পোস্ত

আফিম থেকে প্রাপ্ত ভোজ্য তেলবীজ

পোস্ত হলো এক ধরনের তৈলবীজ যা আফিম থেকে পাওয়া যায়। হাজার হাজার বছর ধরে বিভিন্ন সভ্যতার লোকজন এই ছোট বৃক্কের মত দেখতে বীজটি চাষ করে আসছে। এই বীজগুলো আস্ত অথবা গুঁড়ো অবস্থায় বিভিন্ন খাদ্যে একটি মশলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি পিষে পোস্তদানার তেল তৈরি করা হয়।

পোস্তদানার স্তুপ, কালো

ইতিহাস সম্পাদনা

অনেক প্রাচীন সভ্যতার চিকিৎসা শাস্ত্রে পোস্তদানার উল্লেখ পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ১৫৫০ সালে রচিত মিশরীয় ইবার্স পেপাইরাস নামের পার্চমেন্টে পোস্তদানাকে প্রশান্তিদায়ক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[১] ব্রোঞ্জ যুগের ক্রিট দ্বীপের আশেপাশে বসবাসকারী মিনোয়ান সভ্যতার (প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ২৭০০ থেকে ১৪৫০) লোকেরা বীজের জন্য পোস্তদানা চাষ করতো এবং দুধ, আফিম এবং মধুর একটি মিশ্রণ কান্নাকাটি করা বাচ্চাদের শান্ত করতে ব্যবহার করতো। সুমেরিয়ান নামে আরও একটি সভ্যতা পোস্তদানা উৎপাদন করতো বলে জানা যায়।[২] লোকগাথা অনুসারে পোস্তদানা ঘুমের ওষুধ, প্রজনন ক্ষমতা এবং ধন সম্পদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমনকি এও জানা যায় যে এটি অদৃশ্য হওয়ার মত জাদুকরী শক্তিও প্রদান করে থাকে।[৩]

প্রকৃতিগত ইতিহাস সম্পাদনা

 
পোস্তদানা; ১ মিমি স্কেল

পোস্তদানা এক মিলিমিটারের কম লম্বা, কিডনির মত দেখতে এবং ছোট ছোট গর্ত বিশিষ্ট বহিরাবরণ যুক্ত হয়ে থাকে।[৪] ৩,৩০০ টি পোস্তদানায় মাত্র এক গ্রাম ওজন হয় এবং ১ থেকে ২ মিলিয়ন পোস্তদানায় এক পাউন্ড হয়ে থাকে।[২] এর প্রাথমিক গন্ধ যৌগ হলো ২-পেন্টেলফিউরান।[৫]

 
কষ সহ একটি তাজা সবুজ শুটি
 
পাকা পোস্তদানা ধারণকারী শুকনো পোস্তদানার শুটি

কোনো কোনো এলাকায় পোস্তদানা চাষ করার ক্ষেত্রে আফিম চাষ করা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। বীজের শুটি শুকিয়ে যাওয়ার পর যখন পোস্তদানা পেকে যায় তখন সবচেয়ে উৎকৃষ্টমানের পোস্তদানা সংগ্রহ করা হয়। ঐতিহ্যগতভাবে, আফিম সংগ্রহ করা হয় যখন বীজের শুটি সবুজ এবং তার ভেতরে প্রচুর কষ থাকে, কিন্তু সবেমাত্র বীজ জন্মাতে শুরু করেছে এমন সময়।

পোস্তর কাছাকাছি অন্য গাছের বীজ খাওয়া হয় না, কিন্তু ফুলের জন্য সেগুলো চাষ করা হয়। যেহেতু এদের উৎপাদন প্রক্রিয়া জটিল নয় এবং জানুয়ারিতে সরাসরি মাটিতে লাগানো যায় তাই, একবর্ষীয় এবং দ্বিবর্ষীয় পোস্তগুলো বীজের মাধ্যমেই বেশি চাষ হয়ে থাকে।[৬] উদাহরণস্বরূপ বলা যায় আকর্ষণীয় কমলা রঙের বুনো ক্যালিফোর্নিয়া পোস্ত ফুল (এস্কশোলজিয়া ক্যালিফোর্নিয়া) যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম এবং উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে জন্মে থাকে।

বৈশ্বিক উৎপাদন সম্পাদনা

 
বাম থেকে কাঁচের পাত্রে নীল, ধূসর এবং সাদা পোস্তদানা জার্মানিতে পেস্ট্রি তৈরিতে ব্যবহার হয়
 
