ন্যুমফুয়েনবার্গ প্রাসাদ

ন্যুমফুয়েনবার্গ প্রাসাদ (জার্মান: Schloss Nymphenburg), i. e., "ন্যুমফ এর প্রাসাদ", হলো জার্মানির দক্ষিণে বাভারিয়া, মিউনিখে অবস্থিত একটি শৈল্পিক প্রাসাদ। এই প্রাসাদটি বাভারিয়া রাজ্যের শাসকদের গ্রীষ্মকালীন প্রধান থাকার স্থান ছিল।

ন্যুমফুয়েনবাগ প্রাসাদ
মানচিত্র
সাধারণ তথ্য
স্থাপত্য রীতিশৈল্পিক
অবস্থানমিউনিখ, জার্মানি
স্থানাঙ্ক৪৮°০৯′২৯″ উত্তর ১১°৩০′১৩″ পূর্ব / ৪৮.১৫৮০৫৬° উত্তর ১১.৫০৩৬১১° পূর্ব / 48.158056; 11.503611
নির্মাণকাজের আরম্ভ১৬৬৪
নির্মাণকাজের সমাপ্তি১৬৭৫
নকশা এবং নির্মাণ
স্থপতিআগোস্তিনো ব্যারেলি
অন্যান্য নকশাকারএনরিকো জুকালি, গিয়োবান্নি এন্টনিয়ো ভিস্কার্ডি, জোসেফ এফনার

ইতিহাস সম্পাদনা

ভবনের ইতিহাস সম্পাদনা

 
১৭৬০সালের ন্যুমফুয়েনবার্গ প্রাসাদ, এটি রঙ করেছিল বার্নার্ডো বেল্লোটো।

প্রাসাদটি নির্মাণে বিনিয়োগ করেছিল ফারদিনান্দ মারিয়া এবং হেনরিয়েত এডেলাইড অফ স্যাভোই দম্পতি। ১৬৬৪সালে তাদের সন্তান ম্যাক্সিমিলিয়ান ২য় এমানুয়েল জন্মের পর ইতালির নির্মাতা এগোস্তিনো ব্যারেলিকে তারা এই কাজে নিযুক্ত করেন। এটির কেন্দ্রীয় অংশ ১৬৭৫সালে সম্পূর্ণ হয়। ভবনটি নির্মাণে উপকরণ হিসেবে কেলহেইম থেকে চুনাপাথর সংগ্রহ করা হয়। প্রাসাদটিকে ধীরে ধীরে বড় ও পরিবর্তন করা হয়।

বাসস্থান সম্পাদনা

১৭৪১সালের জুলাইয়ে ন্যুমফুয়েনবার্গ চুক্তি সইয়ের পর, চার্লস এলবার্ট ফ্রান্সের সাথে এবং স্পেন অস্ট্রিয়ার সাথে মিলিত হয়। তার দুই সন্তান এসময় জন্ম নেয়ঃ মারিয়া এন্টনি ১৯৭৪সালে এবং মারিয়া এনা জোসেফ ১৭৩৪সালে।চার্লস এলবার্ট জীবিত অবস্থায় এখানে রোমান সম্রাট হিসেবে ছিলেন এবং ১৭৪৫সালে মৃত্যুবরণ করেন। ১৭৪৭সালে, ম্যাক্স ৩য় জোসেফ ন্যুমফুয়েনবার্গ চীনামাটির কারখানা তৈরি করেন। ১৭৯২সালে, চার্লস থিয়োডোর পার্কটিকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়।

দীর্ঘ সময় ধরে, বাভারিয়া শাসকদের জন্য এই প্রাসাদটি গ্রীষ্মকালীন সময়ে খুবই প্রিয় বাসস্থান ছিল। ম্যাক্স ১ম জোসেফ ১৮২৫সালপ এখানে মৃত্যু বরণ করেন এবং তার নাতিন রাজা লুডউইগ ২য় এখানে ১৮৪৫সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৬৩সালে, লুডউইগ এবং অত্তো ভন বিসমার্কের ভেতর একমাত্র আলোচনাসভা হয়। যদিও তাদের বন্ধুত্ব চিরজীবন স্থায়ী থাকে।

প্রাসাদ সম্পাদনা

পার্কসহ প্রাসাটি বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত দশনীয় স্থান। প্রাসাদের বহির্ভাগ মিলিয়ে এটি মোট ৭০০মিটার প্রসস্থ। কিছু রুমে এখনো আসল শৈল্পিক নকশা দেখা যায় যেখানে অন্যান্য রুমের নকশাগুলো পুনরায় তৈরি করা হয়।

 
ন্যুমফুয়েনবার্গ, সিএ ১৭৩০।
 
ন্যুমফুয়েনবার্গ প্রাসাদ ও বাহ্যিক অংশের ছবি

কেন্দ্রীয় কক্ষ সম্পাদনা

কেন্দ্রীয় কক্ষে রয়েছে স্তেইনারনার সাল (পাথর হল), যেটির ছাদের দেয়ালচিত্র করেছেন জোহান বাপটিস্ট ঝিমারমান ও এফ. ঝিমারমান এবং নকশা করেছেন ফ্রানসোইস ডে কিউবিলিয়েস। এটি দেখতে খুবই সুন্দর। প্রধান কক্ষ হিসেবে, এটি প্রাসাদের কেন্দ্রীয় কক্ষের তিনটি তলা জুড়ে অবস্থিত।

 
Steinerner Saal (Marble Hall)

অন্যান্য সম্পাদনা

১৯৩৬ এবং ১৯৩৯ সালের মধ্যে নাচত দের আমাজনেন (আমাজনের রাত) নামক মুক্ত অনুষ্ঠান পালন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে ২০০০লোকের মাঝে আন্তর্জাতিক তারকাসহ অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন।

প্রাসাদ ও এর পার্কটি ছিল আলাইন রেসনাইসের ১৯৬১সালের সিনেমা লাস্ট ইয়ার এট ম্যারিয়েনবাদ নির্মাণের প্রধান স্থান। তাছাড়া, লুডউইগ যেটি রাজা ২য় লুডউইগের জীবন ও মৃত্যু নিয়ে ইতালির পরিচালক লুচিনো ভিস্কোন্টি ১৯৭২সালে নির্মাণ করেন, সেটির আংশিক অংশ ন্যুমফুয়েনবার্গে নির্মাণ করা হয়।

এমনকি এই প্রাসাদটি হলো বাভারিয়ান প্রাসাদ ডিপার্টমেন্টের সদর দপ্তর।

পার্ক সম্পাদনা

বাগানের গঠন সম্পাদনা

ন্যুমফুয়েনবার্গ প্রাসাদের পার্ক
 
মিউনিখে ন্যুমফুয়েনবার্গ ডার্চব্লিক গ্রসে কাসকাডে
 
অবস্থানমিউনিখ, বাভারিয়া, জার্মানি
আয়তন২২৯ কিমি (৮৮ মা)
নির্মিত১৭০১ (1701)
পরিচালিতবায়েরিশে ভারওয়ালটুং ডের স্তাতলিচেন স্ক্লোশের, গার্টেন উন্ড সিন
অবস্থাবছরজুড়ে উন্মুক্ত
 
Overview: ১ প্রাসাদ, ২ গ্র্যান্ড পারটেরে, ৩ ক্রাউন প্রিন্স বাগান, ৪ আমালিয়েনবার্গ, ৫ ডর্ফচেন এর সাথে ব্রানহস, ৬ বাডেনবার্গ, ৭ মনপটেরস, ৮ মার্বেল কাসকেড, ৯ পেগোডেনবার্গ, ১০ মাগডালেনেক্লোস, ১১ বোটানিকেল গার্ডেন
 
দ্যা গ্র্যান্ড কাসক্যাড। ডানে ইসার এর মূর্তি এবং বামে ডানুবে এর মূর্তি

প্রাসাদ ও পারটেরে পার্কের সামনের ঝর্ণাগুলো ন্যুমফুয়েনবার্গের পাম্পিং স্টেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এটি ১৮০৩ এবং ১৮০৮ সালের মাঝে তৈরি করা হয়।

বাগানের কক্ষসমূহ সম্পাদনা

 
বাডেনবার্গ, রাজকীয় গোসলখানা
 
আমালিয়েনবার্গ, রাজকীয় শিকারের আশ্রয়স্থান

পার্কটির ভেতর বিভিন্ন সংখ্যক কক্ষ তৈরি করা হয়েছিলঃ

  • প্যাগোডেনবার্গ (১৭১৬-১৭১৯)
  • বাডেনবার্গ (১৭১৯-১৭২১)
  • মাগডালেনেনক্লোস (১৭২৫-১৭২৮)
  • আমালিয়ানবার্গ (১৭৩৪-১৭৩৯)
  • এপোলোটেম্পল হলো লিও ভন ক্লেন্জে দ্বারা নির্মিত একটি মন্দির (১৮৬২-১৮৬৫)

এই কক্ষগুলোর স্থাপত্যশৈলি জার্মানির অন্যান্য স্থপতিদের স্থাপত্য নির্মাণে প্রভাব ফেলেছে।

ভ্রমণব্যবস্থা সম্পাদনা

 
মার্সতাল জাদুঘর ন্যুমফুয়েনবার্গ
 
দ্যা গ্র্যান্ড পারটের

শুধুমাত্র এর প্রধাণ ভবনটিতে প্রতি বছর ৩০০,০০০ পর্যটক আসে।

জাদুঘরসমূহঃ

  • সক্লোস জাদুঘর
  • মার্সতল জাদুঘর (পরিবহন জাদুঘরঃ দক্ষিণ ভাগ)
  • পর্জেলান জাদুঘর মুঞ্চেন
  • মানুষ ও প্রকৃতির জাদুঘর (উত্তর ভাগ)
  • এরউইন ভন ক্রেইবিগ জাদুঘর

সক্লোস ন্যুমফুয়েনবার্গে মিউনিখের ১৭নাম্বার ট্রাম থেকে আসা যায়। এই লাইনটি শহরের কেন্দ্র দিয়ে যায়, যার মাঝে রয়েছে স্টাচুস এবং প্রধান রেলস্টেশ।

চিত্রসমূহ সম্পাদনা

ন্যুমফুয়েনবার্গ প্রাসাদের প্যানোরামিক চিত্র