তরিকুল ইসলাম

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ,স্থায়ী কমিটির সদস্য(বি.এন.পি)

তরিকুল ইসলাম (১৬ নভেম্বর ১৯৪৬ - ৪ নভেম্বর ২০১৮) ছিলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও সাংবাদিক। তিনি দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার প্রকাশক ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।[১]

তরিকুল ইসলাম
মন্ত্রী- খাদ্য মন্ত্রণালয়
কাজের মেয়াদ
১০ অক্টোবর ২০০১ – ১৩ মার্চ ২০০২
প্রধানমন্ত্রীখালেদা জিয়া
মন্ত্রী- তথ্য মন্ত্রণালয়
কাজের মেয়াদ
১১ মার্চ ২০০২ – ৬ মে ২০০৪
প্রধানমন্ত্রীখালেদা জিয়া
মন্ত্রী- সমাজকল্যাণ
মন্ত্রী- ডাক ও টেলিযোগাযোগ
কাজের মেয়াদ
২০ মার্চ ১৯৯১ – জানুয়ারি ১৯৯৬
যশোর-৩ থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ-এর প্রাক্তন সদস্য
কাজের মেয়াদ
ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ – জুন ১৯৯৬
পূর্বসূরীরৌশন আলী
উত্তরসূরীআলী রেজা রাজু
কাজের মেয়াদ
২০০১ – ২০০৬
পূর্বসূরীআলী রেজা রাজু
উত্তরসূরীমোহাম্মদ খালেদুর রহমান টিটো
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯৪৬-১১-১৬)১৬ নভেম্বর ১৯৪৬
যশোর, বাংলাদেশ
মৃত্যু৪ নভেম্বর ২০১৮(2018-11-04) (বয়স ৭১)
অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকা
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
দাম্পত্য সঙ্গীনারর্গিস ইসলাম
সন্তান

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

তরিকুল ইসলাম ১৬ নভেম্বর ১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুল আজিজ পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন ও মাতা মোসাম্মৎ নূরজাহান বেগম ছিলেন একজন গৃহিণী। তিনি ১৯৫৩ সালে যশোর জিলা স্কুলে ভর্তি হয়ে ১৯৬১ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেন। সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ যশোর থেকে ১৯৬৩ সালে আইএ ও ১৯৬৮ সালে অর্থনীতিতে বিএ পাশ করে ১৯৬৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রী অর্জন করেন।[২]

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

তরিকুল ১৯৬২ সালে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ এর জরাজীর্ণ শহীদ মিনার মেরামত করলে তৎকালীন সামরিক সরকার তাকে গ্রেফতার করে। তিনি ১৯৬৩-১৯৬৪ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থী হিসেবে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ এর ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[২]

তিনি ১৯৬৮ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন করে নয় মাস রাজশাহীত এবং যশোরে কারাভোগ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ায় আবারো কারাভোগ করেন।[২]

তিনি ১৯৭০ সালে আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগদান করেন। সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধে। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি থেকে প্রথমে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল পরে জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দেন তিনি। বিএনপির প্রথম আহ্বায়ক কমিটির ৭৬ সদস্যের অন্যতম সদস্য তিনি। তিনি যশোর জেলা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাকালীন আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে তিনি জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এ ছাড়াও তিনি বিএনপির যুগ্মমহাসচিব, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, ভাইস চেয়ারম্যান ও ২০০৯ সালের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পঞ্চম কাউন্সিলে স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।[৩][৪][৫]

তিনি ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে বিলুপ্ত যশোর-৯ আসন থেকে প্রথম বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৬] এর পর ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের সময় তিনি সমাজকল্যাণ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন। ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় জোট সরকারের সময় তিনি প্রথমে তথ্য ও পরে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।[৪][৭][৮][৯]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

তরিকুল ইসলামের স্ত্রী নারর্গিস ইসলাম যশোর সরকারি সিটি কলেজে বাংলা বিভাগের উপাধ্যাক্ষ পদে কর্মরত ছিলেন। তাদের দুটি ছেলে সন্তান (অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও সুমিত) রয়েছে।[৩]

মৃত্যু সম্পাদনা

তরিকুল ইসলাম ঢাকার এপোলো হাসপাতালে ৪ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে ৫.০৫ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।[১][২][৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম আর নেই"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৪ 
  2. "বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের ইন্তেকাল"Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৪ 
  3. "বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম আর নেই"Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৪ 
  4. "বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম আর নেই"প্রথম আলো। ২০১৮-১১-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-০৬ 
  5. "তরিকুল ইসলাম একজন ক্ষণজন্মা জননেতা"NTV Online। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৫ 
  6. "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  7. "তরিকুল ইসলাম"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৪ 
  8. "৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  9. "৮ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা