পরিদৃশ্য বা সার্বিক দৃশ্য বলতে কোনও একজন দর্শক একটি স্থানে দাঁড়িয়ে বৃত্তাকারে ৩৬০ ডিগ্রিতে ঘুরে তাকে সব দিক থেকে ঘিরে থাকা কোনও অঞ্চলকে অভগ্ন দৃষ্টিতে অবলোকন করলে যে দৃশ্যটি পান, তাকে বোঝায়। এই দৃশ্যটিকে যদি রংচিত্র, রেখাচিত্র, আলোকচিত্র, চলচ্চিত্র, ভূকম্পচিত্র কিংবা ত্রিমাত্রিক আদলে রূপায়িত করা হয়, তাকেও পরিদৃশ্য বলে। ইংরেজি ভাষা ও পাশ্চাত্যের অন্যান্য ভাষায় এটিকে "প্যানোরামা" (Panorama) বলা হয়। অনেকসময় সম্পূর্ণ বৃত্তাকার ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে পাওয়া দৃশ্যের বদলে যেকোনও প্রশস্ত, বিস্তৃত, স্থূলকৌণিক দৃশ্যকেও পরিদৃশ্য বলা হতে পারে।

তিউনিসিয়ার কাইরুয়ানের বড় মসজিদের ভেতরের আঙিনার পরিদৃশ্য

১৮শ শতকে আইরীয়-বংশোদ্ভূত ইংরেজি চিত্রকর রবার্ট বার্কার লন্ডনএডিনবরা নগরীকে উপজীব্য করে আঁকা তাঁর রংচিত্রগুলিকে বর্ণনা করার জন্য "প্যানোরামা" পরিভাষাটি প্রথম ব্যবহার করেন বলা ধারণা করা হয়।[১] "প্যানোরামা" শব্দটি গ্রিক শব্দ "পান" (πᾶν, "সর্ব") ও "ওরামা" (ὅραμα, "দৃশ্য") থেকে এসেছে। ১৮শ শতকের শেষভাগে এসে পাশ্চাত্যে "প্যানোরামা" শব্দটি দিয়ে একটি বিশেষ ধরনের ভূদৃশ্য সংবলিত রঙচিত্রকে নির্দেশ করা হত, যাতে কোনও স্থানের একটি ৩৬০ ডিগ্রি দৃশ্য চিত্রিত হত। আনুমানিক ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে এসে একাধিক ইউরোপীয় চিত্রকর এই কৌশলটি উদ্ভাবন করেন, যাদের মধ্যে রবার্ট বার্কার সম্ভবত সবচেয়ে বেশি খ্যাতি লাভ করেন। ১৯শ শতকেও প্রচুর পরিদৃশ্যমূলক রংচিত্র অঙ্কিত হয়।

রবার্ট বার্কার অঙ্কিত লন্ডনের পরিদৃশ্য (রংচিত্র), ১৭৯২

অনেক সময় রূপক অর্থে কোনও ঘটনা বা বিষয়ের বিভিন্ন দিকের সামগ্রিক ও পূর্ণাঙ্গ বিবরণ বা উপস্থাপনকেও "পরিদৃশ্য" বলা হতে পারে।

চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত ইংরেজি পরিভাষা "প্যানিং" (panning) "প্যানোরামা" থেকে তৈরি করা হয়েছে।[২]


তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. A Review of ‘The Panoramic River,’ at the Hudson River Museum - NYTimes.com
  2. "Motion picture - Expressive elements of motion pictures"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-১৩