বারুইপুর মহকুমা

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার একটি মহকুমা

বারুইপুর মহকুমা হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্তর্গত দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার একটি প্রশাসনিক মহকুমা। জেলার মোট জনসংখ্যার ২৯.৩৬ শতাংশ এই মহকুমার অধিবাসী।[৩]

বারুইপুর
মহকুমা
স্থানাঙ্ক: ২২°২১′৫৬″ উত্তর ৮৮°২৫′৫৭″ পূর্ব / ২২.৩৬৫৪৪৩২° উত্তর ৮৮.৪৩২৫০২৮° পূর্ব / 22.3654432; 88.4325028
দেশ ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
বিভাগপ্রেসিডেন্সি
জেলাদক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
সদরবারুইপুর
আয়তন
 • মোট১,৩৫০.৫০ বর্গকিমি (৫২১.৪৩ বর্গমাইল)
উচ্চতা৯ মিটার (৩০ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট২৩,৯৬,৬৪৬
 • জনঘনত্ব১,৮০০/বর্গকিমি (৪,৬০০/বর্গমাইল)
ভাষা
 • সরকারিবাংলা[১][২]
 • অতিরিক্ত সরকারিইংরেজি[১]
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০)
পিন৭০০১৪৪
টেলিফোন কোড+৯১ ৩৩
যানবাহন নিবন্ধনডব্লিউবি-১ থেকে ডব্লিউবি-১০, ডব্লিউবি-১৯ থেকে ডব্লিউবি-২২, ডব্লিউবি-৯৫ থেকে ডব্লিউবি-৯৯
লোকসভা কেন্দ্রজয়নগর (তফসিলি জাতি),
যাদবপুর
বিধানসভা কেন্দ্রকুলতলি (তফসিলি জাতি),
জয়নগর (তফসিলি জাতি),
বারুইপুর পূর্ব (তফসিলি জাতি),
বারুইপুর পশ্চিম,
সোনারপুর দক্ষিণ, ভাঙর,
সোনারপুর উত্তর
ওয়েবসাইটwww.baruipur.org

বারুইপুর মহকুমা হল একটি গ্রামীণ মহকুমা। এখানে নগরায়ণ হয়েছে সীমিত স্তরে। মহকুমার মোট জনসংখ্যার ৩১.০৫ শতাংশ শহরাঞ্চলে এবং ৬৮.৯৫ শতাংশ গ্রামাঞ্চলে বাস করে। মহকুমার দক্ষিণাঞ্চলে ২০টি জনগণনা নগর রয়েছে। সমগ্র দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত এবং এই জেলার দক্ষিণাঞ্চল বারুইপুর-জয়নগর সমভূমির অন্তর্গত।[৪][৫][৬]

ইতিহাস সম্পাদনা

বারুইপুর শহরের কয়েক মাইল পূর্বে আটঘরা গ্রামে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে মৌর্য যুগের মূর্তি ও মুদ্রা এবং পাল যুগের কিছু প্রত্ননিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। গবেষকদের মতে, প্রায় দুই হাজার বছর আগে এই স্থানটি ছিল একটি ইন্দো-রোমান বাণিজ্য কেন্দ্র তথা গঙ্গারিডি রাজ্যের প্রধান বন্দর নগরী। ফাঁসিডাঙায় বিশালাকায় জীবজন্তুর কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছে। এই মহকুমার বড়ো দিঘিগুলি থেকে শুঙ্গ, কুষাণ, পাল ও সেন যুগের কষ্টিপাথরের মূর্তি, মৃৎপাত্র, পোড়ামাটির পুতুল, মুদ্রা, লিপি ও সিলমোহর সহ নানা প্রত্নসামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। দমদম ঢিবির কাছে মাটির নিচে প্রাচীন দুর্গের প্রাচীর আবিষ্কৃত হয়েছে। সেই প্রাচীরের নিকটবর্তী ইটের ঘরের মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পোড়ামাটির গোলাকার অস্ত্র ও ধাতুনির্মিত বর্শাফলক। এই মহকুমায় আদিগঙ্গার তীরবর্তী নবগ্রাম, রামনগর, সীতাকুণ্ড, পুরন্দরপুর, ধোপাগাছি-ধামনগর, কল্যাণপুর প্রভৃতি স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের ফলে যক্ষিণী মূর্তি, নানারকম মৃৎপাত্র, পোড়ামাটির খেলনা, সিলমোহর, মাতৃকামূর্তি, স্বর্ণালংকার, নানাপ্রকার বাসনপত্র, হাতির দাঁত ও পাথরের বিভিন্ন ভাঙা ও অক্ষত মূর্তি, বিদেশি দানপাত্র, সোনা, রুপো ও তামার মুদ্রা প্রভৃতি আবিষ্কৃত হয়েছে।[৭]

বারুইপুর একটি প্রাচীন বর্ধিষ্ণু জনপদ। ১৪৯৫ খ্রিস্টাব্দে বিপ্রদাস পিপলাই কর্তৃক রচিত মনসার ভাসানে চাঁদ সদাগরের সিংহল যাত্রাপথের বর্ণনায় বারুইপুরের উল্লেখ পাওয়া যায়:

কালীঘাটে চাঁদরাজা কালীকা পূজিয়া।
চুড়াঘাট বাহিয়া যায় জয়ধ্বনি দিয়া।।
ধনস্থান এড়াইল বড় কুতূহলে।
বাহিল বারুইপুর মহা কোলাহলে।।
হুলিয়ার গাঙ্গবাহি চলিত ত্বরিত।
ছত্রভোগ গিয়া রাজা চাপায় বূহিত।।

সন্ন্যাসী আনন্দগিরির পত্নী তারামণি দেবী বারুইপুরের আনন্দময়ী কালীবাড়ির অদূরে দেবী বিশালাক্ষীর একটি দারুবিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জনশ্রুতি, তারামণি দেবীর সমাধি এই মন্দির প্রাঙ্গনে এবং আনন্দগিরির সমাধি রয়েছে আনন্দময়ী কালীবাড়ির সিংহাসনের নিচে পঞ্চমুণ্ডির আসনের উপর।[৮]

মুঘল আমলে বারুইপুরের রায়চৌধুরী পরিবার মেদমল্ল পরগনার জমিদারি স্বত্ব পান। সেই সময় এই পরিবারের নিবাস ছিল রাজপুর গ্রামে। তিন লক্ষ তিন হাজার টাকা রাজস্ব দিতে না পারায় ১৬৭৬ সালে রায়চৌধুরী পরিবারের রাজা মদন রায়কে বন্দী করে ঢাকায় নিয়ে যান শায়েস্তা খাঁ। সেই সময় বাশড়ার জঙ্গলে মোবারক গাজি নামে এক দৈবশক্তিসম্পন্ন ফকির বাস করতেন। মদন রায় তাঁর শরণাপন্ন হলে ঢাকা দরবারে তিনি সসম্মানে মুক্তিলাভ করেন। কথিত আছে, মোবারক গাজি একটি বাঘ নিয়ে দরবারে উপস্থিত হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে মদন রায় গাজি সাহেবের মাহাত্ম্য প্রচার করেন। বর্তমানে ঘুটিয়ারি শরিফ স্টেশনের কাছে গাজি সাহেবের আস্তানা অবস্থিত। বারুইপুর সেই সময় ছিল জঙ্গলময় এলাকা। মদন রায়ের পৌত্র দুর্গাচরণ রায়চৌধুরী প্রথম বারুইপুরে বসবাস করতে আসেন। এরপর রায়চৌধুরীরা প্রচুর জমি দান করে বিভিন্ন বর্ণের মানুষকে সেখানে বসবাসের সুযোগ করে দেন। ফলে স্থানটিও কিছুদিনের মধ্যেই জনাকীর্ণ হয়ে ওঠে। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বেশ কিছু রাজস্ব ও প্রশাসন-বিষয়ক কার্যালয় চালু হয় বারুইপুরে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল ‘নিমক মহল’ বা লবণ দফতর। নিমক মহলের অন্যতম সদর দফতর ও একজন মেডিক্যাল অফিসারের দফতর গড়ে ওঠে এখানে। নিমক মহলের এজেন্ট প্লাউডন ১৮২০ সালে এখানে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮২৩ সালে বিদ্যালয়টি মিশনারি স্কুলে পরিণত হয়। ১৮৪৬ সালে এই অঞ্চলে খ্রিস্টধর্ম প্রসারের উদ্দেশ্যে একটি গির্জা স্থাপিত হয়। ১৮৬৯ সালে বারুইপুর পুরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯১০ সালে এই পুরসভার আয়তন ছিল মাত্র ২ বর্গমাইল এবং পুরসভাটি বিভক্ত ছিল বারুইপুর, মণ্ডলপাড়া, ব্রাহ্মণপাড়া, কামারপাড়া, বাজার ও শাসন নামে ছয়টি ওয়ার্ডে। ১৮৫৮ সালে প্রথম বারুইপুর মহকুমা গঠিত হয়। ১৮৮৩ সালে সেই মহকুমা মিশে যায় আলিপুর মহকুমার সঙ্গে। এরপর ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আবার গঠিত হয় বারুইপুর মহকুমা।[৯]

১৮৬৪ সালের ৫ মার্চ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে বারুইপুরে আসেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং ১৮৭০ সালে তিনি এখান থেকেই বদলি হয়ে যান বহরমপুরে। এই সময়কালে কিছুকাল তিনি মজিলপুরেও বাস করেছেন। সেখান থেকেই বারুইপুর আদালতে আসতেন কার্যোপলক্ষ্যে। এই যুগে বারুইপুরের আশেপাশে চাংড়িপোতা, রামনগর, রাজপুর, হরিনগর, জয়নগর, মাহিনগর প্রভৃতি অঞ্চলে কলকাতা-নির্ভর শিক্ষিত লোকেদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছিল। এছাড়া বারুইপুরে ছিল সংস্কৃত ভাষা চর্চার কেন্দ্র; সংস্কৃত কলেজের কয়েকজন বিদগ্ধ পণ্ডিত এই অঞ্চলে বসবাস করতেন। এঁদের সাহচর্য তো বঙ্কিমচন্দ্র পেয়েইছিলেন, তদুপরি কলকাতা থেকে জগদীশনাথ রায় ও দীনবন্ধু মিত্র সহ বন্ধুবর্গও তাঁর সঙ্গে প্রায়শই দেখা করতে বারুইপুরে আসতেন। বারুইপুরে থাকাকালীনই বঙ্কিমচন্দ্র দুর্গেশনন্দিনী, কপালকুণ্ডলামৃণালিনী উপন্যাস তিনটি রচনা করেছিলেন।[১০]

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম যুগে হিন্দুমেলার অনুষ্ঠান বারুইপুরের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৮৬৭ সালে হিন্দুমেলার প্রথম প্রবর্তনের পর তিন বার বারুইপুরে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়: ১৮৬৯, ১৮৭১ ও ১৮৭২ সালে। প্রথম বছরের হিন্দুমেলা সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। ১৮৭১ সালে জমিদার রাজেন্দ্রকুমার রায়চৌধুরীর পৃষ্ঠপোষকতা ও স্থানীয় যুবকদের উদ্যোগেএই মেলা আয়োজিত হয়। মেলার সহ-সম্পাদক ছিলেন নবগোপাল বসু। প্রায় দশ হাজার লোক ৩০ ফাল্গুন থেকে ২ চৈত্র পর্যন্ত তিন দিনের এই মেলায় যোগ দিয়েছিলেন। বক্তৃতা, আলোচনা, কৃষি ও শিল্প প্রদর্শনী, ব্যায়াম ও সংগীতানুষ্ঠান ছাড়াও এই বছর মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল অশ্বারোহণ, কুস্তি, দৌড় ও বন্দুক ছোঁড়ার প্রতিযোগিতা। ১৮৭২ সালে বারুইপুরে শেষ বারের মতো আয়োজিত হিন্দুমেলাও সাফল্য অর্জন করে। এই বছরও তিন দিনের মেলায় কৃষিজাত ও শিল্পজাত পণ্যের প্রদর্শনী, ব্যায়াম, আবৃত্তি ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।[১১]

প্রশাসনিক বিভাগ সম্পাদনা

বারুইপুর মহকুমায় ৯টি থানা, ৭টি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, ৭টি পঞ্চায়েত সমিতি, ৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৫২৩টি মৌজা, ৪৮২টি জনবসতিপূর্ণ গ্রাম, ৩টি পৌরসভা ও ৩০টি জনগণনা নগর রয়েছে। এই মহকুমার অন্তর্গত পৌরসভাগুলি হল জয়নগর মজিলপুর, বারুইপুররাজপুর সোনারপুর এবং জনগণনা নগরগুলি হল রাধানগর, দাংগা, রামচন্দ্রপুর, বিদ্যাধরপুর, কালিকাপুর, চকবাড়িয়া, সাহেবপুর, রায়নগর, কালিকাপুর বারাসাত, বহরু, উত্তরপাড়ানিজ, আলিপুর, উত্তর দুর্গাপুর, নিমপীঠ, তুলসীঘাটা, পেটুয়া, গড়িয়া, পাঁচঘড়া, মল্লিকপুর, হরিহরপুর, চম্পাহাটি, সোলগোহালিয়া, নারিদানা, বারুইপুর, সালিপুর, খোদারবাজার, কোমারহাট, মরিচা, ভাঙর রঘুনাথপুরগোবিন্দপুর[৩][১২][১৩][১৪] এছাড়া নিউ টাউন আংশিকভাবে বারুইপুর মহকুমার অন্তর্গত।

কলকাতা মহানগরীয় অঞ্চল সম্পাদনা

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, বারুইপুর মহকুমার অন্তর্গত রাজপুর সোনারপুর পৌরসভাটি কলকাতা মহানগরীয় অঞ্চলের অন্তর্গত।[১৫]

থানা সম্পাদনা

বারুইপুর মহকুমার অন্তর্গত থানাগুলি হল:[৩][১৬]

থানা এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা
(কিলোমিটার)
সীমানা (কিলোমিটার) পুরসভা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক
সোনারপুর ১৬৯.৮১৬ - রাজপুর সোনারপুর সোনারপুর
জয়নগর ৪৩৮.০৬ - জয়নগর মজিলপুর জয়নগর ১, জয়নগর ২
কুলতলি ২৪৪.১৬ - - কুলতলি
মাইপিট উপকূল ১৩১.৮৭৫ - - কুলতলি
বারুইপুর ২১২.৪৮ - বারুইপুর বারুইপুর
বারুইপুর মহিলা - - বারুইপুর বারুইপুর
ভাঙর ১২১.৮৭ - - ভাঙর ১
কলকাতা চর্মনগরী - - - ভাঙর ১, ভাঙর ২
কাশীপুর ৯৬.৩ - - ভাঙর ২

সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক সম্পাদনা

বারুইপুর মহকুমার সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকগুলি হল:[৩][১৭][১৮]

সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক সদর
আয়তন
কিলোমিটার
জনসংখ্যা
(২০১১)
তফসিলি জাতি % তফসিলি উপজাতি % হিন্দু % মুসলমান % সাক্ষরতার
হার %
জনগণনা
নগর
সোনারপুর সোনারপুর ১২০.৬৩ ১৭৫,৭১৩ ৫৩.১৯ ১.৪০ ৮১.৪৯ ১৫.৯২ ৭৯.৬৬
জয়নগর ১ বহড়ু ১৩১.০১ ২৬৩,১৫১ ৩৯.০১ ০.০৩ ৫২.৬৫ ৪৭.৩৫ ৭৩.১৭
জয়নগর ২ নিমপীঠ ১৮৬.২৫ ২৫২,১৬৪ ৩৩.৯৪ ০.৪১ ৪৭.০৩ ৫২.২৩ ৬৯.৭১
কুলতলি জামতলা ৩০৬.১৮ ২২৯,০৫৩ ৪৫.৪৯ ২.৪৮ ৬৯.৮১ ২৯.৮৬ ৬৯.৩৭ -
বারুইপুর পিয়ালি টাউন, বারুইপুর ২২৬.১৬ ৪৩৩,১১৯ ৩৮.২২ ০.২৬ ৬১.৮৬ ৩০.৯৬ ৭৬.৪৬ ১২
ভাঙর ১ গোবিন্দপুর ১৫৩.৬২ ২৪৯,১৭০ ২০.৯৯ ১.২৬ ৩২.৩৮ ৬৭.৩৮ ৭২.০৬
ভাঙর ২ ভাঙর ১৬২.০৪ ২৪৬,৭০৮ ১৯.৮২ ০.৭৭ ২৯.২৬ ৭০.৪৯ ৭৪.৪৫ -

গ্রাম পঞ্চায়েত সম্পাদনা

বারুইপুর মহকুমায় ৭টি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অধীনে ৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে:[১৯][২০]

শিক্ষাব্যবস্থা সম্পাদনা

২০১১ সালের জনগণনা অনুসায়ী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সাক্ষরতার হার ৭৭.৫১ শতাংশ, যেখানে বারুইপুর মহকুমার সাক্ষরতার হার ৭৭.৪৫ শতাংশ।[২১]

এই মহকুমার উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি হল:

স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পাদনা

বারুইপুর মহকুমার চিকিৎসাকেন্দ্রগুলি হল:

হাসপাতাল: (নাম, অবস্থান, শয্যাসংখ্যা)[৩৩]

  • বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল, বারুইপুর, ৬৮টি শয্যা
  • প্রণতি ভট্টাচার্য্য স্মৃতি মাতৃসদন, সোনারপুর, ২০টি শয্যা
  • জয়নগর-মজিলপুর ম্যাটারনিটি হোম, জয়নগর মজিলপুর, ১০টি শয্যা
  • জয়নগর হাসপাতাল, জয়নগর মজিলপুর, ২টি শয্যা

গ্রামীণ হাসপাতাল: (নাম, সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, অবস্থান, শয্যাসংখ্যা) [৩৪]

ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র: (নাম, সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, অবস্থান, শয্যাসংখ্যা)[৩৫]

প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র (সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক অনুযায়ী): (সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থান, শয্যাসংখ্যা)[৩৬]

আইনসভা কেন্দ্র সম্পাদনা

সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশনের নির্দেশানুসারে পশ্চিমবঙ্গের আইনসভা কেন্দ্রগুলির সীমানা পুনর্বিন্যাসের পর বারুইপুর মহকুমার অন্তর্গত বিধানসভা ও লোকসভা কেন্দ্রগুলির অধিভুক্ত এলাকাগুলির বিবরণ নিম্নরূপ:[৩৭]

বিধানসভা কেন্দ্র
  1. কুলতলি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের সমগ্র এলাকা এবং জয়নগর ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের বাইশহাটা, চুপরিঝরা, মণিরহাট ও নালগোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে কুলতলি বিধানসভা কেন্দ্র গঠিত।
  2. জয়নগর ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অপর ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত, জয়নগর মজিলপুর পুরসভা এবং জয়নগর ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের বহড়ু ক্ষেত্র, দক্ষিণ বারাসাত, হরিনারায়ণপুর, রাজপুর কোরাবাগ, শ্রীপুর ও উত্তর দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে জয়নগর বিধানসভা কেন্দ্র গঠিত।
  3. জয়নগর ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অপর ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং বারুইপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের বেগমপুর, বেলেগাছি, বৃন্দাখালি, চম্পাহাটি, হাড়দহ, নবগ্রাম, রামনগর ১, রামনগর ২ ও দক্ষিণ গড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র গঠিত।
  4. বারুইপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অপর দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বারুইপুর পুরসভা নিয়ে বারুইপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র গঠিত।
  5. রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ৮ থেকে ২৪ নং ওয়ার্ড এবং সোনারপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের কালিকাপুর ১, কালিকাপুর ২, লাঙলবেড়িয়া, পোলঘাট, প্রতাপনগর ও সোনারপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র গঠিত।
  6. সোনারপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অপর ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ১ থেকে ৭ ও ২৫ থেকে ৩৫ নং ওয়ার্ডগুলি নিয়ে সোনারপুর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র গঠিত।
  7. ভাঙর ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের সমগ্র এলাকা এবং ভাঙর ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের জাগুলগাছি, নারায়ণপুর ও প্রাণগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে ভাঙর বিধানসভা কেন্দ্র গঠিত।
  8. ভাঙর ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অপর ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের অংশ।

কুলতলি, জয়নগর ও বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র তিনটি তফসিলি জাতি প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত।

লোকসভা কেন্দ্র
  1. কুলতলি, ক্যানিং পূর্ব ও জয়নগর বিধানসভা কেন্দ্র তিনটি জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এই কেন্দ্রটি তফসিলি জাতি প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত।
  2. বারুইপুর পূর্ব, বারুইপুর পশ্চিম, সোনারপুর উত্তর, সোনারপুর দক্ষিণ ও ভাঙর বিধানসভা কেন্দ্র যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Fact and Figures"Wb.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৯ 
  2. "52nd Report of the Commissionerr for Linguistic Minorities in India" (পিডিএফ)Nclm.nic.inMinistry of Minority Affairs। পৃষ্ঠা 85। ২৫ মে ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৯ 
  3. "District Statistical Handbook 2014 South Twety-four Parganas"Table 2.1 , 2.2, 2.4b। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৯ 
  4. "District Statistical Handbook 2014 South Twety-four Parganas"Table 2.1 , 2.2, 2.4b। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  5. "Census of India 2011, West Bengal, District Census Handbook, South Twentyfour Parganas, Series – 20, Part XII-A, Village and Town Directory" (পিডিএফ)Page 13, Physiography। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  6. "District Human Development Report: South 24 Parganas"Chapter 9: Sundarbans and the Remote Islanders, p 290-311। Development & Planning Department, Government of West Bengal, 2009। ৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  7. চব্বিশ পরগনা: উত্তর-দক্ষিণ-সুন্দরবন, কমল চৌধুরী, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯৯ সংস্করণ, ২০২১ মুদ্রণ, পৃ. ২৮৪, ২৮৬
  8. চব্বিশ পরগনা: উত্তর-দক্ষিণ-সুন্দরবন, কমল চৌধুরী, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯৯ সংস্করণ, ২০২১ মুদ্রণ, পৃ. ২৮৩
  9. চব্বিশ পরগনা: উত্তর-দক্ষিণ-সুন্দরবন, কমল চৌধুরী, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯৯ সংস্করণ, ২০২১ মুদ্রণ, পৃ. ২৮৪
  10. চব্বিশ পরগনা: উত্তর-দক্ষিণ-সুন্দরবন, কমল চৌধুরী, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯৯ সংস্করণ, ২০২১ মুদ্রণ, পৃ. ২৮৫
  11. চব্বিশ পরগনা: উত্তর-দক্ষিণ-সুন্দরবন, কমল চৌধুরী, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯৯ সংস্করণ, ২০২১ মুদ্রণ, পৃ. ২৮৫-২৮৬
  12. "CD block Wise Primary Census Abstract Data(PCA)"West Bengal – District-wise CD blocks। Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৯ 
  13. "District Wise List of Statutory Towns (Municipal Corporation,Municipality,Notified Area and Cantonment Board) , Census Towns and Outgrowths, West Bengal, 2001"। Census of India, Directorate of Census Operations, West Bengal। ২১ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০০৮ 
  14. "List of Districts/C.D.Blocks/ Police Stations with Code No., Number of G.Ps and Number of Mouzas"। Census of India, Directorate of Census Operations, West Bengal। ১৬ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০০৮ 
  15. "Provisional Population Totals, Census of India 2011" (পিডিএফ)Constituents of Urban Agglomeration Having Population Above 1 Lakh। Census of India 2011। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৯ 
  16. "Baruipur police district"। West Bengal police। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৯ 
  17. "District Census Handbook: South 24 Parganas, Series 20, Part XII B" (পিডিএফ)Map of South 24 Parganas with CD block HQs and Police Stations (on the fourth page)। Directorate of Census Operations, West Bengal, 2011। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৯ 
  18. "BDO Offices under South 24 Parganas District"। West Bengal Public Library Network, Government of West Bengal। ৩ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৯ 
  19. "Directory of District, Subdivision, Panchayat Samiti/ Block and Gram Panchayats in West Bengal"South 24 Parganas - Revised in March 2008। Panchayats and Rural Development Department, Government of West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৯ 
  20. "Directory of District, Sub division, Panchayat Samiti/ Block and Gram Panchayats in West Bengal, March 2008"West Bengal। National Informatics Centre, India। ১৯ মার্চ ২০০৮। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০০৮ 
  21. "District Statistical Handbook 2014 South Twety-four Parganas"Basic data: Table 4.4, 4.5, Clarifications: other related tables। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  22. "Ramakrishna Mission Residential College"। RKMC। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  23. "Ramakrishna Mission Blind Boys Academy College"। ICBSE। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৯ 
  24. "Baruipur College"। Careers 360। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  25. "Al-Ameen Minority College"। AAMMC। ৩০ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৯ 
  26. "Dhruva Chand Halder College"। DCHC। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  27. "Kultali Dr. B.R.Ambedkar College"। KDBRAC। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  28. "Bhangar Mahavidyalay"। BM। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  29. "Sushil Kar Collegr"। SKC। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  30. "Sonarpur Mahavidyalaya"। SM। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  31. "Future Institute of Engineering and Management"। FIEM। ৩০ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  32. "Rabindra Shiksh Sammilani Law College"। Careers 360। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৯ 
  33. "Health & Family Welfare Department" (পিডিএফ)Health Statistics - Hospitals। Government of West Bengal। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৯ 
  34. "Health & Family Welfare Department" (পিডিএফ)Health Statistics – Rural Hospitals। Government of West Bengal। ৮ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৯ 
  35. "Health & Family Welfare Department" (পিডিএফ)Health Statistics – Block Primary Health Centres। Government of West Bengal। ১৬ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৯ 
  36. "Health & Family Welfare Department" (পিডিএফ)Health Statistics – Primary Health Centres। Government of West Bengal। ২১ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৯ 
  37. "Press Note, Delimitation Commission" (পিডিএফ)Assembly Constituencies in West Bengal। Delimitation Commission। পৃষ্ঠা 12–14, 24। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০০৯