ট্রাফিক পদ্ধতি নির্দেশনা

ট্রাফিক পদ্ধতি নির্দেশনা বলতে ট্রাফিক চলার একটি নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতিকে বোঝায় যা অনুসারে কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের সকল যানবাহন চলাচল করে। সাধারণত দুই ধরনের ট্রাফিক পদ্ধতি লক্ষ করা যায়। একটি হল ডানদিকগামী এবং অপরটি বামদিকগামী [১] এটা অত্যাবশ্যকীয় যে যানবাহনগুলো ট্রাফিক চলার নিয়ম-নীতিগুলো মেনে চলে।[২]

ট্রাফিক চলাচলের দিক অনুসারে দেশসমূহ, সিরকা ২০১৬।
  ডানদিকগামী ট্রাফিক পদ্ধতি
  বামদিকগামী ট্রাফিক পদ্ধতি
থাই-লাও ফ্র্যান্ডশীপ ব্রিজ এ ট্রাফিক চলার দিক সমূহ

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ (১৬৩ টি দেশ এবং অঞ্চল) ডানদিকের (আরএইচটি) ট্রাফিক পদ্ধতি মেনে চলে। বাকি ৭৬টি দেশ এবং অঞ্চলগুলো বামদিকের (এলএইচটি) ট্রাফিক পদ্ধতি মেনে চলে।[৩]

১৯৯০ সালের আগে কানাডা, স্পেন এবং ব্রাজিলের মতো দেশগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নিয়ম চালু রেখেছিলো। এরপর ১৯৯০ সালে অনেক দেশ তাদের আঞ্চলিক প্রথা অনুযায়ী বামদিকের ট্রাফিক পদ্ধতি থেকে ডানদিকের ট্রাফিক পদ্ধতিতে যাওয়া শুরু করে। ১৯১৯ সালের দিকে পৃথিবীর প্রায় ১০৪ টি দেশে বামদিকের ট্রাফিক পদ্ধতি ছিলো। এরপর ১৯১৯-৮৬ সালে ৩৪ টি দেশ তাদের দিক পরিবর্তন করে ফেলে এবং ডানদিকের ট্রাফিক পদ্ধতি অনুসরণ করা শুরু করে। [৪] অনেকদেশ আবার সড়ক পথে একরকম এবং নদী ও সমুদ্র পথে অন্যরকম পদ্ধতি অনুসরণ করে। সাধারণত "সি কোলিসন" এড়ানোর জন্য অনেক দেশে সমুদ্র পথে ডানদিকের ট্রাফিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। আন্তর্জাতিক নিয়মও তাই। একই ব্যাপার আকাশপথের ক্ষেত্রেও। যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারিরা তাই এয়ার্ক্রাফট সবসময় বায়ু এবং সমুদ্রের উভয়ের ডানদিকে চলাচল করতে বলে। [৫]

আবার অনেক দেশে যানবাহন ডানদিকগামী হলেও রেল বামদিকের হয় অথবা যান চলাচল বামদিকগামী হলে রেল চলাচল ডানদিকগামী হয়। চায়না এই পদ্ধতি অনুসরণ করে। তাদের এইরকম করার পিছনে আবার তেমন কোনো বিশেষ কারণ নেই। তবে এখনও বেশির ভাগ দেশে বামদিকগামী ট্রাফিক পদ্ধতিই বেশি সমাদৃত। কারণ মানুষ যখন চলাচল করে তখন তাদের মস্তিষ্কের ডানভাগ বেশি সচল থাকে। তাই বামদিকে ট্রাফিক চলাচলই বেশি নিরাপদ।[৬][৭]

বাংলাদেশে গাড়ি চালানোর দিক হলো বামদিক।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. ড্র্যাপার, জিওফ (১৯৯৩)। "হারমোনাইজড হ্যাডল্যাম্প ডিজাইন ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড অ্যাপ্লিকেশন"। মোটর ভেইক্যাল লাইটিং। সোসাইটি অফ অটোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ারস। পৃষ্ঠা ২৩–৩৬। 
  2. Kincaid, Peter (ডিসেম্বর ১৯৮৬)। The Rule of the Road: An International Guide to History and Practice। Greenwood Press। পৃষ্ঠা 50, 86–88, 99–100, 121–122, 198–202। আইএসবিএন 0-313-25249-1 
  3. "Right-Hand Traffic versus Left-Hand Traffic"The Basement Geographer। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. Watson, Ian। "The rule of the road, 1919-1986: A case study of standards change" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৬ 
  5. FAR Sec. 91.115[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ](c): "When aircraft, or an aircraft and a vessel, are approaching head-on, or nearly so, each shall alter its course to the right to keep well clear."
  6. Foerch, C; Steinmetz, H (২০০৯)। "Left-sided traffic directionality may be the safer "rule of the road" for ageing populations"। Med Hypotheses73 (1): 20–3। ডিওআই:10.1016/j.mehy.2009.01.044পিএমআইডি 19327893 
  7. "Your Dominant Eye and Why it Matters"। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা