টেনিস বল টেনিস খেলায় ব্যবহারের জন্য ডিজাইন করা বল বিশেষ। বড় বড় ক্রীড়া ইভেন্টে টেনিস বল ফ্লুরোসেন্ট হলুদ হয়।[১][২] তবে বিনোদনমূলক খেলায় কার্যত বলের যে কোনও রঙ হতে পারে। টেনিস বলগুলি একটি তন্তুযুক্ত ফেল্ট আবৃত থাকে যা তাদের বায়ুগতীয় (এরোডাইনামিক) বৈশিষ্ট্য সংশোধন করে। প্রতিটি বলে একটি সাদা বক্রাকার ডিম্বাকৃতি রেখা বেষ্টন করে থাকে।

২০১২ ফ্রেঞ্চ ওপেন এ ব্যবহৃত টেনিস বল

সবিস্তার বিবরণী সম্পাদনা

 
২০১১ রাকুটেন জাপান ওপেন টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপ এ ব্যবহৃত টেনিস বল

নিয়ন্ত্রিত খেলার আধুনিক টেনিস বলকে অনুমোদিত মানদণ্ড অনুসারে নির্দিষ্ট আকার, ওজন, বিকৃতি এবং বাউন্সের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হয়। আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশন (আইটিএফ) বলের অনুমোদিত ব্যাস সংজ্ঞায়িত করেছে ৬.৫৪–৬.৮৬ সেমি (২.৫৭–২.৭০ ইঞ্চি)। বলের ভর এর ব্যাপ্তি থাকতে হবে ৫৬.০–৫৯.৪ গ্রাম (১.৯৮–২.১০ আউন্স)। আইটিএফ অনুমোদিত একমাত্র রঙ হ'ল হলুদ এবং সাদা। বেশিরভাগ উৎপাদিত বলে "অপটিক হলুদ" নামে পরিচিত ফ্লুরোসেন্ট হলুদ বর্ণ ব্যবহৃত হয়। এই রঙটি টেলিভিশনে আরও বেশি দৃশ্যমান হয় প্রমাণিত হওয়ার পর ১৯৭২ সালে প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল।

টেনিস বল বায়ুপূর্ণ হয় এবং তার বাইরেটায় অভিন্ন ফেল্ট-আবৃত রাবার যৌগ থাকে। এই ফেল্ট সীমানা স্তরপ্রবাহ বিচ্ছেদ কে বিলম্বিত করে। এর কারণে বায়ুগতীয় টান হ্রাস পেয়ে বলকে অপেক্ষাকৃত ভালো উড়ান (ফ্লাইট) ধর্ম দান করে।[৩][৪] অনেক সময় বলের উপর ব্র্যান্ডের নাম ছাড়াও তাদের উপর একটি সংখ্যা বসানো থাকে। এটি সংলগ্ন কোর্টে একই ব্র্যান্ডের অন্য একটি বলের সেটকে আলাদা করতে সহায়তা করে।[৫]

টেনিস বল বাইরে বের করার (প্যাকিং থেকে) সাথে সাথেই তার বাউন্স হারাতে শুরু করে। তাদের বাউন্স নির্ধারণের জন্য তাদের পরীক্ষা করা হতে পারে। আধুনিক নিয়ন্ত্রিত টেনিসে প্রাথমিকভাবে ব্যবহৃত না হওয়া পর্যন্ত বলগুলিকে নির্দিষ্ট চাপ এর অধীনে রাখা হয় (প্রায় দুই বায়ুমণ্ডলীয় চাপ)। বেশি উচ্চতায় ব্যবহারের জন্য তৈরি বলগুলির প্রাথমিক চাপ কম রাখা থাকে এবং অনুশীলনের জন্য ব্যবহৃত সস্তার বলগুলি অভ্যন্তরীণ চাপ ছাড়াই তৈরি করা হয়। কোনও বলের বাউন্স পরীক্ষার জন্য বলটিকে ২৫৪ সেমি (১০০ ইঞ্চি) উচ্চতা থেকে কংক্রিট এ ফেলা হয়; ২০ °সে (৬৮ °ফা) তে ৬০% আপেক্ষিক আর্দ্রতায় সমুদ্র-তলে থেকে বাউন্স ১৩৫ এবং ১৪৭ সেমি (৫৩ এবং ৫৮ ইঞ্চি) এর মধ্যে থাকলে বলটি গ্রহণযোগ্য হয়; সমুদ্রপৃষ্ঠে পরীক্ষা করার সময় বেশি-উচ্চতার বলগুলি কিন্তু ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখাবে।[৬]

