তেরো উপনিবেশ (তেরো ব্রিটিশ উপনিবেশ[২] এবং তেরো আমেরিকান উপনিবেশ[৩] নামেও পরিচিত) ছিল গ্রেট ব্রিটেনের শাসনাধীন উপনিবেশদল। উত্তর আমেরিকার আটলান্টিক উপকূলে এর অবস্থান ছিল। সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীতে এর অন্তর্গত উপনিবেশগুলো গড়ে উঠে। ১৭৭৬ সালে এগুলো স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। তেরো উপনিবেশের রাজনৈতিক, সাংবিধানিক ও আইনি কাঠামো ছিল একই। প্রোটেস্টান্ট ধর্মাবলম্বী ইংরেজিভাষীরা এর মূল বাসিন্দা ছিলেন। নিউ ইংল্যান্ড উপনিবেশ (ম্যাসাচুসেটস, কানেটিকাট, রোড আইল্যান্ডনিউ হ্যাম্পশায়ার), মেরিল্যান্ড ও পেন্সিলভেনিয়া উপনিবেশ প্রধানত ধর্মীয় ভিত্তিতে গড়ে ওঠলেও বাকি উপনিবেশগুলো আর্থিক ও ব্যবসায়িক সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। নতুন বিশ্বে ব্রিটিশ মালিকানার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল এই উপনিবেশগুলো। কানাডা, ফ্লোরিডাক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জেও সেসময় ব্রিটিশদের একক আধিপত্য ছিল।

তেরো উপনিবেশ

১৬০৭–১৭৭৬
তেরো উপনিবেশের জাতীয় পতাকা
The Thirteen Colonies (shown in red) in 1775
The Thirteen Colonies (shown in red) in 1775
অবস্থাব্রিটিশ আমেরিকার অংশ (১৬০৭–১৭৭৬)
রাজধানীলন্ডন, ইংল্যান্ড হতে পরিচালিত
প্রচলিত ভাষা
ধর্ম
প্রোটেস্টান্ট মতবাদ
রোমান ক্যাথলিকবাদ
ইহুদিবাদ
আদিবাসী আমেরিকান ধর্ম
সরকারঔপনিবেশিক সাংবিধানিক রাজতন্ত্র
রাজা 
• ১৬০৭–১৬২৫
প্রথম ও ষষ্ঠ জেমস (first)
• ১৭৬০–১৭৭৬
তৃতীয় জর্জ (last)
ইতিহাস 
১৫৮৫
১৬০৭
১৬২০
১৬৬৩
• ইংল্যান্ডকে নিউ নেদারল্যান্ড হস্তান্তর
১৬৬৭
১৭১৩
১৭৩২
১৭৫৪–১৭৬৩
১৭৭৬
১৭৮৩
জনসংখ্যা
• ১৬২৫[১]
১,৯৮০
• ১৭৮৫[১]
২,৪০০,০০০
মুদ্রা
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
Pre-colonial North America
New Netherland
United States
বর্তমানে যার অংশযুক্তরাষ্ট্র

১৬২৫ থেকে ১৭৭৫ সালে এর জনসংখ্যা ২,০০০ থেকে বেড়ে ২.৪ মিলিয়ন হয়। এসময় আদিবাসী আমেরিকানরা বাস্তুচ্যুত হন। উপনিবেশের বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই দাসব্যবসার শিকার হয়েছিল। এর শাসকরা পুঁজি পাচার করে ইংল্যান্ডে প্রেরণ করতেন।

তেরো উপনিবেশের তাৎপর্যপূর্ণ স্বায়ত্তশাসন এবং সক্রিয় স্থানীয় নির্বাচনী ব্যবস্থা ছিল। লন্ডনের উত্তরোত্তর চাহিদাকে এটি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়। ফ্রেঞ্চ ও ইন্ডিয়ান যুদ্ধের (১৭৫৪-১৭৬৩) সময় ব্রিটেন ও তেরো উপনিবেশের মধ্যে সম্পর্কের ক্রমাবনতি হয়। ১৭৫০ এর দশকে উপনিবেশগুলো ব্রিটেনের পরিবর্তে নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা করতে শুরু করে। এভাবে ক্রমেই আমেরিকান জাতীয়তাবোধ গড়ে ওঠে এবং স্বাধিকারের দাবি প্রবল হয়। "প্রতিনিধিত্ব নেই, করও নেই"- এ নীতির ভিত্তিতে দ্রোহের সূচনা ঘটে। ব্রিটিশ সরকারের সাথে সংঘাতের জের ধরে উপনিবেশগুলো কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করে। উপনিবেশবাদীরা ফ্রান্স রাজতন্ত্র, ডাচ প্রজাতন্ত্র ও স্পেনীয় প্রজাতন্ত্রের সহযোগিতায় ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তেরো উপনিবেশ হলো- নিউ হ্যাম্পশায়ার, ম্যাসাচুসেটস, কানেটিকাট, রোড আইল্যান্ড, নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেন্সিলভেনিয়া, ডেলাওয়্যার, মেরিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়া।

ব্রিটিশ উপনিবেশ সম্পাদনা

১৬০৬ সালে ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম জেমস আমেরিকায় স্থায়ী বসতি স্থাপনের লক্ষ্যে প্লিমথ কোম্পানি ও লন্ডন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। লন্ডন কোম্পানি ১৬০৭ সালে ভার্জিনিয়া উপনিবেশ স্থাপন করে। প্লিমথ কোম্পানি কেনেবেক নদীর তীরে পপহ্যাম উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করলেও সেটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। প্লিমথ কাউন্সিল ফর নিউ ইংল্যান্ড নতুন নতুন উপনিবেশ প্রতিষ্ঠায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৬২০ সালে ইংরেজ বিশুদ্ধবাদী সংস্কারপন্থীরা প্লিমথ উপনিবেশ গড়ে তুলেন। ১৭৩২ সালে জর্জিয়া প্রদেশ সৃষ্টির মাধ্যমে তেরো উপনিবেশ পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. U.S. Bureau of the Census, A century of population growth from the first census of the United States to the twelfth, 1790–1900 (1909) p. 9.
  2. Galloway, Joseph (16 ডিসেম্বর, 1780)। "Cool thoughts on the consequences to Great Britain of American independence [microform] : on the expence [sic] of Great Britain in the settlement and defence of the American colonies; on the value and importance of the American colonies and the West Indies to the British Empire"। London : Printed for J. Wilkie ... – Internet Archive-এর মাধ্যমে।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. "Journal of the Convention of the people of South Carolina"। Columbia, S.C., R. W. Gibbes, printer to the Convention। 16 ডিসেম্বর, 1862 – Internet Archive-এর মাধ্যমে।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা