ডরোথি পার্কার (২২ আগস্ট, ১৮৯৩ – ৭ জুন, ১৯৬৭) একজন আমেরিকান কবি, লেখক, সমালোচক এবং বিদ্রুপাত্মক রচনাকার ছিলেন। বিংশ শতকের শহুরে ভুলগুলোর প্রতি তীক্ষ্ণ ও বুদ্ধিমান বিদ্রুপ তার রচনার প্রধান অঙ্গ।

ডরোথি পার্কার
ডরোথি পার্কার, ১৯২০
ডরোথি পার্কার, ১৯২০
জন্মডরোথি রথসিল্ড
(১৮৯৩-০৮-২২)২২ আগস্ট ১৮৯৩
লং ব্রাঞ্চ, নিউ জার্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যুজুন ৭, ১৯৬৭(1967-06-07) (বয়স ৭৩)
নিউ ইয়র্ক, ইউএস
পেশালেখক, কবি, সমালোচক, চিত্রনাট্যকার
জাতীয়তাআমেরিকান
ধরনকবিতা, বিদ্রুপাত্মক রচনা, ছোটগল্প
সাহিত্য আন্দোলনযুক্তরাষ্ট্রীয় আধুনিকতা
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিএনাফ রোপ, সানসেট গান, স্টার লাইট, স্টার ব্রাইট--, আ স্টার ইজ বর্ন
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারও. হেনরি অ্যাওয়ার্ড
১৯২৯
দাম্পত্যসঙ্গীএডউইন পন্ড পার্কার II (১৯১৭-১৯২৮)
অ্যালান ক্যাম্পবেল (১৯৩৪–১৯৪৭, ১৯৫০–১৯৬৩)
ওয়েবসাইট
www.dorothyparker.com

দ্বন্দ্বপূর্ণ এবং অসুখী শৈশবে বড় হওয়া পার্কার ধীরে ধীরে তার লেখনীর মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এর অন্যতম কারণ ছিল দ্য নিউ ইয়র্কার প্রকাশনায় তার সাহিত্যিক পদচারণা এবং অ্যালকনকুইন রাউন্ড টেবিলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ। এ বৃত্ত ভেঙে গেলে তিনি হলিউডে গিয়ে চিত্রনাট্যকার হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। সেখানে তিনি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডে দুইবার মনোনয়নও পান। তবে তার এ সাফল্যযাত্রা থেমে যায় বামপন্থী রাজনীতিতে যোগ দেওয়ায়, যার ফলে তিনি হলিউড ব্ল্যাকলিস্টে নিজের নাম লিখিয়ে ফেলেন।

মেধা থাকা সত্ত্বেও তার খ্যাতিকে তিনি "ওয়াইজক্র্যাকার" হিসেবে নষ্ট করেন। তবে তীক্ষ্ণ বিদ্রুপাত্মক খাতে তার সাহিত্যিক অবদান এবং খ্যাতি এখনও স্মরণীয়।

শৈশব এবং শিক্ষা সম্পাদনা

ডট বা ডটি হিসেবে পরিচিত পার্কার লং ব্রাঞ্চ, নিউ জার্সির ৭৩২ ওশন এভিনিউতে[১] জ্যাকব হেনরি[২] এবং এলিজা অ্যানি রথসিল্ড (নি মারস্টন)[৩] এর কোলে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানে তার পিতামাতার একটি গ্রীষ্মকালীন কটেজ ছিল। ডরোথির মা স্কটিশ পরিবারে জন্ম নিয়েছিল এবং তার পিতা জার্মান ইহুদি বংশোদ্ভূত। মাই হোমটাউন নামক লেখনীতে পার্কার লেখেন যে পিতামাতা শ্রমিক দিবসের পরপরই ম্যানহাটনে চলে গিয়েছিল, অতএব তাকে একজন প্রকৃত নিউ ইয়র্কার বলা চলে। ১৮৯৮ সালের জুলাই মাসে, যখন পার্কারের বয়স পাঁচ হতে কিছু বাকি, তখন তার মা মারা যান। ১৯০০ সালে তার বাবা পুনরায় বিয়ে করেন ইলিয়ানর ফ্রান্সিস লুইসকে।[৪] পার্কার তার বাবাকে ঘৃণা করত, কারণ সে শারীরিক অত্যাচারী ছিল। নতুন মাকেও সে পছন্দ করত না এবং "মা", "সৎ মা" কিংবা "ইলিয়ানর" বলেও কোনোদিনও ডাকেনি; বরং তাকে "গৃহকর্মী" বলেই ডাকতেন।[৫] পার্কার বোন হেলেনের সাথে আপার ওয়েস্ট সাইডে বড় হন এবং ওয়েস্ট ৭৯তম রাস্তায় অবস্থিত কনভেন্ট অব দ্য ব্লেসড স্যাক্রামেন্টের অধীনের একটি রোমান ক্যাথলিক এলিমেন্টারি স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন; যদিও তার পিতা ইহুদি এবং সৎ মা প্রোটেস্ট্যান্ট ছিলেন।[৬] তার অন্যতম সহপাঠী ছিল মার্সিডিজ দে একোস্টা। পার্কার একদা মজা করে বলেছিলেন যে একবার ইমাকুলেট কনসেপশনকে "স্বতঃস্ফূর্ত দহন" হিসেবে আখ্যায়িত করায় তাকে প্রায় বের করে দেওয়া হচ্ছিল।[৭] ১৯০৩ সালে তার সৎমাও মারা যান, তখন পার্কারের বয়স নয় ছিল।[৮] পার্কার মরিসটাউন, নিউ জার্সিতে অবস্থিত মিস ডানা'স স্কুলে পড়তে যান।[৯] ১৯১১ সালে তিনি স্কুল থেকে পাস করেন, তখন তার বয়স ১৮।[১০] ১৯১৩ সালে তার বাবাও মারা যান। এরপর তিনি একটি ডান্সিং স্কুলে পিয়ানো বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা শুরু করেন,[১১] তখন সে তার নিজের ছন্দ নিয়েও কাজ করা শুরু করেন।

