জো ডার্লিং

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

জোসেফ জো ডার্লিং, সিবিই (ইংরেজি: Joe Darling; জন্ম: ২১ নভেম্বর, ১৮৭০ - মৃত্যু: ২ জানুয়ারি, ১৯৪৬) দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন অসমন্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পক্ষে ১৮৯৪ থেকে ১৯০৫ সময়কালে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন।

জো ডার্লিং
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজোসেফ ডার্লিং
জন্ম(১৮৭০-১১-২১)২১ নভেম্বর ১৮৭০
গ্লেন অসমন্ড, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু২ জানুয়ারি ১৯৪৬(1946-01-02) (বয়স ৭৫)
হোবার্ট, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামপ্যাডি[১]
উচ্চতা১.৭২ মিটার (৫ ফুট ৮ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্করিক ডার্লিং (প্রপৌত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৬৪)
১৪ ডিসেম্বর ১৮৯৪ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৪ আগস্ট ১৯০৫ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯৩/৯৪–১৯০৭/০৮সাউথ অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৪ ২০২
রানের সংখ্যা ১৬৫৭ ১০৬৩৫
ব্যাটিং গড় ২৮.৫৬ ৩৪.৫২
১০০/৫০ ৩/৮ ১৯/৫৫
সর্বোচ্চ রান ১৭৮ ২১০
বল করেছে ৬৮
উইকেট
বোলিং গড় ৫৫.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৭/– ১৪৮/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২২ মার্চ ২০১৭

দলে তিনি মূলতঃ বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে ভূমিকা রাখেন। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়া দলকে টেস্টে নেতৃত্ব দেন ‘প্যাডি’ ডাকনামে পরিচিত জো ডার্লিং

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

জন ডার্লিং ও ইসাবেলা দম্পতির ছয় পুত্রের একজন ছিলেন জো ডার্লিং। প্রিন্স আলফ্রেড কলেজে অধ্যয়ন করেন। সেখানেই ক্রিকেটের প্রতি তার আগ্রহ জন্মায়। পনের বছর বয়সে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সেন্ট পিটার্স কলেজের বিপক্ষে রেকর্ডসংখ্যক ২৫২ রান তোলেন।[২] পরবর্তীকালে ভবিষ্যতের জাতীয় দলের সঙ্গী ক্লেম হিল ৩৬০ রান তুলে তার গড়া এ রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেন।[৩]

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

অধিকাংশ সময়ই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামতেন তিনি। অত্যন্ত ধৈর্যশীল ব্যাটসম্যান ও রক্ষণাত্মক ঢংয়ে খেলতে পছন্দ করলেও দলের প্রয়োজনে দ্রুত রান তোলায় পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। ১৮৯৭-৯৮ মৌসুমে সিডনিতে অনুষ্ঠিত টেস্টে ১৬৫ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে ১৬০ রান তোলেন। তার এ ইনিংসে ৩০টি বাউন্ডারি ছিল। এরফলে তার দল ইংল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট সিরিজে ৫০০ রান তুলেন। এছাড়াও সিরিজে তিনটি সেঞ্চুরি করেন তিনি। দলীয় সঙ্গীদের কাছে তার বিস্তর ক্রিকেট জ্ঞানের জন্য মূল্যায়িত হন। অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত মুষ্টিযোদ্ধা ফ্রাঙ্ক প্যাডি স্ল্যাভিনের নাম অনুসরণে দলীয় সঙ্গীরা তাকে ‘প্যাডি’ ডাকনামে ডাকতেন।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৩৪ টেস্টে অংশ নেন তিনি। ২১ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। তন্মধ্যে তার দল ৭ টেস্টে জয় পায় ও ৪ টেস্টে পরাজিত হয়। ইনিংস প্রতি ২৮.৫৬ গড়ে ১৬৫৭ রান তোলেন। এছাড়াও তিনটি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ১৮৯৬, ১৮৯৯, ১৯০২ ও ১৯০৫ সালে সর্বমোট চারবার ইংল্যান্ড সফর করেন। শেষ তিনটি সফরে দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ১৯০২ সালে দলের অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ড সফর করার পর অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা দলের মর্যাদা পায় তার দল।

