বর্তমান পূর্ব

প্রত্নতত্ত্বে ব্যবহৃত পঞ্জিকা সাল

বর্তমান পূর্ব (ইংরেজি: Before Present, সংক্ষেপে BP) বছর, বা "বর্তমানের আগের অব্দ" হল একটি সময়ের পাল্লা যা প্রধানত প্রত্নতত্ত্ব, ভূতত্ত্ব এবং অন্যান্য বৈজ্ঞানিক শাখার ঘটনাগুলোর তারিখ ১৯৫০ সালের রেডিওকার্বন তারিখ নির্ণয়করণ পদ্ধতির আবিষ্কারের তারিখের আগে নির্দিষ্টকরণ করতে ব্যবহৃত হয়। যেহেতু বর্তমান সদা পরিবর্তনশীল তাই ১ জানুয়ারি ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দকে এই যুগ পাল্লার সূত্রপাত হিসেবে ব্যবহার করা হয়।[ক] ইংরেজি ভাষায় এর সংক্ষিপ্তরূপ "বিপি" (BP) কে পূর্ববর্তী সময়ে "বিফোর ফিজিক্স" (Before Physics) হিসেবে ব্যাখ্যা করা হতো,[১] যা পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার পূর্বে কৃত্রিমভাবে পরিবেশে কার্বনের আইসোটোপের অনুপাত পরিবর্তন করার ঘটনার সময়কে নির্দেশ করে, এবং সেই সময়ের পরে তারিখ নির্ধারণ করা অনির্ভরযোগ্য মনে করা হয়।[২][৩]

সাধারণভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয় না, বিভিন্ন উৎস এর ব্যবহার শুধুমাত্র রেডিওকার্বনের মাধ্যমে নির্ণয়কৃত তারিখের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে। এর বিকল্প পদ্ধতি আরসিওয়াইবিপি এর পুরো অর্থ ইংরেজিতে "রেডিও কার্বন ইয়ার্স বিফোর প্রেজেন্ট" - বাংলায় "বর্তমানের পূর্বে রেডিও কার্বন অব্দ"।

বর্তমান পূর্ব পদ্ধতি কখনো রেডিও কার্বন তারিখ নির্ধারণ ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, যেমন স্তরবিদ্যা[৪][৫] এই ব্যবহার প্লিচট ও হগ এর সুপারিশ থেকে ভিন্ন,[৬] যা চতুর্থাংশ বিজ্ঞান পর্যালোচনা দ্বারা অনুসৃত,[৭][৮] দুজনই অনুরোধ করেছেন যে প্রকাশনাগুলোর উচিত একক "এ" (লাতিন ভাষায় "অ্যানুম" যার অর্থ "বছর") ব্যবহার করা এবং "বিপি" এর ব্যবহার রেডিওকার্বন নির্ধারিত তারিখের জন্য সীমাবদ্ধ রাখা।

কিছু প্রত্নতত্ত্ববিদ ইংরেজিতে ছোট হাতের অক্ষরে লেখা বিপি (bp), বিসি (bc) এবং এডি (ad) রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে প্রাপ্ত তারিখের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকেন।[৯]

কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বরফ ও আবহাওয়া কেন্দ্র গ্রিনল্যান্ড আইস কোর সময়পঞ্জি ২০০৫ (ইংরেজি আদ্যাক্ষর জিআইসিসি০৫) এর উপর ভিত্তি করে ২০০০ সালের পূর্বের বছরের জন্য "বি২কে" (b2k) প্রস্তাব করেছে।[১০]

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. অন্যান্য পঞ্জিকা যুগের ন্যায় এই পদ্ধতিতে বর্তমানাব্দ (ইংরেজিতে আফটার প্রেজেন্ট বা সংক্ষেপে এপি) কখনো ব্যবহার করা হয় না।[সন্দেহপূর্ণ ]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Flint, Richard Foster; Deevey, Edward S (১৯৬২)। "Volume 4 – 1962"Radiocarbon4 (1): i। 
  2. Taylor RE (১৯৮৫)। "The beginnings of radiocarbon dating in American Antiquity: a historical perspective"American Antiquity50 (2): 309–325। জেস্টোর 280489ডিওআই:10.2307/280489 
  3. Dincauze, Dena (২০০০)। "Measuring time with isotopes and magnetism"। Environmental Archaeology: Principles and Practice। Cambridge, England: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 110আইএসবিএন 978-0-5213-1077-2 
  4. "AGU Editorial Style Guide for Authors"। American Geophysical Union। ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৭। ২০০৮-০৭-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-০৯ 
  5. North American Commission on Stratigraphic Nomenclature (নভেম্বর ২০০৫)। "North American Stratigraphic Code: Article 13 (c)"The American Association of Petroleum Geologists Bulletin89 (11): 1547–1591। ডিওআই:10.1306/07050504129। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  6. J. van der Plicht, A. Hogg (২০০৬)। "A note on reporting radiocarbon" (পিডিএফ)Quaternary Geochronology1 (4): 237–240। ডিওআই:10.1016/j.quageo.2006.07.001 
  7. "The use of time units in Quaternary Science Reviews"। Quaternary Science Reviews26 (9–10): 1193। মে ২০০৭। ডিওআই:10.1016/j.quascirev.2007.04.002বিবকোড:2007QSRv...26.1193. 
  8. Wolff, Eric W. (ডিসেম্বর ২০০৭)। "When is the "present"?"। Quaternary Science Reviews26 (25–28): 3023–3024। ডিওআই:10.1016/j.quascirev.2007.10.008বিবকোড:2007QSRv...26.3023W 
  9. Edward J. Huth (২৫ নভেম্বর ১৯৯৪)। Scientific Style and Format: The CBE Manual for Authors, Editors, and Publishers। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 495–। আইএসবিএন 978-0-521-47154-1। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১২ 
  10. "The GICC05 time scale"। Centre for Ice and Climate - University of Copenhagen। সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