জহা চাউল হচ্ছে ছোট বা মধ্যম আকারের একধরনের সুগন্ধি চাল। অসমের মাটি ও জলবায়ু জহাধানের জন্য উপযোগী হওয়ার কারণে চালটি মূলতঃ অসমে উৎপাদিত হয়। জহা চাউলে যথেষ্ট পরিমাণে প্ৰাকৃতিক সুগন্ধি ২-এসিটাইল-১-পাইরোলাইন নিহিত হয়ে থাকার জন্য চালটি নিজস্ব গন্ধযুক্ত হয়।[১]

জহা চাউল
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Plantae
শ্রেণীবিহীন: Angiosperms
শ্রেণীবিহীন: Monocots
শ্রেণীবিহীন: Commelinids
বর্গ: Poales
পরিবার: Poaceae
গণ: Oryza
প্রজাতি: Oryza sativa

২০০৭ সালে প্ৰথম জাৰ্মানী, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ডে ১৭ মেট্ৰিক টন জহা চাউল রপ্তানি করা হয়। কিন্তু ২০০৮ সালের এপ্ৰিলে বাসমতি চাল বাদে অন্য চাউলের রপ্তানিতে কেন্দ্ৰীয় সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য অসম ৩৩ মেট্ৰিক টন জহা চাউলের রপ্তানির চুক্তি বাতিল করে। ২০১১ সালে এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হয়।[২]

২০১৩ সালে অসম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় জহা চাউলকে ভৌগোলিক স্বীকৃতি দিতে চেন্নাইতে অবস্থিত ভৌগোলিক স্বীকৃতি পঞ্জীয়কের উদ্দেশ্যে এক প্ৰস্তাব প্ৰস্তুত করে পাঠায়।[২] সেই বছরের সেপ্টেম্বরে কেন্দ্ৰীয় প্ৰতিষ্ঠানটিতে সৰ্থেবারীর কাঁসা-পিতলের শিল্প, কাৰ্বি বস্ত্ৰশিল্প ও গোয়ালপাড়ার শীতল পাটী দলিচা শিল্পের সাথে জহা চাউলের ভৌগোলিক স্বীকৃতি মিলিয়ে আবেদন পত্ৰ (ক্ৰমিক নং ৪৩৯) দাখিল করে। ভারতীয় পেটেণ্ট, ডিজাইন ও ট্ৰেডমাৰ্ক নিয়ন্ত্ৰক প্ৰকাশ করা তথ্য মতে ২০১৫ সালের ৩১ মাৰ্চ পর্যন্ত জহা চাউলের ভৌগোলিক স্বীকৃতি প্ৰারম্ভিক পরীক্ষণ পৰ্যায়ে আছে।[৩] ২০১৭ সালের মাৰ্চ মাসে জহা চাউল ভৌগোলিক স্বীকৃতি লাভ করে।

ইতিহাস সম্পাদনা

৪ৰ্থ শতকে মাধব কন্দলি রচনা করা সপ্তকাণ্ড রামায়ণে খরিকা জহার উল্লেখ আছে।[১]

উৎপাদন ও কৃষি পদ্ধতি সম্পাদনা

অসমের প্ৰায় ২০,০০০ হেক্টর কৃষিভূমিতে জহা ধান চাষ করা হয় এবং রাজ্যটিতে বছরে প্ৰায় ৩০,০০০ মেট্ৰিক টন জহা চাউল উৎপাদিত হয়।[২]

অসমের অধিকাংশ অঞ্চলে করা ধানচাষের মত[৪] জহাধানের চাষও দ্বি-রোপণ পদ্ধতিতে করা হয়। সাধারণত জৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে বীজতলায় ছড়িয়ে শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে এই চারা জমিতে বোনা হয় এবং অঘ্রান-পৌষ মাসে তোলা হয়। ভারতীয় কৃষি পদ্ধতির কালভিত্তিক ভাগসমূহের দিক থেকে (শালিধান, আহুধান, বাওধান ও বড়োধান) জহা ধানকে শালিধানে অন্তৰ্ভুক্ত করা যায়। চালের প্ৰকারের ভিত্তিতে জহা একধরনের লাহিধান, অৰ্থাৎ জহা চাউল থেকে জলখাবারও প্ৰস্তুত করা যায়।

প্ৰকার সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Incompletelist বিভিন্ন প্ৰকারের জহা ধানসমূহ হচ্ছে এইধরনের:

নাম বিবরণ
কোলা জহা মধ্যম আকারের, কোলা চানেকীয়া বাকল
বগা জহা মধ্যম আকারের, শ্বেত-হলুদ বাকল, প্ৰতিটি ধানের গুড়ি অংশে একরকম দীর্ঘ শুংযুক্ত
রামপাল জহা
কণ জহা ছোট আকারের, শ্বেত-হলুদ বাকল
মাণিকীমধুরি জহা
কেতেকী জহা ছোট আকারের, হলুদ বাকল

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Roopak Goswami (১৯ এপ্রিল ২০১৫)। "Joha in race to topple 'aroma queen'"। The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  2. Sushanta Talukdar (১৪ এপ্রিল ২০১৩)। "Retaining the aroma"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  3. "Break up & Status of GI Application Pending before the GI Registry as on March 31, 2015" (পিডিএফ)। Intellectual Property India (Govt. of India)। ২৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  4. "শালি ধান তোলার পর ঘাস চাষ"। as.vikaspedia.in। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