বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি), ২৬ মার্চ ১৯৭২ বাংলাদেশ সরকারের জাতীয়করণকৃত মিল সমূহের কার্য্যক্রম সমূহ তদারকি, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ করণ এবং নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও উন্নয়ন করণের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭২ সালের ১লা জুলাই হতে জাতীয়করণকৃত ৭৪টি মিল নিয়ে বিটিএমসি তার আনুষ্ঠানিক কার্য্যক্রম শুরু করে পরবর্তীতে আরো ১২ মিল প্রতিষ্ঠার ফলে বিটিএমসির মোট মিল সংখ্যা দাড়ায় ৮৬টি। সরকারী সিন্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় ৩৫টি মিল বাংলাদেশী মালিকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। লিকুইডেশনের মাধ্যমে ৫টি এবং দরপত্রের মাধ্যমে ১৫টি বিক্রি করা হয় ও ৯টি শ্রমিক-কর্মচারীদের নিকট হস্তান্তর করা হয়, ৪টি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়/লিকুইডেশন সেলে ন্যস্ত করা হয়, ৩টি মিল প্রাইভেটাইজেশন কমিশনে ন্যস্ত করা হয়। বর্তমানে ১৫টি মিল বিটিএমসি’র প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে আছে তম্মধ্যে ৬টি মিল সার্ভিসচার্জ পদ্ধতিতে চালু আছে।[১][২]

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন
সংক্ষেপেবিটিএমসি
গঠিত১৯৭২
ধরনসরকারী
সদরদপ্তরঢাকা, বাংলাদেশ
যে অঞ্চলে কাজ করে
বাংলাদেশ
দাপ্তরিক ভাষা
বাংলা
চেয়ারম্যান
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আহমেদ জাকারিয়া
ওয়েবসাইটবাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন

ইতিহাস সম্পাদনা

১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ শিল্প প্রতিষ্ঠান (রাষ্ট্রিয়করণ) আদেশের ১০ নং অনুচ্ছেদের আওতায় (১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ নং-২৭) বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি) প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭২ সালের ১লা জুলাই হতে আনুষ্ঠানিক কার্য্যক্রম শুরু করে। সরকারের বিরাষ্ট্রিয়করণ ও ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তর নীতির আওতায় ১৯৭৭ হতে ২০১৩ সালের মধ্যে ৬৫টি মিল হস্তান্তর, বিক্রি ও অবসায়ন করা হয়।

বর্তমান কাঠামো সম্পাদনা

ভিশন সম্পাদনা

বস্ত্র খাতে বিটিএমসিকে একটি লাভজনক ও উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলা।

মিশন সম্পাদনা

  1. মানসম্মত সূতা ও কাপড় তৈরির মাধ্যমে বিটিএমসিকে টেক্সটাইল সেক্টরে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা।
  2. টেক্সটাইল সেক্টরের উন্নতির মাধ্যমে জাতীয় উৎপাদনে অবদান রাখা।
  3. দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে বস্ত্র খাতের উন্নয়ন।
  4. দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তাদের জন্য বিনিয়োগ যোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি।
  5. আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার।
  6. কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রশিক্ষন, গবেষণা, ও শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনবল গড়ে তোলা।

