নিজামিয়া

নিজামুল মুলক কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাব্যবস্থা

নিজামিয়া (তুর্কি: Nizamiye Medresesi, ফার্সি: نظامیه, আরবি: النظامیة) হল উচ্চশিক্ষার জন্য মধ্যযুগের একপ্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমষ্টি যা নিজামুল মুলক কর্তৃক সূচিত হয়। নিজামিয়া শব্দটি তার নাম থেকে সৃষ্ট। সেলজুক সাম্রাজ্যের সূচনালগ্নে সৃষ্ট এসব সুন্নি ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মাদ্রাসার মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়।[১]

নিজামিয়া প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল মুসলিম বিশ্বে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রথম সুসংগঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানকার শিক্ষার মান মুসলিম বিশ্বে সর্বোৎকৃষ্ট ছিল এবং ইউরোপেও এগুলো সমাদৃত ছিল। রাজকীয় ব্যবস্থাপনা ও অভিজাতদের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক, রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিকভাবে সহায়তা পেত। কিছু পণ্ডিতের মতে নিজামিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল তখনকার সময় বর্ধিষ্ণু ইসমাইলি মতবাদকে মোকাবেলা করা। নিজামুল মুলক তার বিখ্যাত গ্রন্থ সিয়াসাতনামার একটি অনুচ্ছেদে ইসমাইলি মতবাদকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।[২]

সবচেয়ে বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল বাগদাদের নিজামিয়া মাদ্রাসা যা ১০৬৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। নিজামুল মুলক দার্শনিক ও ধর্মতাত্ত্বিক আল-গাজ্জালিকে এর অধ্যাপক নিযুক্ত করেন। পারস্যের কবি সাদি বাগদাদ নিজামিয়ার ছাত্র ছিলেন। অন্যান্য নিজামিয়া বিদ্যালয়গুলো নিশাপুর, আমুল, বাল্‌খ, হেরাতইসফাহানে অবস্থিত ছিল।

নিজামুল মুলক ১০৯২ খ্রিষ্টাব্দে ইসফাহান থেকে বাগদাদ যাওয়ার সময় নিহত হন। বেশ কিছু বই অনুযায়ী শিয়াদের একটি বিভাগ ইসমাইলি হাশাশিনদের হাতে তিনি নিহত হন।

বাগদাদ নিজামিয়ার একজন কর্মকর্তা মুগাতিল ইবনে বাকরি বলেন যে তার ধারণা অনুযায়ী প্রথম মালিক শাহর আদেশে একটি সুন্নি-শিয়া বিতর্কের পর নিজামুল মুলক ও মালিক শাহ দুজনেই আততায়ীর হাতে নিহত হন।[৩] তবে অধিকাংশ ইতিহাসবিদ ও সুন্নি পণ্ডিত এর বিপক্ষ মত পোষণ করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Ed(s). "al- Niẓāmiyya , al- Madrasa." Encyclopaedia of Islam, Second Edition. Edited by: P. Bearman , Th. Bianquis , C.E. Bosworth , E. van Donzel and W.P. Heinrichs. Brill, 2010, retrieved 20(03/2010)
  2. Virani, Shafique N. The Ismailis in the Middle Ages: A History of Survival, A Search for Salvation (New York: Oxford University Press, 2007), 73.
  3. Mughatil ibn Bakri, In search of Truth in Baghdad (در جستجوی حق در بغداد), also appearing under the title "راهي به سوي حقيقت", আইএসবিএন ৯৬৪-৯৩২৮৭-৮-৫, p.134-136. Link to item in publisher's catalog: [১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে

আরও দেখুন সম্পাদনা