ধর্ষণ পর্নোগ্রাফি

(ধর্ষণের পর্নোগ্রাফি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ধর্ষণ পর্নোগ্রাফি হচ্ছে পর্নোগ্রাফির একটি উপবর্গ যেখানে ধর্ষণকে চিত্রায়িত করা হয়। ধর্ষণ পর্নোগ্রাফি সামাজিকভাবে বিতর্কিত ও সমালোচিত কারণ এটি মানুষকে ধর্ষণ করতে উৎসাহিত করে। তবে, এই বিষয়ের উপর গবেষণা করে পরস্পরবিরোধী ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।[১]

ধর্ষণের পর্নোগ্রাফিকে অ-পর্নোগ্রাফিক মিডিয়াতে প্রকাশিত ধর্ষণের চিত্রের সাথে মিলানো সঙ্গত নয়। মুলধারার চলচ্চিত্রে ধর্ষণের উদ্দীপনামূলক চিত্র ও যৌন সহিংসতার কিছু রুপ দেখানো হয়।[২] উদাহরনস্বরুপ, ১৯৮৮ সালের চলচ্চিত্র দ্য একিউসডের অভিনেত্রী জডি ফোস্টার সারাহ তোবিয়াস চরিত্রে ধর্ষণের শিকার হওয়াকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যে এজন্য তিনি সেরা অভিনেত্রীর একাডেমিক এওয়ার্ড প্রাপ্ত হন।[৩]

যুক্তরাজ্য সম্পাদনা

ধর্ষণের পর্নোগ্রাফি স্কটল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও ওয়ালসে অবৈধ। স্কটল্যান্ডে, ক্রিমিনাল জাস্টিস এবং লাইসেন্সিং (স্কটল্যান্ড) আইন-২০১০ অনুসারে তীব্রমাত্রার পর্নোগ্রাফিকে অপরাধভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও সেখানে অন্তর্ভুক্ত ছিল অসম্মতিসূচক সঙ্গম, ধর্ষণ,এবং নিগ্রহ সংক্রান্ত ক্রিয়া। যারা সম্মতি থাকা সত্ত্বেও ধর্ষনের মত চিত্র ফুটিয়ে তুলে, তারাও এই অপরাধীর অন্তর্ভুক্ত ছিল।[৪] এর সর্বোচ্চ সাজা ছিল ৩ বছরের জেল, ও অপরাধ হিসেবে জরিমানা।[৫] যদিও এই আইনটি বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে না তবুও প্রথম চারবছরে শুধুমাত্র এমন পুলিশি অভিযোগ অনেক পাওয়া গেছে।[৬]

ইংল্যান্ড এবং ওয়ালসেও যে পর্নোগ্রাফি ধর্ষণকে ফুটিয়ে তোলে (কিন্ত বয়স্কদের সম্মতি থাকে) এমন ধরনের কর্মকাণ্ড আইনত অবৈধ। ৬৩ নং ধারা এবং ইমিগ্রেশন এক্ট ২০০৮ অনুসারে উচ্চমাত্রার পর্নোগ্রাফিকে অপরাধ হিসেবে ধরা হয়েছে, কিন্তু সুষ্পষ্টভাবে কোন পর্নোগ্রাফি ধর্ষণ হিসেবে বিবেচ্য হবে তা বলা হয় নি।[৭] সেসময় ভাবা হত, অবসিন পাবলিকেশন এক্ট ১৯৫৯ অনুযায়ী ইংল্যান্ড ও ওয়ালসে ধর্ষণের পর্নোগ্রাফি বিক্রি করা অবৈধ; কিন্তু ২০১২ সালে আর ভি পিককের বর্ণনা অনুযায়ী বলা হয়েছিল, এই বিষয়টা ওই কেসের সাথে সামঞ্জস্যপুর্ণ নয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন ২০১৩ সালে নতুন আইনের সংযোজন করেন।[৮] এনএসপিসিসির ভাষণে তিনি বলেছেন, পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে যখন কৃত্তিম ভাবে ধর্ষণকে ফুটিয়ে তোলা হয়, তা প্রকারান্তরে নারীর বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতাকেই ফুটে তোলে।[৯]

জার্মানি সম্পাদনা

জার্মানিতে পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে বাস্তব বা মিথ্যা যেমনই ধর্ষণ ফুটিয়ে তোলা হোক না কেন তা আইনত নিষিদ্ধ।[১০]

যুক্তরাষ্ট্র সম্পাদনা

ধর্ষণের পর্নোগ্রাফিতে যুক্তরাষ্ট্রে আইনত বাধা আছে। ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি এই বিষয়ের উপর নজর রাখে। কারণ তারা বিশ্বাস করে, এই ধর্ষণের পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে অপরাধ ঘটে।[১১]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Pornography, Rape and Sex Crimes in Japan"Pacific Center for Sex and Society (ইংরেজি ভাষায়)। University of Hawaii। ১৯৯৯। 
  2. Simpson, Clare। "10 Controversial Films With Scenes Of Explicit Sexual Violence" (ইংরেজি ভাষায়)। WhatCulture.com। ২৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০১৪ 
  3. Simpson, Clare। "10 Controversial Films With Scenes Of Explicit Sexual Violence" (ইংরেজি ভাষায়)। WhatCulture.com। ১৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০১৪ 
  4. "Revitalising Justice – Proposals To Modernise And Improve The Criminal Justice System" (ইংরেজি ভাষায়)। Scotland.gov.uk। ২০০৮-০৯-২৪। ২০১২-০২-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-২০ 
  5. "Information on the new offence of Possession of Extreme Pornographic Images" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। The Scottish Government। ১ মার্চ ২০১১। ৯ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  6. Dan Bunting (২২ এপ্রিল ২০১৪)। "Criminal Justice and Courts Bill – new criminal offences" (ইংরেজি ভাষায়)। Halsbury's Law Exchange। ১৪ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১৮ 
  7. "Crackdown on violent porn"The Scotsman (ইংরেজি ভাষায়)। Johnston Publishing। ২০০৬-০৮-৩১। 
  8. "Online pornography to be blocked by default, PM announces" (ইংরেজি ভাষায়)। BBC News। ২২ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  9. Myles Jackman (১৩ আগস্ট ২০১৩)। "Government to "get to grips" with Rape-Porn" (ইংরেজি ভাষায়)। Myles Jackman। ২৬ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৫ 
  10. "German Criminal Code" (ইংরেজি ভাষায়)। Gesetze-im-internet.de। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-২০ 
  11. Craig Timberg (৬ ডিসেম্বর ২০১৩)। "How violent porn site operators disappear behind Internet privacy protections"The Washington Post (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