বিটিএমসি’র কার্যক্রম সম্পাদনা

  • সংস্থার নির্দেশনা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম এর ব্যবস্থা এবং এর প্রতিষ্ঠানসমূহ সরকার কর্তৃক নিয়োজিত পরিচালক পর্ষদের উপর ন্যাস্ত।
  • বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান সমূহের বাণিজ্যিক ভাবে পরিচালনের জন্য জাতীয় পরিকল্পনা ও নীতিমালা প্রস্তুতকল্পে সরকারের সাথে সমন্বয়ে সহযোগীতা করা।
  • সরকারের পরামর্শে ও অনুমোদনক্রমে বিএমআরই সহ নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের চিত্র শনাক্তে, সূত্রপাত, প্রস্তুতকরন এবং তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
  • সরকারের অনুমোদনক্রমে নতুন প্রকল্প স্থাপনের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা ও সমীক্ষাসমূহ চিহ্নিত করন ও সূত্রপাতকরন।
  • উন্নয়ন প্রকল্প উন্নয়ন জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর প্রস্তুত এবং বাস্তবায়ন করা।
  • সংশোধিত এডিপি’তে সম্পদের ঘাটতি পরিলক্ষিত হলে সরকারের কর্তৃক সংস্থার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা।
  • বৈদশিক সাহায্যের মাধ্যমে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পেসমূহ সরকারের পরামর্শ ও অনুমোদনক্রমে শনাক্ত, সূত্রপাত ও প্রক্রিয়াধীন করা।
  • এডিপির আওতাধীন উন্নয়ণ কর্মকান্ডের বাস্তবায়ন তদারকিকরন,এবং অর্জন,ঘাটতি, সমস্যা, সংশোধন এবং নীতিমালা বিষয়ক কিছু থাকলে তা সরকারি সংস্থাকে অবহিত করা।
  • উন্নয়ন প্রকল্পের পুনঃসংশোধন, সংশোধন এবং ভবিষ্যতের কর্মসূচীর চিত্র তুলে ধরতে প্রয়োজনীয় মূল্যায়ন করা।
  • জাতীয় চাহিদার প্রেক্ষাপটে সরকারের চাহিদা অনুযায়ী কোন বিষয়ের উপর সুর্নিদষ্টভাবে পর্যবেক্ষণ করা।
  • বস্ত্র খাতে উৎপাদন, বিতরন,দাম নির্ধারন, শ্রম এবং ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি সরকারের নীতির আওতায় বাস্তবায়ণ করা।
  • প্রতিষ্ঠানের বাস্তবভিক্তিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা ও উদ্দেশ্য সমূহ উপস্থাপন করা।
  • প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা, সম্পদের ফলপ্রসূ ও সুষ্ঠ ব্যবহার, প্রতিষ্ঠানের সমস্যাবলী শনাক্তকরন এবং প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনা প্রদানের বিষয়টি তদারকি করা।
  • কর্ম পদ্ধতি, পন্যের গুনগতমান, উৎপাদন বৃদ্ধি, অপচয় ও ব্যয় নূন্যতম রাখার মানদন্ড গ্রহণ করা।
  • সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সংস্থা ও সরকারের সাথে পর্যাপ্ত,সুনির্দিষ্ট এবং নির্দিষ্ট সময়ে তথ্য সরবরাহের লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবস্থার প্রবর্তন ও তত্ববধান করা।
  • প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে সংবিধিবদ্ধ ও আইনগত বাধা দূর করতে হবে।
  • দক্ষ জনবলের চাহিদা পুরনে মাঠ ও কারখানা পর্যায়ে মানবসম্পদের উন্নয়ন ও প্রশিক্ষন প্রদান করা।
  • আমদানীকৃত ও স্থানীয় উভয় ধরনের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও কাঁচামাল ক্রয়ের লক্ষ্যে নীতিমালা ও কার্যপ্রনালী প্রনয়ন করা।
  • প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী মেশিনারী যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ এবং প্রচুর সামগ্রি ক্রয় করা যেগুলো বিভিন্ন কারিগরী প্রতিকূলতা যেমনঃ বৈদেশিক বিনিময় বণ্টন, ঋণের সীমাবদ্ধতা, লাইসেন্স অর্জণ করা এবং এল সি খোলা ইত্যাদি কারণে অন্যভাবে ক্রয় করা যায় না।
  • প্রতিষ্ঠানের পন্য, পন্যজাত এবং অন্যান্য সামগ্রি ‍বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কার্যপ্রণালী প্রনয়ন করা।
  • শ্রমিক/কর্মচারীদের সমাজসেবার মাধ্যমে সমাজ কল্যাণের মানদন্ডের উন্নয়ন করা।
  • প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিদর্শন,তত্ববধান এবং নিয়ন্ত্রণ করা।
  • বস্ত্র খাতে যৌথ বিনিয়োগ প্রকল্প প্রনয়ন এবং সম্ভবনা অনুসন্ধান করা।[৩]

বিটিএমসি এর মিল সমূহ সম্পাদনা

বিটিএমসি এর ভিশন ২০২১ সম্পাদনা

বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরের প্রত্যাশায় স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীগণকে যৌথ উদ্যোগ প্রকল্পের মাধ্যমে আধুনিক স্পিনিং, ওয়েভিং, ডাইং, ফিনিশিং, কম্পোসিট টেক্সটাইল এবং টেক্সটাইল এক্সেসরিস শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য দৃষ্টি আকর্ষনের লক্ষ্যে বিটিএমসি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন"বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৭ 
  2. "বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ করপোরেশন"বাংলাদেশ তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৭ 
  3. "বিটিএমসি'র-কার্যক্রম"বাংলাদেশ তথ্য বাতায়ন (বিটিএমসি)। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা