বিপন্ন ভাষা (ইংরেজি: Endangered language) হলো সেই ভাষা যা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, এর ব্যবহারকারীদের মৃত্যু বা অন্য ভাষা ব্যবহারের মধ্য দিয়ে। যখন কোনো ভাষার ব্যবহারকারী অবশিষ্ট থাকে না, তখনই ভাষা হারিয়ে বা বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং অন্তর্হিত বা মৃত ভাষা হিসেবে পরিগণিত হয়। সংরক্ষিত বা লিখিত পাণ্ডুলিপি অধ্যয়ন ও গবেষণার মাধ্যমে বিলুপ্ত ভাষা বা মৃত ভাষা অবলোকিত হয়, কিন্তু ভাষী (ভাষা ব্যবহারকারী বা ভাষক) ছাড়া এটি লুপ্ত এবং বিলোপপ্রাপ্ত হয়। যদিও পুরো মানব ইতিহাসে ভাষা ক্রমাগত বিলুপ্ত হয়ে থাকে, তবুও সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বায়ন, নব্য-উপনিবেশবাদ এবং অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালীদের ভাষা অন্য ভাষার উপর আধিপত্য বিস্তারের ফলে আশঙ্কাজনক হারে ভাষা বিলোপপ্রাপ্ত হচ্ছে।

বিশ্বের বিপন্ন ভাষার ৫০% এরও বেশি মাত্র আটটি দেশে অবস্থিত (মানচিত্রে লাল রঙে চিহ্নিত): ভারত , ব্রাজিল , মেক্সিকো , অস্ট্রেলিয়া , ইন্দোনেশিয়া , নাইজেরিয়া , পাপুয়া নিউ গিনি এবং ক্যামেরুন । এই জাতীয় দেশ এবং তাদের আশেপাশে এমন অঞ্চল রয়েছে যা ভাষাগতভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় অঞ্চল (মানচিত্রে নীল রঙে চিহ্নিত)।
কোনো নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা তাদের ঐতিহ্যগত ভাষাকে প্রথম ভাষা হিসেবে না শিখলে ভাষার মৃত্যু হতে পারে।

অধিক প্রচলিত ভাষা তুলনামূলক কম প্রচলিত ভাষার উপর প্রভাব বিস্তার করে, ফলে শেষমেশ তা বিলুপ্ত হয়ে যায়। বিশ্বে সবমিলিয়ে কত ভাষা আছে, তা অজানা। তবে নানাভাবে অনুমান করা হয়। সাধারণ বিদিত ভাষ্য হলো, বর্তমানে প্রচলিত ভাষার সংখ্যা ৬০০০ থেকে ৭০০০ এর মধ্যে এবং ২১০০ সনের মধ্যে এর নব্বই শতাংশই হারিয়ে যাবে বা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ২০টি অধিক প্রচলিত ও পরিচিত ভাষার প্রত্যেকটিতে কথা বলে ৫০ মিলিয়নের বেশি লোক, যা বিশ্বের জনসংখ্যার অর্ধেক, অপরদিকে অন্যান্য ভাষাগুলোতে কথা বলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা, যার সংখ্যা ১০,০০০ এর অধিক হবে না।