নবীনগর উপজেলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি উপজেলা

নবীনগর উপজেলা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।

নবীনগর
উপজেলা
মানচিত্রে নবীনগর উপজেলা
মানচিত্রে নবীনগর উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫২′৫৯″ উত্তর ৯০°৫৯′১″ পূর্ব / ২৩.৮৮৩০৬° উত্তর ৯০.৯৮৩৬১° পূর্ব / 23.88306; 90.98361 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
জেলাব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা
আয়তন
 • মোট৩৫০.৩৩ বর্গকিমি (১৩৫.২৬ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট৪,৯৩,৫১৮
 • জনঘনত্ব১,৪০০/বর্গকিমি (৩,৬০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৪৩.৬%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৩৪১০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
২০ ১২ ৮৫
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

অবস্থান ও আয়তন সম্পাদনা

নবীনগর উপজেলার আয়তন ৩৫০.৩৩ বর্গ কিলোমিটার (৮৬,৫৬৮ একর)। এটি আয়তনের দিক থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা।[১] এ উপজেলার উত্তরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা, আশুগঞ্জ উপজেলানরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলা, দক্ষিণে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলাকসবা উপজেলা, পশ্চিমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলানরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলা অবস্থিত।

ইতিহাস সম্পাদনা

ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর একটি প্রাচীন জনপদ। বৌদ্ধ যুগে এ এলাকা ছিল সমতট রাজ্যর্ভুক্ত। পরবর্তীকালে মুসলিম শাসনামলে ৩টি পরগনায় বিভক্ত ছিল বর্তমান নবীনগর উপজেলা। নবীনগর থেকে দক্ষিণ মুখী প্রবাহিত বুড়িনদীর (তিতাস নদীর শাখা) পূর্ব অংশ ছিল নুরনগর পরগনাভুক্ত, পশ্চিম অংশ ছিল রবদাখাত পরগনার্ভুক্ত এবং উত্তর দিকে মেঘনা ও তিতাস পারের অংশ ছিল শাহবাজপুর জনপদের সরাইল পরগনা। নবীনগর নামকরণ নিয়ে মত বিভেদ রয়েছে। তবে ইংরেজ শাসনামলে ভারত বর্ষের প্রথম ম্যাপ রোনাল্ড রে প্রণীত মানচিত্রে নবীনগরের নাম গুরুত্বের সাথে উল্লেখ থাকায় এর প্রাচীনত্ব প্রমাণিত হয়। নামকরণ নিয়ে দুটি ধারার জনশ্রুতির প্রচলন রয়েছে। প্রথম ধারার জনশ্রুতি অনুসারে প্রাচীনকালের জনৈক নবীন চন্দ্র নামক রাজার নামানুসারে নবীন এবং গড় শব্দের অপভ্রংশ থেকে গর-নবীনগর নাম করণ হয়েছে। কিন্তু এ এলাকার প্রাচীন ইতিহাসে নবীন চন্দ্র নামে কোন রাজা এমনকি জমিদারেরও সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে এ জনশ্রুতি মেনে নেয়া যায় না। অন্যদিকে দ্বিতীয় ধারার জনশ্রুতি অনুসারে মুসলিম শাসনামলে ঈদে মিলাদুন্নবীর দিন নবী এবং নগর দুটি শব্দের সংমিশ্রনে নবীনগর নাম করণ করা হয়েছে। তুলনামূলকভাবে দ্বিতীয় ধারার জনশ্রুতির স্বপক্ষে সত্যতা পাওয়া যায়।

প্রশাসনিক এলাকা সম্পাদনা

নবীনগর উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ২১টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম নবীনগর থানার আওতাধীন।

পৌরসভা:
ইউনিয়নসমূহ:

জনসংখ্যার উপাত্ত সম্পাদনা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে নবীনগর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৪,৯৩,৫১৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২,৩০,২২৭ জন এবং মহিলা ২,৬৩,২৯১ জন। মোট পরিবার ৯৪,৮৭১টি।[১] জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১,৪০৯ জন।[২]

শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পাদনা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী নবীনগর উপজেলার সাক্ষরতার হার ৪৩.৬%।[১]

স্বাস্হ্য সম্পাদনা

স্বাস্হ্য সেবাদানের জন্য রয়েছেঃ

  • উপজেলা স্থাস্থ্য কেন্দ্র - ১টি;
  • জন্ম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র -১ টি;
  • ক্লিনিক - ২০টি;
  • স্যাটেলাইট ক্লিনিক - টি;
  • পশু চিকিৎসা কেন্দ্র - ১টি;
  • দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র - টি;
  • কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র - ১টি।
  • টেলি মেডিসিন কেন্দ্র - ১টি

কৃষি সম্পাদনা

এখানকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ কৃষক।

  • প্রধান ফসলঃ ধান, গম, বিভিন্ন ধরনের সবজি।
  • লুপ্ত বা লুপ্ত প্রায় শস্যাদিঃ কাউন, আউশ ও আমন ধান, পাট, আড়হর ডাল ও গম।
  • প্রধান ফলঃ কলা, কাঁঠাল, আম, জাম।

অর্থনীতি সম্পাদনা

এখানকার ভোলাচং গ্রামের কুমারদের তৈরি মৃৎ সামগ্রী দেশব্যাপী বেশ জনপ্রিয়।

  • কুটির শিল্প - মৃৎ শিল্প, সূচী-শিল্প।
  • রপ্তানি পণ্য - শাক-সবজি।

যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পাদনা

  • সড়ক পথঃ ;নবীনগর সদর থেকে শিবপুর-রাধিকা হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। নবীনগর মনুবাবুর ঘাট থেকে সীতারামপুর-কৃষ্ণনগর হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৈরতলা।
  • নৌ- পথঃ অত্যন্ত সুগঠিত নৌ পরিবহন ব্যবস্থা বিদ্যমান। তিতাস নদী এই উপজেলার মানুষের জীবন, যোগাযোগ ও সমৃদ্ধির প্রাণরেখা।
  • রেল পথঃ কোন রেলপথ নেই।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি সম্পাদনা

উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা সম্পাদনা

১. নবীনগর জমিদার বাড়ি(পুরানো ভূমি অফিস সংলগ্ন)

২. নবীনগর জমিদার বাড়ি (আদালতের পশ্চিম পাশে)

৩. UNO অফিস সংলগ্ন পার্ক

৪.কালিবাড়ি মন্দির

৫.লোকনাথ মন্দির

৬. নারায়নপুর মিনি স্টেডিয়াম

৭. নারায়নপুর হাসান শাঁহ মাজার

৮. নারায়ানপুর শাঁহ সাব বাড়ি

৯. কাইতলি জমিদার বাড়ি

১০. শিবপুর জমিদার বাড়ি

১১. ইব্রাহিমপুর জমিদার বাড়ি

১২.ইব্রাহিমপুর মডেল জামে মসজিদ

১৩. সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ-এর বাড়ি

১৪. কনিকারা ব্রিজ এবং ব্রিজ সংলগ্ন পার্ক

১৫. রসুল্লাবাদ পার্ক

১৬. আলমনগর পার্ক

১৭. বিদ্যাকুট সতীদাহ মন্দির

১৮. শ্যামগ্রাম মন্দির

১৯. মহর্ষি মনোমোহন দত্তের বাস বাড়ি ও সমাধীস্থল, সাতমোড়া।

২০. গোকর্ণ ঘাট সেতু,

২১. তিতাস সেতু (সীতারামপুর-মনতলা)

২২. কালঘড়া মাঠের পাশের দিঘি (পদ্মা)

ঐতিহাসিক নিদর্শন ও ঐতিহ্য সম্পাদনা

বিবিধ সম্পাদনা

এনজিও

ব্রাক, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক সক্রিয় এনজিওদের মধ্যে অন্যতম।

হাট-বাজার ও মেলা

হাট বাজার - ২৮টি।

ডাকঘর

মোট ৩৫টি (পৌরসভা -১টি, উপজেলা পোস্ট অফিস - ১টি, সাবপোস্ট অফিস - ৪টি, ইডি সাবপোস্ট অফিস - ৪টি, শাখাপোস্ট অফিস - ২৬টি)।

নদ-নদী

বুড়ি, তিতাস নদী, মেঘনা, যবনাই, পাগলা ও ভাটা - প্রধান নদ-নদী।

ব্যাংক

শাখা - ১৯টি।

জনপ্রতিনিধি সম্পাদনা

সংসদীয় আসন জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[৫] সংসদ সদস্য[৬][৭][৮][৯][১০] রাজনৈতিক দল
২৪৭ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ নবীনগর উপজেলা ফয়জুর রহমান বাদল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)web.archive.org। Wayback Machine। Archived from the original on ৮ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  2. "ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তথ্য উপাত্ত" (পিডিএফ)web.archive.org। Wayback Machine। Archived from the original on ১৩ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  4. https://m.risingbd.com/national/news/32912/%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%80-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%B6%E0%A6%AA%E0%A6%A5-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%B9%E0%A6%95
  5. "Election Commission Bangladesh - Home page"www.ecs.org.bd 
  6. "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯ 
  7. "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  8. "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  9. "জয় পেলেন যারা"দৈনিক আমাদের সময়। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  10. "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"সমকাল। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা