বেনিগনো অ্যাকুইনো, জুনিয়র

বেনিগনো সিমন নিনয় অ্যাকুইনো, জুনিয়র (জন্ম: ২৭ নভেম্বর, ১৯৩২ - মৃত্যু: ২১ আগস্ট, ১৯৮৩) তারলাক প্রদেশের কনসেপসিওন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ফিলিপাইনের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও তারলাক প্রদেশের গভর্নর ছিলেন।[২][৩][৪][৫] রাষ্ট্রপতি ফার্দিনান্দ মার্কোস সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিরোধী দল গঠন করেন। কিন্তু অল্পকিছুদিন পর সামরিক আইনজারী করা হলে গ্রেফতার হন বেনিগনো অ্যাকুইনো। ১৯৮০ সালে হৃদজনিত সমস্যায় উন্নত চিকিৎসাকল্পে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবার অনুমতি দেয়া হয়।

বেনিগনো এস. অ্যাকুইনো, জুনিয়র
ফিলিপাইনের সিনেটর
কাজের মেয়াদ
৩০ ডিসেম্বর, ১৯৬৭ – ২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২[১]
প্রতিরক্ষা বিষয়ে রাষ্ট্রপতির পরামর্শক
কাজের মেয়াদ
১৯৪৯ – ১৯৫৪
তারলাকের গভর্নর
কাজের মেয়াদ
১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬১ – ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৬৭
তারলাকের উপ-গভর্নর
কাজের মেয়াদ
৩০ ডিসেম্বর, ১৯৫৯ – ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬১
কনসেপসিওনের মেয়র
কাজের মেয়াদ
৩০ ডিসেম্বর, ১৯৫৫ – ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৫৯
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মবেনিগনো সিমন অ্যাকুইনো, জুনিয়র
২৭ নভেম্বর, ১৯৩২
কনসেপসিয়ন, তারলাক, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ
মৃত্যু২১ আগস্ট ১৯৮৩(1983-08-21) (বয়স ৫০)
ম্যানিলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পারানাক, মেট্রো ম্যানিলা, ফিলিপাইন
মৃত্যুর কারণনিহত
সমাধিস্থলম্যানিলা মেমোরিয়াল পার্ক, পারানাক, মেট্রো ম্যানিলা, ফিলিপাইন
জাতীয়তাফিলিপিনো
রাজনৈতিক দললিবারেল (১৯৫৯-১৯৮৩)
লাবান (১৯৭৮-১৯৮৩)
অন্যান্য
রাজনৈতিক দল
ন্যাশিওনালিস্তা পার্টি (১৯৫৫-১৯৫৯)
দাম্পত্য সঙ্গীকোরাজন সি. অ্যাকুইনো
(১৯৫৪-১৯৮৩, তাঁর মৃত্যু)
সন্তানমা. এলিনা অ্যাকুইনো-ক্রুজ
অরোরা কোরাজন অ্যাকুইনো আবেলাদা
তৃতীয় বেনিগনো এস. অ্যাকুইনো
ভিক্টোরিয়া এলিসা অ্যাকুইনো-ডি
ক্রিস্টিনা বার্নাদেত্তে অ্যাকুইনো
বাসস্থানটাইমস স্ট্রিট, কুয়েজন সিটি
প্রাক্তন শিক্ষার্থীফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয়
অ্যাটিনিও ডি ম্যানিলা ইউনিভার্সিটি
সান বেদা কলেজ হাই স্কুল
সেন্ট জোসেফ’স কলেজ, কুয়েজন সিটি
পেশারাজনীতিবিদ
জীবিকাসাংবাদিক
ধর্মরোমান ক্যাথলিক

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

হাসিয়েন্দা মলিং, হাসিয়েন্দা সয়াং ও হাসিয়েন্দা মার্সিয়া প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন সমৃদ্ধশালী পরিবারে তার জন্ম।[৬] ফিলিপাইনের প্রথম স্বীকৃত রাষ্ট্রপতি এমিলিও আগুইনাল্দো’র বিপ্লবী দলের জেনারেল ছিলেন তার দাদা সারভিলানো অ্যাকুইনো।[৭] বাবা বেনিগনো এস. অ্যাকুইনো, সিনিয়র তারলাকে আজীবন সংসদ সদস্য ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে জাপানী সমর্থনপুষ্ট জোস পি লরেল সরকারের প্রতিনিধি সভায় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন তার বাবা।

কুয়েজন সিটিতে অবস্থিত সেন্ট জোসেফ কলেজে অধ্যয়ন শেষে স্যান বেদা কলেজে পড়াশোনা করেন। অ্যাটনিও ডি ম্যানিলায় স্নাতক শ্রেণীতে ভর্তি হলেও শিক্ষাজীবন বাঁধাগ্রস্ত হয়।[৮] সর্বকনিষ্ঠ যুদ্ধ সংবাদদাতা হিসেবে ১৭ বছর বয়সে দ্য ম্যানিলা টাইমসের জন্য কোরীয় যুদ্ধের সংবাদ প্রেরণের জন্য মনোনীত হন।

সংবাদে দক্ষতা থাকায় ১৮ বছর বয়সে রাষ্ট্রপতি এলপিডিও কুইরিনো’র কাছ থেকে ফিলিপাইন লিজিওন অব অনার পুরস্কারে ভূষিত হন। ২১ বছরে থাকাকালে তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রামোন ম্যাগসেসে’র ঘনিষ্ঠ পরামর্শক ছিলেন। ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে ভর্তি হলেও সাংবাদিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন ও পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। ম্যাক্সিমো সোলিভেনের মতে, অনেকগুলো বিদ্যালয়ে পড়াশোনার কারণে অনেক বন্ধুর সাথে শখ্যতা গড়ে উঠেছিল। ২২ বছর বয়সে ১৯৫৫ সালে কনসেপসিওন এলাকার মেয়র মনোনীত হন।[৯] পাঁচ বছর পর দেশের সর্বকনিষ্ঠ উপ-গভর্নর হিসেবে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে অবশ্য জলো রেভিলা তার এ রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। ২৯ বছর বয়সে তারলাক প্রদেশের গভর্নর ও ১৯৬৬ সালে লিবারেল পার্টির মহাসচিব মনোনীত হন।

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

মার্কোসের আমলে তিনি নিয়মিত সমালোচনা করতেন। সামরিক শাসনামলে তার বিরুদ্ধে হত্যা ও অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। এরফলে তিনি আমরণ অনশনের ডাক দেন। ২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৭ তারিখে সামরিক কমিশন অ্যাকুইনোকে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার আদেশ দেয়।[১০]

সাত বছর হাজতে থাকাকালে ১৯৮০ সালের মধ্য-মার্চে হৃদজনিত রোগে আক্রান্ত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে সিম্পোজিয়াম, বক্তৃতা, মার্কোসের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে র‌্যালি করেন। তন্মধ্যে, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮১ তারিখে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের উইলশায়ার এবেল থিয়েটারের র‌্যালিটি স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।[১১]

এরপর তিনি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তার প্রাণহানী কিংবা গ্রেফতারের কথা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছিল। লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৩ আগস্ট, ১৯৮৩ তারিখে দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সিঙ্গাপুরে যাত্রা বিরতীকালে জোহরে টুঙ্কু ইব্রাহিম ইসমাইলের সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটে ও মালয়েশীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ-আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।[১২] সেখানে ইব্রাহিমের বাবা ও অ্যাকুইনো’র ঘনিষ্ঠ বন্ধু সুলতান ইস্কান্দারের সাথে কথা বলেন। এরপর হংকং ত্যাগ করে তাইপেতে পৌঁছান তিনি। স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষে ১৯৮৩ সালে দেশে ফিরে আসলে ম্যানিলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। তার বিধবা পত্নী কোরাজন অ্যাকুইনো রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেন ও ইউনিডো দলের সদস্যরূপে ১৯৮৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

সম্মাননা সম্পাদনা

এরপর তার সম্মানার্থে ম্যানিলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে নিনয় অ্যাকুইনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নামকরণ করা হয়। তার মৃত্যুর দিনটি জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে উদযাপিত হয়।[১৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Original Term until December 30, 1973 cut short pursuant to the Declaration of Martial Law on September 23, 1972.
  2. Leonard, Thomas M. (2006). Encyclopedia of the developing world, Volume 1.
  3. Lentz, Harris M. (1988). Assassinations and executions: an encyclopedia of political violence, 1865–1986.
  4. "Benigno Simeon Aquino, Jr.". Encyclopædia Britannica.
  5. Jessup, John E. (1998). An encyclopedic dictionary of conflict and conflict resolution, 1945–1996.
  6. Rimban, Luz (জুলাই ৫–৬, ২০০৪)। "In Tarlac, CARP Gives Land To The Wealth"। ৪ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৫ 
  7. Perdon, Renato (মে ১৭, ২০১০)। "The Aquinos of Tarlac in the Philippines"Munting Nayon। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৪, ২০১৩ 
  8. Soliven, Maximo V. (August 26, 2008). "Ninoy: In the Eye of Memory" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ মার্চ ২০১১ তারিখে.
  9. "Senator Benigno 'Ninoy' Aquino Jr. remembered for his heroism and courage on his 79th Birth Anniversary"Manila Bulletin। নভেম্বর ২৭, ২০১১। 
  10. "Max Soliven recalls Ninoy Aquino: Unbroken"Philippines Star। ১০ অক্টোবর ২০০৮। ১৬ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৩০, ২০১৩ 
  11. "An NATv Exclusive: Ninoy Aquino's memorable speech in Los Angeles! (1 of 9)"। YouTube। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১৫, ২০০৯ 
  12. AQUINO'S FINAL JOURNEY, KEN KASHIWAHARA, October 16, 1983, The New York Times
  13. Republic Act No. 9256

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
আরসেনিও এ. লাগে
তারলাক প্রদেশের গভর্নর
১৯৬১-১৯৬৭
উত্তরসূরী
এডওয়ার্ডো কগজুয়াংকো, জুনিয়র
বিধানসভার আসন
পূর্বসূরী
প্রযোজ্য নয়
প্রজাতন্ত্রের সিনেটর
১৯৬৭-১৯৭২
উত্তরসূরী
প্রযোজ্য নয়