ভবানী জামাক্কালাম

ভবানী জামাক্কালাম বলতে ভারতের তামিল নাড়ু অংশের এরোডে জেলার ভবানীতে উৎপাদিত কম্বল এবং কারপেক্টজাতীয় পণ্য দ্রব্যকে বুঝায় ।[১][২] এবং এটি ২০০৫-২০০৬ সালে ভারতের ভৌগোলিক নিদর্শনের চিহ্ন হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে ।[৩]

ভবানী জামাক্কালাম
ভৌগোলিক নির্দেশক
ভবানী জামাক্কালাম
বর্ণনাভবানী জামাক্কালাম হল ভবানী অঞ্চলে উৎপাদিত কম্বল এবং কারপেক্টজাতীয় পণ্য দ্রব্য
ধরনহস্তশিল্প
অঞ্চলভবানী , তামিল নাড়ু
দেশভারত
নথিবদ্ধ২০০৫-০৬
উপাদানসুতি এবং সিল্ক
প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইটhttp://ipindia.nic.in/girindia/

ইতিহাস সম্পাদনা

উনিশ শতকে ব্রিটিশ সরকারের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য ভারতীয় কারিগররা নতুন ধরনের পোশাক উদ্ভাবন করে ।[২] ভবানীর দর্জি সম্প্রদায়গণ রঙিন মোটা সূতার মাধ্যমে এই কম্বল তৈরি করে থাকেন ।[৪] উৎপাদিত জামাক্কালামের জনপ্রিয়তা অন্যান্য ঐতিহ্যগত শাড়ি পোশাকের বদলে এই জামাক্কালাম উৎপাদনের নেতৃত্ব দেয় । [৪]

ধরন সম্পাদনা

ভবানীতে দুই ধরনের জামাক্কালাম উৎপাদিত হয় ।

  • মোটা রঙিন তূলার সূতার তৈরি , যা শুধুমাত্র এই তূলার মাধ্যমে তৈরি করা হয় । [৫]
  • নকল (প্রাকৃতিক নয়) রেশমের তৈরি নরম কম্বল যা সুন্দর প্রান্ত যুক্ত । [৫]

ভবানী জামাক্কালামে আরও উৎপাদিত হয় বাকপাক(থলে) , চাদর ।[৬]

বিবরণ সম্পাদনা

ঐতিহ্যগতভাবে , জামাক্কালাম উৎপাদিত হয় সেখানকার আত্মনির্ভরশীল কারিগরদের নিজ বাড়িতে ।[৭] তারপর এই কম্বল প্রধান দর্জির নিকট পাঠানো হয় ।[৮] প্রধান দর্জি কম্বল পরীক্ষা করে অন্যান্য কারিগরদের সাথে যোগাযোগ করে । এই হস্তনির্মিত তাঁত বিক্রয়ের জন্য ব্যবসায়ীদের নিকট পাঠানো হয় ।[৯] সেখান থেকে ব্যবসায়ীগণ উৎপাদিত পণ্য নিকটবর্তী এলাকাগুলোতে পাঠিয়ে দেয় । ১৫০০ শ্রমিক এই জামাক্কালামের উৎপাদনের সাথে সরাসরি জড়িত যার দুই-তৃতীয়াংশ মহিলা[১০]

তাঁত সম্পাদনা

জামাক্কালাম উৎপাদনের জন্য প্রথমে সূতা কাঠের তাঁতে আড়াআড়ি ভাবে রাখা হয় তারপর এতে সূতার গাঁথুনি শুরু করা হয় ।[১০] এর জন্য হাত এবং পা উভয় ব্যবহার করতে হয় ।[১০] হাত দিয়ে উপরে ঝুলানো রশি নিচের দিকে টানতে হয় এবং পা দিয়ে নিচের কাঠের যন্ত্র ধাক্কা দিতে হয় ।[১০] এর ফলে আড়াআড়ি ভাবে রাখা সূতার সাথে নতুন একটি সূতা যুক্ত হয়ে যায় । এভাবে পণ্যটি ধীরে ধীরে উৎপাদিত হতে থাকে । [১০]

রপ্তানি সম্পাদনা

উৎপাদিত জামাক্কালাম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয় যেমন সুইডেন , জার্মানি , ইটালি , ইউনাইটেড কিংডম , ইউনাইটেড স্টেট সিংগাপুর[১১] ১৯৯৩ সালে সবথেকে বেশি কাপড় রপ্তানি হয় । .[১১]

প্রতিযোগিতা সম্পাদনা

২০০০ সাল থেকে হাতে তৈরি জামাক্কালাম মেশিনে তৈরি সূতার সাথে প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয়েছে ।[১২] অন্যান্য দেশের সস্তা পণ্য এই শিল্পকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে । [১২]

ভৌগোলিক অস্তিত্বে সম্পাদনা

২০০৫ সালে তামিল নাড়ু'র সরকার এই শিল্পকে ভৌগোলিক অস্তিত্বে হিসাবে উপস্থাপন করে । [১৩] ফলশ্রুতিতে ২০০৫-০৬ সালে ভারত সরকার ভৌগোলিক জামাক্কালামকে অস্তিত্বে ইঙ্গিত হিসাবে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে । [৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Parry, Breman, Kapadia। The worlds of Indian industrial labour। পৃষ্ঠা 380। 
  2. de Neve। The Everyday Politics of Labour। পৃষ্ঠা 42। 
  3. "Geographical indications of India"। Government of India। ২৬ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১৫ 
  4. de Neve। The Everyday Politics of Labour। পৃষ্ঠা 43। 
  5. de Neve। The Everyday Politics of Labour। পৃষ্ঠা 87। 
  6. "When passion met fashion"The Hindu। ১৩ এপ্রিল ২০১৪। 
  7. de Neve। The Everyday Politics of Labour। পৃষ্ঠা 167। 
  8. de Neve। The Everyday Politics of Labour। পৃষ্ঠা 45। 
  9. de Neve। The Everyday Politics of Labour। পৃষ্ঠা 44। 
  10. de Neve। The Everyday Politics of Labour। পৃষ্ঠা 86। 
  11. Assayag, Fuller। Globalizing India: Perspectives from Below। পৃষ্ঠা 93। 
  12. "No takers for Erode blankets"Deccan Chronicle। ৩১ মার্চ ২০১৩। 
  13. "GI tag: TN trails Karnataka with 18 products"Times of India। ২৯ আগস্ট ২০১৩।