দেউল বা দেউল মহোৎসব (ইংরেজি: Deul Mahotshav) হচ্ছে অসমের বরপেটা জেলায় পালন করা দৌল উৎসব। বরদোয়াতে মহাপুরুষ শ্রীমন্ত শংকরদেব দৌল উৎসবের সূচনা করেন যদিও বরপেটা ধামে ১৫১৮ সনে বরপেটা সত্রের মথুরা দাস বুঢ়া আতাই প্রথমবার এটি প্রচলন করেন।[১] উক্ত বছর থেকে উৎসবটি পরম্পরাগত ভাবে উৎযাপিত হয়ে আসছে। প্রায় ১মাস আগের থেকে দেউল উৎসবের প্রস্তুতি কার্য আরম্ভ করা হয়। ধর্মীয় আচার, ভক্তিরস ও সম্বনয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেউল উৎসব অসমের এক বিশেষ স্থান অধিকার করে রেখেছে।

উৎযাপনের নিয়ম সম্পাদনা

নক্ষত্র গণনা অনুযায়ী দেউল উৎসব তিনদিন, চাঁরদিন বা পাঁচদিন পর্যন্ত পালন করা হয়। সাধারনত ফাল্গুন মাসের পূর্নিমা তিথিতে দেউল অনুষ্ঠিত হলে চাঁরদিন বা পাঁচদিন এবং চৈত্র মাসের পূর্নিমা তিথিতে অনুষ্ঠিত হলে তিনদিন পালন করা হয়। চাঁরদিন ও পাঁচদিন উৎযাপন করা দৌলকে ডেকাদৌল ও তিনদিন উৎযাপন করা দৌলকে বুঢ়াদৌল বলা হয়। দৌল উৎসবের প্রথম দিন গোন্ধযাত্রা বা বহ্নোৎসব বা গন্ধ, দ্বিতীয় দিন ভরদেউল ও তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম দিনকে সুয়েরী বা ফাকুয়া বলা হয়।

উৎসবের বিবরন সম্পাদনা

গোন্ধযাত্রা সম্পাদনা

গোন্ধযাত্রার দিন ভক্তেরা কাঁশ, ও নল দ্বারা অস্থায়ী গৃহ নির্মাণ করেন। এক নির্দিষ্ট সময়ে গোবিন্দ মহাপ্রভুকে ভাজঘর থেকে গায়ন-বায়ন ও ঢুলি সমন্বিতে পূর্ব দুয়ার দিয়ে আনা হয়। গায়ন-বায়ন, ঢুলি ও ভক্ত সমবেত হয়ে গোবিন্দ মহাপ্রভুকে অস্থায়ী গৃহের সন্মুখে নিয়ে আসেন। প্রজ্বলিত গৃহের চারদিকে গোবিন্দ মহাপ্রভুকে ৭পাক ঘুরানো হয়। এই প্রথাকে মেজি পুওয়া বা মাগ পুওয়া বলা হয়। এই সময়ে ঢোল, খোল, ডবা, শংখ, ঘণ্টা ইত্যাদি বাজিয়ে হোলীগীত গাওয়া হয়।

ভরদৌল সম্পাদনা

দেউলের দ্বিতীয় দিন ভরদৌল হিসেবে পালন করা হয়। উক্তদিনে প্রভাতকালে মহিলা ও পুরুষেরা পুয়ার গীত ও যশোমতি পেখিতে নয়ন জুরাই গান গায়।

সুয়েরী বা ফাকুয়া সম্পাদনা

দেউলের তৃতীয় দিনকে ফাকুয়া বলা হয়। স্থানীয়ভাবে ফাকুয়াকে সুয়েরী বা সৌরী বলা হয়। উক্তদিনে রং লাগিয়ে সবাই আনন্দ করেন।