তার লেখা প্রথম কবিতা তিনি ১৯১৪ সালে ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনে প্রকাশ করেন। এর কয়েক মাস পর তিনি কন্দে নাস্ট মাগাজিন, ভোগ ম্যাগাজিন প্রভৃতিতে সম্পাদকীয় সহকারী হিসেবে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব পান। ভোগ ম্যাগাজিনে দুই বছর কাজ করার পর তিনি ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনে যান একজন স্টাফ রাইটার হিসেবে।

১৯১৭ সালে তিনি ওয়াল স্ট্রিট স্টকব্রোকার এডউইন পন্ড পার্কার II এর সাথে পরিচিত হন এবং পরবর্তীতে বিয়ে করেন[১২] (১৮৯৩–১৯৩৩[১৩]), কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধর ফলে তারা পৃথক হয়ে পড়েন। তার ইহুদি পূর্বসূরীতার প্রতি তার একধরনের পরস্পরবিরোধীতা কাজ করত, যার ফলে ঐ সময়ে শক্ত ইহুদি-বিদ্বেষ কাজ করত এবং তিনি প্রায়ই মজা করে বলতেন যে তিনি মূলত তার নাম থেকে মুক্তি পেতেই বিয়ে করেছেন।[১৪]

সাহিত্যিক অবদান সম্পাদনা

রচনা ও প্রতিবেদন সম্পাদনা

  • Parker, Dorothy (ফেব্রুয়ারি ২৮, ১৯২৫)। "আ সার্টেইন লেডি"। দ্য নিউ ইয়র্কার1 (2): 15–16। 

ছোটগল্প সম্পাদনা

সংকলন সম্পাদনা

  • ১৯২২ – মেন আই এম নট ম্যারিড টু
  • ১৯৩২ – আফটার সাচ প্লেজারস
  • ১৯৩৯ – হিয়ার লাইস

কবিতা সম্পাদনা

সংকলন সম্পাদনা

  • পার্কার, ডরোথি (১৯২৬)। এনাফ রোপ: পোয়েমস। নিউ ইয়র্ক: বোনি অ্যান্ড লিভাররাইট। 
  • ১৯২৮ – সানসেট গান্স‌
  • ১৯৩ – ডেথ অ্যান্ড ট্যাক্সেস

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Whitman, Alden (জুন ৮, ১৯৬৭)। "Dorothy Parker, 73, Literary Wit, Dies"The New York Times। জানুয়ারি ২০, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৭, ২০১৮ 
  2. Meade, Marion (১৯৮৭)। Dorothy Parker: What Fresh Hell Is This?। New York: Penguin Books। পৃষ্ঠা 5। আইএসবিএন 0-14-011616-8 
  3. Meade 6
  4. Meade 13
  5. Herrmann, Dorothy (১৯৮২)। With Malice Toward All: The Quips, Lives and Loves of Some Celebrated 20th-Century American Wits। New York: G. P. Putnam's Sons। পৃষ্ঠা 78আইএসবিএন 0-399-12710-0 
  6. Meade 14
  7. Chambers, Dianne (১৯৯৫)। "Parker, Dorothy"। Wagner-Martin, Linda। The Oxford Companion to Women's Writing in the United States। Oxford University Press। 
  8. Meade 16
  9. Meade 27
  10. Kinney, Authur F. (১৯৭৮)। Dorothy Parker। Boston: Twayne Publishers। পৃষ্ঠা 26–27। 
  11. Silverstein, Stuart Y. (১৯৯৬)। Not Much Fun: The Lost Poems of Dorothy Parker। New York: Scribner। পৃষ্ঠা 13। আইএসবিএন 0-7432-1148-0 
  12. Herrmann 78
  13. "Edwin P. Parker 2d"The New York Times। Associated Press। জানুয়ারি ৮, ১৯৩৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-২৮ 
  14. Penzer, Otto (২০০৭)। The Vicious Circle: Mystery and Crime Stories by Members of the Algonquin Round Table। New York: Pegasus Books। পৃষ্ঠা 99। আইএসবিএন 978-1933648675 

আরো পড়ুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা