জিম বার্ক

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

জেমস ওয়ালেস বার্ক (ইংরেজি: Jim Burke; জন্ম: ১২ জুন, ১৯৩০ - মৃত্যু: ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৯) নিউ সাউথ ওয়েলসের মোসম্যান এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৯ সময়কালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন জিম বার্ক। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন তিনি।

জিম বার্ক
১৯৫৪ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জিম বার্ক
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজেমস ওয়ালেস বার্ক
জন্ম(১৯৩০-০৬-১২)১২ জুন ১৯৩০
মোসম্যান, নিউ সাউথ ওয়েলস
মৃত্যু২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯(1979-02-02) (বয়স ৪৮)
ম্যানলি, নিউ সাউথ ওয়েলস
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৪ ১৩০
রানের সংখ্যা ১২৮০ ৭৫৬৩
ব্যাটিং গড় ৩৪.৫৯ ৪৫.০১
১০০/৫০ ৩/৫ ২১/৩৫
সর্বোচ্চ রান ১৮৯ ২২০
বল করেছে ৮১৪ ৮৫৪০
উইকেট ১০১
বোলিং গড় ২৮.৭৫ ২৯.১১
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৪/৩৭ ৬/৪০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৮/০ ৫৮/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৩ জুলাই ২০১৮

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২৪ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ হয় তার। ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫১ তারিখে টেস্ট অভিষেক ঘটে জিম বার্কসের। পূর্ণাঙ্গ খেলোয়াড়ী জীবনে সর্বাধিক ৪৪ ইনিংস খেলে কোন শূন্য রান না করার রেকর্ডটি অদ্যাবধি অক্ষত রয়েছে জিম বার্কের।[১]

শৈশবকাল সম্পাদনা

সিডনির উত্তর উপকূলীয় এলাকা মোসম্যানে জিম বার্কের শৈশবকাল অতিবাহিত হয়। তার পিতা-মাতা কেন্টের ব্রোমলি এলাকা থেকে অভিবাসিত হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসেন। তার গ্রেট আঙ্কেল পার্সি বার্ক কেন্টের পক্ষে উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। তার মা প্রতিভাধর গল্ফার ছিলেন।[২][৩]

শৈশবকালেই প্রতিভাধর গল্ফার ও ক্রিকেটার হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন জিম বার্ক। কিন্তু, ১২ বছর বয়সে বালগোলা গল্ফ ক্লাবে কিশোর বয়স থাকায় তাকে সদস্যপদ দেয়া হয়নি। ম্যানলি ওভালে সাত বছর বয়স থেকে ক্রিকেটে প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। সিডনি গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেন। ১৪ বছর বয়সে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পান। ১৫ বছর বয়সে ম্যানলির তৃতীয় একাদশ থেকে সিডনি গ্রেড ক্রিকেটের প্রথম একাদশে ঠাঁই পান। সিডনি গ্রামারে থাকাকালে ১৬ বছর বয়সে তার ব্যাটিং গড় ৯৪ ছিল যা ঐ বিদ্যালয়ের রেকর্ডরূপে বিবেচিত ও এ বিদ্যালয় থেকে অনেক প্রতিভাধর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার বের হয়ে এসেছেন।[২][৩]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ সম্পাদনা

১৯৪৮-৪৯ মৌসুমের শুরুতেই তরুণদের নিয়ে গড়া নিউ সাউথ ওয়েলস কোল্টসের সদস্যরূপে কুইন্সল্যান্ডের প্রতিপক্ষীয় দলের বিপক্ষে জিম বার্ক ১৩৪ রানের মনোরম ইনিংস খেলার পাশাপাশি ২/৮ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন।[৪] এ অসাধারণ ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে আঠারো বছর বয়সেই ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমের শেফিল্ড শিল্ড খেলার জন্য তাকে নিউ সাউথ ওয়েলস দলে খেলার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। ঐ মৌসুমে কোন আন্তর্জাতিক দল অস্ট্রেলিয়া সফরে আসেনি ও নিজ রাজ্য দলে বেশ কয়েকজন টেস্ট খেলোয়াড় থাকা স্বত্ত্বেও তাকে এ মনোনয়ন দেয়া হয়।[৪][৫]

প্রথম খেলায় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ৭৬ রান তুলেন ও উইকেটবিহীন অবস্থায় দুই ওভার মেইডেন বোলিং করেন। ঐ খেলায় তার দল ইনিংস ব্যবধানে জয় পায়।[৪] পরবর্তী দুই খেলায় একটিমাত্র অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন। মৌসুমের শেষদিকে খেলায় ছন্দপতন শুরুর পূর্বে ৪০-এর কোঠা অতিক্রমণ করতে ব্যর্থ হন। শেষ পাঁচ ইনিংসে তিনি মাত্র ৪৬ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। তন্মধ্যে, টেস্ট প্রস্তুতিমূলক খেলায় শক্তমানের খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া খেলা ছিল। মৌসুমের শেষদিকে লিন্ডসে হ্যাসেট একাদশের সদস্যরূপে অংশ নেন। এতে তিনি ১১ ও ১৯ রান করেন। ফলশ্রুতিতে, ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।[৪]

প্রথম মৌসুমে সাত খেলায় অংশ নিয়ে ৩৭.৩৩ গড়ে ৩৩৬ রান করেছিলেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে বোলিং করে ২৯ ওভারে ৩৯.০০ গড়ে তিন উইকেট পেয়েছিলেন।[৪] প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার টেস্ট ব্যাটসম্যান কেন মিউলম্যানস্যাম লক্সটন তার প্রথম শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। এরফলে, নিজস্ব পঞ্চম খেলায় দ্বিতীয় ইনিংসে তার বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড়ায় ২/৩৮।[৪][৬]

পরের মৌসুমে টেস্ট খেলোয়াড়েরা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গেলে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে বার্কের ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শনের অনেক সুযোগ আসে। কিন্তু, মৌসুমের শুরুর প্রথম দুই খেলায় তিনি ২০-এর কোঠা অতিক্রমণ করতে পারেননি। ফলে দল থেকে বাদ পড়েন। ছয় সপ্তাহ দলের বাইরে অবস্থানের পর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দলে ফিরে আসেন।[৪] ২০ বছর বয়সে দলে ফেরার পর দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬২ রান ও ৩/৫৪ লাভ করেন। এরপর ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অপরাজিত ১৬২ রান তুলেন। এ সময় তিনি পরের বছর স্পিন বোলিং করে টেস্টে ৬/২৭ লাভ করা জ্যাক আইভারসনের বল মোকাবেলা করেছিলেন।[৩][৪] ঐ মৌসুমে শিল্ডের পাঁচ খেলায় অংশ নিয়ে ৪১.৭১ গড়ে ২৯২ রান ও ৩৩.৪২ গড়ে ৭ উইকেট পেয়েছিলেন।[৪]

মৌসুম শেষে বিল ব্রাউনের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় একাদশের সদস্য হিসেবে নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য মনোনীত হন। তখনও প্রথম একাদশ দলটি দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থান করছিল।[৪][৫] অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেন। প্রথম-শ্রেণীবিহীন অভিষেক খেলায় হাট ভ্যালির বিপক্ষে ১০১ রান তুলেন। এরপর পরের খেলায় অকল্যান্ডের বিপক্ষে ৬০ ও ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন। পরবর্তীতে বল হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩/২৪ লাভ করেন। ফলে স্বাগতিক দল মাত্র দুই উইকেট হাতে রেখে খেলাটি ড্র করতে বাধ্য হয়।[৪] প্রথম-শ্রেণীবিহীন পরের খেলায় ওয়াইকাতোর বিপক্ষে ৮৯ রান তুললেও ঐ সফরে আর তেমন সফলতা পাননি। কোন উইকেট লাভে ব্যর্থ হন ও পরবর্তী পাঁচটি প্রথম-শ্রেণীর ইনিংসে ২০-এর কোঠা অতিক্রমণ করতে পারেননি। নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে একমাত্র খেলায় একটি ইনিংসে নয় রান তুলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

টেস্ট অভিষেক সম্পাদনা

পরের মৌসুমে টেস্ট খেলোয়াড়েরা ফিরে আসলেও ধারাবাহিক সফলতা লাভের কারণে নিউ সাউথ ওয়েলস দলে নিজ স্থান পাকাপোক্ত করে নেন। ফলশ্রুতিতে, জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় তার প্রতি। ১৯৫০-৫১ মৌসুমের তৃতীয় খেলায় নিজ রাজ্য দলের সদস্য হিসেবে ফ্রেডি ব্রাউনের নেতৃত্বাধীন সফরকারী এমসিসি দলের বিপক্ষে খেলেন। ৮০ ও ৬০ রান তুলেন এবং উভয় ইনিংসেই অপরাজিত থাকেন।

পরের খেলায় ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে শূন্য রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫/৩৮ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট লাভ করার কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। টেস্ট বোলার ইয়ান জনসনবিল জনস্টনকে আউট করার পূর্বে টেস্ট ব্যাটসম্যান মিউলম্যান ও লক্সটনকে আউট করেন তিনি।[৬] পরবর্তী শিল্ড খেলাগুলোয় উপর্যুপরী অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশগ্রহণের জন্য অস্ট্রেলিয়া একাদশের সদস্য হন।[৪] একমাত্র ইনিংসটিতে তিনি ১২৮ রান তুলেন ও ডেনিস কম্পটনের উইকেট লাভ করেন। তাস্বত্ত্বেও টেস্ট দলে নির্বাচিত করা হয়নি তাকে।[৪][৬] দুই সপ্তাহ পর নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে খেলার জন্য আরো একটি সুযোগ পান। কিন্তু, প্রথম ইনিংসে রিটায়ার্ড হার্ট হন ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪০ রান তুলেন। এছাড়াও, ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রেগ সিম্পসনকে ২৫৯ রানে থাকা অবস্থায় বিদায় করেন।

১৯৫০-৫১ মৌসুমে অ্যাডিলেড ওভালে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় জিম বার্কের। অ্যাশেজ সিরিজের চতুর্থ টেস্টে তিনি দূর্বল খেলা উপস্থাপনকারী লক্সটনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে ১২ রান তুলে রয় ট্যাটারসলের শিকারে পরিণত হন ও অস্ট্রেলিয়া ৯৯ রানে এগিয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ১০১ রান তুলেন। অস্ট্রেলিয়া ৪০৩/৮ তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ও ইংল্যান্ডকে ৫০৩ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করে। তার ইনিংসটি কাট ও গ্লান্সে ভরপুর ছিল। অস্ট্রেলিয়া ২৭৪ রানে জয় তুলে নেয়।[৫]

পরের টেস্টে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। কিন্তু, তাকে ইংরেজ সিম বোলার অ্যালেক বেডসারের হাতে দুইবার ১১ ও ১ রান তুলে শিকারে পরিণত হতে হয়েছিল। সফরকারী ইংরেজ দল অস্ট্রেলিয়ার ২৬ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দুই উইকেট হারিয়ে আট উইকেটের সহজ বিজয় পায়।[৪][৫] সমগ্র সিরিজে বার্ক মাত্র তিন ওভার বোলিং করেছিলেন। সবগুলোই অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ছিল। কিন্তু কোন উইকেট পাননি।[৪] মৌসুম শেষে ৫০.৩৫ গড়ে ৭০৫ রান তুলেন ও ৩৭.১২ গড়ে আট উইকেট লাভ করেন।[৪]

