তাজুল ইসলাম চৌধুরী

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ (১৯৪৪-১৮)

তাজুল ইসলাম চৌধুরী (৩১ অক্টোবর ১৯৪৪ - ১৩ আগস্ট ২০১৮) বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার রাজনীতিবিদ। তিনি রংপুর-১৪কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। এরশাদ সরকারের আমলে তিনি ভূমি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। [১]

তাজুল ইসলাম চৌধুরী
ভূমি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৯৮৬ – ১৯৯০
রংপুর-১৪ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৭৯ – ১৯৮২
কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
৭ মে ১৯৮৬ – ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬
কাজের মেয়াদ
জুন ১৯৯৬ – ২০০৬
কাজের মেয়াদ
৫ জানুয়ারি ২০১৪ – ১৫ অগাস্ট ২০১৮
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম৩১ অক্টোবর ১৯৪৪
কুড়িগ্রাম, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৩ আগস্ট, ২০১৮
ইউনাইটেড হাসপাতাল, ঢাকা
রাজনৈতিক দলজাতীয় পার্টি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

তাজুল ইসলাম চৌধুরীর জন্ম ৩১ অক্টোবর ১৯৪৪ সালে পৈতৃক বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার সবুজপাড়া এলাকায়।তার পিতার নাম পনির উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এবং মায়ের নাম মালেকা খাতুন।

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন সম্পাদনা

তাজুল ইসলাম চৌধুরী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন রংপুর-১৪ আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২] এরপর ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৩][৪][৫][৬][৭] সর্বশেষ ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৮]

এরশাদ সরকারের আমলে তিনি ভূমি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। এছাড়া তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ ও চিফ হুইপের দায়িত্বপালন করেন।[৯]

মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী ভূমিকা ও গণহত্যার অভিযোগ সম্পাদনা

মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান মণ্ডলের উত্তরের রণাঙ্গন বইয়ের ১৯৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, নির্যাতন ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ১৯৭১ সালের ৯ জুন তার নেতৃত্বে কাঠালবাড়ী এলাকায় ৩৫ জন মানুষকে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। [১০] ১৯৭১ সালে সদর উপজেলার মোগলবাসা থেকে মুক্তিযোদ্ধা ডোমাস চন্দ্র ও আবদুল করিমকে ধরে এনে হত্যার অভিযোগে [১১] স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই সাংসদ তাজুলের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। ২০০৮ সালে যে মামাল করেন তা ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসামুলক, যা পরবর্তীতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই তার মামলাটি তুলে নেন। তাজুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুধে ২২ বার তদন্ত কমিটি সারজমিনে তদন্ত করেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পান্ নাই । রাজনৈতিক কারণে তার বিরুদ্ধে কেউ কোন কিছু না পেরে একাধিকবার তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন হয়রানী মুলক অভিযোগ মামাল করেন । তার মৃত্যুর পরে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে উপস্থিত থেকে তাজুল ইসলামকে শেষ শ্রদ্ধা জানান , রাষ্ট্রীয় সন্মাননা জানান, রাষ্ট্রপতি , স্পিকার সকলের শ্রদ্ধা জানান । বঙ্গন্ধু শেখ মুজিব কে যিনি বঙ্গবন্ধু উপাধি দেন তোঁফায়েল আহমেদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে একজন খাটি দেশ প্রেমিক হিসাবে আখ্যায়িত করেন । তাজুল ইসলাম চৌধুরী কুড়িগ্রাম জেলা তথা বাংলাদেশের একজন গর্বিত সন্তান ছিলেন ।

মৃত্যু সম্পাদনা

তিনি ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। [১২][৯][১৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, কুড়িগ্রাম-২। "Constituency 26_10th_Bn"। ২০১৮-১২-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২২ 
  2. "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. "৪র্থ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  6. "৭ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  7. "৮ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  8. "১০ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২০১৯-০১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১২ 
  9. "বিরোধীদলীয় চীফ হুইপ তাজুল ইসলাম আর নেই"Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১৪ 
  10. "সাংসদ তাজুলকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিয়ে কুড়িগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১৯ 
  11. "মুক্তিযোদ্ধা জনতার ব্যানারে কুড়িগ্রামে চীপ হুইপ তাজুল এমপিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১৯ 
  12. "জাতীয় পার্টির চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী আর নেই | banglatribune.com"Bangla Tribune। ২০১৯-০১-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১৪ 
  13. "বুধবার কুড়িগ্রামে তাজুল ইসলাম চৌধুরীর জানাজা-দাফন"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১৪