১৮৯৪-৯৫ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। ইনিংসে যেখানে জর্জ গিফেনসিড গ্রিগরি’র সেঞ্চুরি হলেও তিনি টম রিচার্ডসনের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে গোল্ডেন ডাক পান।[৪] ৫-টেস্টের ঐ সিরিজে ২৮.৬৬ গড়ে ২৫৮ রান তোলেন তিনি।[৫] ১৮৯৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে ২৯.৯০ গড়ে ৩ সেঞ্চুরিসহ ১,৫৫৫ রান তুলে দলের শীর্ষ রান সংগ্রাহক হন।[৬] এ প্রসঙ্গে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক উল্লেখ করে যে, ডার্লিং ঐ সময়ের সেরা বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রমাণিত করেছিলেন।[৭] কিন্তু টেস্ট সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পরাজিত হয় তার দল।[৭]

অবসর সম্পাদনা

১৮৯৯ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে তিনি মনোনীত হন।[৮]কৃষক হিসেবে দায়বদ্ধতার কারণে তার খেলোয়াড়ী জীবন বেশ কয়েকবার বাঁধাগ্রস্ত হয়। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় তিনি গম উৎপাদনের সাথে ও পরবর্তীকালে তাসমানিয়ায় পশম উৎপাদনে নিজেকে জড়িত রাখেন। তাসমানিয়ায় কৃষিবিষয়ক বেশ কয়েকটি সংস্থায় সদস্য হিসেবে কাজ করেন। ১৯২১ সালে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ও তাসমানিয়ার আইনসভায় স্বতন্ত্র সদস্য ছিলেন তিনি।

১৯৪৬ সালে গল ব্ল্যাডারের অপারেশনের পর ৭৫ বছর বয়সে জো ডার্লিংয়ের দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি তাসমানিয়ার আইনসভার সদস্য ছিলেন।[৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Robinson, pp. 75–87.
  2. Darling, D. K. (১৯৮১)। "Darling, Joseph (1870 - 1946)"Australian Dictionary of Biography - online editionAustralian National University। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-২৭ 
  3. Daly, John A. (১৯৮৩)। "Hill, Clement (Clem) (1877 - 1945)"Australian Dictionary of Biography - Online Edition। Australian National University। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-১৮ 
  4. "Australia v England: AE Stoddart's XI in Australia 1894/95 (1st Test)"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-২৯ 
  5. "Test Batting and Fielding in Each Season by Joe Darling"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-২৯ 
  6. "First-class Batting and Fielding for Australians: Australia in England 1896"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-২৯ 
  7. "The Australians in England, 1896"Wisden Cricketers' Almanack - online edition। John Wisden & Co.। ১৮৯৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-২৯ 
  8. "Cricketer of the Year - 1900: Joe Darling"Wisden Cricketers' Almanack - online archive। John Wisden & Co.। ১৯০০। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-০২ 
  9. "The Parliament of Tasmania from 1856: Joseph Darling"। Parliament of Tasmania। ২০০৮-০৩-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-১০ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

পূর্বসূরী
হ্যারি ট্রট
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৮৯৯-১৯০১/০২
উত্তরসূরী
হিউ ট্রাম্বল
পূর্বসূরী
হিউ ট্রাম্বল
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯০২-১৯০২/০৩
উত্তরসূরী
মন্টি নোবেল
পূর্বসূরী
মন্টি নোবেল
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯০৫
উত্তরসূরী
মন্টি নোবেল
বিধানসভার আসন
পূর্বসূরী
চার্লস ডেভিস
ক্যামব্রিজের সদস্য
১৯২১-১৯৪৬
উত্তরসূরী
জিওফ্রে গ্রীন