১৯৫১-৫২ মৌসুমের শুরুটায় ভালো রান তুলতে পারেননি। কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২ এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্যরূপে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১১ ও অপরাজিত ৩৮ রানের ইনিংস খেলার পর প্রথম দুই টেস্টে দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে দলে থাকেন। খেলা শুরুর পূর্ব-মুহুর্তে অধিনায়ক লিন্ডসে হ্যাসেটের আঘাতপ্রাপ্তি ও নিউ সাউথ ওয়েলসের সতীর্থ টেস্ট ব্যাটিং উদ্বোধনকারী সিড বার্নসকে অস্ট্রেলিয়ান কন্ট্রোল বোর্ড শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বাদ দিলে বার্ককে দলে ডাকা হয়। অ্যাডিলেডের ভেজা পিচে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে তিনি মাত্র ৩ ও ১৫ রান তুলেন। ঐ টেস্টে সফরকারীরা ছয় উইকেটে স্বাগতিক দলকে পরাভূত করে।[৪] হ্যাসেট ফিরে আসলে স্বভাবতঃই বার্ককে দলের বাইরে রাখা হয় ও পরবর্তী দুই টেস্টে খেলানো হয়নি।[৩][৪] এরপর নিউ সাউথ ওয়েলসে ফিরে যান। গ্রীষ্মের শেষদিকে খেলাগুলোয় উপর্যুপরী অর্ধ-শতরানের সন্ধান পান। মৌসুম শেষে ২৯.০০ গড়ে ৩১৯ রান এবং ৪৫.৬০ গড়ে পাঁচ উইকেট দখল করেন তিনি।

টেস্টে উপেক্ষা সম্পাদনা

দুই মৌসুম টেস্টে খেলতে পারেননি। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে স্বাভাবিক ক্রীড়া প্রদর্শনে ব্যর্থ হন। নয় খেলায় তেরো ইনিংসে তিনি কেবলমাত্র একবার ৪০ ঊর্ধ্ব রান করতে পেরেছিলেন। ঐ খেলায় অবশ্য তার দল ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ইনিংস বিজয় পায়। ৭৮ রান সংগ্রহের পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে ৪/১১ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান জিম বার্ক। এ সময় তিনি লক্সটন, ইয়ান ম্যাকডোনাল্ড, জনসন ও জনস্টনকে আউট করেন। তিনি ২৫.১৮ গড়ে ২৭৭ রান ও ২০.৭৫ গড়ে ১২ উইকেট দখল করেন।[৪] তবে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাঁচ টেস্ট সিরিজের কোনটিতেই খেলার জন্য মনোনীত হননি। এছাড়াও, ১৯৫৩ সালে ইংল্যান্ড সফরে তাকে নির্বাচিত করা হয়নি।[৪][৫] পরের মৌসুমেও তিনি উপেক্ষিত হন। পুরো মৌসুমেই ঘরোয়া পর্যায়ে টেস্ট প্রতিনিধিত্বকারী দল ছিল।

বেশ কয়েকবার নিউ সাউথ ওয়েলস দলের খেলা থেকে তাকে বিরত রাখা হয়। ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমের শেফিল্ড শিল্ডে তিনি মাত্র পাঁচ খেলায় অংশ নেন। ঐ মৌসুমে শিরোপা জয় করে তার দল ও উপর্যুপরী নয়টি শিরোপার প্রথমটি লাভ করে।[৪][৭] মৌসুমের শুরুতে জিম বার্ক ৬/৬০ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে গেভিন স্টিভেন্স ও ফিল রাইডিংসকে আউট করার পর নিচেরসারিতে ভাঙন ধরান।[৬] ফলে তার দল আট উইকেটের ব্যবধানে জয় তুলে নেয়।[৪] কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ৫৮ রান তুলেন। ঐ মৌসুমে এটিই তার একমাত্র ৩৫ ঊর্ধ্ব রান করেছিলেন। মৌসুম শেষে ২৪.৪২ গড়ে ১৭১ রান ও ২৯.৩০ গড়ে ১০ উইকেট পেয়েছিলেন জিম বার্ক।[৪]

ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে অংশগ্রহণ সম্পাদনা

১৯৫৪ সালে ব্যবসা ও ক্রিকেটকে নিয়ে যৌথভাবে সময় পার করেন। ইংল্যান্ড গমন করেন ও ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে পেশাদার টডমর্ডেন দলের পক্ষে খেলেন। তিনি কোন সেঞ্চুরি করতে ব্যর্থ হন। তবে, ২৩ খেলায় অংশ নিয়ে পাঁচটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। তন্মধ্যে, দুইবার নব্বুইয়ের কোঠায় পৌঁছেছিলেন। ইস্ট ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে অপরাজিত ৯৭ ও ৮/১৪ লাভ করে দলকে জয় এনে দেন। এটিই পুরো মৌসুমে তার সেরা ব্যাটিং ও বোলিং পরিসংখ্যান ছিল। ১১ খেলায় পাঁচ বা ততোধিক উইকেটের সন্ধান পান।[৪]

১৯৫৪-৫৫ মৌসুমের শুরুতে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩৭ রানের ইনিংস খেলেন। এরপর লেন হাটনের নেতৃত্বাধীন সফরকারী ইংরেজ দলের বিপক্ষে নিজ রাজ্য দলের সদস্যরূপে খেলে ৬ ও অপরাজিত ৩৪ রান করেন। কিন্তু, খেলায় তার এ ক্রীড়াশৈলী দল নির্বাচকমণ্ডলীর মনঃপুত হয়নি। ফলে প্রথম টেস্টে ইনিংস জয়ী হওয়া অস্ট্রেলিয়া দলে অংশগ্রহণ থেকে তাকে বিরত থাকতে হয়।

জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন সম্পাদনা

১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্ট খেলার জন্য তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়। সিডনিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে কিথ মিলারের আঘাতের কারণে স্থলাভিষিক্ত হন।[২][৩] খেলায় তিনি ৪৪ ও ১৪ রান তুলেন। ইংল্যান্ড নিম্নমূখী রানের খেলায় ৩৮ রানে জয়লাভ করে সিরিজে সমতা আনে।[৪] মিলার সুস্থ হয়ে দলে ফিরে আসেন ও তৃতীয় টেস্টে জিম বার্ক বাদ পড়েন। অ্যাডিলেডের চতুর্থ টেস্টে তাকে পুনরায় দলে রাখা হয়। খেলায় তিনি ১৮ ও ৫ রান তুলেন। ইংল্যান্ড ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় জয় পেয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয়।

মৌসুমের শেষ খেলায় নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬২ রান করেন। উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম ইনিংসে ১৭২ রান তুলেছিল। দল ৪৫ রানে জয় পায়। ঐ গ্রীষ্মে প্রথম টেস্ট বাদে সফরকারীদের প্রথম পরাজয় ছিল। জয়ের লক্ষ্যে ধাবমান ইংল্যান্ড দলের হাটনকে আউট করেন তিনি। এটিই ঐ মৌসুমে তার একমাত্র শিকার ছিল।[৪][৬] সামগ্রিকভাবে ঐ মৌসুমটি বার্কের জন্য সুখকর ছিল না। তিনি ৩৬.৭২ গড়ে ৪০৪ রান তুলেছিলেন।[৪]

১৯৫৫ সালে অস্ট্রেলিয়া দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায়। পঞ্চমবারের মতো দলের বাইরে রাখা হয় জিম বার্ককে। এ সময় তিনি রক্ষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে খেলতে আরম্ভ করেন। ব্যক্তিগত রানের সংগ্রহশালা স্ফীত করতে সকল ধরনের ঝুঁকি বর্জন করতে থাকেন। কিছুক্ষেত্রে দর্শকদের বিরক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন ও ব্যাট হাতে মাঠে নামাকালে সিডনিবাসী বিদ্রুপাত্মক বাণী প্রদর্শন করতে থাকে। এছাড়াও এ সময়ে টেস্ট উদ্বোধনকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ আর্থার মরিস থাকলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরশেষে অবসর নেন।

জেদী ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত জিম বার্ক ঘরোয়া ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমের সূচনা করেন দূর্দান্তভাবে। উদ্বোধনী খেলায় কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৫ ও ৫৬ রান তুলেন তিনি। পার্থে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মের তৃতীয় খেলায় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রক্ষণাত্মকভাবে ১৮৯ রানের ইনিংস উপহার দেন। ফলে, ডন ব্র্যাডম্যান তাকে আরও কার্যকরী স্ট্রোকপ্লে খেলার পরামর্শ দেন।[৪][৬] বার্ক তার কথা রক্ষার্থে অগ্রসর হন। পরের ইনিংসে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫০ রানের ইনিংস খেলে দলকে ইনিংস ব্যবধানে জয়লাভে ভূমিকা রাখেন।[৪]

এসকল দূর্দান্ত ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে টেস্ট প্রস্তুতিমূলক খেলায় বার্ককে রে লিন্ডওয়াল একাদশের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ও জনসন একাদশের বিপক্ষে খেলেন। প্রথম ইনিংসে ১৯২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৬ রান তুলে দলকে নাটকীয়ভাবে দুই উইকেটের জয় এনে দেন।[৪] জানুয়ারির শেষে ৯৮ ও অপরাজিত ৫৭ রান তুলে নিউ সাউথ ওয়েলসের ১২১/৭ থেকে তুলে আনেন ও ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে সমূহ পরাজয় থেকে রক্ষা করেন। এরফলে, নিজ দল তৃতীয়বারে মতো ধারাবাহিকভাবে শিল্ডের শিরোপা লাভে সক্ষম হয়।[৪][৭] এ পর্যায়ে তিনি মাত্র ২/১২৫ পান কিন্তু, ৮৯.৯০ গড়ে ৮৯৯ রান তুলতে পেরেছিলেন।[৪]

ইংল্যান্ড গমন সম্পাদনা

১৯৫৬ মৌসুমে জিম বার্ক তার স্ট্রোকপ্লের ফুলঝুড়ি ছোটাতে থাকেন। এরফলে দর্শকেরা তার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে থাকে। পাশাপাশি, রান সংগ্রহও স্ফীত হতে থাকে তার। ফলশ্রুতিতে, ১৯৫৬ সালে ইংল্যান্ড সফরের জন্য অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে তাকে রাখা হয়। এ সফরে কলিন ম্যাকডোনাল্ডের সাথে নিয়মিতভাবে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন। ভেজা গ্রীষ্মে নিম্নমূখী রানের সিরিজরূপে ইংল্যান্ডের অফ স্পিনার জিম লেকারের একচ্ছত্র প্রাধান্য ছিল। টেস্ট সিরিজে ব্যাটিং গড়ে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। এছাড়াও, ৩৭ ইনিংসে অংশ নিয়ে ১,৩৩৯ রান তুলেন।[৩]

সফরের দ্বিতীয় খেলায় লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ১২৩ রান তুলেন। কিন্তু পরবর্তী মাসে টেস্ট শুরুর পূর্বে নিয়মিতভাবে বৃষ্টির কবলে পড়ে খেলাগুলো। ঐ সময়ে তিন খেলার চারটি ইনিংস খেলার সুযোগ পান তিনি। তবে, কোনটিতেই ২০-এর অধিক রান তুলতে পারেননি। টেস্টগুলোয় অংশ নিয়ে ৩৫.৩৩ গড়ে ২১২ রান তুলেন।

