ফিলিপ লুটলি স্ল্যাটার (৪ নভেম্বর ১৮২৯ - ২৭ জুন ১৯১৩) ছিলেন একজন ইংরেজ আইনজীবী এবং প্রাণি বিশেষজ্ঞ[২][৩] প্রাণিবিদ্যাতে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ পক্ষীবিদ ছিলেন এবং বিশ্বের প্রধান জুজিওগ্রাফিক অঞ্চলসমূহ চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি ৪২ বছর, (১৮৬০-১৯০২), জ্যুলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডনের সেক্রেটারি ছিলেন।

ফিলিপ লুটলি স্ল্যাটার
ফিলিপ লুটলি স্ল্যাটার
জন্ম(১৮২৯-১১-০৪)৪ নভেম্বর ১৮২৯
মৃত্যু২৭ জুন ১৯১৩(1913-06-27) (বয়স ৮৩)
শিক্ষাউইনচেস্টার কলেজ
মাতৃশিক্ষায়তনকরপাস ক্রিস্টি, অক্সফোর্ড
পেশাআইনজীবী, প্রাণীবিদ
সন্তান উইলিয়াম লটলি স্ল্যাটার জুনিয়র
পিতা-মাতাউইলিয়াম লুটলি স্ল্যাটার

জীবনের প্রথমার্ধ সম্পাদনা

স্ল্যাটারের জন্ম হ্যাম্পশায়ারের ওয়াটন সেন্ট লরেন্সের টাঙ্গিয়ার পার্কে, যেখানে তাঁর বাবা উইলিয়াম লুটলি স্ল্যাটারের একটি গ্রামের বাড়ি ছিল। জর্জ স্ল্যাটার-বুথ, ১ম ব্যারন বেসিং ছিলেন ফিলিপের বড় ভাই। ফিলিপ হজডিংটন হাউসে বড় হয়েছেন যেখানে তাঁর পাখির প্রতি প্রাথমিক আগ্রহ জন্মেছিল। তিনি ট্যুইফোর্ড স্কুলে পড়াশোনা করেছেন এবং তের বছর বয়সে উইনচেস্টার কলেজ এবং পরে করপাস ক্রিস্টি কলেজ, অক্সফোর্ডে [৪] যান, যেখানে তিনি হিউ এডউইন স্ট্রিকল্যান্ডের অধীনে বৈজ্ঞানিক পাখিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন।

১৮৫১ সালে তিনি আইন অধ্যয়ন শুরু করেন এবং কর্পাস ক্রিস্টি কলেজের ফেলোতে ভর্তি হন। ১৮৫৬ সালে তিনি আমেরিকা বেড়াতে গিয়েছিলেন এবং সুপিরিয়র হ্রদ এবং সেন্ট ক্রিক্স নদীতে ডিঙ্গি বেয়ে মিসিসিপি পর্যন্ত নেমে গিয়েছিলেন। এ সম্পর্কে স্ল্যাটার "ইলাস্ট্রেটেড ট্র্যাভেলস" এ লিখেছিলেন। ফিলাডেলফিয়ার প্রাকৃতিক বিজ্ঞান একাডেমিতে তিনি স্পেন্সার বেয়ার্ড, জন ক্যাসিন এবং জোসেফ লেডির সাথে দেখা করেছিলেন। ইংল্যান্ডে ফিরে আসার পরে তিনি বেশ কয়েক বছর আইন অনুশীলন করেছিলেন এবং লন্ডনের প্রাণীবিজ্ঞান সমিতির সভাগুলিতে যোগ দিয়েছিলেন।

ক্যারিয়ার সম্পাদনা

১৮৫৮ সালে স্ল্যাটার প্রসিডিং অব দ্য লিনিয়ান সমিতিতে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন এবং ছয়টি প্রাণিবিজ্ঞান অঞ্চল স্থাপন করেছিলেন, যাকে তিনি প্যালিআর্কটিক, ইথিওপিয়ান (বর্তমানে আফ্রোট্রপিক), ভারত (বর্তমানে ইন্দো-মালয়), অস্ট্রেলেশীয়, নিআর্কটিক এবং নিওট্রপিক্যাল নামে অভিহিত করেছিলেন। এই জীবভৌগোলিক অঞ্চলসমূহ এখনও ব্যবহৃত হয়। তিনি ভারত এবং মাদাগাস্কারের মধ্যে কাকতালীয়ভাবে বিদ্যমান প্রাণীবৈজ্ঞানিক সম্পর্ক ব্যাখ্যা করার জন্য ১৮৬৪ সালে লেমুরিয়া তত্ত্বও বিকাশ করেছিলেন।

১৮৭৪ সালে তিনি তাঁর ভাই জর্জ স্ল্যাটার-বুথ, এমপি (পরে লর্ড বেসিং) -এর একান্ত সচিব হন। তাঁকে সিভিল সার্ভিসে স্থায়ী পদের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ১৮৭৫ সালে তিনি ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর দি অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্সের জৈবিক বিভাগের সভাপতি হন,[৫] যেখানে তিনি ১৮৪৭ সালে সদস্য হিসাবে যোগদান করেছিলেন।

স্ল্যাটার ছিলেন ব্রিটিশ পক্ষীবিদ ইউনিয়নের জার্নাল দ্য আইবিসের প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক। তিনি ১৮৬০ থেকে ১৯০২ সাল লন্ডনের প্রাণীবিজ্ঞান সমিতির সেক্রেটারি ছিলেন।

১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমা বিজ্ঞানীদের কাছে ওকাপির বর্ণনা দিয়েছিলেন, যদিও তিনি কখনও কোন জীবিত ওকাপি দেখেননি। তাঁর ১১ হ্যানোভার স্কয়ারের অফিসটি লন্ডনের সমস্ত প্রকৃতিবিদদের জন্য একটি মিলনস্থলে পরিণত হয়েছিল। ভ্রমণকারী এবং বাসিন্দারা তাঁর সাথে চিঠিপত্র আদান-প্রদান করতেন। এভাবে স্ল্যাটার কয়েক হাজার মানুষের সাথে চিঠি বিনিময় করেছিলেন।

তাঁর পাখির সংগ্রহ বেড়ে হয়েছিল নয় হাজার এবং এগুলি তিনি ১৮৮৬ সালে ব্রিটিশ জাদুঘরে হস্তান্তর করেছিলেন। প্রায় একই সময়ে যাদুঘরটি গুল্ড, সালভিন এবং গডম্যান, হিউম এবং অন্যান্যদের সংগ্রহ দ্বারা বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক ইতিসাহের জাদুঘরে পরিণত হয়। স্ল্যাটারের গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের মধ্যে এক্সোটিক অর্নিথোলজি (বিদেশি পাখিবিদ্যা ১৮৬৬-৬৯) এবং নোমেনক্লেচার অ্যাভিয়াম (পাখির নামকরণ ১৮৭৩) দুটোই অসবার্ট স্যালভিনের সাথে; আর্জেন্টাইন অর্নিথোলজি (আর্জেন্টিনার পাখিবিদ্যা ১৮৮৮-৮৯) ডব্লিউ এইচ হাডসনের সাথে; এবং বুক অব অ্যান্টিলোপস (মৃগ সম্বন্ধীয় বই ১৮৯৪–১৯০০) ওল্ডফিল্ড থমাসের সাথে লিখেছেন।

১৯০১ সালের জুনে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানের সম্মানসূচক ডক্টরেট (ডিএসসি) ডিগ্রি পেয়েছিলেন।

পরিবার সম্পাদনা

১৮৬২ সালের ১৬ অক্টোবর তিনি জেন অ্যান এলিজা হান্টার ব্লেয়ারকে বিয়ে করেছিলেন; দম্পতির ১ কন্যা এবং ৪ পুত্র ছিল। [৬] তাঁদের বড় ছেলে উইলিয়াম লুটলি স্ল্যাটারও ছিলেন একজন পাখি বিশেষজ্ঞ। ফিলিপ স্ল্যাটারকে ওডিয়াম সমাধিক্ষেত্রে সমাহিত করা হয়েছে।[৭]

মন্তব্য সম্পাদনা

  1. "Philip Lutley Sclater." In: Ornithologisches Jahrbuch. Vol. 24, 1913, p. 239.
  2. "Who's who" 
  3. Goode, GB (৪ সেপ্টে ১৮৯৬)। "Philip Lutley Sclater": 293–298। ডিওআই:10.1126/science.4.88.293পিএমআইডি 17839782 
  4. "Sclater, Philip Lutley (1829-1913), zoologist"। Oxford Index। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৫ 
  5. Sclater, Philip (২০ এপ্রিল ১৮৭৬)। "On the Present State of Our Knowledge of Geographical Zoology": 482–43। ডিওআই:10.1038/013482a0 
  6. Jane Hunter Blair's father was Sir David Hunter Blair, 3rd Baronet Hunter Blair.
  7. https://www.cwgc.org/find-war-dead/casualty/2758371/sclater,-guy-lutley/

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

পূর্বসূরী
ডেভিড উইলিয়াম মিশেল
লন্ডনের প্রাণিবিজ্ঞানী সোসাইটি-র সম্পাদক
১৮৬০–১৯০২
উত্তরসূরী
পিটার চামার্স মিচেল