সাদা পোস্তদানা, কাছ থেকে
পোস্তদানার উৎপাদন মেট্রিক টনে (২০১২)
Source: FAOSTAT[৭]
  চেক প্রজাতন্ত্র ২৪,৬৬৫
  তুরস্ক ১৬,২২৩
  স্পেন ১১,০০০
  হাঙ্গেরি ৯,৩৫০
  ফ্রান্স ৮,০০০
  জার্মানি ৩,০০০
  ক্রোয়েশিয়া ২,৯০০
ফিলিস্তিন ২,৫৫০
  রোমানিয়া ২,৩০০
  স্লোভাকিয়া ১,৮২৭
  অস্ট্রিয়া ১,২৯৩
  সার্বিয়া ১,০০০
  বুলগেরিয়া ৫০০
  নেদারল্যান্ডস ৪১০
  ম্যাসেডোনিয়া ৭৫

আফিম, আফিম পাতা অথবা আফিম এবং আফিম পাতা উভয়ই উৎপাদনের পাশাপাশি উপজাত হিসেবে পোস্তদানা চাষ করা যেতে পারে। অন্যদিকে পোস্তদানা চাষ করলে উপজাত হিসেবে আফিম পাতা পাওয়া যায়। বীজের শুটি এবং পাতার কথা বিবেচনা করলে বীজগুলো খুবই কম পরিমাণে মাদক ধারণ করে থাকে।[৮] প্রচুর পরিমাণে বীজ ধুয়ে আফিমের চা পাওয়া যেতে পারে। মাদকের মাত্রা অনুসারে এটি ৩০০ – ৪০০ গ্রামের মত হতে পারে।

 
শুকনো আফিমের শুটি, পাতা (প্লেটে) এবং বীজ (গামলায়)

দ্যা জয় অফ কুকিং এর মতে “হল্যান্ডের স্লেট-ব্লু রঙের পোস্তের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।”[৯] কোনো কোনো ক্ষেত্রে পোস্তদানার বীজের রঙ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। খাবারের রঙ ঠিক রেখে ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য সাদা পোস্তদানা উপযুক্ত। অন্যান্য বেশীরভাগ খাবারে কালো পোস্তদানা বেশি ব্যবহার করা হয়।

যদিও পোস্তদানা তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল, মাঝে মাঝে তারা লিলি জাতীয় ফুলের বীজের সাথে মিশ্রিত থাকে যা অনেকটাই পোস্তদানার মত দেখতে।[১০]

পুষ্টি সম্পাদনা

পোস্ত দানা
 
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান
শক্তি২,১৯৬ কিজু (৫২৫ kcal)
২৮.১৩ g
খাদ্য আঁশ১৯.৫ g
৪১.৫৬ g
সুসিক্ত স্নেহ পদার্থ৪.৫১৭ g
এককঅসুসিক্ত৫.৯৮২ g
বহুঅসুসিক্ত২৮.৫৬৯ g
২১.২২ g
ভিটামিনপরিমাণ দৈপ%
ভিটামিন এ সমতুল্য
০%
০ μg
০ μg
ভিটামিন এ০ IU
থায়ামিন (বি)
৭৪%
০.৮৫৪ মিগ্রা
রিবোফ্লাভিন (বি)
৮%
০.১০০ মিগ্রা
নায়াসিন (বি)
৬%
০.৮৯৬ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি)
০%
০ মিগ্রা
ভিটামিন বি
১৯%
০.২৪৭ মিগ্রা
ফোলেট (বি)
২১%
৮২ μg
কোলিন
১১%
৫২.১ মিগ্রা
ভিটামিন ই
১২%
১.৭৭ মিগ্রা
ভিটামিন কে
০%
০.০ μg
খনিজপরিমাণ দৈপ%
ক্যালসিয়াম
১৪৪%
১৪৩৮ মিগ্রা
কপার
০%
০ মিগ্রা
লৌহ
৭৫%
৯.৭৬ মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম
৯৮%
৩৪৭ মিগ্রা
ম্যাঙ্গানিজ
১০৯%
২.২৮৫ মিগ্রা
ফসফরাস
১২৪%
৮৭০ মিগ্রা
পটাশিয়াম
১৫%
৭১৯ মিগ্রা
সেলেনিয়াম
০%
০ μg
সোডিয়াম
২%
২৬ মিগ্রা
জিংক
৭৪%
৭.০ মিগ্রা
অন্যান্য উপাদানপরিমাণ
পানি৫.৯৫ g

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।
উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল

পোস্তদানা একটি উচ্চ পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ মসলা, প্রয়োজনীয় খনিজ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ একটি মশলা।

রান্নায় এবং খাবারে ব্যবহার সম্পাদনা

আস্ত বীজ সম্পাদনা

আস্ত পোস্তদানা মশলা হিসেবে এবং বিভিন্ন বেক করা খাবারের উপর এবং ভেতর সাজানোর জন্য প্রচুর ব্যবহার করা হয়। উত্তর আমেরিকায় পোস্তদানার মাফিন, কড়কড়ে করে ভাজা পাউরুটির টুকরো, ব্যাগেল (মন্ট্রেলের ব্যাগেলের মত), বিয়েলে এবং স্পঞ্জ কেকের মত কেকের মত খাবারের উপরে এবং ভেতরে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ইউরোপে বন রুটি এবং নরম সাদা পাউরুটির উপরে সাদা এবং কালো পোস্তদানা ছিটিয়ে দেয়া হয় (উদাহরণস্বরূপঃ কোজোনাক, কালাচ, কোলাক এবং কোল্যাক্স)।

পোলিশ রান্নার পাশাপাশি বিভিন্ন জার্মান পাউরুটি এবং ফলাহারে পোস্তদানা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তিলের মত পোস্তদানাও কখনো কখনো হ্যামবার্গারের রুটিতে ব্যবহার করা হয়। নিউজিল্যান্ডের আঙ্কেল টবেতে তিন রকমের চিকন করে কাটা পোস্তদানা এবং অল্প শক্ত পনির দিয়ে লে স্নেক নামের একটি খাবার বানানো হয়।

পেস্ট সম্পাদনা

 
পোস্তদানা পেষা হচ্ছে

পেস্ট্রির ভেতরের পুর মাঝে মাঝে ভালোভাবে গুঁড়া করা পোস্তদানা, মাখন অথবা দুধ এবং চিনির মিশ্রণ দিয়ে তৈরি করা হয়। পোস্তদানার রোল তৈরিতে এর গুঁড়া ও ক্রয়স্যান্ট ব্যবহার করা হয় এবং মাঝে মাঝে সুগন্ধের জন্য লেবু অথবা কমলালেবু, রাম (মদ্য), কিশমিশ যুক্ত ভ্যানিলা, ঘন ক্রিম, দারুচিনি এবং সমান করে কাটা কাজুবাদাম অথবা আখরোট যোগ করা হয়। বেক করা মিষ্টিজাতীয় খাবারের জন্য মাঝে মাঝে চিনির পরিবর্তে এক টেবিল চামচ জ্যাম অথবা অন্য কোনো সিরাপ মিষ্টি দ্রব্যের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়। সবচেয়ে ভাল পুরের জন্য পোস্তদানা খুব ভালোভাবে এবং তাজা অবস্থায় গুঁড়া করতে হয়। কারণ এটি পেস্ট্রির পুরের মিশ্রণ এবং স্বাদের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। কিছু মোন্সট্রিয়েজেল রেসিপিতে পোস্তদানা দুই ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়[১১] অথবা দুধে সিদ্ধ করা হয়। উজবেকিস্তানের একটি পোস্তদানার কেক তৈরির রেসিপিতে পোস্তদানা ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করে, সারা রাত দুধে ভিজিয়ে রাখতে বলা হয়[১২]

ছেঁচনী অথবা ঘরোয়া বিদ্যুৎ চালিত ব্লেন্ডার অথবা পোস্তদানা চূর্ণ করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি চূর্ণকারক দিয়ে পোস্তদানা গুঁড়ো করা যায়। পোস্তদানা চূর্ণ করার যন্ত্র (মিল) অনেকটা চোরাকাটা পেষণযন্ত্রের মত যাতে একটি ছিদ্র থাকে যা এতটাই সরু হয় যে আস্ত পোস্তদানা এর মধ্য দিয়ে বের হতে পারে না। একটি চোরাকাটা পেষণযন্ত্র অন্য যে কোনো যন্ত্রের চেয়ে বেশি একইরকম এবং কম তৈলাক্ত পেস্ট তৈরি করে।

বাণিজ্যিকভাবে পোস্তদানা ঢাকনাবিশিষ্ট ধাতুপাত্রে পাওয়া যায়। পোস্তদানায় প্রচুর তেল রয়েছে, তাই বাণিজ্যিকভাবে তৈরি পেস্টে সাধারণত চিনি, পানি এবং শুকিয়ে যাওয়া রোধ করতে সয়া সসের মত অম্লজাত দ্রব্য মিশ্রিত থাকে। বাণিজ্যিকভাবে তৈরি পেস্টে পচে যাওয়া রোধ করতে খাদ্য সংরক্ষকও ব্যবহার করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিক পেস্ট্রি সোলো এবং আমেরিকান অ্যাালমন্ডের মত ব্র্যান্ডের অধীনে বাজারজাত করা হয়। আমেরিকান অ্যাালমন্ডের প্রতি ৩০ গ্রাম পোস্তদানায় রয়েছে ১২০ ক্যালরি, ৪.৫ গ্রাম চর্বি এবং ২ গ্রাম প্রোটিন।

তিলের মত পোস্তদানাও ক্যান্ডি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সিদ্ধ করা পোস্তদানার সাথে চিনি বা মধু মিশিয়ে এই ক্যান্ডি তৈরি করা হয়। বলকান অঞ্চল, গ্রীস এবং এমনকি অস্ট্রি – হাঙ্গেরিয়ান দেশগুলোর রন্ধনপ্রণালীতে এটি বিশেষভাবে প্রচলিত।

রান্নায় ব্যবহার সম্পাদনা

 
তুরস্কের পোস্তদানার কেক

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রান্নায় পোস্তদানা ব্যবহার করা হয়।

ভারত, ইরান এবং তুরস্কে পোস্তদানা ‘খাস-খাস’ বা ‘হাশাস’ নামে পরিচিত এবং এটি প্রচুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাদা পাউরুটির ময়দা মাখানোর সময় এটি মেশানো হয় এবং গর্ভবতী মহিলা এবং নতুন মা দের এটি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

ইউরোপিয়ান রান্নায় সম্পাদনা

 
জার্মান মন্সটোলিন

পোস্তদানা (পাপাভের সোম্নিফেরম) মধ্য এবং পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন অংশে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। পরিপক্ব, চিনিমিশ্রিত গুঁড়ো করা পোস্তদানা পাস্তার সাথে খাওয়া হয় অথবা দুধ দিয়ে সিদ্ধ করে বিভিন্ন পেস্ট্রি বা মিষ্টির পুর বা উপরে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। পরিপক্ব বীজগুলো কারখানায় বা বাড়িতে বের করে নেওয়া হয়। তবে এটি সাধারণত ম্যানুয়াল পোস্তদানার কলেই করা হয়ে থাকে।

অস্ট্রীয়, ক্রোয়েশিয়ান, চেক, জার্মান, হাঙ্গেরিয়ান, লিথুয়েনিয়ান, পোলিশ, রোমানিয়ান, রাশিয়ান, স্লোভাক, তুর্কি এবং ইউক্রেনিয়ান রন্ধনপ্রণালীতে পোস্তদানার প্রচুর ব্যবহার রয়েছে।

সাবেক যুগোস্লাভিয়ার অঞ্চলগুলোতে (বিশেষত মেসিডোনিয়া, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া এবং বসনিয়া) পোস্তদানার পেস্ট্রি (স্ট্রুডেল, বাকলাভা, পেজগ্লে) এবং অন্যান্য খাবার (পোস্তদানা দিয়ে পাস্তা) তৈরির প্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে।

 
পোলিশ মেকোউয়িক, স্লোভাক মাকোভনিক, পোস্তদানার পুর যুক্ত একটি বাদামের রোল

পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া এবং পূর্ব স্লোভাকিয়ায় কুচিয়োসের (বড়দিনের উৎসব) রাতের খাবার উপলক্ষে পোস্তদানা দিয়ে একটি ঐতিহ্যবাহী ফলাহার তৈরি করা হয়ে থাকে। পোস্তদানা গুঁড়ো করে পানি অথবা দুধের সাথে মেশানো হয়; গোল ইস্টের বিস্কুট (লিথুয়ানীয় ভাষায় কুচিউকাই; স্লোভাক ভাষায় অপিকান্স বা বোবাল্কি) পোস্তদানার ‘দুধে’ (পোস্তদানার দুধ) ভিজিয়ে রাখা হয় এবং ঠাণ্ডা অবস্থায় পরিবেশন করা হয়।

মধ্য ইউরোপে পোস্তদানার স্ট্রুডেল খুবই জনপ্রিয়, বিশেষত বড়দিনের সময়। জারমানি, পোল্যান্ড এবং সাবেক অস্ট্র-হাঙ্গেরিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোতে পোস্তদানার পেস্ট্রিকে মউইনকাচম বলা হয় এবং বড়দিনের সময় প্রচুর খাওয়া হয়।[১৩]

ইহুদীদের রান্নায় সম্পাদনা

পূর্ব ইউরোপে ইহুদীদের রন্ধনপ্রণালীতে, পুরিমের সময় থেকে কালো পোস্তদানা চিনির সাথে মিশ্রিত করে পেস্ট্রির পুর দেওয়াটা ঐতিহ্যবাহী। যেটি ছিল ইহুদীদের নিস্তারপর্বের ঠিক এক মাস আগে এবং ইস্টারের প্রায় এক মাস আগে। পোস্তদানার তৈরি ঐতিহ্যবাহী পেস্ট্রি হলো কালাচ এবং হামানটেশ। কখনো কখনো এদের উভয়কেই বেইগিল (বেজগিল ও উচ্চারণ হয়) বলা হয়। ভেতরের পুরটি অন্যান্য ফল এবং বাদাম দিয়ে প্রতিস্থাপিত হওয়ার আগে পর্যন্ত পুরিমের অ্যাাশকেনাজি ইহুদীদের মূল ঐতিহ্যবাহী খাবার ছিল পোস্তদানার তৈরি হামানটেশেন। পোস্তদানার পেস্ট্রি যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদীদের বেকারি এবং খাবারের দোকানে পাওয়া যায়।

ভারতীয় রান্নায় সম্পাদনা

ভারতীয় রান্নায় সাদা পোস্তদানা খাবারের ঘনত্ব, গঠন এবং সুগন্ধের জন্য ব্যবহার করা হয়। কোর্মা তৈরির জন্য পোস্তদানার গুঁড়ো, নারিকেল এবং অন্যান্য মশলার সাথে মিশ্রণ তৈরি করে রান্নার শেষের দিকে যোগ করা হয়। কাঁচা অবস্থায় এদের গুঁড়ো করা খুব কঠিন কাজ। তাই সঠিক ঘনত্বের জন্য এদের সাধারণত ভেজে/সিদ্ধ করে গুঁড়ো করার সময় পানি যোগ করা হয়।

পোস্তদানার পেস্টকে অসমীয়া ভাষায় – আফু গুতি (আফু গুতি), হিন্দি/মারাঠি – খাস খাস (खस खस, ওড়িয়া – পোস্তা, বাংলায় – পোস্তো, কন্নড় – গাসাগাসে (ಗಸಗಸೆ), তেলুগু – গাসাগাসা (గసగసాలు) অথবা গাসাগাসালু, তামিল – কাসা কাসা (கசகசா) এবং মালায়ালাম - (കശ കശ)।

পোস্তদানা মহারাষ্ট্রীয় রন্ধনপ্রণালী, গুজরাটি রন্ধনপ্রণালী, অন্ধ্র রন্ধনপ্রণালী, বিহারী রন্ধনপ্রণালী, বাংলা রন্ধনপ্রণালী, ওড়িয়া রন্ধনপ্রণালী এবং মালাবার রন্ধনপ্রণালীতে (উত্তর কেরালা) প্রচুর ব্যবহার করা হয়।

মহারাষ্ট্রে পোস্তদানা (মারাঠি ভাষায় खस खस) মোয়া সাজাতে ব্যবহার করা হয়। এটি একটি বিশেষ ধরনের মিষ্টান্ন যা দীপাবলি উৎসবে বানানো হয়। কখনো কখনো এটি জ্বাল দেওয়া দুধের সাথেও মেশানো হয়।

গুজরাটে সাধারণত মিষ্টিতে পোস্তদানা ব্যবহার করা হয়। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় মিষ্টি লাড্ডু সাজাতে।

বাংলায় (পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ) সাদা পোস্তদানাকে পোস্তো বলা হয়। বিভিন্ন খাবারে এটি প্রধান উপাদান হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। একটি খুব জনপ্রিয় খাবার হলো আলু পোস্তো (আলু এবং পোস্তদানা)। এটি প্রচুর পরিমাণে পোস্তদানার গুঁড়ো আলুর সাথে রান্না করে একটি মসৃণ, সমৃদ্ধ খাবার তৈরি করা হয় যা মাঝে মাঝে ভাতের সাথে খাওয়া হয়।[১৪][১৫] এই মূল খাবারটি আলুর বদলে অন্য কনো উপাদান ব্যবহার করে বিভিন্ন খাবার তৈরি করা হয়। যেমনঃ পেঁয়াজ (পেঁয়াজ পোস্তো), ঝিঙে (ঝিঙে পোস্তো), মুরগি (মুরগি পোস্তো) এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো চিংড়ি (চিংড়ি পোস্তো)। রান্না করা পোস্তদানা মাঝে মাঝে অন্য কনো উপাদান ছাড়াই পরিবেশন করা হয়। ঘরোয়া ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে খাবারের ঘনত্ব বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। আরও অনেক পোস্তদানার খাবার রয়েছে। বাঙালি রন্ধনশৈলী চচ্চড়ি নামের একটি খাবার রয়েছে যাতে লম্বা করে কাটা সবজি, কখনো কখনো সবুজ শাক সবজির ডাঁটা যোগ করা হয়। সরিষা অথবা পোস্তদানা এবং অন্যান্য মশলা দিয়ে অল্প আঁচে রান্না করা হয় এবং ঘ্রাণের জন্য ফোঁড়ন যোগ করা হয়। একটি খাবারে পোস্তো চাপের মত করে গ্রিল করা হয়, কখনো কখনো ভাজা হয় (পোস্তোর বড়া)। আরেকটি খাবারে রান্না না করা পোস্তদানার গুঁড়ো (কাঁচা পোস্তো) সরিষার তেল, কাটা কাঁচা মরিচ, কাঁচা পেঁয়াজ এবং ভাতের সাথে মেশানো হয়।

কর্ণাটক রান্নায়, দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য কর্ণাটকের দক্ষিণ অংশে গাসাগাসে পায়েস (কন্নাদায়ঃ ಗಸಗಸೆ ಪಾಯಸ) খুবই জনপ্রিয়। এটি একটি তরল মিষ্টান্ন যা সাদা পোস্তদানা, গুড়, নারিকেল এবং দুধ দিয়ে তৈরি করা হয়। অন্ধ্র রান্নায়ও বিভিন্ন খাবারে সাদা পোস্তদানা ব্যবহার করা হয় যা তেলুগুতে গাছালু (గసాలు) নামে পরিচিত।

শুধুমাত্র বীজগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মাদক থাকে না। কিন্তু ডোডা নামে পরিচিত আফিমের চায়ে প্রায়ই বিতর্কিতভাবে আফিম গাছের শিকড়, বিশেষ করে বীজের মাথা ব্যবহার করা হয় যাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মাদক থাকে।[১৬] কিছু দক্ষিণ এশিয় সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয় এই ডোডা তৈরি করা হয় শুকনো আফিমের বীজ এবং ভুষি ভালোভাবে গুঁড়ো করে গরম পানি বা চায়ের সাথে মিশিয়ে। কানাডায় ডোডা তৈরি করা হয় আফগানিস্তান এবং এরিজোনা থেকে আনা আফিম গাছের মাধ্যমে। বাগান সাজানোর মত বৈধ কারণ দেখিয়ে এসব আনা হয়, কিন্তু অবৈধভাবে বিক্রি করা হয় কিছু মাংশের দোকানে।[১৭]

অন্যান্য ব্যবহার সম্পাদনা

ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাশাস্ত্রে (আয়ুর্বেদ) ভেজানো পোস্তদানা গুঁড়ো করে দুধের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে বলা হয়।[১৮]

পোস্তদানা চিপে পোস্তদানার তেল বের করা হয় যা বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত মূল্যবান এবং যার রান্নায়, শিল্পক্ষেত্রে এবং চিকিৎসাক্ষেত্রে বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে।

আস্ত পোস্তদানারও কিছু চিকিৎসাশাস্ত্রে ব্যবহার রয়েছেঃ ভিস্কোইন্টিসটিনাল ফিস্টুলার একটি সহজ, সঠিক এবং সুলভ পরীক্ষা।

এটি মাঝে মাঝে পাখির খাবার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়, এক্ষেত্রে এদের মো বীজ বলা হয়ে থাকে।[১৯]

স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব সম্পাদনা

পোস্তদানা খুবই পুষ্টিকর[২০] এবং অন্যান্য বীজ এবং বাদামের চেয়ে কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যুক্ত। পোস্তদানার অ্যালার্জি (নমুনা ১ হাইপারসেনসিটিভিটি) খুবই দুর্লভ, কিন্তু পাওয়া যায়[২১][২২] এবং এর ফলে অ্যানাফিল্যাক্সিস হতে পারে।[২২]

ডিভেরটিকুলোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসকরা পোস্তদানা থেকে বিরত থাকার উপদেশ দেন। এই বীজগুলো ডিভেরটিকুলার যন্ত্রণার কারণ হতে পারে। যদিও এটি নিয়ে বিতর্ক আছে, তবুও এর ফলে মারাত্মক অ্যানাফিল্যাক্সিস হতে পারে।[২৩]

পোস্তদানা ক্যান্সার প্রতিরোধের ওষুধ তৈরির উপাদান হিসেবে ব্যবহার হতে পারে।[২৪]

মাদক সনাক্তকরণে ইতিবাচক ভ্রান্তি সম্পাদনা

যদিও আফিম মাদকটি বীজের পরিবর্তে কাঁচা ফলের কষ বের করে তৈরি করা হয়, গাছের সমস্ত অংশই আফিমের উপক্ষার বিশেষত মরফিন এবং কোডেইন বহন করতে পারে। ফলে পোস্তদানা যুক্ত যে কোনো খাবারই (যেমন মাফিন) মাদক সনাক্তকরণে ভুল ইতিবাচক ফল দিতে পারে। যদিও প্রাপ্ত ফলাফল মাদক গ্রহণকারীর সাথে সম্পূর্ণ মিলবে না।[২৫]

পোস্তদানায় মরফিনের পরিমাণ থাকে ৪-২০০ মি.গ্রা./কি.গ্রা.। মেডিকেল সাইন্স ল জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধের ভাষ্য মতে, “বিভিন্ন পরিমানের ধৌত করা বীজ যুক্ত একটি বা দুটি তরকারী জাতীয় খাবার” গ্রহণের পর, যেখানে মরফিনের মাত্রা ৫৮.৪ – ৬২.২ মা.গ্রা./গ্রাম থাকে, মূত্রে মরফিনের পরিমাণ ১.২৭ মা.গ্রা./মিলি (১,২৭০ ন্যা.গ্রা/মিলি)[২৬] এর বেশি থাকে। জার্নাল অফ ফরেনসিক সাইন্স নামের আরেকটি জার্নালের একটি প্রবন্ধের মতে, কোনো কোনো ব্যাচের বীজে মরফিনের পরিমাণ ২৫১ মা.গ্রা./গ্রাম এর উপরে থাকে।[২৭] উভয় পরীক্ষায় বীজের ভেতরে অল্প পরিমাণ কোডেইনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অতএব, গ্রহণের পরিমাণ এবং বীজের শক্তির উপর নির্ভর করে এটি বর্তমান আদর্শ সনাক্তকরণ সীমা ২,০০০ ন্যা.গ্রা/মিলি অতিক্রম করতে পারে। কিছু বিষবিদ্যা গবেষণাগারে এখনো ৩০০ ন্যা.গ্রা/মিলি শেষ সীমা হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।[২৮]

ডিসকভারি চ্যানেলের মিথবাষ্টার সিরিজের “পোস্তদানার মাদক সনাক্তকরণ”[২৯] পর্বে দেখানো হয়েছে যে পোস্তদানার পাউরুটি এবং বেগেল ৩০ মিনিট পর গ্রহণকারী সনাক্তকরণে ইতিবাচক ফলাফল দেখায়।

মিথ্যা ইতিবাচক পরীক্ষার একটি কল্পিত জনপ্রিয় উদাহরণ ছিল সেইনফিল্ডেরদ্যা শাওয়ার হেড” পর্বে। যেখানে একটি চরিত্র এ্যালাইনা বেনেস পোস্তদানার মাফিনের কারণে আফিম পরীক্ষায় ইতিবাচক ফলাফলের জন্য জে পিটারম্যানের সাথে কালাহারি বুশম্যানদের কাছে যেতে পারত না।

পোস্তদানা এবং আফিমের সাথে সম্পর্কযুক্ত মশলার উপর নিষেধাজ্ঞা সম্পাদনা

মরফিনের উপস্থিতি থাকায় সিঙ্গাপুরে আফিম গাছ থেকে প্রাপ্ত পোস্তদানা বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাইওয়ানেও পোস্তদানা বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এর প্রাথমিক কারণ হলো এতে উপযুক্ত বীজগুলো বিক্রি এবং আফিম চাষের জন্য ব্যবহার হতে পারে।[৩০] চীনে পোস্তদানা এবং আফিম বীজের শুটি মিশিয়ে তৈরি মশলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ এর মধ্যে মাদকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে এবং এটি ২০০৫ পর্যন্ত এটি বহাল ছিল।[৩১][৩২] যদিও আরব রান্নায় এটি পাউরুটি তৈরির উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়, পোস্তদানা বিভিন্ন ধর্মীয় এবং মাদক নিয়ন্ত্রণের কারণে সৌদি আরবেও নিষিদ্ধ।[৩৩] সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি চরমপন্থী মামলায় একজন ভ্রমণকারীর পোশাকে পোস্তদানার উপস্থিতির কারণে তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।[৩৪][৩৫] মালয়েশিয়ায় উদ্বেক আরও বেড়ে যায় যখন এমপি দাতুক মোহোদ সাদি ইউসুফ ২০০৫ সালে দাবি করেন যে মামাক রেস্টুরেন্টগুলো তাদের রান্নায় ক্রেতাদের আসক্ত করতে পোস্তদানা ব্যবহার করে।[৩৬]

আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারী সম্পাদনা

যেহেতু পোস্তদানা মাদক সনাক্তকরণে ভুল ইতিবাচক ফলাফল দেখায়, ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এই ধরনের দ্রব্য বহন করে অন্য দেশে, যেখানে এর ফলে মাদক সনাক্তকরণে ভুল ইতিবাচক ফলাফলের জন্য শাস্তি পেতে হয় সেখানে না যাওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভ্রমণকারীরা বিশেষ করে প্রচুর সমস্যার এবং বিভিন্ন রকম শাস্তির সম্মুখীন হয়।[৩৭][৩৮]

সিঙ্গাপুরে পোস্তদানা কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি ব্যুরো (সিএনবি) পোস্তদানাকে “নিষিদ্ধ বস্তু” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।[৩৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Raghavan, Susheela (2006). Handbook of spices, seasonings, and flavorings. CRC Press. p. 158. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮৪৯৩-২৮৪২-৮.
  2. McGee, Harold (২০০৪)। On Food and Cooking: The Science and Lore of the Kitchen। Simon and Schuster। পৃষ্ঠা 513। আইএসবিএন 978-0-684-80001-1 
  3. Scott Cunningham (2004). Cunningham's Encyclopedia of Magical Herbs. Llewellyn. p. 211. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮৭৫৪২-১২২-৩.
  4. Yearbook of Agriculture. United States Government Printing Office. 1896. p. 203.
  5. Yiu H. Hui, Handbook of Food Science, Technology, and Engineering. CRC Press 2006. আইএসবিএন ০-৮৪৯৩-৯৮৪৮-৭
  6. "Poppy, chamomile and larkspur seeds are planted outside in January." Day, Molly (2009-01-14). "Gardening: Work to get seeds started in January". Muskogee Phoenix. Retrieved 2009-01-24.
  7. FAOSTAT ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে. FAO Retrieved on 2016-04-06.
  8. "Poppy law" on Erowid.org
  9. Irma S. Rombauer; Marion Rombauer Becker; Ethan Becker (2006). The Joy of Cooking. New York: Scribner. p. 1011. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৪৩২-৪৬২৬-২.
  10. Singhal, Rekha S.; Pushpa R. Kulkarni; Dinanath V. Rege (1997). Handbook of Indices of Food Quality and Authenticity. Woodhead. p. 414. আইএসবিএন ৯৭৮-১-৮৫৫৭৩-২৯৯-৫.
  11. Mohnstriezel-Poppy-Seed-Cake. Recipezaar.com. Retrieved on 2015-04-24.
  12. Walter, Joyce (2009-01-10). "Ukrainian community in midst of celebrations". The Moose Jaw Times Herald (Saskatchewan). Retrieved 2009-01-24.
  13. "Poppy Seed Moon Cake or Makosbeigli," in Meyer, June (1998). June Meyer's Authentic Hungarian Heirloom Recipes. Meyer & Assoc. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৯৬৬৫০৬২-০-৪.
  14. "Aloo Posto Recipe - Potato preparation cooked with poppy seeds". www.sanjeevkapoor.com. Sanjeev Kapoor. Retrieved 15 February 2016.
  15. "Potatoes fried in a thick coating of poppy seeds is a signature dish from Bengal.". food.ndtv.com. Aditya Bal. Retrieved 15 February 2016.
  16. "Ont. shop owner charged with selling addictive poppy derivative". CBC News. 2008-12-23. Archived from the original on March 3, 2009.
  17. Roberts, Rob (2009-01-08). "Peel region's doda problem". National Post (Toronto). Retrieved 2009-01-24.
  18. "Poppy face pack". ammas.com. Retrieved 2009-05-13.
  19. Ward, Artemas (1911). The Grocer's Encyclopedia (1st ed.). New York, New York: James Kemster Printing Co. pp. 492–495. Retrieved July 5, 2014.
  20. "Poppy Seeds Nutrition Facts". Buzzle.com. Retrieved 2011-02-18.
  21. Keskin O, Sekerel BE; Sekerel (2006). "Poppy Seed Allergy: A case report and review of the literature". Allergy and Asthma Proceedings. 27 (4): 396–8. doi:10.2500/aap.2006.27.2881. PMID 16948357.
  22. Panasoff J (2008). "Poppy seed anaphylaxis". Journal of Investigational Allergology and Clinical Immunology. 18 (3): 224–5. PMID 18564637.
  23. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ১০ মে ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৭ 
  24. Aruna K, Sivaramakrishnan VM; Sivaramakrishnan (November 1992). "Anticarcinogenic effects of some Indian plant products". Food and Chemical Toxicology. 30 (11): 953–6. doi:10.1016/0278-6915(92)90180-s. PMID 1473788.
  25. O'Connor, Anahad (2005-01-11). "The Claim: Eating Poppy Seeds Can Make You Fail a Drug Test". The New York Times.
  26. Opiated curry. Opioids.com. Retrieved on 2015-04-24
  27. Poppy-seeds: codeine, morphine and urinanalysis. Opioids.com. Retrieved on 2015-04-24
  28. Detection of Opiates in Urine – Toxicology Laboratories – HealthWorld Online. Healthy.net. Retrieved on 2015-04-24
  29. Poppy Seed Drug Test MiniMyth | MythBusters | Discovery. Dsc.discovery.com (2011-02-11). Retrieved on 2015-04-24
  30. http://www.taipeitimes.com/News/front/archives/2001/05/04/0000084299
  31. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১১ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০১৭ 
  32. http://www.latimes.com/world/la-fg-china-poppy-20131021-story.html
  33. Ignorance Is No Excuse for Breaking Law. Arabnews.com (2006-01-10). Retrieved on 2015-04-24
  34. Tourists warned of UAE drug laws. BBC News (2008-02-08). Retrieved on 2015-04-24
  35. "List Of Controlled Pharmaceutical Substances In UAE". Fair Trials International. Archived from the original on 2014-10-17
  36. "Health Ministry: Kas-kas won't be banned in Malaysia yet". The Rakyat Post. 14 April 2016. Retrieved 2 May 2016
  37. Travel Warning – Khas Khas (Poppy Seed) Imprisonment in UAE. Hoax-slayer.com. Retrieved on 2015-04-24
  38. "Indian in UAE denies using poppy seeds as drugs". Yahoo News India. IANS. July 10, 2014. Retrieved July 17, 2014
  39. "I would like to know if I am allowed to bring poppy seeds into Singapore for my baking business". Retrieved 31 August 2015