এ সফরে তার উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৫৮ রান তোলা। বৃষ্টিবিঘ্নিত পিচে ইংরেজ বোলারদের বিপক্ষে চার ঘণ্টা অবস্থান করে এ সংগ্রহ গড়েন। অর্ধেকেরও বেশি সময় আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব পড়ে। টেস্টগুলোর মাঝখানে অনুষ্ঠিত কাউন্টি খেলাগুলোয় উপর্যুপরী অর্ধ-শতরানের সন্ধান পান। এছাড়াও, তৃতীয় ইনিংসটিতে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন।[৪] লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাকডোনাল্ডের সাথে ১৫১ রানে জুটি গড়েন। ব্যক্তিগত ৬৫ রান তুললেও অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৮৫। সফরকারীরা ১১৪ রানে এগিয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ১৬ রান করতে সক্ষম হন। তাস্বত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া দল ১৮৫ রানে জয় পায়।[৪]

তৃতীয় টেস্ট শুরুর পূর্বে সমারসেট দলের বিপক্ষে ১৩৮ ও অপরাজিত ১২৫ রান করেন। এরফলে ১৯৩০ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে কোন খেলায় অ্যালান কিপাক্সের পর বার্ক প্রথম অস্ট্রেলীয় হিসেবে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন।[৩][৪] ঐ ইনিংসগুলোর পর বার্ক ও অস্ট্রেলিয়া দূর্দশার কবলে পড়ে। হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়া দল ইনিংস ও ৪২ রানের ব্যবধানে পরাজয়বরণ করে। দলটি ১৪৩ ও ১৪০ রানে গুটিয়ে যায়। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খুব কমই অবদান রাখতে সক্ষম হন। প্রথম ইনিংসে ৪১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬ রানের ইনিংস খেলেন। ফলশ্রুতিতে ইংল্যান্ড সিরিজে সমতায় নিয়ে আসে।

এরপরই ওল্ড ট্রাফোর্ডে বিখ্যাত লেকারের টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়। একমাত্র অস্ট্রেলীয় হিসেবে দুইবার জিম লেকারের শিকারে পরিণত হননি। জিম লেকার ২০ উইকেটের মধ্যে ১৯ উইকেট পেয়েছিলেন। জিম বার্ক প্রথম ইনিংসে টনি লকের হাতে ধরা পড়েন। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সংগৃহীত ৮৪ রানের মধ্যে ২২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৫ রানের মধ্যে ৩৩ রান তুলেছিলেন। স্বাগতিক দল ইনিংস ও ১৭০ রানের ব্যবধানে জয় পেয়ে অ্যাশেজ করায়ত্ব করে।

এরপর স্পিন উপযোগী উইকেটে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ১৯৪ রান করেন। ঐ সময়ে এটিই তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ব্যবধানে জয় পায়। পরের মাসে রান খরায় ভোগেন। ছয় ইনিংসে মাত্র ৫৪ রান করেছিলেন। তন্মধ্যে, ওভালের পঞ্চম টেস্টে আট ও এক রান করেছিলেন। উভয়ক্ষেত্রেই সারের মাঠে দুইবার লেকারের বলে আউট হন।[৪] ইংরেজ অধিনায়ক পিটার মে অস্ট্রেলিয়াকে বৃষ্টিতে আক্রান্ত উইকেটে ২২৮ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেন। ২৭/৫ থাকা অবস্থায় আবারও বৃষ্টি নামলে আরেকটি সমূহ পরাজয় থেকে দল বাঁচতে সক্ষম হয়। এ সিরিজে ৩০.১১ গড়ে ২৭১ রান সংগ্রহ করেছিলেন।

সিরিজটিতে লেকারের প্রাধান্যতা লক্ষ্য করা যায়। বার্কের আউটের দুই-তৃতীয়াংশই তিনি করেছিলেন। নীল হার্ভের পর দ্বিতীয় সর্বাধিকসংখ্যক লেকারের বল মোকাবেলা করেছিলেন তিনি। বার্ক লেকারের স্পিন উপযোগী ও আর্দ্রতাপূর্ণ উইকেটে বল মোকাবেলা করার কৌশল অবলম্বন করেন। বলকে মোকাবেলা করতে গিয়ে তিনি ধারণা করতে যে হয়তোবা শর্ট লেগ অঞ্চলে তিনি কট আউটের শিকার হবেন।

এক মাস রান খরায় ভোগার পর টিএন পিয়ার্স একাদশের বিপক্ষে ৯৪ ও ২১ রান তুলে ইংরেজ মাটিতে খেলা শেষ করেন। খেলায় সফরকারীরা পাঁচ উইকেটে জয় পায়। এরপর প্রথম-শ্রেণীবিহীন খেলায় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে দুই খেলায় ৮১ ও ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন। এ সফরে অসামান্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৫৭ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন জিম বার্ক।[৩]

ভারত ও পাকিস্তান সফর সম্পাদনা

এরপর তিনি ভারত ও পাকিস্তান সফর শেষে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসেন। ঐ সফরে সফরকারী দল চার টেস্টে অংশ নেয় ও অন্য কোন খেলায় অংশ নেয়নি। এ সফরে বার্কের ব্যাটিং ক্রমাগত উত্তরণের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। করাচীতে অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে উদ্বোধনী টেস্ট খেলায় অংশ নেয়। বার্ক ৪ ও ১০ রান তুলেন। উভয় ক্ষেত্রেই তিনি ফজল মাহমুদের হাতে ধরা পড়েন। খেলায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দল নয় উইকেটে পরাজিত হয়েছিল।[৪]

মাদ্রাজে ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও তিনি দূর্বল রান তোলেন। ইনিংসের ব্যবধানে জয়ী খেলায় তিনি ১০ রান করেছিলেন।[৪] বোম্বেতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে ৩৬৮ মিনিটে ১৬১ রান তুলেন। এই ইনিংসটি অদ্যাবধি অস্ট্রেলীয় টেস্ট খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ধীরগতির ইনিংসরূপে স্বীকৃতি পাচ্ছে।[২] খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়। কলকাতায় সিরিজ নির্ধারণী খেলায় আবারো বার্ক ব্যর্থ হন। উভয়ক্ষেত্রেই বৃষ্টিবিঘ্নিত পিচে স্পিনার গুলাম আহমেদের বলে ১০ ও ২ রানে আউট হন।[৪] চারবারই ভারতীয় স্পিনারদের হাতে আউট হন তিনি।[৪] দ্বিতীয় ইনিংসে পিচ বৃষ্টির কবলে পড়ে। বার্ক তার প্রথম টেস্ট উইকেটের সন্ধান পান। অস্ট্রেলিয়ার ২৩১ রানের লক্ষ্যমাত্রায় অগ্রসরের দিকে ধাবমান ভারত দলকে আটকান। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান পঙ্কজ রায়কে লেগ বিফোর উইকেটে ২৪ রানে বিদায় করেন। এরপর গুলাবরায় রামচাঁদপ্রকাশ ভাণ্ডারীকে কট আউট ও গুলাম আহমেদকে শূন্য রানে ফেরৎ পাঠান। ৪/৩৭ বোলিং পরিসংখ্যান গড়লে ভারত ৯৮ রান বাকী থাকতেই অল-আউট হয়।[৪]

উপমহাদেশ ভ্রমণ শেষে ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমের শুরুতে অস্ট্রেলীয়রা নিজ দেশে অবতরণ করে। ঐ মৌসুমে কোন টেস্ট হয়নি। প্রথম খেলায় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জোড়া শূন্য পান। ফিরতি খেলায় মাত্র দুই রান তোলেন। তাস্বত্ত্বেও, নিউ সাউথ ওয়েলস দল উভয় খেলায় জয় পেয়েছিল। পরের খেলায় নিজ দলের ৪৫৪ রানের মধ্যে তিনি একাই সংগ্রহ করেন ২২০ রান। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার দল ইনিংস ব্যবধানে জয় পায়। বড়দিনের সময়কালে বার্ক শেফিল্ড শিল্ডের ইতিহাসে প্রথম টাইয়ের সাথে নিজ নামকে জড়িয়ে রাখেন।[৪]

প্রথম ইনিংসে ১৩২ রান তুললে নিউ সাউথ ওয়েলস দল ২৮১ রানে গুটিয়ে যায় ও ভিক্টোরিয়ার তুলনায় ৩৭ রানে এগিয়ে থাকে। দ্বিতীয় ইনিংসে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল ১৬১ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রার দিকে ধাবিত হয়। আঘাতের কারণে বার্ক রিটায়ার্ড হার্ট হন। এ পর্যায়ে দল ৭০/৭ হলে ব্যাটিংয়ে দূর্বল ইয়ান ক্রেগ তাকে জোরপূর্বক ব্যাট হাতে নিতে বাধ্য করেন। দলীয় ১৪৫ রানে রিচি বেনোর উইকেট পতন ঘটলে মাঠে নামেন তিনি। তিন রান পর ১৪৮ রানে ক্রেগ বিদায় নেন। বার্ক আট রান করেন ও দলের সংগ্রহ ১৬০/৯ হয়। এ পর্যায়ে, ইয়ান ম্যাকিফের বল তার ব্যাটের কিনারা স্পর্শ করে উইকেট-রক্ষক লেন মাডকসের গ্লাভসে চলে যায়। খেলাটি টাই হয়।[৪][৮][৯]

মৌসুম শেষে ৫৫.৫০ গড়ে ৪৪৪ রান তুলেন ও ৩৯.০০ গড়ে তিন উইকেট পান। ফলশ্রুতিতে, নিউ সাউথ ওয়েলসের উপর্যুপরী চতুর্থ শিরোপা জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন।[৪][৭]

দক্ষিণ আফ্রিকা গমন সম্পাদনা

পরের বছর ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। অস্ট্রেলীয়দের মধ্যে তিনি রান সংগ্রহে শীর্ষে ছিলেন। ৬৫.০৬ গড়ে ১,০৪১ রান তুলেন। একমাত্র অস্ট্রেলীয় হিসেবে সহস্রাধিক রান পেয়েছিলেন জিম বার্ক।

উত্তর রোডেশিয়ায় যাত্রা বিরতির মাধ্যমে এ সফরের সূচনা ঘটে। প্রথম-শ্রেণীবিহীন খেলায় জাম্বিয়ার বিপক্ষে তিনি ১০২ রানের মনোরম ইনিংস খেলেন। এরপর দলটি রোডেশিয়ায় গমন করে। স্বাগতিক দলের বিপক্ষে দুইটি খেলায় অংশ নেয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৬ রান তুলে দলকে দশ উইকেটের জয় এনে দেন।[৪]

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে পৌঁছেই নাটালইস্টার্ন প্রভিন্সের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত উপর্যুপরী খেলায় ১১২ ও ১৩৩ রানের ইনিংস খেলেন। এরপর ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের বিপক্ষে পরের খেলায় ৭২ রান তুলেন।[৪]

প্রথম টেস্টে বেশ প্রতিকূলতার মুখোমুখি হন জিম বার্ক। খেলায় তিনি ১৬ ও ১০ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হন। খেলাটি ড্র হলেও দক্ষিণ আফ্রিকা একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করেছিল। তবে, পরের সপ্তাহে কেপ টাউনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে নিজেকে মেলে ধরেন। তেজী মনোভাব, দর্শনীয় খেলার ধরন তুলে ধরে ১৮৯ রান তুলেন। এরজন্য তাকে ৫৭৮ মিনিট খরচ করতে হয়েছিল। এটিই তার সর্বোচ্চ টেস্ট রান। দক্ষিণ আফ্রিকা ফলো অনের কবলে পড়ে ও ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত হয়।[৪][৫] ট্রান্সভালের বিপক্ষে ৮৬ রানের ইনিংস খেলার পর ডারবানে অনুষ্ঠিত ড্র হওয়া তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৩ রান তুলেন। প্রথম ইনিংসে তিনি মাত্র দুই রান করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়া দল মহাসঙ্কটে পড়ে ও স্বাগতিক দল ২২১ রানে এগিয়ে যায়। কিন্তু, দ্বিতীয়বারের প্রচেষ্টায় অস্ট্রেলিয়া দল ২৯২/৭ তুলে ও পরাজয় এড়াতে সক্ষমতা দেখায়। জোহেন্সবার্গে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৮১ রানের ইনিংস খেলেন জিম বার্ক। খেলায় অস্ট্রেলিয়া দল দশ উইকেটে জয়লাভের পাশাপাশি ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। পঞ্চম টেস্টে তিনি মাত্র আট রান তুলেন। তাস্বত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া দল আট উইকেটে জয় পেয়েছিল।[৪] ঐ টেস্টগুলোয় ৩৮.৫০ গড়ে দুই উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। তবে, তার বোলিং বেশ সন্দেহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ঐ সফরের শেষ পর্যায়ে সাউথ আফ্রিকান ইউনিভার্সিটিজের বিপক্ষে অল-রাউন্ড নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন জিম বার্ক। প্রথম ইনিংসে ৬/৪০ পান। এটিই তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ছিল। চারজনকে তিনি বোল্ড করেছিলেন। এরপর তিনি ৮১ রান তুলে দলকে ১৭৯ রানে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ২/৬৫ পান। এরফলে আয়োজক দল পরাজিত হয়।[৪] আফ্রিকা সফরে বল হাতে জিম বার্ক সর্বপেক্ষা সফল হন। ২২.২৮ গড়ে ২১টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান তিনি।[১০]

অবসর সম্পাদনা

 
টেস্টে বার্কের ব্যাটিং চিত্র।

১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে তিনি বেশ শক্তভাবে শুরু করেন। শিল্ড মৌসুমের উদ্বোধনী খেলায় কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৩ রানসহ ৩/২৩ বোলিং করেন। পরের খেলায় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলার পর টেস্টের পূর্বে সফরকারী ইংরেজ দলের বিপক্ষে নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্যরূপে খেলে ১০৪ রান তুলেন।

ব্রিসবেনে ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে অংশ নেন তিনি। নিম্নমূখী ও ধীরগতিসম্পন্ন খেলার প্রথম ইনিংসে ২০ রান তুলেন। ১৮৬ রান করে অস্ট্রেলিয়া দল ৫২ রানে এগিয়ে যায়। রক্ষণাত্মক ব্যাটিংশৈলীর অধিকারীরূপে সুপরিচিত ইংরেজ অল-রাউন্ডার ট্রেভর বেইলি প্রথম-শ্রেণীর খেলার ইতিহাসে সর্বপেক্ষা ধীরগতির অর্ধ-শতরান করেন ৩৫৭ মিনিট ব্যয় করে।[১১] চূড়ান্ত দিন ১৪৭ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় অস্ট্রেলিয়া দল মাঠে নামে। বেইলি’র পথ অনুসরণ করে ২৫০ মিনিট ব্যয় করে তিনি অপরাজিত ২৮ রান তুলে স্বাগতিক দলকে আট উইকেটের জয় এনে দেন। ক্রিজে অবস্থানকালে ২০%-এরও কম রান তুলেছিলেন তিনি।

টেস্টগুলোর মাঝে নিউ সাউথ ওয়েলসের সদ্যরূপে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ৫৩ ও ৭৭ রান তুলে দলকে ১৬২ রানে বিজয় এনে দেন।[৪] ইংরেজ দলের বিপক্ষে চার খেলায় অংশ নিয়ে এক মাস দূর্বল ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেন তিনি। মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে তিনি ৩ ও অপরাজিত ১৮ রান তুলেন। খেলায় দল আট উইকেটে জয় পায়। এরপর লেকারভীতিতে ড্র হওয়া তৃতীয় টেস্টে ১২ ও ৭ রান করেন।[৪] ঐ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ইংরেজ অধিনায়ক পিটার মেকে ৯২ রানে আউট করেন। খেলায় তিনি ২/২৬ পেলেও ক্রমাগত সফরকারী দলের সাংবাদিকদের কাছ থেকে বল ছুড়ে মারার অভিযোগের কবলে পড়েন।[৪][৬]

চতুর্থ টেস্টের পূর্বে নিজ রাজ্যদলের সদস্যরূপে ইংরেজ দলের খেলায়ও নিম্নমূখী রানের কবলে পড়েন। তিনি ৫ ও অপরাজিত ২২ রান করেন। বেইলি’র বলে আউট হন। তবে, ইংরেজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ধীরগতিতে রান তোলা অব্যাহত রাখেন। চতুর্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে বার্ক ৬৬ রান তুলেন। এরফলে দল ২৩৬ রানে এগিয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ১৬ রান তুলে দলকে দশ উইকেটের জয় এনে দিয়ে সিরিজে এগিয়ে নেন।[৪] পঞ্চম টেস্টের পূর্বে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ৪/৫২ ও ১/১৯ বোলিং গড়েন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি মাত্র ১৬ ও ১৩ রান তুলে উভয় ক্ষেত্রে ঐ যুগের সেরা দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলার ফ্রাঙ্ক টাইসনের শিকারে পরিণত হন।[৪] তাস্বত্ত্বেও, অস্ট্রেলিয়া দল নয় উইকেটে জয় পেয়ে সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে জয়ী হয়।[৪]

ধীরগতিতে রান তোলা ও বোলিংয়ের সমালোচনায় মুখরিত হলে এবং ফাস্ট বোলিংয়ে ভীতি বিশেষ করে শর্ট পিচ বোলিং মোকাবেলায় অনীহার কারণে এ সিরিজ শেষে আকস্মিকভাবে অবসর নেন। ২৮.৪৩ গড়ে ১৯৯ রান করেছিলেন তিনি।[৪] ৫ মার্চ, ১৯৫৯ তারিখে অবসরের কথা ঘোষণা করে জিম বার্ক।[১২]

টেস্টের পর তিনি দুইটি শিল্ড খেলায় অংশ নেন। এর জবাবে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০৩ ও ৬৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে ১৭৪ রানের জয় এনে দেন। খেলোয়াড়ী জীবনের শেষ খেলায় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি পাঁচ রান করলেও নিউ সাউথ ওয়েলস দল ইনিংসের জয় পায়। পাশাপাশি উপর্যুপরী তাদের ষষ্ঠ শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা লাভ করে।[৪][৭]

এরপর তিনি গ্রেড ক্রিকেটে আরও ১৩ মৌসুম খেলেন। পরবর্তীকালে অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের ধারাভাষ্যকারের দায়িত্বে থেকে সুখ্যাতি পান।

খেলার ধরন সম্পাদনা

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অফ ব্রেক বোলার ছিলেন জিম বার্ক। ত্রিশের নিচে রান দিয়ে ১০১টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান। তার বোলিংশৈলী সন্দেহজনক হলেও গ্রেড ক্রিকেটে বল নিক্ষেপের দায়ে চিহ্নিত করা হয়নি। তার বোলিংয়ের ধরন অনেকাংশেই পুলিশের ব্যাটন হাতে প্রহার করার মতো।[১৩] ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে বল ছোঁড়ার বিতর্কের তুঙ্গে থাকা স্বত্ত্বেও তিনি টেস্ট খেলাগুলোয় ঝুঁকির মুখে ছিলেন না। গ্রেড ক্রিকেটে প্রায়শঃই উইকেট পতন না হওয়া অবস্থায় বেশ কার্যকর ছিল তার বোলিং। প্রায়শঃই প্রতিপক্ষীয় ব্যাটিং মেরুদণ্ড তুলোধুনো হয়ে পড়তো।

টেস্ট ক্রিকেটে প্রচণ্ড চাপ থাকা স্বত্ত্বেও জিম বার্ক বিনোদনকারী ও আক্রমণধর্মী ব্যাটসম্যান ছিলেন। সঠিক অবস্থানে থেকে দ্রুত রক্ষণাত্মক কিংবা আক্রমণাত্মক ও ভারসাম্য বজায় রেখে অগ্রসর হতেন। অন-ড্রাইভের দিকেই তার অধিক ঝোঁক ছিল। ছয় ফুটের অল্প কম উচ্চতার অধিকারী হিসেবে তিনি ব্যাটের হাতলের উঁচুতে ধরে কিঞ্চিৎ ব্যাট উঁচু করে রাখতেন। পিছনের পায়ে ভর রেখে স্কয়ার-অনে খেলাকালে বোলারের দিকে বুক মুখোমুখি করে রাখতেন। পিয়ানো বাজিয়ে ও কৌতুককর অবস্থায় দলের সাথে শামিল হতেন।[২][৩]

জনপ্রিয় ও কৌতুকপ্রিয় চরিত্রের অধিকারী জিম বার্ক মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের আজীবন সম্মানিত সদস্য ছিলেন। ব্যক্তিগত বিষয় ও আর্থিক দুরবস্থার কথা গোপন রাখতেন। ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৯ সালে অ্যাশেজ টেস্টের নিয়মিত এবিসি দলের নিয়মিত ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব পালনকালে সিডনির ক্রীড়া সরঞ্জাম বিক্রয় প্রতিষ্ঠান থেকে শটগান ক্রয় করেন। পরবর্তীতে শটগান দিয়ে আত্মহত্যা করেন জিম বার্ক।

২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৯ তারিখে ৪৯ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলসের ম্যানলি এলাকায় জিম বার্কসের জীবনাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Walmsley, Keith (২০০৩)। Mosts Without in Test Cricket। Reading, England: Keith Walmsley Publishing Pty Ltd। পৃষ্ঠা 457। আইএসবিএন 0947540067 
  2. Cashman et al., pp. 215–217.
  3. "Jim Burke"Wisden Cricketers' AlmanackWisden। ১৯৫৭। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১০ 
  4. ড় ঢ় য় কক কখ কগ কঘ কঙ কচ কছ কজ কঝ কঞ কট কঠ কড কঢ কণ কত কথ কদ কধ কন কপ "Player Oracle JW Burke"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০০৯ 
  5. "List of match results (by year) Australia – Test matches"Cricinfo। ২৪ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০০৭ 
  6. "Player Oracle JW Burke"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০০৯ 
  7. Williamson, Martin। "A history of the Sheffield Shield"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০০৭ 
  8. "Victoria v New South Wales"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০০৯ 
  9. Pollard, p. 114.
  10. "The Home of CricketArchive"। Cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১২ 
  11. "Trevor Bailey | Cricket Players and Officials | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১২ 
  12. "Burke Announces Retirement"The Canberra Times। ৬ মার্চ ১৯৫৯। পৃষ্ঠা 16। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৭ 
  13. p68, Cris Freddi, The Guinness Book of Cricket Blunders, Guinness Publishing, 1996.

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা