টনি লুইস

ইংরেজ গণিতজ্ঞ

এন্থনী জন লুইস, এমবিই (ইংরেজি: Anthony John Lewis; জন্ম: ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪২ - মৃত্যু: ১৫ মার্চ, ২০২০) ইংরেজ গণিতবিদ ছিলেন। তবে তিনি বিশ্বে টনি লুইস নামেই সবিশেষ পরিচিত। বিখ্যাত হয়ে আছেন আরেক ইংরেজ ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থকে নিয়ে যৌথভাবে প্রণীত ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি প্রবর্তন করে। এরফলে বৃষ্টি, আলোকস্বল্পতা কিংবা অন্য কোন কারণে ক্রিকেট খেলায় বিঘ্ন পরিবেশে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন করে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের পদ্ধতিকে আরো উন্নততর করার মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে।[১][২]

টনি লুইস

ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থের (বামে) সাথে টনি লুইস
জন্ম
এন্থনী জন লুইস

(১৯৪২-০২-২৫)২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৪২
মৃত্যু১৫ মার্চ ২০২০(2020-03-15) (বয়স ৭৮)
পেশাগণিতজ্ঞ
পরিচিতির কারণডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি

কর্মজীবন সম্পাদনা

ইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ারের বোল্টনে জন্মগ্রহণ করেন টনি লুইস।[৩]

১৯৬০-এর দশকে শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত এবং পরিসংখ্যানে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি।[৪] জানুয়ারি, ২০০৮ সালে অক্সফোর্ড ব্রুকস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোয়ান্টিটেটিভ রিসার্চ মেথডের প্রভাষক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।[৫] এরপূর্বে তিনি ইউনিভার্সিটি অব দি ওয়েস্ট অব ইংল্যান্ডের (ইউডব্লিউই) প্রভাষক ছিলেন।[৬] সেখানেই তিনি স্নাতক-পূর্ব শ্রেণীর চূড়ান্ত-বর্ষীয় প্রকল্পে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির উদ্ভব ঘটান।

এছাড়াও তিনি ওয়েস্টার্ন অপারেশনাল রিসার্চ ডিসকাশন সোসাইটি'র সাবেক সভাপতি ছিলেন। ২০০৯ সালে ২য় আইএমএ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে খেলাধূলায় গণিতের প্রয়োগের উপর প্রধান বক্তা ছিলেন লুইস।[৪] এছাড়াও, টনি লুইস ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ের পরামর্শকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।[৫]

ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি সম্পাদনা

১৯৮০-এর দশকে ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ হিসাব-নিকাশের জটিল নিয়ম বিষয়ে প্রস্তাবনা করেছিলেন।[৭] ১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা শেষে ধারাভাষ্যকার ক্রিস্টোফার মার্টিন-জেনকিন্স অধিকতর ভালোমানের হিসাব-নিকাশ পদ্ধতির বিষয়ে আলোকপাত করেন।[৭] টনি লুইস ১৯৯২ সালে ‘ফেয়ার প্লে ইন ফাউল ওয়েদার’ শীর্ষক নিবন্ধটি পড়েন ও তারা একত্রে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির উদ্ভাবন ঘটান।[৭] পরবর্তীতে, ২০১৪ সালে অস্ট্রেলীয় কুইন্সল্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিভেন স্টার্ন এ পদ্ধতিকে আরও সংস্কার করেন। ফলশ্রুতিতে, এর নবনামকরণ ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতি রাখা হয়।[৬][৭]

ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির প্রথম প্রয়োগ ঘটে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে জিম্বাবুয়ে বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজে। ঐ খেলায় জিম্বাবুয়ে ৭ রানে জয়ী (ডি/এল মেথড) হয়।[৮] ২০০১ সালে ক্রিকেট খেলার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এ পদ্ধতিটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে। প্রধান মানদণ্ড হিসেবে বৃষ্টিবিঘ্নতাজনিত কারণে ও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় ফলাফলের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্যকরণের হিসাব-নিকাশে এ পদ্ধতির গুরুত্বকে বিশেষভাবে বিবেচনায় আনে আইসিসি।

সম্মাননা সম্পাদনা

টনি লুইস ২০১০ সালে রাণীর জন্মদিনের সম্মানে মেম্বার অব দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (এমবিই) পদবীধারী হন।[৯]

১৫ মার্চ, ২০২০ তারিখে ৭৮ বছর বয়সে টনি লুইসের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Longmore, Andrew (১৬ মে ১৯৯৯), "First Night: Duckworth–Lewis: The odd couple getting even with the weather", The Independent, London, সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১০ 
  2. Richards, Huw (১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৩), "How two statisticians became stars", New York Times, সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১০ 
  3. "Tony Lewis - England"ESPNcricinfoESPN। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১১ 
  4. IMA Mathematics in Sport ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে conference web site.
  5. "Tony Lewis, co-creator of the Duckworth-Lewis method, passes away aged 78"The Cricketer। ২ এপ্রিল ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০২০ 
  6. "Tony Lewis: Cricket statistician of the Duckworth-Lewis method dies aged 78"BBC Sport। ২ এপ্রিল ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০২০ 
  7. Miller, Andrew (২ এপ্রিল ২০২০)। "Tony Lewis, of Duckworth-Lewis rain-rules fame, dies aged 78"ESPN Cricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০২০ 
  8. Scorecard of the 2nd ODI between England and Zimbabwe, 1 January 1997, from Cricinfo.
  9. "নং. 59446"দ্যা লন্ডন গেজেট (সম্পূরক) (ইংরেজি ভাষায়): 19। ১২ জুন ২০১০। 

আরও পড়ুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা