ভারতের সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশন

ভারতের সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশন (ইংরেজি: Delimitation commission বা Boundary commission) সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন অনুযায়ী ভারত সরকার কর্তৃক গঠিত একটি কমিশন। এই কমিশনের প্রধান কাজ সাম্প্রতিকতম জনগণনার ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন বিধানসভালোকসভা কেন্দ্রগুলির সীমানা পুনর্নির্ধারণ। সীমানা পুনর্নির্ধারণের ফলে আইনসভায় জনপ্রতিনিধির সংখ্যার কোনো হ্রাসবৃদ্ধি হয় না। তবে জনগণনা অনুসারে কোনো রাজ্যের তফসিলি জাতিউপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যার হেরফের হতে পারে।

সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশন একটি শক্তিশালী সংস্থার। এই সংস্থার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা যায় না। কমিশনের নির্দেশনামা লোকসভা বা সংশ্লিষ্ট বিধানসভায় পেশ করা যেতে পারে। কিন্তু এই নির্দেশনামায় সংশোধনী আনার কোনো অনুমতি নেই।

পূর্ববর্তী কমিশনসমূহ সম্পাদনা

অতীতে মোট চারবার সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশন স্থাপিত হয়েছে। এগুলি হল:

  • ১৯৫২ সালের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন বলে ১৯৫২ সালে স্থাপিত সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশন;
  • ১৯৬২ সালের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন বলে ১৯৬৩ সালে স্থাপিত সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশন;
  • ১৯৭২ সালের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন বলে ১৯৭৩ সালে স্থাপিত সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশন;
  • ২০০২ সালের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন বলে ২০০২ সালে স্থাপিত সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশন।

১৯৭৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত সরকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ স্থগিত রাখেন যাতে তাঁদের পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির কোনো প্রভাব লোকসভার প্রতিনিধিত্বের উপরে না পড়ে। এর ফলে লোকসভা কেন্দ্রগুলির আয়তনে ব্যাপক বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। সর্ববৃহৎ লোকসভা কেন্দ্রটির নির্বাচকের সংখ্যা যেখানে দাঁড়ায় ত্রিশ লক্ষ, সেখানে সর্বক্ষুদ্র লোকসভা কেন্দ্রটিতে এই সংখ্যা দেখা যায় পঞ্চাশ হাজারেরও কম।[১]

২০০২ সালের কমিশন সম্পাদনা

২০০১ সালের জনগণনার পর ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কুলদীপ সিংহকে চেয়ারম্যান করে ২০০২ সালের ১২ জুলাই সাম্প্রতিক সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশনটি গঠিত হয়। ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রয়োগ না করার একটি পিটিশন নোটিশ দেয়। ২০০৮ সালের ৪ জানুয়ারি রাজনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটি (সিসিপিএ) কমিশনের সুপারিশ প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়।[২] ২০০৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি, রাষ্ট্রপতি প্রতিভা দেবীসিংহ পাতিল সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশনের সুপারিশ অনুমোদন করেন। ফলে, কমিশনের সুপারিশকৃত নবগঠিত কেন্দ্রগুলিতে নির্বাচন কার্যকর হয়।[৩]

২০০৮ সালের মে মাসে তিন পর্বে আয়োজিত কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচন ২০০২ সালের সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশন কর্তৃক সুপারিশকৃত নতুন কেন্দ্রে প্রথম নির্বাচন।[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Election Commission of India"। ১৬ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ অক্টোবর ২০০৯ 
  2. Delimitation process now gets CCPA nod- Politics/Nation-News-The Economic Times
  3. "Delimitation notification comes into effect - The Hindu 20 February 2008"। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ অক্টোবর ২০০৯ 
  4. Delimitation may kick off with Karnataka

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা