ভুবন সোম

মৃণাল সেন পরিচালিত ১৯৬৯ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ভারতের হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্র

ভুবন সোম (Bhuvan Shome) মৃণাল সেন পরিচালিত ১৯৬৯ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ভারতের হিন্দি ভাষার একটি কাহিনী চিত্র। এতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন  উৎপল দত্ত ( ভুবন সোম চরিত্রে ) এবং সুহাসিনী মুলে ( গৌরী, একটি গ্রাম্য প্রফুল্ল তরুণীর চরিত্রে )। বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় রচিত একটি বাংলা গল্পের উপর ভিত্তি করে মৃণাল সেন তাঁর এই চলচ্চিত্রটি তৈরি করেছিলেন। এটি আধুনিক ভারতীয় চলচ্চিত্রের একটি যুগান্তকারী সৃষ্টি হিসাবে বিবেচিত হয়।[১][২]

ভুবন সোম
চলচ্চিত্রের পোস্টার
পরিচালকমৃণাল সেন
প্রযোজকমৃণাল সেন প্রোডাকসন্স
রচয়িতাবলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায়
শ্রেষ্ঠাংশেউৎপল দত্ত
সুহাসিনী মূলে
বর্ণনাকারীঅমিতাভ বচ্চন
সুরকারবিজয় রাঘব রাও
চিত্রগ্রাহককে. কে. মহাজন
মুক্তি
  • ১২ মে ১৯৬৯ (1969-05-12)
স্থিতিকাল৯৬ মিনিট
দেশভারত
ভাষাহিন্দি

এটি সুহাসিনী মুলে অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটিতে অমিতাভ বচ্চন ছিলেন ভাষ্যপাঠ এবং কথকের ভূমিকায়।[৩]

পটভূমি সম্পাদনা

বিপত্নিক ও নিবেদিতপ্রাণ সিভিল সার্ভেন্ট ভুবন সোম একজন কঠোর, আপোষহীন - ভারতীয় রেলওয়ের "বড় কর্মকর্তা"। কয়েকজন রেলওয়ের টিকিট চেকারের আলাপচারিতায় তাঁকে কড়া, যুক্তিহীন অফিসার ("আফসার") হিসাবে তাঁর প্রাসঙ্গিক পরিচয় দিয়ে ছবির পটভূমিটি তৈরি করা হয়। ভাষ্যকারীর বর্ণনায় শোনা যায় তিনি তাঁর ভ্রমণ দ্বারা একজন মানুষ হিসাবে "বাঙালি"য়ানা দ্বারা প্রভাবিত হন নি। তাঁর আপাত বয়স ৫০ এর শেষের দিক এবং তিনি মনোবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

শিকারে অনুপ্রাণিত হয়ে ভুবন সোম গুজরাটে "শিকারের ছুটি" নিয়ে যান। স্পষ্টত তাঁর এই অভিযান ছিল অপেশাদার। একজন অদক্ষ "শিকারী" হিসাবে ভুবন সোমকে এখানে চিত্রিত করা হয়েছে।

অল্প বয়সী গৌরীর সাথে তাঁর সাক্ষাত ছিল আকস্মিক। কারণ ঘটনাক্রমে গৌরীই তাঁর যত্ন-দেখভালের দায়িত্বে এবং পাখি "শিকার" করতে সাহায্যকারিনী ছিল। সে তাঁকে অনুর্বর প্রান্তরে সাহায্য করে বাড়িতে নিয়ে যায় এবং তাঁর যত্ন নেয়। তাঁর উপস্থিতি "পাখিরা টের পেয়ে" উড়ে পালাবার সম্ভাবনা দূর করতে যখন তাঁকে তাঁর পোশাক পরিবর্তন করতে হয়। এক জন কড়া অনমনীয় এবং বয়স্ক ব্যক্তির মানসিকতা থেকে খোলা মনের পরিবেশের উপযোগী উদ্দীপ্ত মানসিকতায় পরিবর্তন ঘটানোর এই মুহুর্তটি এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে ওঠে।

গৌরী এবং ভুবন সোমের পরবর্তী শিকার এরপর হয়ে ওঠে ভুবন সোমের রূপান্তরের একটি গীতিমূলক অনুসন্ধান। তিনি কেবল গৌরীর সাধারণ সৌন্দর্যেই মোহিত হন না। সেখানের হ্রদে ও আকাশে পাখির দর্শনীয় স্থানগুলিতেও তিনি মোহিত হন।

তাঁর শিকার "সফল" হয়। তবে সেই সাথে কেবল একজন মানুষ হিসাবে ভুবন সোমের সীমাবদ্ধতাগুলিকেও প্রকট করা হয়।

ভুবন সোম গৌরীর দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হন। তিনি আসলে সেই পরিবেশে থাকার প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি শিক্ষা লাভ করেন।

তিনি যখন তাঁর অফিসের চেম্বারে ফিরে আসেন তখন তাঁকে একজন নিয়মভঙ্গকারী রেলওয়ে কর্মীকে উদ্ধার করতে দেখা যায়। এটি চিত্রের একটি উপ-প্লট যা প্রাথমিক বর্ণনার গল্প এবং প্রসঙ্গটিকে সম্পূর্ণ করে তোলে।

মূলভাব সম্পাদনা

ভুবন সোমকে ভারতীয় নিউ ওয়েভ সিনেমার পথিকৃৎ বলে মানা হয়। জাতীয় চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার অর্থ সহায়তায় নির্মিত প্রথম দিকের চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে একটি। ছবিটি (ফিল্ম) একঘেঁয়ে, নির্জনতা, পারস্পরিক আস্থা এবং মমত্ববোধের ভাবনা তুলে ধরে। তুলে ধরে ভারতের গ্রামীণ-শহুরে বিভাজনটিকেও।

পুরস্কার সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহি সংযোগ সম্পাদনা