ধীর গতির বল সম্পাদনা

আইটিএফের "প্লে এবং স্টে" প্রচারের লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে টেনিসে অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রারম্ভিক খেলোয়াড়দের খেলার সাথে পরিচয়ের উন্নতি ঘটান। খেলাটি কার্যকরভাবে প্রবর্তন করতে তাঁরা ধীর গতির বল এবং আরও ছোট মাপের কোর্ট প্রবর্তণের সুপারিশ করেন যা প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু - উভয়ের ক্ষেত্রেই কার্যকর ভূমিকা নেবে। ধীরতম গতির বলগুলি লাল রঙে চিহ্নিত বা অর্ধেক লাল ফেল্ট ব্যবহার করা থাকে যা আকারে বড় এবং চাপ ছাড়াই তৈরী করা হয় বা ফোম রাবার থেকে তৈরি হয়। পরের গতির বলটি হয় কমলা রঙের যা সাধারণ আকারের চাপমুক্ত বল বিশেষ। সর্বশেষেরটি সবুজ রঙের এবং অর্ধেক চাপযুক্ত সাধারণ আকারের বল। [৫]

প্যাকেজিং সম্পাদনা

১৯২৫ সালের আগে টেনিস বলগুলি কাগজ মোড়কে পেপারবোর্ড বাক্সে প্যাকেজ করা হত। ১৯২৫ সালে উইলসন-ওয়েস্টার্ন স্পোর্টিং গুডস কোম্পানি পিচবোর্ড টিউব চালু করে। ১৯২৬ সালে পেনসিলভেনিয়া রাবার কোম্পানি তিনটি বলের অভেদ্যভাবে সিল করা চাপযুক্ত ধাতব টিউব বাজারে নিয়ে আসে। এর শীর্ষ অংশটি খোলার জন্য ছিল গির্জা চাবি (চার্চকি)। ১৯৮০ এর দশকের শুরু থেকে চালু হয় টানা-ট্যাব (পুল-ট্যাব) সীল সহ প্লাস্টিক (পুনর্ব্যবহারযোগ্য পিইটি) [৭] পাত্র এবং প্লাস্টিকের ঢাকনা যুক্ত প্রতিটি পাত্রে তিন বা চারটি বল থাকে। চাপবিহীন বলগুলি প্রায়ই নেট ব্যাগ বা বালতিতে আসে। কারণ তাদের চাপ-সিল করার প্রয়োজন হয় না।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "ITF Technical - History"International Tennis Federation। ১২ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১৫ 
  2. "Inside Wilson's tennis ball factory"ESPN The Magazine। ৩০ আগস্ট ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৫ 
  3. "Golf Balls, Cricket Balls and Tennis Balls"। Princeton University। ৫ অক্টোবর ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-২০ 
  4. Dr. Rabi Mehta of NASA-Ames, entitled Aerodynamics of sportsballs, Annual Review of Fluid Mechanics, 17:151–189, 1985.
  5. "Colors & Numbers on Tennis Balls"। Epic Tennis Academy। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  6. "ITF Technical - Approval Tests"International Tennis Federation। ২৬ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  7. Recycling ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে, PETRA (PET Resin Association), retrieved 21 July 2010

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা