জাভানশির

ককেশীয় আলবেনিয়ার রাজা

জাভানশির (মধ্য ফার্সি: Jūvānšīr, যার মানে "যুব সিংহ") ৬৩৭ থেকে ৬৮০ পর্যন্ত ককেশীয় আলবেনিয়া (গার্দমান অঞ্চলের সাথে জড়িত) এর রাজপুত্র ছিলেন। তার জীবন এবং কাজের আর্মেনিয়ান মধ্যযুগীয় গ্রন্থে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তার জন্ম হয় পার্থিয়ান মিহরিনদ পরিবারে, যা মিহরান হাউজের একটি শাখা এবং সাসানিয়ান সাম্রাজ্যের সাতটি পার্থিয়ান গোত্রের মধ্যে একটি।.[১][২]

জাভানশির
ককেশীয় আর্মেনিয়ার রাজা
আজারবাইজান ঐতিহাসিক জাদুঘর এ জাভানশির ব্রোঞ্জ ভাস্কর্য'র একটি অনুলিপি. মূল কাজটি রয়েছে হেমিটেজ এ.
রাজত্ব৬৩৭ — ৬৮০
রাজ্যাভিষেক৬৩৭
পূর্বসূরিভারাজ গ্রিগর
উত্তরসূরিপ্রথম ভারাজ টিরিডেটস
জন্ম(৬১৬-০৯-২৮)২৮ সেপ্টেম্বর ৬১৬
মৃত্যু১ জানুয়ারি ৬৮০(680-01-01) (বয়স ৬৩)
সমাধি
বংশধরVaraz Tiridates I
পিতাVaraz Grigor
মাতাGoridouxt
ধর্মখ্রীষ্টধর্ম

প্রাথমিক জীবন  সম্পাদনা

জাভানশির- ভারায গ্রিগরের দ্বিতীয় পুত্র ছিলেন, যিনি ছিলেন গার্দমান এর রাজপুত্র এবং মিহরানিদ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। জাভানশিরের মা ছিলেন একজন রাজকন্যা যার নাম ছিল গোরিডাক্সট। ৬৩৭ সালে ভারাজ গ্রিগর বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেন এবং ককেশীয় আলবেনিয়া অফিসিয়াল ধর্ম হিসাবে খ্রিস্টান  ধর্মকে ঘোষণা করেন। এভাবে তিনি তার পুত্র জাভানশিরকেও খ্রীস্টান ধর্মে রূপান্তরিত করেন। যাইহোক, ভারসকে সাসানিয় রাজা কর্তৃক বরখাস্ত করা হয়েছিল যিনি খ্রিস্টধর্মে তার রূপান্তর স্বীকার করেননি। এইভাবে জাভানশির ককেশীয় আলবেনিয়া রাষ্ট্রের রাজা হয়েছিলেন।[৩]

শাসনকাল  সম্পাদনা

জাভানসির তার সাহস ও বুদ্ধিমত্তার জন্য পরিচিত ছিলেন; তিনি সাসানীয় সাম্রাজ্যের পাশে পারস্যের মুসলিম বিজয়কালে আরবদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং সাসানিয় রাজা ইয়াসদেগারের তৃতীয় স্বত্বাধিকারী হিসেবে তার দুটি সোনার বর্শা, দুটি সুবর্ণ ঢাল এবং একটি পতাকা, সম্ভবত ডাফ্ফ ই কাভিয়ান লাভ করেন। ৬৩৬ সালে তিনি আলবেনিয়ার সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যা আর্মেনিয়ার রাজকুমার মুছ্হাফ তৃতীয় ম্যামিকোনীয় এবং সৈয়ুনিকের গ্রেগরের পাশাপাশি পারস্য ও আরব বাহিনীর মধ্যকার আল-কাদিশিয়ার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। তবে, সাসানিয়ানরা পরাজিত হয়, যার ফলে জাভানশিরের আশা হারিয়ে যায়। তারপর তিনি তার ক্ষমতার বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহের তৈরি করেন এবং ককেশীয় আলবেনিয়া থেকে পিছু হটেন। যেখানে তিনি কনস্ট্যান্স ২-এ একটি চিঠি লিখেছিলেন এবং বাইজানটাইন সাম্রাজ্যের সাথে বন্ধুত্ব করেছিলেন। তখন তিনি প্যাট্রিয়িকসের শিরোনাম দিয়ে ভূষিত হন এবং পূর্বের রাজা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তিনি সিউনিক এর একটি রাজপরিবার এর এক সম্ভ্রান্ত মহিলাকে বিবাহ করেন। 

বাইজেন্টাইনের সাথে তার জোটের পর, তিনি আলবেনিয়াতে সাসানিয়ান বাহিনীর উপর এক আক্রমণে ইবেরিয়ান রাজা আদরণেস আই এর সাথে যোগ দেন।[৪] পরে তিনি ডারবেন্ট থেকে আরাস নদী পর্যন্ত তার রাজত্ব প্রসারিত করেন।

দক্ষিণে আরব আক্রমণের হুমকি এবং উত্তরে খাসের আক্রমণের মুখোমুখি হওয়ার কারণে, জাভানশিরকে খলিফার সুবিচারের স্বীকৃতি স্বরূপ বিবেচনা করা হতো, যা ছিল দেশের ইতিহাসে একটি টার্নিং পয়েন্ট।

৬৮০ খ্রিস্টাব্দে জাভানশিরকে তার উচ্চপদস্থ প্রতিদ্বন্দ্বী  ব্যক্তিদের দ্বারা হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে ভারায টিরিডেটস আই তার পদে অসীন হন। 

আর্মেনিয়ান কবিতা এবং ঐতিহাসিক গ্রন্থে উল্লেখ  সম্পাদনা

জাভানশিরের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে একমাত্র ঐতিহাসিক উৎস মোভসেস কাঘাকাতভাতসি এর আর্মেনীয় গ্রন্থেই পাওয়া যায়, যা আঘভাঙ্ক রাজ্যের ইতিহাস নামে পরিচিত।[৫][৬][৭]

কের্টোগের একমাত্র জীবিত কবিতা আর্মেনীয় ভাষায় লিখিত আছে, বর্ণানুক্রমিক কবিতার পঙ্‌ক্তি‌ রূপে।

আরও দেখুন  সম্পাদনা

  • Caucasian Albania

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "ARRĀN – Encyclopaedia Iranica. C. E. Bosworth"। iranicaonline.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১২-১১ 
  2. "ALBANIA – Encyclopaedia Iranica. M. L. Chaumont"। iranicaonline.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১২-১১ 
  3. Cyril Toumanoff. Review of C. J. F. Dowsett's "The History of Caucasian Albanians by Movsēs Dasxuranci", Bulletin of the School of Oriental and African Studies, University of London, Vol. 25, No. 1/3. (1962), p. 366
  4. Martindale, John Robert (1992), The Prosopography of the Later Roman Empire, pp. 13-14. Cambridge University Press, আইএসবিএন ০-৫২১-০৭২৩৩-৬.
  5. Robert H. Hewsen, “Ethno-History and the Armenian Influence upon the Caucasian Albanians,” in Classical Armenian Culture: Influences and Creativity, ed. Thomas J. Samuelian (Philadelphia: Scholars Press, 1982)
  6. The Oxford History of Historical Writing: 400-1400 / Edited by Sarah Foot, Chase F. Robinson. — Oxford University Press, 2012. — Vol. 2. — p. 189.:"The section on Juansers exploits concludes with the earliest piece of secular Armenian poetry since the adoption of Christianity to have reached us, in the form of an abecedarian elegy extolling the prince and bewailing his passing."
  7. The Heritage of Armenian Literature: By Agop Jack Hacikyan, Gabriel Basmajian, Edward S. Franchuk, Nourhan Ouzounian, Wayne State University Press, 2002, P. 94

উৎস  সম্পাদনা