্থিতিস্থাপক, বা নমনীয়। শিলাসমূহ গাঠনিক ও মিশ্রণগতভাবে বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত এবং পরিবর্তনশীল চাপের অধীন, ফলে নিকটবর্তী স্থান-সংক্রান্ত এবং সাময়িক নৈকট্যের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আকৃতি পরিবর্তন দেখতে পাওয়া যায়।[৩] ভূত্বাত্ত্বিক সময় পরিমাপ ও দৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে ক্রমাগত মাঝারি পরিমাপ ও সম চাপ ক্ষেত্র ব্যবহার সুবিধাজনক।[৪]

তাপগতিবিজ্ঞান সম্পাদনা

শিলার ভৌত বৈশিষ্ট্যসমূহ শিলা এবং গঠনের তাপগতিবিদ্যায় অবস্থার উপর নির্ভর করে চাপের হার ও প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, যেমন ফলন শক্তি বা সান্দ্রতা। এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাপগতি চলরাশি হল তাপমাত্রা এবং চাপ। উভয়ই গাঢ়ত্বের সঙ্গে বৃদ্ধি পায়, ফলে একটি প্রাথমিক ধারণা হল আকৃতি পরিবর্তনের প্রক্রিয়া গাঢ়ত্বের পরিপ্রেক্ষিতে বোঝা যায়। উচ্চ অশ্মমন্ডলে চ্যুত পরিবর্তন প্রায়ই হয়ে থাকে কারণ কম চাপে শিলাসমূহে অপেক্ষাকৃত কম ভঙ্গুর শক্তি থাকে, একই সময়ে কম তাপমাত্রা নমনীয় প্রবাহের সম্ভাবনা হ্রাস করে। ভঙ্গুর-প্রসারণীয় রূপান্তর অঞ্চলের পরে, প্রসারণীয় পরিবর্তন প্রভাব বিস্তার করে।[২]

পৃথিবীর গতি সম্পাদনা

পৃথিবীর চাপের পিছনে প্রধান বল প্রদানকারী হল রেডিওআইসোটোপের ক্ষয়, ঘর্ষণ ও অবশিষ্ট তাপের তাপ শক্তি।[৫][৬] ভূপৃষ্ঠের শীতলীকরণ ও পৃথিবীতে তাপ উৎপাদন স্বল্প-সুস্থিত তাপের মাত্রা উত্তপ্ত অংশ থেকে তুলনামূলক শীতল অশ্মমন্ডলের সৃষ্টি করে।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Ismail-Zadeh ও Tackley 2010
  2. Turcotte, D. L. and G. Schubert (2014). "Geodynamics."
  3. Winters, J. D. (2001). "An introduction to igenous and metamorphic petrology."
  4. Newman, W. I. (2012). "Continuum Mechanics in the Earth Sciences."
  5. Hager, B. H. and R. W. Clayton (1989). "Constraints on the structure of mantle convection using seismic observations, flow models, and the geoid." Fluid Mechanics of Astrophysics and Geophysics 4.
  6. Stein, C. (1995). "Heat flow of the Earth."
  7. Dziewonski, A. M. and D. L. Anderson (1981). "Preliminary reference Earth model." Physics of the Earth and Planetary Interiors 25(4): 297-356.
গ্রন্থপঞ্জী

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা